বদরের সমভূমি | বদরের যুদ্ধের প্রস্তুতি, মুসলিমদের সামনে দুই ধরনের সমস্যা বা হুমকি ছিল। ভেতর থেকে উদ্ভূত সমস্যা হলো, মদিনা তখনও ঐক্যবদ্ধ হয়নি। হিজরতের মধ্য দিয়ে যে পরিবর্তনের সূচনা হয়েছিল তাতে একদল লোক খুশি হতে পারেনি। তাদের মধ্যে ছিল মদিনার ইহুদি ও মুশরিকরা। অন্যদিকে বাইরের দিক থেকে আসা সমস্যা হলো মক্কার কুরাইশরা।
তবে আমরা দেখতে পাব, আস্তে আস্তে এক সময় পুরো আরব অঞ্চলই সংঘাতে জড়িয়ে পড়বে, এই প্রথমবারের মতো পুরো উপদ্বীপটি দুটি আলাদা শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়বে। এই মেরুকরণের মধ্য দিয়েই শেষ পর্যন্ত মহানবি মুহাম্মদের (সা) অধীনে আরবরা আবার একত্রিত হবে। এবং এটি ঘটবে মূলত সামরিক অভিযানের মাধ্যমে।
বদরের সমভূমি | বদরের যুদ্ধের প্রস্তুতি | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন
সিরাহর মদিনার পর্বের ইতিহাস মূলত সামরিক অভিযানের ইতিহাস । বর্ণনাকারীরা কেবল সেসব বিষয়ই বিশদভাবে বর্ণনা করেছে যা তাঁদের দৃষ্টিকোণ থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সে কারণেই সম্ভবত মদিনার পর্বের ৮০ শতাংশ কেবল একের পর এক যুদ্ধের বর্ণনা ।
বদর এলাকার নামকরণ করা হয়েছিল সেখানকার একটি কূপের খননকারীর নাম অনুসারে। বহু শতাব্দী আগে, বদর ইবনে ইয়াখলুদ নামের এক ব্যক্তি একটি কূপ খনন করেছিলেন। সেই কূপটিকে তখন ‘বদরের কৃপ’ বলা হতো, আর কৃপের আশেপাশের সমভূমি এলাকাটিকে বলা হতো ‘বদরের সমভূমি’। স্থানটি মক্কা ও মদিনার মধ্যে অবস্থিত; মক্কার প্রায় ২৫০ মাইল উত্তরে, মদিনার প্রায় ১৬০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে। তখনকার দিনে মদিনা থেকে ওই পথটুকু যেতে প্রায় তিন দিন সময় লাগত।
বদরের যুদ্ধের মাত্র তিন সপ্তাহ আগেই কেবলা পরিবর্তনের ঘটনাটি ঘটে। সন্দেহ নেই যে, এখানে কেবলা পরিবর্তন ও বদরের যুদ্ধ জয়ের মধ্যে একটি প্রতীকী সম্পর্ক আছে। মুসলিমদের কেবলা মক্কার দিকে পরিবর্তিত হওয়ার পরপরই তাঁদেরকে আল্লাহর পক্ষ থেকে ইসলামের প্রাথমিক সময়ের সর্ববৃহৎ বিজয় দান করা হলো। এ যেন বলা হচ্ছে: তোমাদের কেবলা বদলে গেছে এবং তোমরা বদরের যুদ্ধেও জিতেছ; এখন ধীরে ধীরে মক্কাও তোমাদের হবে।
আরও দেখুনঃ