ক্রন্দনরত গাছের গুঁড়ির কাহিনি | মদিনা যুগের সূচনা, মদিনার আমলের প্রথমদিকে নবিজির (সা) মিম্বারের জন্য একটি বড় গাছের গুঁড়ি ব্যবহৃত হতো। গুড়িটি এত বড় ছিল যে, নবিজি (সা) এর ওপরে উঠে নামাজে দাঁড়িয়ে আনসারদের কীভাবে নামাজ পড়তে হয় তা দেখাতেন (যদিও সেজদার সময় তিনি সেখান থেকে নেমে আসতেন)। কয়েক বছর ধরে তিনি এই গুঁড়ির ওপর দাঁড়িয়ে খুতবা দেন।
ক্রন্দনরত গাছের গুঁড়ির কাহিনি | মদিনা যুগের সূচনা | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন
সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিমে বর্ণিত আছে, নবিজি (সা) একদা এক আনসার নারীকে বলেছিলেন, “তোমার কাঠমিস্ত্রিকে দিয়ে আমাকে একটি উপযুক্ত মিম্বার তৈরি করে দাও।” কাঠমিস্ত্রিটি ছিল ওই নারীর দাস। তিনি তিন ধাপের একটি মিম্বার তৈরি করেন। তারপর নবিজি (সা) গাছের গুড়িটি বাদ দিয়ে নতুন মিম্বারটির উপরে দাঁড়িয়ে খুতবা পাঠ করছিলেন। সাহাবিরা বর্ণনা করেছেন, “আমরা কান্নার শব্দ শুনতে পেলাম যেমনভাবে একটি শিশু উট কাঁদে। আমরা বুঝতে পারলাম, শব্দটি আসছে গাছের গুঁড়িটি থেকে। নবিজি (সা) খুতবা থামিয়ে মিম্বার থেকে নেমে এসে গাছের গুঁড়িটিকে জড়িয়ে ধরলেন। তারপর সেই কান্নার শব্দ থেমে গেল।”
আনাস ইবনে মালিকের (রা) বর্ণনা অনুসারে, নবিজি (সা) বলেছেন, “আমি যদি ওটা জড়িয়ে না ধরতাম, তাহলে ওটা কেয়ামত অবধি কাদতে থাকত।” স্পষ্টতই এখানে গাছটির ঈর্ষার প্রকাশ ঘটেছে যেহেতু নবিজি (সা) তাকে ছেড়ে অন্য একটি মিম্বার বেছে নিয়েছিলেন। অতএব নবিজি (সা) গাছটিকে নতুন মিম্বারের নিচে পুঁতে দিয়ে তার ইচ্ছা পূরণ করেছিলেন। তবে এটা একটা মিরাকল।
পরবর্তীকালে হাসান আল বসরি তাঁর ছাত্রদের কাছে এই হাদিসটি বর্ণনা করে বলেছিলেন, “হে মুমিনগণ, লক্ষ করুন, এই গাছটি নবিজির (সা) সঙ্গে থাকার জন্য কেঁদেছিল। তাহলে আমাদের মধ্যে যারা পুরুষ, তাদের কি নবিজির (সা) সঙ্গে থাকার জন্য আরও বেশি কাঁদা উচিত নয়?” আরেকটি বিষয় লক্ষ করুন, নবিজি (সা) আল্লাহর ঘর নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত নিজের ঘর তৈরি করেননি। মসজিদ তৈরি করার পরই তিনি কেবল নিজের বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেন।
আরও পড়ূনঃ