দুই ধরনের সামরিক অভিযান | বদরের যুদ্ধের প্রস্তুতি | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

দুই ধরনের সামরিক অভিযান | বদরের যুদ্ধের প্রস্তুতি, সিরাহ-লেখকরা তাঁদের গ্রন্থে দুই ধরনের সামরিক অভিযানের কথা উল্লেখ করেছেন:

দুই ধরনের সামরিক অভিযান | বদরের যুদ্ধের প্রস্তুতি | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

দুই ধরনের সামরিক অভিযান | বদরের যুদ্ধের প্রস্তুতি | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

১. গাজওয়া [বহুবচন গাজাওয়াত): এটি এমন ধরনের সামরিক অভিযান যেখানে নবিজি (সা) নিজেই অংশগ্রহণ করেছিলেন। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, তিনি সেনাপতি হিসেবেই অংশ নিয়েছিলেন।

২. সারিয়া [বহুবচন সারায়া]: এই ক্ষেত্রে নবিজি (সা) সাহাবিদের আদেশ দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি নিজে সঙ্গে যাননি। যেগুলোতে তিনি অংশ নিয়েছিলেন সেগুলো অবশ্যই আমাদের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ; যেমন: বদর, ওহুদ, খন্দক ইত্যাদি। কিন্তু পাশাপাশি অনেক সারিয়াও সংঘটিত হয়েছিল। গাজাওয়া ও সারিয়ার সংখ্যা কত সে বিষয়ে বেশ কয়েকটি মত রয়েছেঃ

সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিমের একটি হাদিস অনুসারে, জায়েদ ইবনে আরকাম বর্ণনা করেছেন, “নবিজি (সা) ১৯টি গাজাওয়াতে অংশ নিয়েছিলেন এবং কেবল একটি হজ করেছিলেন।” সহিহ মুসলিমের আরেকটি হাদিস অনুসারে, বুরায়দা নামের অন্য একজন সাহাবি বলেছেন, “নবিজি (সা) ১৯টি গাজাওয়াতে অংশ নিয়েছিলেন; তিনি তার মধ্যে মাত্র ৮টিতে যুদ্ধ করেছিলেন (অর্থাৎ বাকিগুলোতে শেষ পর্যন্ত যে কোনো কারণেই হোক যুদ্ধ হয়নি; হয় সেখানে যুদ্ধবিরতি হয়েছিল, নয়তো উভয় পক্ষের মধ্যে দেখাই হয়নি)।”

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

এ থেকে বোঝা যায় যে, ৮টি যুদ্ধ ছিল সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ওই ৮টি যুদ্ধ কোনটি কোনটি তা নিয়ে কিছুটা মতপার্থক্য রয়েছে। এক সাহাবির তালিকায় রয়েছে:

  • বদর
  • ওহুদ
  • আহজাব আল-মুৱাইসি
  • আল-কাদিদ
  • খায়বার
  • মক্কা
  • হুনায়েন
  • আবার অন্য এক সাহাবি বলেছেন:
  • বদর
  • ওহুদ
  • আহজাব
  • বনি আল-মুসতালাক
  • খায়বার
  • মক্কা
  • হুনায়েন
  • তায়েফ

যেসব সামরিক অভিযানে নবিজি (সা) অংশ নিয়েছেন এবং সেখানে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে, সেগুলোর বিবরণ বিস্তারিতভাবে পাওয়া যায়। কিন্তু যেসব অভিযানে সত্যিকারের যুদ্ধ সংঘটিত হয়নি, সেগুলোর বিবরণ অতটা বিশদভাবে আমাদের কাছে নেই।

 

দুই ধরনের সামরিক অভিযান | বদরের যুদ্ধের প্রস্তুতি | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

সারিয়ার সংখ্যা এত বেশি ছিল যে, সিরাহ-লেখকরা সবগুলোর বিবরণ দেননি। কখনও কখনও তাঁরা কেবল একটি লাইন উল্লেখ করেছেন, আবার কখনও কখনও তা-ও করেননি। উদাহরণস্বরূপ, একজন সিরাহ-লেখকের তালিকায় সারিয়ার সংখ্যা ২৪টি, ইবনে ইসহাকের তালিকার ৩০টি, আল- ওয়াকিদির তালিকার ৪৮টি, ইবনে আল-জাওজির তালিকায় ৫৬টি, ইত্যাদি । পুরোটাই নির্ভর করছে আপনি সারিয়াকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করতে চান তার ওপর। কোনো একটি সারিয়ায় হয়তো ৩ জন গিয়ে শত্রু এলাকা পরিদর্শন (অর্থাৎ গুপ্তচরবৃত্তি) করে এসেছে। আপনি কি এটিকে সারিয়া বলবেন? কেউ বলেছেন, আবার কেউ বলেননি। যা-ই হোক, মোট ৩০-৪০টি সারিয়া সংঘটিত হয়েছিল বলে আমরা ধরে নিতে পারি ।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment