সূরা ত্বোয়া-হা আয়াত-১

সূরা ত্বোয়া-হা আয়াত-১Tâ­Hâ. [These letters are one of the miracles of the Qur’ân, and none but Allâh (Alone) knows their meanings.]

طه
Ta-ha

YUSUFALI: Ta-Ha.
PICKTHAL: Ta. Ha.
SHAKIR: Ta Ha.
KHALIFA: T. H.

০১। তা – হা , ২৫৩৪

২৫৩৪। ব্যাখ্যার জন্য দেখুন এই সূরার ভূমিকা।

সূরা তা – হা বা সাংকেতিক অক্ষর – ২০
১৩৫ আয়াত, ৮ রুকু, মক্কী
[ দয়াময় পরম করুণাময় আল্লাহ্‌র নামে ]

সূরা ত্বোয়া-হা আয়াত-১

সূরা ত্বোয়া-হা আয়াত-১

এই সূরার অবতীর্ণের সময়কাল , ধর্মীয় ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই সেই সূরা যা শ্রবণে হযরত ওমর, হত্যাকারী থেকে মোমেন বান্দাতে পরিণত হন, এই ঘটনা ঘটে হিজরতের সাত বৎসর পূর্বে।

ইব্‌নে হিসান সম্পূর্ণ ঘটনাটির খুঁটিনাটি বর্ণনা করেন। ইসলাম গ্রহণের পূর্বে ওমর ছিলেন ইসলামের অন্যতম প্রধান নির্যাতনকারী শত্রু। তিনিও অন্যান্য কোরেশদের মত সর্বদা ষড়যন্ত্র করতেন যে কিভাবে রসুলের (সা) জীবন বিনাশ করা যায়। এরকম সময়ে তাঁকে সংবাদ দান করা হয় যে, তার বোন ফাতেমা ও ভগ্নীপতি সা’দ ইসলাম গ্রহণ করেছেন। যেহেতু সে সময়ে ইসলাম গ্রহণকারীদের উপরে অত্যাচার করা হতো সেহেতু তারা সযত্নে তাদের বিশ্বাসকে গোপন রেখেছিলেন। খবর শুনে ওমর রাগে অন্ধ হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁদের বাড়ীতে গমন করেন, সে সময়ে তাঁরা তাঁদের কাছে লিখিত এই সূরার অনুলিপি পাঠ করছিলেন। ওমর তাঁর বোন ও ভগ্নীপতিকে আক্রমণ করেন। কিন্তু তাঁরা সেসময়ে প্রচন্ড ধৈর্য্যের পরিচয় দেন, কিন্তু দৃঢ়তার সাথে তাদের ঈমানের সত্যতা প্রকাশ্যে স্বীকার করেন। ওমর তাদের বীরত্বপূর্ণ সাহসিকতা ও ধৈর্য দেখে এতটাই বিমুগ্ধ হয়ে যান যে, তিনি তাঁদের কোরাণের অংশটি যা তারা পড়ছিলেন তা দেখাতে বলেন। তাঁকে তা দেয়া হয় এবং তিনি তা পাঠ করেন। এই সূরা পাঠে তার হৃদয় এতটাই অভিভূত হয়ে যায় যে, তিনি তৎক্ষণাত ইসলাম গ্রহণ করেন, শুধু তাই – ই নয়, তিনি হলেন ইসলামের এক শক্ত মজবুত স্তম্ভের মত একজন দৃঢ় সমর্থক।

হযরত সা’দের কাছে সূরার কয়েকটি পাতা ছিলো মাত্র ; সম্ভবতঃ তা ছিলো প্রথম দিকের। এই সূরার প্রারম্ভে ” তা – হা” এই দুটি বর্ণমালা মুদ্রিত করা হয়েছে। এই বর্ণমালা দ্বারা কি বোঝানো হয়েছে ? প্রাচীন ঐতিহ্য অনুসারে এরূপ বর্ণমালা সন্নিবেশ দ্বারা ভাবগত অব্যয়কে বোঝানো হয়েছে যার অর্থ , ” হে মানবকূল!” এই সূরাকে পূর্বের সূরার ধারাবাহিকতা বলা যায়। এখানে হযরত মুসার কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ্‌র নিকট থেকে দায়িত্ব পাওয়ার পরে যে সঙ্কট তিনি অতিক্রম করেন, তাঁর মায়ের সাথে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক, কিভাবে তিনি ফেরাউনের নিকটে নীত হন, কিভাবে তিনি সেখানে মিশর বাসীদের সর্বোচ্চ জ্ঞান বিজ্ঞান শেখার সুযোগ লাভ করেন যা পরবর্তীতে তিনি আল্লাহ্‌র সেবায় নিয়োজিত করেন। তাঁর পালিত পিতা [ ২৮ : ৯ ] ফেরাউনের সাথে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ককে এই সূরার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। মুসার কাহিনীর মধ্যে বর্ণনা আছে কিভাবে বিপথগামী এক ব্যক্তি ইসরাঈলীদের মূর্তি পূঁজাতে অনুপ্রাণীত করে, এ ভাবেই চিরশত্রু শয়তান মানুষের পতন ঘটায়। আল্লাহ্‌র স্তুতি ও আল্লাহ্‌র নিকট একান্ত প্রার্থনা আধ্যাত্মিক অন্ধত্বের অবসান ঘটায়, আর এ ভাবেই আত্মাকে আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশ গ্রহণের যোগ্য করে তোলে।

সারসংক্ষেপ : আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশ [ কোরাণ ] কোন দুঃখ দুর্দ্দশার কারণ নয় বরং তা হচ্ছে পরম করুণাময়ের করুণার উপহার। [ ২০ : ১ – ৮ ]।

আল্লাহ্‌ কিভাবে হযরত মুসাকে নির্বাচিত করেন এবং তাঁর ভাই হারূণ সহ হযরত মুসাকে ফেরাউনের নিকট পাঠান। [ ২০ : ৯ – ৩৬ ]।

হযরত মুসার মাতাকে আল্লাহ্‌ নির্দ্দেশ দান করেন শিশু মুসাকে নদীতে নিক্ষেপ করার জন্য। শিশু মুসা আল্লাহ্‌র তত্বাবধানে ফেরাউনের প্রাসাদে লালিত পালিত হতে থাকেন , যেনো ভবিষ্যতে মুসা ফেরাউনকে আল্লাহ্‌র পথে আহ্বান করতে পারেন। [ ২০ : ৩৭ – ৭৬ ]

আল্লাহ্‌ মুসাকে শিক্ষা দেন তাঁর লোকজনদের পরিচালনা করার জন্য এবং তাদের বিদ্রোহী মনোভাবকে দমন করার জন্য। বর্ণনা আছে কি ভাবে সামীরি ইসরাঈলীদের উত্তেজিত করে। [ ২০ : ৭৭ – ১০৪ ]

শেষ বিচারের দিনে ব্যক্তিগত দায় দায়িত্বই হবে একমাত্র বিচারের বিষয় এবং সকলেই প্রকৃত সত্যকে অনুধাবন করবে। মানব সন্তান সর্বদা আদমের শত্রু শয়তানের থেকে নিজেকে রক্ষা করবে। তাঁরা অহংকার পরিত্যাগ করবে এবং আল্লাহ্‌র প্রশংসা ও প্রার্থনার মাধ্যমে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করবে। সেদিনের ডাকের জন্য প্রত্যেকে অপেক্ষা করবে [ ২০: ১০৫ – ১৩৫]

আপনাকে ক্লেশ দেবার জন্য আমি আপনার প্রতি কোরআন অবতীর্ণ করিনি।
We have not sent down the Qur’ân unto you (O Muhammad SAW) to cause you distress,

مَا أَنزَلْنَا عَلَيْكَ الْقُرْآنَ لِتَشْقَى
Ma anzalna AAalayka alqur-ana litashqa

YUSUFALI: We have not sent down the Qur’an to thee to be (an occasion) for thy distress,
PICKTHAL: We have not revealed unto thee (Muhammad) this Qur’an that thou shouldst be distressed,
SHAKIR: We have not revealed the Quran to you that you may be unsuccessful.
KHALIFA: We did not reveal the Quran to you, to cause you any hardship.

