সূরা আম্বিয়া পার্ট-৩ [অনেক নবীর কথা বর্ণনা রয়েছে ] সূরা ২১। কুরআন ।

সূরা আম্বিয়া পার্ট-৩ [অনেক নবীর কথা বর্ণনা রয়েছে ] সূরা ২১। কুরআন ।  সূরা আল আম্বিয়া (আরবি: سورة الأنبياء‎‎ “নবীগণ”) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের একুশতম সূরা। এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ১১২ টি।

সূরা আম্বিয়া পার্ট-৩

সূরা আম্বিয়া পার্ট-৩

সূরা আম্বিয়া

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৪১)

আপনার পূর্বেও অনেক রাসূলের সাথে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা হয়েছে। অতঃপর যে বিষয়ে তারা ঠাট্টা করত তা উল্টো ঠাট্টাকারীদের উপরই আপতিত হয়েছে।

Indeed (many) Messengers were mocked before you (O Muhammad SAW), but the scoffers were surrounded by that, whereat they used to mock.

وَلَقَدِ اسْتُهْزِئَ بِرُسُلٍ مِّن قَبْلِكَ فَحَاقَ بِالَّذِينَ سَخِرُوا مِنْهُم مَّا كَانُوا بِهِ يَسْتَهْزِؤُون

Walaqadi istuhzi-a birusulin min qablika fahaqa biallatheena sakhiroo minhum ma kanoo bihi yastahzi-oona

YUSUFALI: Mocked were (many) messenger before thee; But their scoffers were hemmed in by the thing that they mocked.

PICKTHAL: Messengers before thee, indeed, were mocked, but that whereat they mocked surrounded those who scoffed at them.

SHAKIR: And certainly messengers before you were scoffed at, then there befell those of them who scoffed that at which they had scoffed.

KHALIFA: Messengers before you have been ridiculed, and, consequently, those who ridiculed them incurred the retribution for their ridiculing.

৪০। কেবল তাই নয়, উহা তাদের উপর আসতে পারে অতর্কিত ভাবে এবং তা তাদের হতবুদ্ধি করে দেবে। উহা নিবারণ করার কোন শক্তিই তাদের থাকবে না। [ তখন ] ওদের কোন অবকাশও দেয়া হবে না।

৪১। তোমার পূর্বে [ অনেক ] রাসুলকে বিদ্রূপ করা হয়েছিলো। পরিণামে তারা যা নিয়ে ঠাট্টা – বিদ্রূপ করতো তা বিদ্রূপকারীদের পরিবেষ্টন করবে ২৭০১।

২৭০১। অনুরূপ আয়াতের জন্য দেখুন [ ৬ : ১০ ] আয়াত এবং টিকা ৮৪৩। কাফেররা যা নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রূপ করতো সেই ব্যঙ্গ বিদ্রূপের শাস্তি তাদের ঘিরে ধরবে।

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৪২)

বলুনঃ ‘রহমান’ থেকে কে তোমাদেরকে হেফাযত করবে রাত্রে ও দিনে। বরং তারা তাদের পালনকর্তার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে।

Say: ”Who can guard and protect you in the night or in the day from the (punishment of the) Most Beneficent (Allâh)?” Nay, but they turn away from the remembrance of their Lord.

قُلْ مَن يَكْلَؤُكُم بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ مِنَ الرَّحْمَنِ بَلْ هُمْ عَن ذِكْرِ رَبِّهِم مُّعْرِضُونَ

Qul man yaklaokum biallayli waalnnahari mina alrrahmani bal hum AAan thikri rabbihim muAAridoona

YUSUFALI: Say: “Who can keep you safe by night and by day from (the Wrath of) (Allah) Most Gracious?” Yet they turn away from the mention of their Lord.

PICKTHAL: Say: Who guardeth you in the night or in the day from the Beneficent? Nay, but they turn away from mention of their Lord!

SHAKIR: Say: Who guards you by night and by day from the Beneficent Allah? Nay, they turn aside at the mention of their Lord.

KHALIFA: Say, “Who can protect you from the Most Gracious during the night or during the day?” Indeed, they are totally oblivious to the message of their Lord.

৪২। বল, ” পরম করুনাময় [আল্লাহ্‌র ক্রোধ ] থেকে রাত্রিতে ও দিনে কে তোমাদের রক্ষা করবে ” ২৭০২। তথাপি তারা তাদের প্রভুর উল্লেখে মুখ ফিরিয়ে নেয়।

২৭০২। আল্লাহ্‌ রাহ্‌মানুর রহীম। তাঁর অপার করুণায় সারা বিশ্ব জাহান বিধৌত। তাঁর দয়া ও করুণা সত্বেও যদি কেউ তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, তবে সারা বিশ্ব ভূবনে কে আছে যে তাকে আল্লাহ্‌র শাস্তি থেকে রক্ষা করবে ? আল্লাহ্‌র শাস্তি যে কোন মূহুর্তে নেমে আসতে পারে।

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৪৩)

তবে কি আমি ব্যতীত তাদের এমন দেব-দেবী আছে যারা তাদেরকে রক্ষা করবে? তারা তো নিজেদেরই সাহায্য করতে সক্ষম নয় এবং তারা আমার মোকাবেলায় সাহায্যকারীও পাবে না।

Or have they âliha (gods) who can guard them from Us? They have no power to help themselves, nor can they be protected from Us (i.e. from Our Torment).

أَمْ لَهُمْ آلِهَةٌ تَمْنَعُهُم مِّن دُونِنَا لَا يَسْتَطِيعُونَ نَصْرَ أَنفُسِهِمْ وَلَا هُم مِّنَّا يُصْحَبُونَ

Am lahum alihatun tamnaAAuhum min doonina la yastateeAAoona nasra anfusihim wala hum minna yushaboona

YUSUFALI: Or have they gods that can guard them from Us? They have no power to aid themselves, nor can they be defended from Us.

PICKTHAL: Or have they gods who can shield them from Us? They cannot help themselves nor can they be defended from Us.

SHAKIR: Or, have they gods who can defend them against Us? They shall not be able to assist themselves, nor shall they be defended from Us.

KHALIFA: Do they have gods who can protect them from us? They cannot even help themselves. Nor can they accompany one another when they are summoned to face us.

৪৩। তাহলে তাদের দেব-দেবী কি তাদের আমার থেকে রক্ষা করতে পারবে ? তাদের নিজেদেরই সাহায্য করার ক্ষমতা নাই , আমার বিরুদ্ধে তারা আত্মরক্ষাও করতে পারে না।

৪৪। আমি এ সব লোককে এবং এদের পিতৃপুরুষদের এই জীবনে [ সমৃদ্ধি ] ভোগ সম্ভার দিয়েছিলাম যতক্ষণ না [সমৃদ্ধির ] সময়কাল তাদের জন্য দীর্ঘ হয়েছিলো ২৭০৪। ওরা কি দেখতে পাচ্ছে না যে আমি ওদের দেশের চারিদিক থেকে ওদের নিয়ন্ত্রণকে সঙ্কুচিত করে আনছি ? ২৭০৫। এর পরেও কি তারাই জয়ী হবে ?

২৭০৪। “Umr” অথবা “Umur” অর্থ আয়ু, প্রজন্ম, প্রর্যায়, সময়, জীবনকাল ইত্যাদি। ইংরেজী অনুবাদ হয়েছে “period” বা পর্যায় বা কাল অধিক উপযোগী হবে কারণ শব্দটি দ্বারা বহু প্রজন্মকে বোঝানো হয়েছে যেমন পিতা, ছেলে, তার ছেলে ইত্যাদি।

২৭০৫। ইসলামের প্রথম উন্মেষ ঘটে মক্কা নগরীতে। কিন্তু এর প্রচারের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, ইসলামের বিজয় শুরু হয় মক্কার দূরবর্তী স্থান থেকে। ধীরে ধীরে তা সামাজিক, ভৌগোলিক ও দেশের সীমারেখাকে অতিক্রম করে বিস্তৃতি লাভ করে।

ফলে মক্কার কাফেরদের অধিকারের সীমানা ধীরে ধীরে সঙ্কুচিত হয়ে আসে। এ সবই ঘটে আল্লাহ্‌র হুকুমে। সামাজিক সীমারেখা বলতে বুঝানো হয়েছে যে, মক্কার অভ্যন্তরে যারা গরীব , নির্যাতিত , নিপীড়িত ও ক্রীতদাস তারা ইসলাম গ্রহণ করে।

ভৌগলিক ও দেশের সীমারেখা নির্দ্দেশ করেছে ইসলামের প্রসার শুরু হয় মদিনা থেকে যা মক্কার কেন্দ্রবিন্দু থেকে বহু দূরে। ধীরে ধীরে ইসলাম মদিনার সীমান্ত অতিক্রম করে বিস্তৃতি লাভ করে। কোরেশরাই হচ্ছে সর্বশেষে যারা ইসলাম গ্রহণ করে।

সম্পূর্ণ ঘটনাটিকে এ ভাবে প্রকাশ করা হয়েছে, “আমি ওদের দেশকে চর্তুদ্দিক হতে সঙ্কুচিত করে আনছি।” বৃত্তকে ধীরে ধীরে ছোট করে যেভাবে কেন্দ্রের দিকে একটি বিন্দুতে নিয়ে আসা যায় ঠিক সেভাবে কাফেরদের পরিধিকে ধীরে ধীরে সংকুচিত করে আনা হয়েছে। আয়াতটি যদিও ইসলামের প্রচার ও বিজয়কে তুলে ধরা হয়েছে কিন্তু এর আবেদন সার্বজনীন – যুগ কাল অতিক্রান্ত।

যুগে যুগে আল্লাহ্‌র বাণী সর্ব প্রথম গরীব এবং সমাজের নিম্নে অবস্থানকারীদের মধ্যে প্রসার লাভ করবে। কারণ তাদের হৃদয় ঐশ্বর্য এবং ক্ষমতার প্রভাবে কলুষিত হয়ে যায় নাই। সম্পদ ও ক্ষমতা মানুষের অন্তরে উদ্ধত অহংকারের জন্ম দেয়। ফলে মিথ্যাকে মহিমান্বিত করে দেখার প্রবণতা জন্মে। কিন্তু তাদের অবস্থান স্থায়ী হয় না।

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৪৪)

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৪৫)

বলুনঃ আমি তো কেবল ওহীর মাধ্যমেই তোমাদেরকে সতর্ক করি, কিন্তু বধিরদেরকে যখন সতর্ক করা হয়, তখন তারা সে সতর্কবাণী শোনে না।

Say (O Muhammad SAW): ”I warn you only by the revelation (from Allâh and not by the opinion of the religious scholars and others). But the deaf (who follow the religious scholars and others blindly) will not hear the call, (even) when they are warned [(i.e. one should follow only

the Qur’ân and the Sunnah (legal ways, orders, acts of worship, statements of Prophet Muhammad SAW , as the Companions of the Prophet SAW did)].

قُلْ إِنَّمَا أُنذِرُكُم بِالْوَحْيِ وَلَا يَسْمَعُ الصُّمُّ الدُّعَاء إِذَا مَا يُنذَرُونَ

Qul innama onthirukum bialwahyi wala yasmaAAu alssummu aldduAAaa itha ma yuntharoona

YUSUFALI: Say, “I do but warn you according to revelation”: But the deaf will not hear the call, (even) when they are warned!

PICKTHAL: Say (O Muhammad, unto mankind): I warn you only by the Inspiration. But the deaf hear not the call when they are warned.

SHAKIR: Say: I warn you only by revelation; and the deaf do not hear the call whenever they are warned.

KHALIFA: Say, “I am warning you in accordance with divine inspiration.” However, the deaf cannot hear the call, when they are warned.

৪৫। বল, ” আমি তো কেবল প্রত্যাদেশ অনুযায়ী সর্তক করে থাকি।” কিন্তু বধির তো ডাক শুনতে পারবে না যখন তাদের সর্তক করা হবে ২৭০৬।

২৭০৬। যে জেগে জেগে ঘুমায় তাকে যেমন জাগানো যায় না, সেরূপ যে শুনতে চায় না তার অন্তরে কিছু প্রবেশ করে না। তাকে কিছু শোনানো যায় না। ব্যক্তির যখন এরূপ অবস্থা প্রাপ্ত হয় সেই অবস্থাকেই এখানে বধিরতার সাথে তুলনা করা হয়েছে।

যখন কেউ আল্লাহ্‌র করুণাময় আহ্বানকে ইচ্ছাকৃত ভাবে প্রত্যাখান করে, শ্রবণশক্তিকে বধির করে দেয়, তখন তার সেই কাজের দায়-দায়িত্ব ও পরিণতি তার নিজের। এ সব অবিমৃষ্যকারী কাপুরুষদের শেষ আচরণ পরবর্তী আয়াতে তুলে ধরা হয়েছে। যখন আল্লাহ্‌র শাস্তি তাদের স্পর্শ করবে।

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৪৬)

আপনার পালনকর্তার আযাবের কিছুমাত্রও তাদেরকে স্পর্শ করলে তারা বলতে থাকবে, হায় আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা অবশ্যই পাপী ছিলাম।

And if a breath (minor calamity) of the Torment of your Lord touches them, they will surely cry: ”Woe unto us! Indeed we have been Zâlimûn (polytheists and wrong-doers, etc.).

وَلَئِن مَّسَّتْهُمْ نَفْحَةٌ مِّنْ عَذَابِ رَبِّكَ لَيَقُولُنَّ يَا وَيْلَنَا إِنَّا كُنَّا ظَالِمِينَ
Wala-in massat-hum nafhatun min AAathabi rabbika layaqoolunna ya waylana inna kunna thalimeena

YUSUFALI: If but a breath of the Wrath of thy Lord do touch them, they will then say, “Woe to us! we did wrong indeed!”

PICKTHAL: And if a breath of thy Lord’s punishment were to touch them, they assuredly would say: Alas for us! Lo! we were wrong-doers.

SHAKIR: And if a blast of the chastisement of your Lord were to touch them, they will certainly say: O woe to us! surely we were unjust.

KHALIFA: When a sample of your Lord’s retribution afflicts them, they readily say, “We were indeed wicked.”

৪৬। যদি তোমার প্রভুর ক্রোধের সামান্য নিঃশ্বাসও তাদের স্পর্শ করে, তারা তখন বলে উঠবে, ” দুর্ভাগ্য আমাদের! প্রকৃতই আমরা পাপী।”

৪৭। শেষ বিচারের দিনে আমি ন্যায়ের মানদণ্ড প্রতিষ্ঠা করবো, যেনো কোন আত্মার প্রতি সামান্য পরিমাণ অন্যায়ও করা না হয়। [ কর্ম ] যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয়, তবুও আমি তা [ হিসাবের জন্য ] উপস্থিত করবো ২৭০৭। এবং হিসাব গ্রহণে আমিই যথেষ্ট ২৭০৮।

২৭০৭। শুধু আমদের জীবনই নয়, সারা বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের সকল কিছুর হিসাব আল্লাহ্‌র নখদর্পনে। অতিক্ষুদ্র জিনিষও তাঁর অজ্ঞাত নয়। মহাকালের গর্ভে কিছুই হারিয়ে যায় না।

২৭০৮। ” হিসাব গ্রহণকারীরূপে আমিই যথেষ্ট।” এই বাক্যটির মাধ্যমে আল্লাহ্‌র ক্ষমতাকে প্রকাশ করা হয়েছে। আল্লাহ্‌র হিসাব নির্ভুল , এই হিসাব গ্রহণের জন্য তাঁর কোন সাহায্যকারীর প্রয়োজন হয় না। এই হিসাব গ্রহণ সম্পূর্ণ নিখুঁত ও নির্ভুল।

পৃথিবীর মানুষের হিসাব নিকাশের জন্য বহু ব্যক্তি ,কাগজপত্র, সাহায্য-সহযোগিতার সাহায্য গ্রহণ প্রয়োজন। কারণ তার জ্ঞান সীমাবদ্ধ। যা সে বুঝতে পারে না, তার জন্য অন্যের সাহায্য সহযোগীতার প্রয়োজন হয়। আল্লাহ্‌ অসীম ক্ষমতার অধিকারী। তাঁর অগোচরে বিশ্বচরাচরের কোনও ঘটনাই ঘটা সম্ভব নয়।

এমন কি মানুষের অন্তরের লুক্কায়িত চিন্তা ভাবনাও আল্লাহ্‌র নিকট দিবালোকের ন্যায় ভাস্বর। তাঁর বিচার হচ্ছে সর্বোচ্চ ন্যায় এবং নির্ভুল এবং সম্পূর্ণ। কারণ দৃশ্য -অদৃশ্য , স্পষ্ট -অস্পষ্ট, ভিতর – বাহির , মানুষের চরিত্রের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অনুভূতি কর্মের উদ্দেশ্য বা নিয়ত সবই আল্লাহ্‌র নিকট দিবালোকের ন্যায় ভাস্বর।

আল্লাহ্‌র অগোচর কিছুই নাই। তিনি সব কিছুরই হিসাব গ্রহণে তৎপর। এই আয়াতটিকে [ ২১ : ৪৭ ] আয়াতের [ ১৮: ১০৪ – ১০৫ ] সাথে তুলনীয়। আয়াত [ ১৮ : ১০৪ – ১০৫ ] এ উল্লেখ করা হয়েছে যে, মানুষের সকল কর্মই আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যে নিবেদিত হয় না।

মোনাফেকদের সকল সৎকর্মই হয় লোক দেখানো, এবং আত্মগর্ব ও আত্ম প্রশংসার উদ্দেশ্যে। এসব কাজ আল্লাহ্‌র চোখে অর্থহীন, মূল্যহীন। এই আয়াতে [ ৪৭ ] বলা হয়েছে ” আল্লাহ্‌ হিসাব গ্রহণে যথেষ্ট।” দুইটি আয়াতের মধ্যে সামঞ্জস্য বিদ্যমান , আল্লাহ্‌র বিচার ন্যায়বিচার কারণ সেখানে দৃশ্য – অদৃশ্য সকল কিছুরই মূল্যায়ন ঘটে।

সূরা আম্বিয়া

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৪৭)

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৪৮)

আমি মূসা ও হারুণকে দান করেছিলাম মীমাংসাকারী গ্রন্থ, আলো ও উপদেশ, আল্লাহ ভীরুদের জন্যে

And indeed We granted to Mûsa (Moses) and Hârûn (Aaron) the criterion (of right and wrong), and a shining light [i.e. the Taurât (Torah)] and a Reminder for Al-Muttaqûn (the pious – see V.2:2).

وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَى وَهَارُونَ الْفُرْقَانَ وَضِيَاء وَذِكْرًا لِّلْمُتَّقِينَ
Walaqad atayna moosa waharoona alfurqana wadiyaan wathikran lilmuttaqeena

YUSUFALI: In the past We granted to Moses and Aaron the criterion (for judgment), and a Light and a Message for those who would do right,-

PICKTHAL: And We verily gave Moses and Aaron the Criterion (of right and wrong) and a light and a Reminder for those who keep from evil,

SHAKIR: And certainly We gave to Musa and Haroun the Furqan and a light and a reminder for those who would guard (against evil).

KHALIFA: We gave Moses and Aaron the Statute Book, a beacon, and a reminder for the righteous.

৪৮। অতীতে মুসা ও হারুণকে [ ন্যায় অন্যায় পার্থক্যকারী ] মানদণ্ড প্রদান করেছিলাম ২৭০৯ এবং [ জীবন পথের ] আলো ও উপদেশ [দিয়েছিলাম ] , তাদের জন্য যারা সৎ পথে চলে –

২৭০৯। দেখুন আয়াত [ ২ : ৫৩ ] এবং টিকা ৬৮ যেখানে ” ফুরকান ” শব্দটির ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই আয়াতে তিনটি জিনিষের উল্লেখ আছে যা হযরত মুসা ও হারুনকে আল্লাহ্‌ দান করেনঃ ১) “ফুরকান ” – আল্লাহ্‌র নিদর্শন যা ন্যায় ও অন্যায়ের পার্থক্যকারী,

সত্য – মিথ্যার মধ্যে পার্থক্যকারী. ভালো – মন্দের মধ্যে পার্থক্যকারী , ন্যায় – বিচারের মানদণ্ডস্বরূপ। ২) জ্যোতি – মানবাত্মারর জন্য আলো , অর্থাৎ প্রত্যাদেশের মাধ্যমে অন্ধকার থেকে আত্মাকে হেদায়েতের আলোতে নিয়ে আসা। ৩) উপদেশ অর্থাৎ তাওরাত গ্রন্থ যা আল্লাহ্‌ হযরত মুসাকে দান করেন, যা হারুন ও তার সহযোগীরা অনুসরণ করেন সাধারণ মানুষদের হেদায়েতের জন্য।

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৪৯)

যারা না দেখেই তাদের পালনকর্তাকে ভয় করে এবং কেয়ামতের ভয়ে শঙ্কিত।
Those who fear their Lord without seeing Him, while they are afraid of the Hour.

الَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُم بِالْغَيْبِ وَهُم مِّنَ السَّاعَةِ مُشْفِقُونَ

Allatheena yakhshawna rabbahum bialghaybi wahum mina alssaAAati mushfiqoona

YUSUFALI: Those who fear their Lord in their most secret thoughts, and who hold the Hour (of Judgment) in awe.

PICKTHAL: Those who fear their Lord in secret and who dread the Hour (of doom).

SHAKIR: (For) those who fear their Lord in secret and they are fearful of the hour.

KHALIFA: The ones who reverence their Lord, even when alone in their privacy, and they worry about the Hour.

৪৯। যারা তাদের [ অন্তরের ] নিভৃত চিন্তাতেও আল্লাহকে ভয় পায় এবং শেষ বিচারের দিন সম্বন্ধে থাকে ভীত সন্ত্রস্ত ২৭১০।

২৭১০। লক্ষ্য করুন তিন ধরণের ভয়ের উল্লেখ আছে আয়াতে [ ২১ : ৪৮ – ৪৯ ] ‘মুত্তাকী’ অর্থাৎ যারা ‘তাকওয়া’ অবলম্বন করে। ‘তাকওয়া’ অর্থ আল্লাহ্‌ ভীতি তবে এই ভয় শাস্তির ভয় নয়। এই ভয় প্রিয়জনের মনে ব্যাথা দেওয়ার ভয়। এই ভয়ের উৎপত্তি আল্লাহ্‌র প্রতি তীব্র ভালোবাসা থেকে জন্ম। আল্লাহ্‌র নামে তাদের চোখ অশ্রুতে ভরে যায় আনন্দে , কৃতজ্ঞতায় ,ভালোবাসায়, এদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে : এরা হলেন পূত পবিত্র চরিত্রের অধিকারী ,

ন্যায়ের পথে যারা ধ্বজাধারী। এরা হলেন সর্বোচ্চ। ২) “Khashyat” – যারা না দেখেও তার প্রতিপালককে ভয় পায়। এ সব লোক তাদের অন্তরে এই ধ্যান ধারণা রাখে যে তারা আল্লাহ্‌র সম্মুখে সর্বদা উপস্থিত। সুতারাং মহামান্য আল্লাহ্‌র ভয়ে তারা প্রকাশ্যে বা গোপনে যে কোনও সময়ে আল্লাহ্‌ কর্তৃক নিষিদ্ধ কাজ করতে ভয় পায়।

তারা প্রাণপণে চেষ্টা করে আল্লাহ্‌ কর্তৃক নির্দ্দিষ্ট মানদণ্ড অনুযায়ী জীবনকে পরিচালিত করতে। এরাও পূণ্যাত্মা , তবে প্রথম শ্রেণীর অর্থাৎ ‘তাকওয়া’ অবলম্বনকারীদের নিম্নে এদের অবস্থান। ‘তাকওয়ার’ জন্ম আল্লাহ্‌র প্রতি ভালোবাসা থেকে অপর পক্ষে “Khashyat” এর জন্ম আল্লাহ্‌র প্রতি ভয় থেকে। আর এক ধরণের লোক আছেন যারা পরকালের শাস্তির ভয়ে [ Ishfaq ] পাপ থেকে বিরত থাকেন।

এর ফলেও তারা মুত্তাকী অর্জন করেন, এরাও পূণ্যাত্মা বলে পরিগণিত তবে, তিন শ্রেণীর মধ্যে এদের অবস্থান সর্বনিম্নে। সম্ভবতঃ উপরের আয়াতে মানদণ্ড বা ফুরকান , জ্যোতি, ও উপদেশের কথা বলা হয়েছে এই তিন শ্রেণীর লোক তারই অনুরূপ।

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৫০)

এবং এটা একটা বরকতময় উপদেশ, যা আমি নাযিল করেছি। অতএব তোমরা কি একে অস্বীকার কর?
And this is a blessed Reminder (the Qur’ân) which We have sent down, will you then (dare to) deny it?

وَهَذَا ذِكْرٌ مُّبَارَكٌ أَنزَلْنَاهُ أَفَأَنتُمْ لَهُ مُنكِرُونَ
Wahatha thikrun mubarakun anzalnahu afaantum lahu munkiroona

YUSUFALI: And this is a blessed Message which We have sent down: will ye then reject it?
PICKTHAL: This is a blessed Reminder that we have revealed: Will ye then reject it?

SHAKIR: And this is a blessed Reminder which We have revealed; will you then deny it?
KHALIFA: This too is a blessed reminder that we sent down. Are you denying it?

