প্রথম ভাষ্য | স্যাটানিক ভার্সেস-এর ঘটনা | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

প্রথম ভাষ্য | স্যাটানিক ভার্সেস-এর ঘটনা, ইবনে আব্বাসের (রা) বর্ণনায় এই ভাষা রয়েছে সহিহ বুখারিতে। এটিকেই সবচেয়ে সঠিক ভাষ্য বলে মনে করা হয়। বর্ণিত আছে, ইসলামের দাওয়াতের ৫ম বছরের রমজান মাসের (বুখারিতে মাসের উল্লেখ নেই, তবে আমরা ইবনে ইসহাকের কাছ থেকে মাসের নামটি জানতে পারি) কোনো এক সময়ে নবিজি (সা) সুরা নাজম তেলাওয়াত করছিলেন। এটি একটি শক্তিশালী সুরা, এর কথাগুলো খুব প্রাঞ্জল ।

 

প্রথম ভাষ্য | স্যাটানিক ভার্সেস-এর ঘটনা | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

প্রথম ভাষ্য | স্যাটানিক ভার্সেস-এর ঘটনা | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

তেলাওয়াতের শেষের দিকে নবিজির (সা) সুললিত কণ্ঠে সুরাটির বাগ্মিতা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছলে সমবেত মুসলিম ও অমুসলিম সবাই বেশ আবেগময় হয়ে পড়ে। নবিজি (সা) যখন শেষ আয়াতটি তেলাওয়াত করেন, ‘আল্লাহকে সেজদা করো, তাঁর উপাসনা করো’, তখন মুসলিমরা যেমন সেজদায় অবনত হয়, তেমনি সেখানে উপস্থিত কুরাইশরাও আবেগে আপ্লুত হয়ে সেজদায় নত হয়। এই প্রথমবারের মতো মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সবাই আল্লাহর রসুলের (সা) পেছনে ঐক্যবদ্ধ হয়। বর্ণনা অনুসারে ওয়ালিদ ইবনুল মুগিরা (অন্য এক বর্ণনা অনুসারে উমাইয়া ইবনে খালাফ) ছাড়া সেখানে উপস্থিত সব কুরাইশই সেজদায় নত হয়েছিল। এই ঘটনার খবর যখন আবিসিনিয়ায় সাহাবিদের কাছে পৌঁছে ততক্ষণে গুজবটি অনেক ডালপালা বিস্তার করে ফেলেছে।

সুরা আল-নাজমের শেষ কয়েকটি আয়াতে [৫৩:৩৬-৬২] আল্লাহ বলেছেন: “তাঁকে কি জানানো হয়নি যা আছে মুসার কিভাবে; এবং ইব্রাহিমের কিতাবে যে (ইব্রাহিম) তার দায়িত্ব পালন করেছিল? তা এই যে, কেউ অপরের বোঝা বইবে না। আর মানুষ তাই-ই পায় যা সে করে। তার কাজের পরীক্ষা হবে। তারপর তাকে পুরো প্রতিদান দেওয়া হবে।

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

সবকিছুর সমাপ্তি তো তোমার প্রতিপালকের কাছে। তিনিই হাসান, কাঁদান। তিনিই মারেন, তিনিই বাঁচান। তিনি সৃষ্টি করেন যুগল পুরুষ ও নারী তিনিই স্খলিত শুক্রবিন্দু হতে। পুনরুত্থান ঘটাবার দায়িত্ব তাঁরই। তিনি অভাব দূর করেন। ও ধনসম্পদ দান করেন। তিনি শিরা নক্ষত্রের মালিক। তিনি আদ সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছিলেন, আর সামুদ সম্প্রদায়কেও; কাউকেই তিনি অব্যাহতি দেননি। আর এদের পূর্বে নুহের সম্প্রদায়কেও তিনি ধ্বংস করেছিলেন—ওরা ছিল বড়ই সীমালঙ্ঘনকারী ও অবাধ্য।

 

প্রথম ভাষ্য | স্যাটানিক ভার্সেস-এর ঘটনা | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

তিনি (লুত সম্প্রদায়ের আবাসভূমি) তুলে ফেলেছিলেন, এক সর্বগ্রাসী শাস্তি তাঁকে ঢেকে ফেলেছিল। তাহলে তোমার প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহ সম্পর্কে তুমি সন্দেহ করবে? অতীতের সতর্ককারীদের মতো এ-ও এক সতর্ককারী। কেয়ামত নিকটবর্তী। আল্লাহ ছাড়া কেউ এ শক্তি খাটাতে সক্ষম নয়। তোমরা কি এ কথায় অবাক হচ্ছ? আর হাসিঠাট্টা করছ, কাঁদছ না? তোমরা তো উদাসীন।

বরং আল্লাহকে সেজদা করো এবং তাঁর ইবাদত করো।” [সেজদার আয়াত] কল্পনা করুন, নবিজি (সা) তাঁর সুললিত ও আবেগময় কণ্ঠে আন-নাজমের মতো ‘রেটোরিকাল’ বা আলঙ্কারিক প্রশ্নে ভরপুর একটি শক্তিশালী সুরা তেলাওয়াত করছেন। সুরার শেষ অংশে এসে উপস্থিত মুসলিম ও কুরাইশ সবাই আবেগের আতিশয্যে সেজদায় নত হয়। সহিহ-বুখারির এই প্রামাণ্য হাদিসটিতে কোথাও শয়তানের কথার উল্লেখ নেই।

আরো পড়ূনঃ

Leave a Comment