গাজওয়া ধাত আল-রিকা | মহানবি মুহাম্মদের (সা) বিয়ে, গাজওয়া ধাত আল-রিকা আরেকটি গাজওয়া, যেখানে কোন লড়াই হয়নি। ইবনে ইসহাকের বর্ণনা অনুসারে, এই গাজওয়াটি সংঘটিত হয়েছিল চতুর্থ হিজরির শাবান মাসে। তবে বুখারি ও অন্য কেউ কেউ বলেন, এটি খায়বারের যুদ্ধের পরে (অর্থাৎ সপ্তম হিজরিতে) সংঘটিত হয়েছিল। উভয় মতের পক্ষেই প্রমাণ আছে।
গাজওয়া ধাত আল-রিকা | মহানবি মুহাম্মদের (সা) বিয়ে | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন
গাজওয়াটি চতুর্থ হিজরিতে সংঘটিত হওয়ার পক্ষে অন্যতম প্রধান সাক্ষ্য জাবিরের কাহিনি, যেখানে জাবির বর্ণনা করেছেন, “আমার বাবা ওহুদে শহিদ হন এবং তারপর আমি বিয়ে করি। তবে নবিজি (সা) জানতেন না যে আমি বিবাহিত।”
এ থেকে বোঝা যায়, এই গাজওয়া চতুর্থ হিজরিতেই সংঘটিত হয়েছিল। গাজওয়া ধাত আল-রিকার প্রতিপক্ষ ছিল গাতাফান নামের মদিনার উত্তরের এক বিশাল বেদুইন উপজাতি। নানা রকমের অনৈতিক অপকর্ম, লুটপাট, ডাকাতি ইত্যাদির জন্য পাতাফানের কুখ্যাতি ছিল। তারা মুসলিমদের আক্রমণ করার পরিকল্পনা করছিল। নবিজি (সা) তা জানতে পেরে ৭০০ জনের একটি বাহিনী নিয়ে পাতাফানের এলাকার কাছাকাছি গিয়ে শিবির স্থাপন করেন। তাঁরা সেখানে এক বা দুই সপ্তাহ অবস্থান করেন, কিন্তু যে কোনো কারণেই হোক, গাতাফান যুদ্ধ এড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। উভয় দল পরস্পরের দৃষ্টিসীমার মধ্যে অবস্থান করলেও সংঘর্ষে লিপ্ত হয়নি।
তবে সেই সময় বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটে:
১. সালাত আল-খাওফের বিধান নাজিল হওয়া এই গাজওয়ার সময়ই আল্লাহ তায়ালা বিপদ-আপদ ও যুদ্ধের সময়ে কীভাবে
নামাজ পড়তে হবে তার বিধান নাজিল করেন। এই ধরনের নামাজকে ‘সালাত আল-খাওফ’ বলা হয়। এই নামাজ কয়েকটি পালাক্রমে পড়তে হয় । ইমাম পুরো নামাজ আদায় করবেন, আর পেছনে দাঁড়ানো মুসুল্লিরা পালাক্রমে নামাজ আদায় করবেন।
এ বিষয়টি আল্লাহ নিচে উল্লিখিত আয়াতে বর্ণনা করেছেন:
“আর তুমি যখন তাদের (মুসলিমদের) মধ্যে অবস্থান করবে এবং (যুদ্ধাবস্থায়) তাদের নিয়ে নামাজ পড়বে, তখন যেন তাদের একদল তোমার সঙ্গে (নামাজে) দাঁড়ায়, আর তারা যেন সশস্ত্র থাকে। তাদের সেজদা শেষ হলে তারা যেন তোমাদের পাহারায় নিযুক্ত হয়; তখন অপর দলটি যারা তখনও নামাজ পড়েনি তারা এসে তোমার সঙ্গে নামাজে যোগ দেবে; আর তারা যেন সতর্ক ও সশস্ত্র থাকে। কাফেররা তো এই (সুযোগ) চায়, যেন তোমরা তোমাদের অস্ত্রশস্ত্র ও আসবাবপত্র সম্বন্ধে অসতর্ক হও, যাতে তারা তোমাদের ওপর অতর্কিতভাবে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে। অবশ্য তোমাদের কোনো দোষ নেই, যদি বৃষ্টিবাদলের জন্য তোমাদের কষ্ট হয় কিংবা তোমরা অসুস্থ হও, তাহলে তোমরা অস্ত্র রেখে দিতে পার; কিন্তু তোমরা সাবধানতা বজায় রাখবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা কাফেরদের জন্য অপমানকর শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন।” [সুরা নিসা, ৪:102]।
আরও পড়ুনঃ