৫০। এবং আমি এই কল্যাণময় উপদেশ প্রেরণ করেছি। তবুও কি তোমরা একে প্রত্যাখান করবে ? ২৭১১

২৭১১। হযরত মুহম্মদের [ সা ] কথা এখানে বলা হয়েছে। যিনি হযরত মুসা এবং তাঁর কিতাব অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ, তবুও কি তোমরা অস্বীকার কর ?

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৫১)

আর, আমি ইতিপূর্বে ইব্রাহীমকে তার সৎপন্থা দান করেছিলাম এবং আমি তার সম্পর্কে সম্যক পরিজ্ঞাত ও ছিলাম।

And indeed We bestowed aforetime on Ibrâhim (Abraham) his (portion of) guidance, and We were Well-Acquainted with him (as to his Belief in the Oneness of Allâh, etc.).

وَلَقَدْ آتَيْنَا إِبْرَاهِيمَ رُشْدَهُ مِن قَبْلُ وَكُنَّا بِه عَالِمِينَ
Walaqad atayna ibraheema rushdahu min qablu wakunna bihi AAalimeena

YUSUFALI: We bestowed aforetime on Abraham his rectitude of conduct, and well were We acquainted with him.

PICKTHAL: And We verily gave Abraham of old his proper course, and We were Aware of him,

SHAKIR: And certainly We gave to Ibrahim his rectitude before, and We knew him fully well.

KHALIFA: Before that, we granted Abraham his guidance and understanding, for we were fully aware of him.

রুকু – ৫

৫১। পূর্বে আমি ইব্রাহিমকে ন্যায় – অন্যায়ের জ্ঞান দান করেছিলাম ২৭১২ এবং আমি তাঁর সম্বন্ধে সম্যক অবগত ছিলাম ২৭১৩।

২৭১২। “Rushd” সঠিক চারিত্রিক গুণাবলী, যা তাঁকে ‘হানিফ’ নামের উপযুক্ত করেছিলো। দেখুন আয়াত [ ২: ১৩৫ ] এবং অন্যান্য আয়াত।

২৭১৩। হযরত ইব্রাহীমের উপাধি ছিলো ” খলিল উল্লাহ্‌ ” [ ৪ : ১২৫ ] বা আল্লাহ্‌র বন্ধু।

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৫২)

যখন তিনি তাঁর পিতা ও তাঁর সম্প্রদায়কে বললেনঃ এই মূর্তিগুলো কী, যাদের তোমরা পূজারী হয়ে বসে আছ।

When he said to his father and his people: ”What are these images, to which you are devoted?”

إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِ مَا هَذِهِ التَّمَاثِيلُ الَّتِي أَنتُمْ لَهَا عَاكِفُونَ
Ith qala li-abeehi waqawmihi ma hathihi alttamatheelu allatee antum laha AAakifoona

YUSUFALI: Behold! he said to his father and his people, “What are these images, to which ye are (so assiduously) devoted?”

PICKTHAL: When he said unto his father and his folk: What are these images unto which ye pay devotion?

SHAKIR: When he said to his father and his people: What are these images to whose worship you cleave?

KHALIFA: He said to his father and his people, “What are these statues to which you are devoting yourselves?”

৫২। স্মরণ কর ! সে তার পিতাকে এবং তার সম্প্রদায়কে বলেছিলো, ” এগুলি কিসের মূর্তি যার প্রতি তোমরা [ এতটা ] একাগ্র ভাবে নিবেদিত ? ” ২৭১৪

২৭১৪। হযরত ইব্রাহীমের উল্লেখ বহু সূরাতে আছে। সূরা [ ১৯ : ৪২ – ৪৯ ] আয়াতে হযরত ইব্রাহীমের সাথে তাঁর পিতার দ্বন্দের উল্লেখ আছে। যে আয়াতগুলির মাধ্যমে দেখানো হয়েছে যে, আল্লাহ্‌র প্রতি কর্তব্য কর্মে একজন খোদভীরু লোক কিভাবে তাঁর পিতার ন্যায় নিকটজন কাফেরের সাথে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপন করবে।

এই আয়াতে [ ২১ : ৫২ ] হযরত ইব্রাহীমের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে যে, কিভাবে একজন খোদাভীরু লোক খারাপ সম্প্রদায়ের সাথে ব্যবহার করবে এবং কাফের সম্প্রদায়কে পরাজিত করবে। ইব্রাহীমের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে যে কি ভাবে খোদভীরু বান্দা পাপের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। শত অত্যাচার ,

এমন কি আগুনে নিক্ষেপের মত অত্যাচারেও খোদাভীরু বান্দারা আত্মপ্রত্যয়ী ও দৃঢ় থাকেন। ফলে আল্লাহ্‌র করুণা তাদের উপরে বর্ষিত হয়। তাদের উপরে নির্যাতনের আগুন তাদের জন্য শান্তিরূপে নেমে আসে।

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৫৩)

তারা বললঃ আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে এদের পুজা করতে দেখেছি।
They said:”We found our fathers worshipping them.”

قَالُوا وَجَدْنَا آبَاءنَا لَهَا عَابِدِينَ

Qaloo wajadna abaana laha AAabideena

YUSUFALI: They said, “We found our fathers worshipping them.”
PICKTHAL: They said: We found our fathers worshippers of them.

SHAKIR: They said: We found our fathers worshipping them.
KHALIFA: They said, “We found our parents worshiping them.”

৫৩। তারা বলেছিলো , ” আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদের এদের পূঁজা করতে দেখেছি।”

৫৪। সে বলেছিলো , ” তোমরা এবং তোমাদের পিতৃপুরুষেরা অবশ্যই স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছ।”

৫৫। তারা বলেছিলো, “তুমি কি আমাদের নিকট সত্য এনেছ, না তুমি তাদের একজন যারা ঠাট্টা বিদ্রূপ করে ? ” ২৭১৫

২৭১৫। হযরত ইব্রাহীম জীবনকে বিবেচনা করতেন অত্যন্ত গুরুতররূপে, যেখানে তাঁর সম্প্রদায়ের নিকট জীবনের অর্থ ছিলো গুরুত্বহীন। তারা ধর্মের নামে শুধুমাত্র পূর্বপুরুষদের আনুষ্ঠানিকতাকেই সত্য বলে মনে করতো। যেহেতু হযরত ইব্রাহীম ছিলেন সত্যের পূজারী , সে কারণে তিনি তাঁর সম্প্রদায়ের দ্বারা লাঞ্ছিত হন। কিন্তু কোনও লাঞ্ছনাই তাঁকে ভীত করতে পারে নাই। তিনি ছিলেন সত্য পথের নির্ভিক সৈন্য ফলে আল্লাহ্‌ তাঁর জন্য বিজয় নির্ধারণ করেন।

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৫৪)

তিনি বললেনঃ তোমরা প্রকাশ্য গোমরাহীতে আছ এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও।
He said: ”Indeed you and your fathers have been in manifest error.”

قَالَ لَقَدْ كُنتُمْ أَنتُمْ وَآبَاؤُكُمْ فِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ
Qala laqad kuntum antum waabaokum fee dalalin mubeenin

YUSUFALI: He said, “Indeed ye have been in manifest error – ye and your fathers.”
PICKTHAL: He said: Verily ye and your fathers were in plain error.

SHAKIR: He said: Certainly you have been, (both) you and your fathers, in manifest error.
KHALIFA: He said, “Indeed, you and your parents have gone totally astray.”

৫৩। তারা বলেছিলো , ” আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদের এদের পূঁজা করতে দেখেছি।”

৫৪। সে বলেছিলো , ” তোমরা এবং তোমাদের পিতৃপুরুষেরা অবশ্যই স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছ।”

৫৫। তারা বলেছিলো, “তুমি কি আমাদের নিকট সত্য এনেছ, না তুমি তাদের একজন যারা ঠাট্টা বিদ্রূপ করে ? ” ২৭১৫

২৭১৫। হযরত ইব্রাহীম জীবনকে বিবেচনা করতেন অত্যন্ত গুরুতররূপে, যেখানে তাঁর সম্প্রদায়ের নিকট জীবনের অর্থ ছিলো গুরুত্বহীন। তারা ধর্মের নামে শুধুমাত্র পূর্বপুরুষদের আনুষ্ঠানিকতাকেই সত্য বলে মনে করতো। যেহেতু হযরত ইব্রাহীম ছিলেন সত্যের পূজারী , সে কারণে তিনি তাঁর সম্প্রদায়ের দ্বারা লাঞ্ছিত হন। কিন্তু কোনও লাঞ্ছনাই তাঁকে ভীত করতে পারে নাই। তিনি ছিলেন সত্য পথের নির্ভিক সৈন্য ফলে আল্লাহ্‌ তাঁর জন্য বিজয় নির্ধারণ করেন।

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৫৫)

তারা বললঃ তুমি কি আমাদের কাছে সত্যসহ আগমন করেছ, না তুমি কৌতুক করছ?
They said: ”Have you brought us the truth, or are you one of those who play about?”

قَالُوا أَجِئْتَنَا بِالْحَقِّ أَمْ أَنتَ مِنَ اللَّاعِبِينَ
Qaloo aji/tana bialhaqqi am anta mina allaAAibeena

YUSUFALI: They said, “Have you brought us the Truth, or are you one of those who jest?”
PICKTHAL: They said: Bringest thou unto us the truth, or art thou some jester?

SHAKIR: They said: Have you brought to us the truth, or are you one of the triflers?
KHALIFA: They said, “Are you telling us the truth, or are you playing?”

৫৩। তারা বলেছিলো , ” আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদের এদের পূঁজা করতে দেখেছি।”

৫৪। সে বলেছিলো , ” তোমরা এবং তোমাদের পিতৃপুরুষেরা অবশ্যই স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছ।”

৫৫। তারা বলেছিলো, “তুমি কি আমাদের নিকট সত্য এনেছ, না তুমি তাদের একজন যারা ঠাট্টা বিদ্রূপ করে ? ” ২৭১৫

২৭১৫। হযরত ইব্রাহীম জীবনকে বিবেচনা করতেন অত্যন্ত গুরুতররূপে, যেখানে তাঁর সম্প্রদায়ের নিকট জীবনের অর্থ ছিলো গুরুত্বহীন। তারা ধর্মের নামে শুধুমাত্র পূর্বপুরুষদের আনুষ্ঠানিকতাকেই সত্য বলে মনে করতো। যেহেতু হযরত ইব্রাহীম ছিলেন সত্যের পূজারী ,

সে কারণে তিনি তাঁর সম্প্রদায়ের দ্বারা লাঞ্ছিত হন। কিন্তু কোনও লাঞ্ছনাই তাঁকে ভীত করতে পারে নাই। তিনি ছিলেন সত্য পথের নির্ভিক সৈন্য ফলে আল্লাহ্‌ তাঁর জন্য বিজয় নির্ধারণ করেন।

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৫৬)

তিনি বললেনঃ না, তিনিই তোমাদের পালনকর্তা যিনি নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের পালনকর্তা, যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন; এবং আমি এই বিষয়েরই সাক্ষ্যদাতা।

He said: ”Nay, your Lord is the Lord of the heavens and the earth, Who created them and of that I am one of the witnesses.

قَالَ بَل رَّبُّكُمْ رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ الَّذِي فَطَرَهُنَّ وَأَنَا عَلَى ذَلِكُم مِّنَ الشَّاهِدِينَ
Qala bal rabbukum rabbu alssamawati waal-ardi allathee fatarahunna waana AAala thalikum mina alshshahideena

YUSUFALI: He said, “Nay, your Lord is the Lord of the heavens and the earth, He Who created them (from nothing): and I am a witness to this (Truth).

PICKTHAL: He said: Nay, but your Lord is the Lord of the heavens and the earth, Who created them; and I am of those who testify unto that.

SHAKIR: He said: Nay! your Lord is the Lord of the heavens and the earth, Who brought them into existence, and I am of those who bear witness to this:

KHALIFA: He said, “Your only Lord is the Lord of the heavens and the earth, who created them. This is the testimony to which I bear witness.

