তায়েফ যাত্রা | তায়েফের ঘটনা | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

তায়েফ যাত্রা | তায়েফের ঘটনা, মহানবি (সা) তাঁর পালকপুত্র জায়েদ ইবনে হারিসাকে সঙ্গে নিয়ে গোপনে তায়েফের উদ্দেশে যাত্রা করেন। ঘোড়া বা উট না নিয়ে হেঁটে সেখানে যান, যাতে কারো মনে কোনো সন্দেহ না জাগে। এটা ছিল নবিজির কৌশল ও পরিকল্পনার অংশ। হেঁটে যেতে ১-২ দিন সময় লেগেছিল। ঘোড়ায় চড়ে গেলে সময় কম লাগত, কষ্ট কম হতো। [এখন মক্কা থেকে গাড়িতে তায়েফ যেতে প্রায় দেড় ঘণ্টা লাগে ।]

তায়েফ যাত্রা | তায়েফের ঘটনা | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

তায়েফ যাত্রা | তায়েফের ঘটনা | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

 

কুরাইশরা নবিজির (সা) পরিকল্পনা ও গতিবিধি জানতে পারলে তাঁর কোনো ক্ষতি করতে পারত। তাই তাদের কোনো সন্দেহ করার সুযোগ না দিয়েই তিনি জায়েদকে নিয়ে সন্তর্পণে মক্কা ছেড়ে যান। অবশ্যই তিনি আল্লাহর ওপর ভরসা রেখেছিলেন। আল্লাহর ওপর ভরসা করার অর্থ এই নয় যে, আপনি তাড়াহুড়ো করে বোকার মতো কাজ করবেন। বরং আপনি নিখুঁতভাবে বিশদ পরিকল্পনা করার পর মনেপ্রাণে আল্লাহর ওপর ভরসা রাখবেন, সফলতার জন্য তাঁর কাছে প্রার্থনা করবেন।

তায়েফের ঘটনা নিয়ে সহিহ বুখারিতে আয়েশার (রা) একটি চমৎকার বর্ণনা রয়েছে। একদিন তিনি নবিজিকে (সা) জিজ্ঞেস করেন, “ওহুদের যুদ্ধের চেয়ে খারাপ কোনো দিন কি (আপনার জীবনে) এসেছে?” নবিজি (সা) তৎক্ষণাৎ জবাব দেন, “হ্যাঁ। আমার লোকেরা আমাকে জ্বালাতন করে বিভিন্ন সময়ে কষ্ট দিয়েছে। তবে আমি সবচেয়ে কষ্ট পেয়েছিলাম ‘আকাবার দিন’ (আকাবা হলো তায়েফের বাইরের সেই স্থান, যেখানে তাঁর ওপর পাথর নিক্ষেপ করা হয়েছিল)। সেদিন আমি (তায়েফের নেতাদের কাছে) গিয়েছিলাম। আমি যেভাবে চেয়েছি তারা আমাকে সেভাবে সাড়া দেয়নি।”

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

লক্ষ করুন, এখানে নবিজি (সা) ঘটনাটি সুনির্দিষ্ট করে কিংবা বিশদভাবে বর্ণনা করেননি। তিনি বলেছেন যে তায়েফের লোকেরা তাঁর দুঃখ ও বেদনার কারণ হয়েছিল। সুতরাং বলা যায়, তাঁর জন্য ওহুদের দিনটি শারীরিক দিক থেকে বেশি কষ্টকর হলেও তায়েফের ওই দিনটি মানসিক দিক থেকে বেশি কষ্টকর ছিল। নবিজি (সা) আরও বলেন, “যতক্ষণ না আমি কারান আল-মানাজিলে (তায়েফের বাইরে ৭-৮ কিলোমিটার দূরে পৌঁছি, ততক্ষণ বুঝতেই পারিনি আমি এতক্ষণ কোথায় ছিলাম।” এ থেকে বোঝা যায়, পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় তিনি দিশেহারা এবং বিপন্ন বোধ করেছিলেন।

 

তায়েফ যাত্রা | তায়েফের ঘটনা | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

আরও লক্ষ করুন, নবিজি (সা) আয়েশার (রা) কাছ থেকে কোনো সহানুভূতি চাননি। তাকে জিজ্ঞেস না করলে তিনি হয়তো তায়েফ সম্পর্কে কিছুই বলতেন না। এ থেকে আমরা নবিজির (সা) অফুরন্ত মানসিক শক্তির পরিচয় পাই। ( প্রাসঙ্গিকভাবে বলতে হয়, একজন মুসলিম কখনো কারো সহানুভূতি আমায়ের চেষ্টা করেন না, নিজেকে ‘ভিক্টিমাইজ করেন না, বরং আত্মসম্মান নিয়ে মানসিকভাবে সবল থাকতে পছন্দ করেন। নবিজি (সা) আমাদের অনেকের চেয়ে অনেক বেশি দুঃখকষ্ট ভোগ করেছেন, কিন্তু অন্যের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করেননি।

আরো পড়ুনঃ

Leave a Comment