সম্রাট হেরাক্লিয়াস সম্পর্কে সহিহ বুখারির একটি হাদিস থেকেও আমরা জানতে পারি যে, সে সময় খুব অল্প কয়েকজন প্রকৃত খ্রিষ্টান রয়ে গিয়েছিল। রোমান সম্রাট হেরাক্লিয়াস ছিলেন তেমনি একজন। তিনি ছিলেন একজন শিক্ষিত ও বুদ্ধিমান ব্যক্তি। তিনি খ্রিষ্টধর্ম বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান রাখতেন। ৮ম ও ৯ম হিজরিতে নবি করিম (সা) বিভিন্ন রাজ্য ও সম্প্রদায়ের নেতাদের কাছে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়ে চিঠি পাঠানোর সময় তিনি হেরাক্লিয়াসকেও চিঠি পাঠিয়েছিলেন।
চিঠিতে লেখা ছিল: “পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে। আবদুল্লাহর পুত্র মুহাম্মদ থেকে রোমানদের নেতা হেরাক্লিয়াসের নিকট: সৎপথ অনুসরণকারীদের প্রতি শাস্তি বর্ষিত হউক । আমি আপনাকে ইসলাম ধর্মে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আপনি ইসলামের পতাকাতলে এলে আল্লাহর কাছ থেকে নিরাপত্তা পাবেন। একই সঙ্গে আল্লাহ আপনাকে দ্বিগুণ পুরস্কৃত করবেন। আর আপনি যদি মুখ ফিরিয়ে নেন, তবে আপনার পাপও আপনাকে বহন করতে হবে।
প্রকৃত খ্রিষ্টানদের অবশিষ্টাংশ: বাইজান্টিয়ামের সম্রাট হেরাক্লিয়াস | ইসলাম-পূর্ব বিশ্বে ধর্মীয় পরিস্থিতি | মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ জীবন
হে কিতাবিগণ। আসুন একটা বিষয়ে আমরা একমত হই যে আমরা এক ঈশ্বর ছাড়া অন্য কারও উপাসনা করব না, তাঁর কোনো অংশীদার করব না, এবং তাঁর পরিবর্তে অন্য কাউকে সৃষ্টিকর্তা হিসেবে গ্রহণ করব না। এ থেকে যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে বলো, ‘আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আমরা তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করেছি।” চিঠি পড়ে হেরাক্লিয়াস তাঁর লোকদের জিজ্ঞেস করলেন, “শহরে কি কোনো আরব এসেছে?” জবাব এল, “হ্যাঁ, মক্কা থেকে এক বাণিজ্য কাফেলা এসেছে, এবং তারা এখন জেরুসালেমেই আছে।”

একথা শুনে হেরাক্লিয়াস সেই আরবকে তাঁর প্রাসাদে আনার আদেশ দিলেন। ঘটনাক্রমে, কাফেলাটির নেতৃত্ব দেওয়া সেই আরব ব্যক্তিটি ছিল আবু সুফিয়ান। দীর্ঘ কথোপকথনের পর হেরাক্লিয়াস আবু সুফিয়ানকে বলেন, “আপনি আমাকে যা বলছেন তা যদি সত্য হয় তাহলে এই সেই নবি যার সম্বন্ধে আমাদের ধর্মগ্রন্থে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে।” হেরাক্লিয়াস যে ভবিষ্যদ্বাণীর কথা বলেছিলেন, পরবর্তীকালের নিউ টেস্টামেন্টে তার কোনো সুস্পষ্ট উল্লেখ নেই। অতএব স্পষ্টতই বোঝা যায়, হেরাক্লিয়াসের নিশ্চয়ই সেই জ্ঞান ছিল যা কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে ইনিই সত্য নবি।
তিনি আবু সুফিয়ানকে বললেন, “আমি জানতাম যে একজন নবি আসছেন, কিন্তু তিনি যে আরবদের থেকে আসবেন, সেটা বুঝতে পারিনি।” পরবর্তী সময়ে হেরাক্লিয়াস এক জ্ঞানী বিশপকে জিজ্ঞেস করে নিশ্চিত হয়েছিলেন যে, মুহাম্মদ (সা) নবুয়তের সমস্ত লক্ষণ পূরণ করেছেন। এত কিছু বুঝতে পারার পরও হেরাক্লিয়াস ইসলাম গ্রহণ করেননি, কারণ তিনি বাইজান্টিয়ামের সম্রাটের আসন ছাড়তে চাননি ।
আরো পড়ুনঃ
- হাদিস । হাদিস সূচী
- নির্বাচিত ইসলামিক গজল সূচী
- সূরা হাজ্জ্ব আয়াত ৩৬। হাজ্জ্ব সংক্রান্ত বিষয় । মাদানী সুরা । সূরা ২২। পবিত্র কুরআন
- রোজার নিয়ত
- সুরা আল হাজ্জ্ব [ মুসলমানদের অবশ্য পালনীয় ধর্মীয় কর্ম হাজ্জ্ব এবং হাজ্জ্ব সংক্রান্ত দিকটি বেশি উম্মচিত হয়েছে ] সূরা ২২। কুরআন । পার্ট-১