সূরা বাকারা আয়াত ২৮৩ | গাভী কুরবানী | সূরা নং ২ । মাদানী সূরা । আল কুরআন

সূরা বাকারা আয়াত ২৮৩: আল বাকারা (আরবি ভাষায়: سورة البقرة) মুসলমানদের পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের দ্বিতীয় সূরা, এর আয়াত সংখ্যা ২৮৬ টি এবং এর রূকুর সংখ্যা ৪০ টি। আল বাকারা সূরাটি মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে।

সূরা বাকারা আয়াত ২৮৩

সূরা বাকারা আয়াত ২৮৩
সূরা বাকারা আয়াত ২৮৩

বাকারা

আর তোমরা যদি প্রবাসে থাক এবং কোন লেখক না পাও তবে বন্ধকী বন্তু হস্তগত রাখা উচিত। যদি একে অন্যকে বিশ্বাস করে, তবে যাকে বিশ্বাস করা হয়, তার উচিত অন্যের প্রাপ্য পরিশোধ করা এবং স্বীয় পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় কর! তোমরা সাক্ষ্য গোপন করো না। যে কেউ তা গোপন করবে, তার অন্তর পাপপূর্ণ হবে। তোমরা যা করা, আল্লাহ সে সম্পর্কে খুব জ্ঞাত।

And if you are on a journey and cannot find a scribe, then let there be a pledge taken (mortgaging); then if one of you entrust the other, let the one who is entrusted discharge his trust (faithfully), and let him be afraid of Allâh, his Lord. And conceal not the evidence for he, who hides it, surely his heart is sinful. And Allâh is All-Knower of what you do.

وَإِن كُنتُمْ عَلَى سَفَرٍ وَلَمْ تَجِدُواْ كَاتِبًا فَرِهَانٌ مَّقْبُوضَةٌ فَإِنْ أَمِنَ بَعْضُكُم بَعْضًا فَلْيُؤَدِّ الَّذِي اؤْتُمِنَ أَمَانَتَهُ وَلْيَتَّقِ اللّهَ رَبَّهُ وَلاَ تَكْتُمُواْ الشَّهَادَةَ وَمَن يَكْتُمْهَا فَإِنَّهُ آثِمٌ قَلْبُهُ وَاللّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ

Wa-in kuntum AAala safarin walam tajidoo katiban farihanun maqboodatun fa-in amina baAAdukum baAAdan falyu-addi allathee i/tumina amanatahu walyattaqi Allaha rabbahu wala taktumoo alshshahadata waman yaktumha fa-innahu athimun qalbuhu waAllahu bima taAAmaloona AAaleemun

YUSUFALI: If ye are on a journey, and cannot find a scribe, a pledge with possession (may serve the purpose). And if one of you deposits a thing on trust with another, Let the trustee (Faithfully) discharge His trust, and let him fear his Lord. Conceal not evidence; for whoever conceals it,- His heart is tainted with sin. And Allah Knoweth all that ye do.

PICKTHAL: If ye be on a journey and cannot find a scribe, then a pledge in hand (shall suffice). And if one of you entrusteth to another let him who is trusted deliver up that which is entrusted to him (according to the pact between them) and let him observe his duty to Allah his Lord. Hide not testimony. He who hideth it, verily his heart is sinful. Allah is Aware of what ye do.

SHAKIR: And if you are upon a journey and you do not find a scribe, then (there may be) a security taken into possession; but if one of you trusts another, then he who is trusted should deliver his trust, and let him be careful (of his duty to) Allah, his Lord; and do not conceal testimony, and whoever conceals it, his heart is surely sinful; and Allah knows what you do.

KHALIFA: If you are traveling, and no scribe is available, a bond shall be posted to guarantee repayment. If one is trusted in this manner, he shall return the bond when due, and he shall observe GOD his Lord. Do not withhold any testimony by concealing what you had witnessed. Anyone who withholds a testimony is sinful at heart. GOD is fully aware of everything you do.

সূরা বাকারা আয়াত ২৮৩
সূরা বাকারা আয়াত ২৮৩

২৮৩। যদি তোমরা সফরে থাক এবং কোন লেখক না পাও, সেক্ষেত্রে কোন বন্ধকী বস্তু অধিকারে রাখবে ৩৩৪। তোমাদের একজন যদি অপরজনকে বিশ্বাস করে কোন জিনিস জমা রাখে ৩৩৫, তবে আমনতকারী যেনো [বিশ্বস্ততার সাথে] তার আমানত ফিরিয়ে দেয়; এবং তাঁর পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করে। তোমরা প্রমাণ গোপন করো না; যে তা গোপন করে, তার হৃদয় পাপ দ্বারা রঞ্জিত হয়ে যায় ৩৩৬। এবং তোমরা যা কর আল্লাহ্‌ তা জানেন।

৩৩৪। যদি কেউ সফরে থাকে এবং বাকীর ব্যাপারে যদি কেউ বিশ্বস্ততার জন্য কোন বস্তু বন্ধক নিতে চায়, তাও করতে পারে। কিন্তু বন্ধকী বস্তু দ্বারা উপকৃত হওয়া তার জন্য জায়েয নয়। সে শুধু ঋণ পরিশোধ হওয়া পর্যন্ত একে নিজের অধিকারে রাখবে। এর যাবতীয় মুনাফা আসল মালিকের প্রাপ্য।

