গাজওয়াত বদর আল-সুগরা (বদরের অপ্রধান যুদ্ধ) | বদরের যুদ্ধের প্রস্তুতি | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

গাজওয়াত বদর আল-সুগরা (বদরের অপ্রধান যুদ্ধ) | বদরের যুদ্ধের প্রস্তুতি, সেই সময় আরও একটি গাজওয়া সংঘটিত হয়েছিল, যাকে বলা হয় গাজওয়াত বদর আল-‘সুগরা (বদরের অপ্রধান যুদ্ধ)। এটি গাজওয়াতুল উশায়রা থেকে সম্পূর্ণ পৃথক একটি ঘটনা । গাজওয়াত বদর আল-‘সুগরাকে কখনও কখনও ‘গাজওয়াত বদর আল-উলা’ (বদরের প্রথম যুদ্ধ) বলা হয়। কারণ এটি বদরের সমভূমিতে সংঘটিত হয়েছিল । এই যুদ্ধটি কুরাইশের সঙ্গে ছিল না, যুদ্ধটি হয়েছিল কুরাইশের মিত্র গ্রুপগুলোর মধ্যেকার একটির সঙ্গে।

গাজওয়াত বদর আল-সুগরা (বদরের অপ্রধান যুদ্ধ) | বদরের যুদ্ধের প্রস্তুতি | মহানবী হযরত-মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

সূরা হাজ্জ্ব

 

ঘটনাটি ছিল এরকম: মদিনার বাইরে বসবাসকারী কুরাইশদের একটি মিত্র গ্রুপের কয়েকজন লোক এক মধ্যরাতে মদিনার ভেতরে এসে কিছু উট চুরি করে। পথিমধ্যে তারা দু’একজন উটপালককেও হত্যা করে। নবি করিম (সা) এই ঘটনা জানতে পারার সঙ্গে সঙ্গে ৭০ জন মুহাজিরকে একত্রিত করে চোরদের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন। অতএব বলা যেতে পারে, গাজওয়াত বদর আল-‘সুগরা কোনো সামরিক অভিযান ছিল না, এটি ছিল চুরি হয়ে যাওয়া উট ফিরে পাওয়ার জন্য এক অভিযান।

যে লোকেরা চুরি করতে এসেছিল তারা সংখ্যায় ছিল মাত্র ৪-৫ জন। তারা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ফলে নবিজি (সা) তাদের ধরতে ব্যর্থ হন। এ থেকে আমরা দেখতে পাই, নবি হলেও আল্লাহ তায়ালা কিন্তু মুহাম্মদকে (সা) একের পর এক অলৌকিক ঘটনা ঘটানোর ক্ষমতা দেননি। তাঁর প্রতিটি অভিযানও কিন্তু সফল হয়নি। অনেক অভিযানেই নবিজিকে (সা) খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল।

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

বদরের প্রথম যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে নবিজি (সা) বুঝতে পেরেছিলেন, কুরাইশ ও তাদের মিত্রদের গতিবিধি অনুসরণ ও পর্যবেক্ষণ করার (অর্থাৎ গুপ্তচরবৃত্তি করার) প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এ বিবেচনা থেকেই তিনি সাহাবিদের কয়েকটি দলকে পাঠিয়েছিলেন কুরাইশরা ইয়েমেনের সফরে কী করছে, অর্থাৎ সেখানে আক্রমণ করা যায় কি না, তা দেখে আসার জন্য।

যদিও ইয়েমেন মক্কার ঠিক বিপরীত/দক্ষিণ দিকে (উল্লেখ্য, মদিনা মক্কার উত্তর দিকে) অবস্থিত, তবু নবিজি (সা) সব বিকল্প ব্যবস্থা সম্পর্কেই অবহিত থাকতে চেয়েছিলেন। তিনি হয়তো ভেবেছিলেন, ইয়েমেনের দিক থেকে আক্রমণ এলে কুরাইশরা হতচকিত হয়ে পড়বে, তারা কখনই ভাববে না যে উল্টো দিক থেকে আক্রমণ আসতে পারে ।

 

গাজওয়াত বদর আল-সুগরা

 

মুসলিমদের দিক থেকে তখন পর্যন্ত কোনো আক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। তবু নবিজি (সা) এই সম্ভাবনা একদম উড়িয়ে দেননি। তিনি সব ধরনের বিকল্প দরজা খোলা রেখেছিলেন। তিনি ইয়েমেনের দিকে গুপ্তচর পাঠান এই ভাবনা থেকে, “যদি আমরা কুরাইশদের সিরিয়ার কাফেলাকে না ধরতে পারি, তাহলে তাদের ইয়েমেনের কাফেলাকে ধরা যেতে পারে। ইয়েমেনে গুপ্তচর পাঠানোর এই অভিযানটিকে ‘সারিয়া আল-নাখলা’ বলা হয়। বদরের প্রথম যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকেই নবিজি (সা) সারিয়া আল-নাখলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment