ইহুদিদের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয় | চুক্তি ও মদিনার সংবিধান, সেই সময় মদিনায় বসবাসকারী ইহুদিদের ১২টি ভিন্ন ভিন্ন গোত্রের সবগুলোর নামই সংবিধানে উল্লেখ ছিল।
ইহুদিদের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয় | চুক্তি ও মদিনার সংবিধান | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন
(ক) সংবিধানে উল্লেখ আছে, “সব ইহুদি গোর মুমিনদের মতো একই উম্মাহ।” অর্থাৎ তাদের এক ধরনের মর্যাদা রয়েছে যা এক উম্মাহর সাথে তুলনীয়। ইহুদিরা নিজেদের মধ্যেকার ঝগড়া-বিবাদ, অপরাধ, বিষয়-আশয়, ব্লাড মানি ইত্যাদির সুরাহার দায়িত্ব নিজেরাই নেবে যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা মুসলিমদের কাছে সাহায্যের জন্য আসে অথবা ইহুদি ও মুসলিমদের মধ্যে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়। এর অর্থ হলো, ইহুদিদের বিষয়গুলো ইহুদিদেরই মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে, যদি দ্বিপাক্ষিক (ইহুদি ও মুসলিম) বিষয় না হয়।
(খ) আরও উল্লেখ আছে, “যারা এই সংবিধানের অধীনে আছে তাদের বিরুদ্ধে কেউ যুদ্ধ করতে এলে উভয় পক্ষই (ইহুদি ও মুসলিম) পারস্পরিক সমর্থনের মাধ্যমে তা প্রতিহত করবে।” তবে নিজ নিজ পক্ষের অর্থনৈতিক বাধ্যবাধকতার বিষয়টি তাদের নিজস্ব অর্থাৎ মুসলিমরা যেমন তাদের দরিদ্র 1 জনগোষ্ঠীর যত্ন নেবে, ইহুদিরাও তেমনি তাদের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর যত্ন নেবে। মুসলিমরা যেমন তাদের নিজেদের মধ্যের বিরোধ নিজেরাই মেটানো ব্যবস্থা নেবে, ইহুদিরাও তেমনি ব্যবস্থা নেবে। বাইরে থেকে কেউ আক্রমণ করলে মুসলিমদের যেমন প্রতিরক্ষার জন্য ব্যয় করতে হবে, ইহুদিদেরও তেমনি প্রতিরক্ষার জন্য ব্যয় করতে হবে। অর্থাৎ দুই পক্ষই মদিনার সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য বায় করবে। সংকটের সময়ে দুই পক্ষ ঐক্যবদ্ধ হবে এবং পরস্পকে সহায়তা করবে।
(গ) সংবিধান অনুসারে, “কোনো ইহুদি মুহাম্মদের (সা) অনুমতি ছাড়া মদিনা ছেড়ে যেতে পারবে না।” এখানে ছেড়ে যাওয়া’ অর্থ নাগরিকত্ব পরিবর্তন করা। আপনার গোত্র যেখানে, সেখানেই তো আপনার বাস করার কথা; আপনার নাগরিকত্বও সেখানেই। সেই অনুসারে তাদের মদিনা ত্যাগ করার অর্থ হলো মদিনার নাগরিকত্ব ত্যাগ করে অন্য শিবিরে যোগ দেওয়া, যা আপনি যখন-তখন করতে পারেন না। করলে তা হবে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। এখনকার সময়েও আপনি যদি আপনার মার্কিন নাগরিকত্ব ছেড়ে এই দেশ থেকে চলে যেতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই আনুষ্ঠানিকভাবে নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে হবে। ব্যাপারটি একইভাবে মলিনার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
(ঘ) সংবিধানের আরেকটি ধারা হলো, কোনো ইহুদি যদি ইসলাম গ্রহণ করতে চায় তবে তাকে সাহায্য করা হবে এবং নিরাপত্তা দেওয়া হবে। তার সঙ্গে কোনো অন্যায্য আচরণ করা যাবে না। অর্থাৎ কেউ তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।
আরও পড়ুনঃ