সিরমা: মদিনার হানিফ | কেবলা পরিবর্তন ও কোরানের আয়াত রহিতকরণ, সেই সময়ে সিরমা নামে মদিনার এক প্রবীণ ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করেন। জানা মতে, তিনিই ছিলেন মদিনায় বসবাসকারী একমাত্র ‘হানিফ’। মক্কার হানিফদের সম্পর্কে আমরা প্রথম দিকের পর্বগুলোতে আলোচনা করেছি। তাঁরা মূর্তিপূজা ত্যাগ করে ইব্রাহিমের (আ) প্রবর্তিত একেশ্বরবাদী ধর্ম অনুসরণ করতেন। নবিজির জন্মের অনেক বছর আগে থেকেই সিরমা মক্কার কুরাইশদের মাঝে বাস করেছিলেন।
সিরমা: মদিনার হানিফ | কেবলা পরিবর্তন ও কোরানের আয়াত রহিতকরণ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন
সিরমা যুবক বয়সে মক্কার হানিফদের মতোই ছিলেন। তিনি মূর্তিপূজা প্রত্যাখ্যান করে খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ধর্মান্তরিত হওয়ার আগেই তাঁর মনে হয় যে খ্রিষ্টান ধর্মে অনেক অসংগতি রয়েছে, এটি গ্রহণ করার কোনো মানে হয় না। তাই তিনি সিদ্ধান্ত বদল করে ইব্রাহিমের (আ) পথেই থেকে যান। পরবর্তী সময়ে তিনি মদিনায় চলে আসেন।

ইবনে ইসহাক উল্লেখ করেছেন, সিরমা সহবাসের পরে গোসল করতেন এবং নারীদের মাসিক ঋতুস্রাবের পর গোসল করার পরামর্শ দিতেন। এ থেকে ধারণা যায়, ইব্রাহিমের (আ) শরিয়া সম্পর্কে তাঁর কিছুটা ধারণা ছিল। তিনি একেশ্বরবাদের প্রশংসা ও পৌত্তলিকতার সমালোচনা করে কবিতা লিখতেন।
নবিজি (সা) যখন মদিনায় হিজরত করেন, সিরমা তখন জীবনসায়াহ্নে। তাঁর বয়স ১০০ পেরিয়ে গেছে; জীবনের শেষ কয়েক সপ্তাহ বা মাস মাত্র বাকি। আল্লাহর কৃপায় ওই সময়ের মধ্যেই সিরমা ইসলাম গ্রহণ করেন এবং অনতিবিলম্বেই তাঁর মৃত্যু হয়। কত চমৎকারই না একটি ব্যাপার! একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি সত্যের অপেক্ষায় ছিলেন। আল্লাহ তায়ালা যেন তাঁকে সেই ইন্সিত সত্যের পথে আনার জন্যই তাঁর জীবন দীর্ঘায়িত করেছিলেন। তাঁর আন্তরিকতার কারণেই হয়তো আল্লাহ তাঁকে সাহাবি হিসেবে সম্মানিত করেছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কোনো না কোনো উপায়ে আন্তরিকতার পুরস্কার দেন।
আরও দেখুনঃ