৩৩৫। বন্ধকীর ব্যাপারে যিনি গচ্ছিত রাখেন তার উপর বিশ্বস্ততার এবং ন্যায় পরায়ণতার অঙ্গীকার করা হয়েছে। বন্ধকী জিনিস গচ্ছিত রাখা হচ্ছে আমানত রক্ষা করা। আমানতকারীর কর্তব্য হচ্ছে আমানতকৃত জিনিসের প্রকৃত তত্ত্বাবধান করা এবং ঋণ শোধের পরে তা মালিকের নিকট প্রত্যার্পন করা। আর এই কাজকে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার জন্য আল্লাহকে ভয় করার কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ- এটা একটা ধর্মীয় বিধান যে, কোনও অবস্থায়েই আমানত খেয়ানত করা চলবে না।

সূরা বাকারা আয়াত ২৮৩
সূরা বাকারা আয়াত ২৮৩

এই আমানত শুধুমাত্র টাকা পয়সা বা মূল্যবান বস্তুসামগ্রীই নয়। আমানত বহু প্রকার। উদাহরণঃ যিনি প্রশাসনে সরকারী চাকুরী করেন জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা তার জন্য আল্লাহ্‌ প্রদত্ত আমানত। যিনি ডাক্তারী করেন তার জ্ঞান ও সেবা জনগণের জন্য আল্লাহ্‌ প্রদত্ত আমানত, যিনি শিক্ষকতা করেন তার মেধা ও জ্ঞান শিক্ষার্থীর জন্য আল্লাহ্‌ কর্তৃক তার আমানত ইত্যাদি। একটু ভেবে দেখলেই দেখা যায় সমাজে আমরা প্রত্যেকেই আল্লাহ্‌র কাছে ‘আমানতের’ অঙ্গীকারে আবদ্ধ, আল্লাহ্‌ প্রদত্ত সামর্থ অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে আমাদের পরীক্ষা করা হয় আমরা এর খেয়ানত করি কিনা, এই হচ্ছে ধর্মীয় বিধান বা আল্লাহ্‌র আইন। সাধারণ আইনের সাথে আমরা একে যেনো এক করে না দেখি। কারণ সাধারণ আইন প্রণীত হয় মানুষ দ্বারা। আর ধর্মীয় আইনের প্রণেতা স্বয়ং আল্লাহ্‌। বাংলাদেশীদের বিবেচ্য তারা এই ধর্মীয় বিধান কতটুকু মানেন।

৩৩৬। লোভ-লালসায় ভরা এই পৃথিবী। এই লোভের বশবর্তী হয়েই আদম (আঃ) কে বেহেশত থেকে নির্বাসিত হতে হয়েছিল। প্রাত্যাহিক জীবনে চলার পথে আমরা অনেক সময়েই লোভের শিকার হই ঐ হযরত আদমের (আঃ) মত। দেখা যায় সত্যকে সামান্য বিকৃত করলে বা গোপন করলে বা মিথ্যা সাক্ষ্য দান করলে বিরাট জাগতিক লাভ হয়। হতে পারে তা আর্থিক বা সামাজিক। এখানে আল্লাহ্‌ এই প্রলোভনের বিরুদ্ধে আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন, সত্যকে গোপন করে মিথ্যা সাক্ষীর পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। মিথ্যা সাক্ষীর পরিণামে আমাদের নৈতিক মূল্যবোধ এবং আধ্যাত্মিক জীবন বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

সূরা বাকারা আয়াত ২৮৩
সূরা বাকারা আয়াত ২৮৩

কারণ এর ফলে আমাদের নৈতিক অধঃপতন হয়, ফলে আমাদের আধ্যত্মিক জীবনের শুভ্রতা নষ্ট হয়ে কালিমার দাগ পড়ে। আমাদের হৃদয় হয়ে পড়বে তমসাবৃত। এখানে আয়াতে বলা হয়েছে “হৃদয় পাপ দ্বার রঞ্জিত হয়”। এই অন্তর বা হৃদয় কথাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সকল গোপন ইচ্ছার প্রথম সৃষ্টি হয় এই অন্তরে। পাপ ও পূণ্য সবই অন্তরের ইচ্ছার প্রতিফলন। মিথ্যা সাক্ষীর অপরাধে এই অন্তর পাপের অন্ধকারে ঢেকে যায়। যদিও তা পৃথিবীর মানুষের দৃষ্টিগোচর নয়। ফলে তার আধ্যাত্মিক জীবনের উন্নতির পথ হয়ে যায় রুদ্ধ। কারণ অন্তর বা হৃদয়ই হচ্ছে প্রেম ও ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু। আল্লাহ্‌-প্রেম হচ্ছে জীবনের সর্বোচ্চ প্রেমের পরিণতি। আল্লাহ্‌র প্রতি ভালোবাসা হচ্ছে ভালোবাসার শীর্ষবিন্দু। মিথ্যার বেসাতি, প্রেম ভালোবাসার এই কেন্দ্রবিন্দুকে নষ্ট করে দেয় ফলে তার পক্ষে উন্নততর আধ্যাত্মিক জীবনের পথও রুদ্ধ হয়ে যায়।
[উপদেশঃ মিথ্যা সর্বাবস্থায় পরিত্যাজ্য।]

আরও দেখুনঃ 

সূরা বাকারা পর্ব ৭ । সূচি । [ গাভী কুরবানী] সূরা নং ২ । পবিত্র কুরআন ।

নাপাকি এবং নাপাকি থেকে পবিত্রতা অর্জনের উপায়

Leave a Comment