মসজিদের গুরুত্ব ও মর্যাদা | ইসলামের প্রথম মসজিদ নির্মাণ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

মসজিদের গুরুত্ব ও মর্যাদা | ইসলামের প্রথম মসজিদ নির্মাণ, নবিজি (সা) মদিনায় হিজরত করে প্রথমেই মসজিদ নির্মাণের দিকে মনোনিবেশ করেন। লক্ষ করুন, তিনি মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে দুটি মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। অথচ তখনও তাঁর নিজের মাথার ওপরে ছাদ তৈরি হয়নি। আমরা উল্লেখ করেছি, কুবা থেকে মদিনা শহরের কেন্দ্রে আসার পথে আরো একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল, যেখানে থেমে তিনি জুমার খুতবা দেন এবং নামাজ পড়েন। নবিজির (সা) সময়ে কুবা মসজিদ ও মসজিদুন নববি ছাড়া আরও কমপক্ষে এক ডজন মসজিদ ছিল। তবে সবগুলোর মধ্যে মসজিদুন নববি ছিল কেন্দ্রীয়ভাবে অবস্থিত ও বৃহত্তম।

 

মসজিদের গুরুত্ব ও মর্যাদা | ইসলামের প্রথম মসজিদ নির্মাণ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

মসজিদের গুরুত্ব ও মর্যাদা | ইসলামের প্রথম মসজিদ নির্মাণ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

নবিজির (সা) বসবাসের জন্য বাড়ি তৈরির আগেই একাধিক মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। এখান থেকে আমরা মসজিদের গুরুত্ব ও মর্যাদার বিষয়টি অনুধাবন করতে পারি। আল্লাহ তায়ালাও আক্ষরিকভাবে মসজিদকে ‘আল্লাহর ঘর’ বলে অভিহিত করেছেন। পবিত্র কোরানে আল্লাহ মসজিদের প্রশংসা করে বলেছেন:

“আল্লাহ তাঁর নাম স্মরণ করার জন্য যেসব ঘরকে মর্যাদায় উন্নত করেছেন, সেখানে সকাল ও সন্ধ্যায় (মুত্তাকিরা) তাঁর পবিত্র মহিমা ঘোষণা করে।” [সুরা নূর, ২৪:৩৬] নবিজির (সা) মসজিদটি ছিল জ্ঞান আহরণ ও আলোচনার কেন্দ্রস্থল এবং এমন একটি স্থান যেখানে লোকেরা বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিত। সেটি ছিল সামাজিকতার স্থান। মানুষ মসজিদের ভেতর হাসিঠাট্টাও করত। সেখানে বিয়েসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ও উৎসব হতো। (স) নিজের বাড়ির তুলনায় মসজিদেই বেশি সময় কাটাতেন। মসজিদের মধ্য দিয়েই ইসলামের জয়যাত্রা। সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

যাদের বাড়িঘর ছিল না তাঁরা এই মসজিদে এসে ঘুমাতেন। একটি সহিহ হাদিসে আছে, নবিজি (সা) বলেছেন, মসজিদ হলো প্রতিটি মুত্তাকির বাড়ি।” এখানে ‘মুত্তাকি’ কথাটির অর্থ সাধারণভাবে ‘মুমিন’ বা বিশ্বাসী হিসেবেও ধরে নেওয়া যায়। সব আশ্রয়হীন মুসলিমকেই মসজিদে আশ্রয় দেওয়া ওয়াজিব কি না, তা নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে আলোচনা আছে। তবে সাধারণভাবে বলতে গেলে, যদি কোনো মুসলিমের ঘুমানোর জায়গার প্রয়োজন হয়, তবে মসজিদই হতে পারে সেই জায়গা।

এই হাদিসটি অন্যভাবেও ব্যাখ্যা করা যায়: একজন মুত্তাকি মসজিদে থাকতে চাইবেন, অর্থাৎ তিনি তাঁর ঘরে থাকতে যেমন স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, মসজিদে থাকতেও তেমনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন।’ নবিজির (সা) মসজিদটি আক্ষরিক অর্থেই ‘আহলে সুফ্ফা’র জন্য একাধারে বিশ্ববিদ্যালয়, বাড়ি ও মসজিদ হয়ে উঠেছিল। আহলে সুফ্ফার বিষয়টি আমরা পরবর্তী কোনো পর্বে আলোচনা করব।

 

মসজিদের গুরুত্ব ও মর্যাদা | ইসলামের প্রথম মসজিদ নির্মাণ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

মসজিদুন নববি নির্মাণের সময় সাহাবিদের আওড়ানো কবিতা

 আমরা আগে উল্লেখ করেছি, নবি করিম (সা) নিজেই মসজিদটি নির্মাণের কাজে অংশ নিয়েছিলেন। সাহাবিরা তাঁকে কাজ করতে দেখে স্বতঃস্ফূর্তভাবে একটি কবিতা রচনা করেন:

“যদি আমরা বসে থাকি, আর নবিজি (সা) করেন কাজ;  তবে তা হবে আমাদের অত্যন্ত লজ্জার ব্যাপার।”

আরও পড়ূনঃ

Leave a Comment