আবু বকরকে সাহাবি হিসেবে আল্লাহর সাক্ষ্য দান | মদিনায় হিজরত থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

আবু বকরকে সাহাবি হিসেবে আল্লাহর সাক্ষ্য দান | মদিনায় হিজরত থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা,  আবু বকরই (রা) একমাত্র ব্যক্তি যাকে নবিজির (সা) সাহাবি হিসেবে আল্লাহ কোরানে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাঁর প্রসঙ্গটি পবিত্র কোরানে সরাসরিই এসেছে। হিজরতের বিষয়ে সুরা তওবায় একটি আয়াতে আছে; “তখন তাঁর সঙ্গীকে বলেছিলেন।” [ ৯:৪0 ] এখানে আল্লাহ তায়ালা আবু বকরকে (রা) সঙ্গী (আরবিতে ‘সাহিব’) বলে উল্লেখ করেছেন। গুহার ভেতরে নবিজির (সা) সঙ্গে শুধু যে তিনিই ছিলেন, তা নিয়ে মতভিন্নতা নেই।

 

আবু বকরকে সাহাবি হিসেবে আল্লাহর সাক্ষ্য দান | মদিনায় হিজরত থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

আবু বকরকে সাহাবি হিসেবে আল্লাহর সাক্ষ্য দান | মদিনায় হিজরত থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

মদিনা নামকরণের কারণ ও মাহাত্ম্য

হিজরতের এ পর্যায়ে নবিজি (সা) মদিনা শহরের উপকণ্ঠে এসে পৌঁছেছেন: খুব শীঘ্রই শহরের ভেতরে প্রবেশ করতে চলেছেন। সেই আলোচনায় যাওয়ার আগে আসুন আমরা মদিনা নামটি নিয়ে আলোচনা করি। মদিনাকে আগে ইয়াসরিব নামে ডাকা হতো। এটি ছিল আগ্নেয় শিলা দ্বারা বেষ্টিত একটি প্রাচীন শহর। ভূগর্ভস্থ পানির কারণে শহরটি ছিল খেজুর উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত উর্বর স্থান। সেই সময় পুরো হেজাজ অঞ্চলে শুধু খায়বার ও ইয়াসরিবেই বড় বড় খেজুর জন্মাত। আমরা ২৬তম পর্বে উল্লেখ করেছি, আল্লাহ তায়ালা নবিজিকে (সা) স্বপ্নে খেজুর গাছ দেখানোর মাধ্যমে মদিনা শহর দেখিয়েছিলেন।

সহিহ বুখারির আরেকটি হাদিস অনুসারে, নবিজি (সা) বলেছেন: “আমাকে এমন এক শহরে হিজরত করার আদেশ দেওয়া হয়েছে যা অন্য সব শহরকে ছাড়িয়ে যাবে। তাঁরা এটিকে ইয়াসরিব বলে, তবে এটি মদিনা।” এই হাদিসটি জানার পর ইসলামিকভাবে এই শহরটিকে আর ইয়াসরিব বলা যাবে না। নবিজি (সা) এর নাম পরিবর্তন করেছেন। পবিত্র কোরানেও এই বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কোরানে যখনই ইয়াসরিব নামটির উল্লেখ করা হয়েছে, তখন তা কেবলমাত্র মুনাফেকদের মুখ থেকেই এসেছে। যেমন:

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

“আর ওদের একদল বলেছিল, “হে ইয়াসরিববাসী! এখানে তোমাদের কোনো স্থান নেই, তোমরা ফিরে যাও।” [সুরা আহজাব, ৩৩:১৩| মুনাফেকরা তখনও শহরটিকে ইয়াসরিব নামে ডাকত। যেহেতু নামটি নবিজি (সা) দিয়েছিলেন, তাই তারা তা পছন্দ করেনি। আল্লাহ তায়ালাও কোরানে এটিকে মদিনা বলে উল্লেখ করেছেন।

উদাহরণস্বরূপ: “আরব বেদুইনদের মধ্যে যারা তোমাদের আশেপাশে আছে তাদের কেউ- কেউ এবং মদিনাবাসীদের কেউ-কেউ মুনাফেক।” [সুরা তওবা, ৯: 2011 কোনো কোনো পণ্ডিতের মতে, ইয়াসরিব নামটি এসেছে আরবি শব্দ “তাসরিব’ থেকে, যার অর্থ হলো ‘সমালোচনা অথবা অভিযোগ করা, যেমনটি পবিত্র কোরানে [১২:৯২] উল্লিখিত হয়েছে। আবার কারো কারো মতে এটি ‘সারব’ থেকে এসেছে যার অর্থ ‘মন্দ/দূষণ’।

 

আবু বকরকে সাহাবি হিসেবে আল্লাহর সাক্ষ্য দান | মদিনায় হিজরত থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

মহানবি (সা) শহরটিকে ‘আল-মদিনা’ বলে অভিহিত করেছিলেন। পুরো নাম ‘মদিনাতুর রসুলিল্লাহ’ (আল্লাহর রসুলের শহর। শহরটির আরও অনেক নাম ছিল। একজন পণ্ডিত তো মদিনার একশটিরও বেশি নামের তালিকা তৈরি করেছিলেন। কিন্তু নবিজি (সা) শহরটিকে শুধু তিনটি নামে ডেকেছেন: ‘মদিনা, ‘ভাবা’ ও ‘তাইয়েবা’। তারা ও তাইয়েবা সমার্থক শব্দ; অর্থ ‘বিশুদ্ধ’ ও ‘বিশুদ্ধতার উৎস’। এক হাদিসে আছে, নবিজি (সা) বলেছেন, “যে ব্যক্তি মদিনাকে ইয়াসরিব নামে ডাকবে, তার “ইস্তিগফার’ (আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা) করা উচিত, কারণ এটি আল-তাবা, কারণ এটি আল-তাবা, কারণ এটি আল-তাবা।” অন্যদিকে ইয়াসরিব মানে মন্দ/দূষণ, যার অর্থ বিশুদ্ধতার ঠিক বিপরীত ।

আরও পড়ূনঃ

Leave a Comment