আয়াতটির নাজিল হওয়া | কেবলা পরিবর্তন ও কোরানের আয়াত রহিতকরণ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

আয়াতটির নাজিল হওয়া | কেবলা পরিবর্তন ও কোরানের আয়াত রহিতকরণ, ইহুদিদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হওয়ার পর নবিজির (সা) মনে কেবলার দিক পরিবর্তনের ইচ্ছা জাগে। তবে তা তো শুধু তাঁর নিজের ইচ্ছায় পরিবর্তন করার বিষয় নয়। বর্ণিত আছে, একবার জিব্রাইল (আ) কোরানের আয়াত নিয়ে এলে নবিজি (সা) তাঁর মনের কথাটি বলেন, “হে জিব্রাইল। আমি যদি মক্কার দিকে মুখ করে নামাজ পড়তে পারতাম।” একথা শুনে জিব্রাইল (আ) উত্তর দেন, “আমিও তো আপনার মতো একজন বান্দা। আমি শুধু আল্লাহর আদেশে এসেছি। যদি আপনি এটা চান, তাহলে তবে আল্লাহর কাছে এ জন্য দোয়া (প্রার্থনা) করুন।”

 

আয়াতটির নাজিল হওয়া | কেবলা পরিবর্তন ও কোরানের আয়াত রহিতকরণ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

আয়াতটির নাজিল হওয়া | কেবলা পরিবর্তন ও কোরানের আয়াত রহিতকরণ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

লক্ষ করুন, সর্বাধিক শক্তিশালী ও আশীর্বাদপ্রাপ্ত মানুষটি সবচেয়ে শক্তিশালী এবং আশীর্বাদপ্রাপ্ত ফেরেশতার কাছে মনোবাঞ্ছা ব্যক্ত করছেন, কিন্তু উভয়েই বলছেন, ‘আমরা কিছুই করতে পারি না।’ তাহলে কল্পনা করুন, পরবর্তী সময়ের কিছু মুসলিম কতটা বিপথগামী হয়ে পড়েছে, যারা এই দুজনের কাছে দোয়া ও প্রার্থনা করছে। যেখানে নবিজি (সা) ও জিব্রাইল (আ) দুজনের কেউই কেবলা পরিবর্তন করতে পারছেন না, সেখানে কীভাবে তাঁরা কারও দোয়ার প্রতিদান দেবেন? সুতরাং নবিজি (সা) কেবলা পরিবর্তনের জন্য আল্লাহ তায়ালার সমীপে তাহাজ্জুদ নামাজসহ সার্বক্ষণিকভাবে দোয়া করতে লাগলেন। অবস্থা এমন হলো, তিনি প্রায়শই আকাশের দিকে চেয়ে থাকতেন।

চরম দুর্দশায় পতিত হলে অথবা খুব মরিয়া হয়ে পড়লেই কেউ আকাশের দিকে চেয়ে প্রার্থনা করে। নবিজি (সা) সাধারণত মাথা নিচু করে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করতেন। তবে নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে তিনি আকাশে দিকে মাথা তুলে দোয়া করেছেন। যেমন, বদরের যুদ্ধের আগে তিনি প্রকাশ্যে আকাশের দিকে তাকিয়ে আল্লাহর কাছে সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করেন।

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

তবে নবিজি (সা) কেবলা পরিবর্তনের জন্য প্রার্থনা করতেন রাতের বেলা, যখন তাকে কেউ দেখত না। আল্লাহ পবিত্র কোরানে এ বিষয়ে আয়াত নাজিল করেছেন: “আকাশের দিকে তোমার বারবার তাকানোকে আমি অবশ্যই লক্ষ করি। তাই তোমাকে এমন এক কেবলার দিকে ঘুরিয়ে দিচ্ছি যা তুমি পছন্দ করো।” [সুরা বাকারা, ২:১৪৪) আয়াতটির বাক্যের গঠন খেয়াল করুন। আল্লাহ কিন্তু বলছেন না যে তিনি কেবলা মক্কার দিকে বদলের বিধান দিচ্ছেন।

 

আয়াতটির নাজিল হওয়া | কেবলা পরিবর্তন ও কোরানের আয়াত রহিতকরণ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

তিনি বলছেন ‘তুমি চাও বলে আমি তোমাকে এটা দিচ্ছি’। অর্থাৎ, আল্লাহ তায়ালা প্রকৃতপক্ষে তাঁর রসুলের (সা) আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে চেয়েছেন। আল্লাহ বলছেন, তিনি রসুলকে (সা) এমন এক কেবলার দিকে ঘুরিয়ে দিচ্ছেন, যা তিনি পছন্দ করবেন। আল্লাহ তায়ালা আরও বলছেন। সুতরাং তুমি মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফেরাও। তোমরা যেখানেই থাক  না কেন, কেবলার দিকে মুখ ফেরাও।” [সুরা বাকারা, ২:১৪৪]

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment