মহানবি মুহাম্মদের পিতামাতা | মহানবি মুহাম্মদের (সা) জন্ম | মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ জীবন

মহানবি মুহাম্মদের পিতামাতা | মহানবি মুহাম্মদের (সা) জন্ম, মহানবি মুহাম্মদের (সা) জন্মের বিষয়ে আলোচনা।

 

মহানবি মুহাম্মদের পিতামাতা | মহানবি মুহাম্মদের (সা) জন্ম | মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ জীবন

 

মহানবি মুহাম্মদের পিতামাতা | মহানবি মুহাম্মদের (সা) জন্ম | মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ জীবন

মহানবি মুহাম্মদের বাবার নাম ছিল আবদুল্লাহ এবং মায়ের নাম ছিল আমিনা। আবদুল্লাহ ও আমিনার জীবন ও সময় সম্পর্কে আমাদের খুব বেশি তথ্য জানা নেই। এর কারণঃ

১। তাঁদের দুজনেরই আয়ুষ্কাল ছিল খুব কম। তাঁদের বয়স বিশের কোঠায় থাকা অবস্থায় দুজনেরই মৃত্যু ঘটে। 

২। তাঁরা আর পাঁচ-দশজন কুরাইশের মতোই ছিলেন। ফলে তাঁদের জীবনের ঘটনাগুলোর তেমন কোনো রেকর্ড কেউ রাখেনি।

৩। মুহাম্মদ (সা) নবি হওয়ার আনুমানিক ৪০ বছর আগেই তাঁর পিতামাতার মৃত্যু হয়। তিনি ৫৩ বছর বয়সে মদিনায় হিজরত করেন এবং ৬৩ বছর বয়সে মারা যান। ৬৩ বছর আগে কী ঘটেছিল তা মনে রাখার জন্য তেমন কেউ আর তখন বেঁচে ছিল না। প্রসারের পর ইসলাম যখন একটা স্থিতিশীল অবস্থায় আসে তখন থেকেই বিভিন্ন ঘটনা ও বর্ণনা রেকর্ড করা শুরু হয়।

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

আবদুল্লাহ যখন যুবক, তখন তাঁর পিতা আবদুল মুত্তালিব তাঁর বিয়ের জন্য বনু জুহুরা গোত্রের প্রধানের মেয়ে আমিনা বিনতে ওয়াহাবকে পছন্দ করেন। কুরাইশ ছিল একটি বিশাল উপজাতি, যার মধ্যে ছিল অনেক ছোট ছোট গোত্র। বনু হাশিম এবং বনু জুহুরা ছিল এ রকমই দুটি গোত্র। আবদুল মুত্তালিব তাঁর ছেলের পক্ষে আমিনার কাছে প্রস্তাব দেন। ঘটনাটি ঘটেছিল কুরাইশদের বাণিজ্য মৌসুমের অল্প কিছু সময় আগে। যেহেতু আবদুল মুত্তালিব ছিলেন অন্য একটি গোত্রের (বনু হাশিম) নেতা, সেহেতু বোধগম্য কারণেই আমিনার পিতা ওয়াহাব মেয়েকে সেখানে বিয়ে দিতে রাজি হয়েছিলেন। কাফেলা রওয়ানা হওয়ার অল্প কদিন আগে আবদুল্লাহ আমিনার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন বিয়ের পর আবদুল্লাহ বাণিজ্যিক কাফেলার সঙ্গে সিরিয়ায় চলে যাওয়ার কারণে নববধূর সঙ্গে মাত্র সপ্তাহখানেক সময় কাটাতে পেরেছিলেন। তারপর তাঁদের আর কখনও দেখা হয়নি।

আবদুল্লাহ ও আমিনাকে নিয়ে কিছু গল্প-কাহিনি প্রচলিত আছে, সেগুলোর সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় না। তবু এখানে একটি কাহিনির উল্লেখ করছি। আবদুল্লাহ ছিলেন একজন সুদর্শন যুবক। তাঁর মুখাবয়বে এক ধরনের উজ্জ্বলতা বিরাজ করত। ফলে অনেক কুরাইশ যুবতীই আকাঙ্ক্ষা করতেন, তিনি (আবদুল্লাহ) যেন তাঁদের বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। কথিত আছে, তাঁদের মধ্যে অনেকেই তাঁর প্রতি আগ্রহ আকারে-ইঙ্গিতে প্রকাশও করেছিলেন। কিন্তু আবদুল্লাহ বলতেন তিনি তাঁর বাবার পছন্দ অনুসারেই বিয়ে করবেন। বলা হতো, তিনি আমিনাকে বিবাহ করার পর তাঁর মুখমণ্ডলের সেই উজ্জ্বলতা চলে গিয়েছিল, তাই কুরাইশ মহিলারা তারপর থেকে তাঁর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এও বলা হতো যে, তাঁর মুখাবয়বের সেই উজ্জ্বলতা হয়তো তাঁর পুত্র মুহাম্মদের (সা) কাছে স্থানান্তরিত হয়েছিল।

 

মহানবি মুহাম্মদের (সা) পিতামাতা | মহানবি মুহাম্মদের (সা) জন্ম | মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ জীবন

 

কাফেলার সঙ্গে সিরিয়া থেকে ফেরার পথে আবদুল্লাহ মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কাফেলাটি ইয়াসরিবে (পরবর্তীকালে যার নাম মদিনা রাখা হয়েছিল) পৌঁছার পর সুস্থ হওয়া পর্যন্ত তিনি সেখানে তাঁর আত্মীয়দের সঙ্গে থাকবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন। আসলে তিনি চাননি কাফেলাটি তার কারণে যাত্রাপথে কোনো অসুবিধায় পড়ুক। এখানে মজার ব্যপার হলো, এই ইয়াসরিবেই আবদুল মুত্তালিবের না (আবদুল্লাহর মাতামহী) জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

দেখুন, নবি করিম (সা) পরবর্তীকালে যে শহরে বাস করবেন, আল্লাহ তায়ালা তার সঙ্গে আগেই এক ধরনের সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। সে কারণেই হয়তো আবদুল্লাহ সে যাত্রা ইয়াসরিবে থেকে গিয়েছিলেন। কাফেলা মক্কায় ফিরে যাওয়ার পর আমিনাকে বলা হয়, আবদুল্লাহ অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণে পথিমধ্যে ইয়াসরিবে থেকে গেছেন। পরে খবর আসে, তিনি মারা গেছেন । তাঁকে কোথায় কবর দেওয়া হয়েছে তা কেউ জানে না। এভাবেই আমিনা মাত্র ১৮-১৯ বছর বয়সে গর্ভবতী থাকা অবস্থায় বিধবা হন।

আরো পড়ুনঃ

 

Leave a Comment