৫৬। সে বলেছিলো, ” না, তোমাদের প্রভু তো আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর প্রভু, যিনি উহাদের [ শূন্য থেকে ] সৃষ্টি করেছেন। এবং আমি এই [ সত্যের ] একজন সাক্ষী।

৫৭। “আল্লাহ্‌র শপথ, তোমরা পিছন ফিরে চলে গেলে তোমাদের মূর্তিগুলি সম্বন্ধে আমার পরিকল্পনা আছে ২৭১৭। ”

২৭১৭। হযরত ইব্রাহীম তাঁর সম্প্রদায়ের নিকট মূর্তিপূঁজার অসারতা ও মূর্তিদের ক্ষমতাহীনতা প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা গোপনে বা শঠতাপূর্ণ উপায়ে করতে চান নাই। সে কারণে তিনি বলেছিলেন যে, “তোমরা চলে গেলে তোমাদের মূর্তিগুলির সম্বন্ধে আমার পরিকল্পনা আছে ”

এই বাক্য দ্বারা এই মনোভাবেরই প্রকাশ পায় যে মূর্তিগুলি তাঁর সম্প্রদায়ের লোকদের রক্ষণাবেক্ষনের দ্বারা নির্ভরশীল। তাদের অবর্তমানে হযরত ইব্রাহীম তাদের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সম্ভবতঃ ইব্রাহীমের এই উক্তি তাঁর সম্প্রদায়ের লোকেরা হাল্‌কাভাবে গ্রহণ করে এবং তারা দেখতে চেয়েছিলো যে,

দেখা যাক ইব্রাহীম কি করেন। তাদের ধারণারও বাইরে ছিলো যে তাদের বংশ পরম্পরায় পূজিত মূর্তির গায়ে হাত দিতে কেউ সাহস করবে। সুতারাং তারা ইব্রাহীমকে সেখানে রেখে যায়।

সূরা আম্বিয়া

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৫৭)

আল্লাহর কসম, যখন তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে চলে যাবে, তখন আমি তোমাদের মূর্তিগুলোর ব্যাপারে একটা ব্যবস্থা অবলম্বন করব।

”And by Allâh, I shall plot a plan (to destroy) your idols after you have gone away and turned your backs.”

وَتَاللَّهِ لَأَكِيدَنَّ أَصْنَامَكُم بَعْدَ أَن تُوَلُّوا مُدْبِرِينَ
WataAllahi laakeedanna asnamakum baAAda an tuwalloo mudbireena

YUSUFALI: “And by Allah, I have a plan for your idols – after ye go away and turn your backs”..
PICKTHAL: And, by Allah, I shall circumvent your idols after ye have gone away and turned your backs.

SHAKIR: And, by Allah! I will certainly do something against your idols after you go away, turning back.
KHALIFA: “I swear by GOD, I have a plan to deal with your statues, as soon as you leave.”

৫৬। সে বলেছিলো, ” না, তোমাদের প্রভু তো আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর প্রভু, যিনি উহাদের [ শূন্য থেকে ] সৃষ্টি করেছেন। এবং আমি এই [ সত্যের ] একজন সাক্ষী।

৫৭। “আল্লাহ্‌র শপথ, তোমরা পিছন ফিরে চলে গেলে তোমাদের মূর্তিগুলি সম্বন্ধে আমার পরিকল্পনা আছে ২৭১৭। ”

২৭১৭। হযরত ইব্রাহীম তাঁর সম্প্রদায়ের নিকট মূর্তিপূঁজার অসারতা ও মূর্তিদের ক্ষমতাহীনতা প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা গোপনে বা শঠতাপূর্ণ উপায়ে করতে চান নাই। সে কারণে তিনি বলেছিলেন যে, “তোমরা চলে গেলে তোমাদের মূর্তিগুলির সম্বন্ধে আমার পরিকল্পনা আছে ” এই বাক্য দ্বারা এই মনোভাবেরই প্রকাশ পায় যে মূর্তিগুলি তাঁর সম্প্রদায়ের লোকদের রক্ষণাবেক্ষনের দ্বারা নির্ভরশীল।

তাদের অবর্তমানে হযরত ইব্রাহীম তাদের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সম্ভবতঃ ইব্রাহীমের এই উক্তি তাঁর সম্প্রদায়ের লোকেরা হাল্‌কাভাবে গ্রহণ করে এবং তারা দেখতে চেয়েছিলো যে, দেখা যাক ইব্রাহীম কি করেন। তাদের ধারণারও বাইরে ছিলো যে তাদের বংশ পরম্পরায় পূজিত মূর্তির গায়ে হাত দিতে কেউ সাহস করবে। সুতারাং তারা ইব্রাহীমকে সেখানে রেখে যায়।

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৫৮)

অতঃপর তিনি সেগুলোকে চূর্ণ-বিচুর্ণ করে দিলেন ওদের প্রধানটি ব্যতীতঃ যাতে তারা তাঁর কাছে প্রত্যাবর্তন করে।

So he broke them to pieces, (all) except the biggest of them, that they might turn to it.

فَجَعَلَهُمْ جُذَاذًا إِلَّا كَبِيرًا لَّهُمْ لَعَلَّهُمْ إِلَيْهِ يَرْجِعُونَ

FajaAAalahum juthathan illa kabeeran lahum laAAallahum ilayhi yarjiAAoona

YUSUFALI: So he broke them to pieces, (all) but the biggest of them, that they might turn (and address themselves) to it.

PICKTHAL: Then he reduced them to fragments, all save the chief of them, that haply they might have recourse to it.

SHAKIR: So he broke them into pieces, except the chief of them, that haply they may return to it.

KHALIFA: He broke them into pieces, except for a big one, that they may refer to it.

৫৮। সুতারাং সবচেয়ে বড় মূর্তিটি বাদে অন্য মূর্তিগুলি সে টুকরো টুকরো করে ভেঙ্গে ফেললো , যেনো, [ জিজ্ঞাসা করার জন্য ] তারা উহার নিকট ফিরে আসতে পারে ২৭১৮।

২৭১৮। নিষ্প্রাণ ও ক্ষমতাহীন পাথর পূজা যে লজ্জাষ্কর এ কথা প্রমাণ করার জন্য হযরত ইব্রাহীম এক বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তিনি তাঁর সম্প্রদায়ের অনুপস্থিতিতে বড় মূর্তিটি ব্যতীত অন্য মূর্তিগুলি ভেঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ করলেন। দৃশ্যটি এমন যেনো প্রতীমারা নিজেরা মারামারি করেছে এবং বড় মূর্তিটি ছোট গুলিকে ধ্বংস করেছে।

যদি সত্যি প্রতিমাদের ক্ষমতা থাকে তবে বড় মূর্তিটিকে তারা জিজ্ঞাসা করুক ঘটনাটি কি ঘটেছিলো। এই কার্য দ্বারা হযরত ইব্রাহীমের উদ্দেশ্য ছিলো তাদের দেখানো যে, তাদের উপাস্য মূর্তিগুলি পূঁজার যোগ্য নয়, এ জ্ঞান তাদের মাঝে ফিরে আসবে। এরপর তারা ইব্রাহীমের ধর্মের দিকে প্রত্যার্পন করবে।

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৫৯)

তারা বললঃ আমাদের উপাস্যদের সাথে এরূপ ব্যবহার কে করল? সে তো নিশ্চয়ই কোন জালিম।
They said: ”Who has done this to our âliha (gods)? He must indeed be one of the wrong-doers.”

قَالُوا مَن فَعَلَ هَذَا بِآلِهَتِنَا إِنَّهُ لَمِنَ الظَّالِمِينَ

Qaloo man faAAala hatha bi-alihatina innahu lamina alththalimeena
YUSUFALI: They said, “Who has done this to our gods? He must indeed be some man of impiety!”
PICKTHAL: They said: Who hath done this to our gods? Surely it must be some evil-doer.

SHAKIR: They said: Who has done this to our gods? Most surely he is one of the unjust.
KHALIFA: They said, “Whoever did this to our gods is really a transgressor.”

৫৯। তারা বলেছিলো , ” আমাদের উপাস্যগুলির কে এ দশা করেছে ? অবশ্যই সে একজন নাস্তিক মানুষ।”

৬০। তারা বলেছিলো , ” একজন যুবককে উহাদের সম্বন্ধে বলতে শুনেছি। তার নাম ইব্রাহিম ২৭১৯। ”

২৭১৯। বিভিন্ন দলের লোক বিভিন্ন বক্তব্য প্রদান করতে লাগলো। যারা ইব্রাহীমের বক্তব্য [ ৫৭ ] শুনে নাই তারা বলতে লাগলো, ” কে এই কাজ করেছে ? ” জনতার মধ্যে থেকে ইব্রাহীমের নাম উচ্চারিত হয় ফলে এক মন্ত্রণা সভা গঠন করা হয় এবং ইব্রাহীমকে জবাবদিহির জন্য উপস্থিত করা হয়।

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৬০)

কতক লোকে বললঃ আমরা এক যুবককে তাদের সম্পর্কে বিরূপ আলোচনা করতে শুনেছি; তাকে ইব্রাহীম বলা হয়।
They said: ”We heard a young man talking (against) them who is called Ibrâhim (Abraham).”

قَالُوا سَمِعْنَا فَتًى يَذْكُرُهُمْ يُقَالُ لَهُ إِبْرَاهِيمُ
Qaloo samiAAna fatan yathkuruhum yuqalu lahu ibraheemu

YUSUFALI: They said, “We heard a youth talk of them: He is called Abraham.”
PICKTHAL: They said: We heard a youth make mention of them, who is called Abraham.

SHAKIR: They said: We heard a youth called Ibrahim speak of them.
KHALIFA: They said, “We heard a youth threaten them; he is called Abraham.”

৫৯। তারা বলেছিলো , ” আমাদের উপাস্যগুলির কে এ দশা করেছে ? অবশ্যই সে একজন নাস্তিক মানুষ।”

৬০। তারা বলেছিলো , ” একজন যুবককে উহাদের সম্বন্ধে বলতে শুনেছি। তার নাম ইব্রাহিম ২৭১৯। ”

২৭১৯। বিভিন্ন দলের লোক বিভিন্ন বক্তব্য প্রদান করতে লাগলো। যারা ইব্রাহীমের বক্তব্য [ ৫৭ ] শুনে নাই তারা বলতে লাগলো, ” কে এই কাজ করেছে ? ” জনতার মধ্যে থেকে ইব্রাহীমের নাম উচ্চারিত হয় ফলে এক মন্ত্রণা সভা গঠন করা হয় এবং ইব্রাহীমকে জবাবদিহির জন্য উপস্থিত করা হয়।

সূরা আম্বিয়া
সূরা আম্বিয়া

সূরা আম্বিয়া(আয়াত ৬১)

তারা বললঃ তাকে জনসমক্ষে উপস্থিত কর, যাতে তারা দেখে।

They said: ”Then bring him before the eyes of the people, that they may testify.”

قَالُوا فَأْتُوا بِهِ عَلَى أَعْيُنِ النَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَشْهَدُونَ

Qaloo fa/too bihi AAala aAAyuni alnnasi laAAallahum yashhadoona

YUSUFALI: They said, “Then bring him before the eyes of the people, that they may bear witness.”
PICKTHAL: They said: Then bring him (hither) before the people’s eyes that they may testify.

SHAKIR: Said they: Then bring him before the eyes of the people, perhaps they may bear witness.
KHALIFA: They said, “Bring him before the eyes of all the people, that they may bear witness.”

৬১। তারা বলেছিলো, ” তাহলে , তাকে লোক সম্মুখে উপস্থিত কর, যাতে তারা সাক্ষী থাকতে পারে।”

৬২। তারা বলেছিলো , ” হে ইব্রাহিম! তুমিই কি আমাদের দেবতাগুলির এই অবস্থা করেছ ? ” ২৭২০

২৭২০। মন্ত্রণা সভার সামনে ইব্রাহীমকে উপস্থিত করা হয় এবং তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে জিজ্ঞাসা করা হয়। মূর্তি ভাঙ্গার ব্যাপারে কোনও গোপনীয়তা ছিলো না কারণ হযরত ইব্রাহীম প্রকাশ্যে প্রতীমা গুলির সম্বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেন। সুতারাং যারা তা শুনেছিলো তারা জনতার মাঝে ছিলো এবং তারাই সাক্ষ্য দিয়েছিলো। এবারে হযরত ইব্রাহীম তাদের ব্যঙ্গ করে বললেন যে,

” তোমরা আমাকে জিজ্ঞাসা কর কেন ? তোমাদের পাথরের প্রতীমাগুলিকে জিজ্ঞাসা কর না কেন ? এ কথা কি মনে হচ্ছে না যে ,এই বড় প্রতিমাটিই ঝগড়া করে ছোটগুলিকে ভেঙ্গে ফেলেছে ? যদি তারা তাদের উপাস্য প্রতীমাকে জিজ্ঞাসা না করে ,তাহলে এ কথাই প্রমাণিত হয় যে, প্রতীমাগুলির কথা বলার মত বুদ্ধিমত্তা বা ক্ষমতা নাই।” অবশ্য এই যুক্তির অবতারণা করা হয়েছে আয়াতে [ ২১ : ৬৪ – ৬৭ ]। লক্ষণীয় হচ্ছে যে,

কাফেররা যখন তাঁর আল্লাহ্‌র প্রতি একাগ্রতা ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করেছিলো , তাঁর প্রতিউত্তরে তিনি দাঁতভাঙ্গা জবাব দেন – যা তাঁর সত্যকে প্রচার ও প্রসারে সাহায্য করে।

আরও দেখুনঃ 

সূরা আম্বিয়া পার্ট-৪

সূরা আম্বিয়া – উইকিপিডিয়া

Leave a Comment