০২। তুমি ক্লেশ পাবে এ কারণে আমি তোমার প্রতি কুর-আন অবতীর্ণ করি নাই ; ২৫৩৫

০৩। বরং যারা [ আল্লাহ্‌কে ] ভয় করে কেবল তাদের উপদেশের জন্য [ করেছি ]।

২৫৩৫। আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশ দুভাবে মানুষের অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে। ১) মানুষের স্বার্থপরতা সর্বগ্রাসী। আল্লাহ্‌র নির্দ্দেশনা এই স্বার্থপরতাকে ও সংঙ্কীর্ণতাকে বাধা দান করে। ২) এই প্রত্যাদেশ পাপীদের বিরক্তি উৎপাদন করে যার ফলে তারা ব্যঙ্গ বিদ্রূপের আশ্রয় গ্রহণ করে এবং অত্যাচার করে। এগুলি ঘটে কারণ মানুষের দূরদৃষ্টির অভাব। আল্লাহ্‌ কোরাণ অবতীর্ণ করেছেন মানুষের কল্যাণের জন্য , ক্লেশ দেওয়ার জন্য নয়। আয়াতটিতে রসুলুল্লাহকে (সা ) সান্তনা দেয়া হয়েছে , কারণ কাফেররা কোরাণকে অস্বীকার করলে তিনি খুবই কষ্ট পেতেন। উপদেশ প্রদান তাঁর কর্তব্য, তা গ্রহণ করার জন্য তিনি দায়ী নন। এই আয়াতের বক্তব্য সর্ব যুগের ও সর্ব কালের জন্য প্রযোজ্য।

কিন্তু তাদেরই উপদেশের জন্য যারা ভয় করে।
But only as a Reminder to those who fear (Allâh).

إِلَّا تَذْكِرَةً لِّمَن يَخْشَى
Illa tathkiratan liman yakhsha

YUSUFALI: But only as an admonition to those who fear (Allah),-
PICKTHAL: But as a reminder unto him who feareth,
SHAKIR: Nay, it is a reminder to him who fears:
KHALIFA: Only to remind the reverent.

০২। তুমি ক্লেশ পাবে এ কারণে আমি তোমার প্রতি কুর-আন অবতীর্ণ করি নাই ; ২৫৩৫

০৩। বরং যারা [ আল্লাহ্‌কে ] ভয় করে কেবল তাদের উপদেশের জন্য [ করেছি ]।

২৫৩৫। আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশ দুভাবে মানুষের অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে। ১) মানুষের স্বার্থপরতা সর্বগ্রাসী। আল্লাহ্‌র নির্দ্দেশনা এই স্বার্থপরতাকে ও সংঙ্কীর্ণতাকে বাধা দান করে। ২) এই প্রত্যাদেশ পাপীদের বিরক্তি উৎপাদন করে যার ফলে তারা ব্যঙ্গ বিদ্রূপের আশ্রয় গ্রহণ করে এবং অত্যাচার করে। এগুলি ঘটে কারণ মানুষের দূরদৃষ্টির অভাব। আল্লাহ্‌ কোরাণ অবতীর্ণ করেছেন মানুষের কল্যাণের জন্য , ক্লেশ দেওয়ার জন্য নয়। আয়াতটিতে রসুলুল্লাহকে (সা ) সান্তনা দেয়া হয়েছে , কারণ কাফেররা কোরাণকে অস্বীকার করলে তিনি খুবই কষ্ট পেতেন। উপদেশ প্রদান তাঁর কর্তব্য, তা গ্রহণ করার জন্য তিনি দায়ী নন। এই আয়াতের বক্তব্য সর্ব যুগের ও সর্ব কালের জন্য প্রযোজ্য।

এটা তাঁর কাছ থেকে অবতীর্ণ, যিনি ভূমন্ডল ও সমুচ্চ নভোমন্ডল সৃষ্টি করেছেন।
A revelation from Him (Allâh) Who has created the earth and high heavens.

تَنزِيلًا مِّمَّنْ خَلَقَ الْأَرْضَ وَالسَّمَاوَاتِ الْعُلَى
Tanzeelan mimman khalaqa al-arda waalssamawati alAAula

YUSUFALI: A revelation from Him Who created the earth and the heavens on high.
PICKTHAL: A revelation from Him Who created the earth and the high heavens,
SHAKIR: A revelation from Him Who created the earth and the high heavens.
KHALIFA: A revelation from the Creator of the earth and the high heavens.

০৪। এটা একটি প্রত্যাদেশ তাঁর নিকট থেকে, যিনি পৃথিবী ও সুউচ্চ আকাশ মন্ডলী সৃষ্টি করেছেন।

০৫। পরম করুণাময় [আল্লাহ্‌ কর্তৃত্বের ] আসনে দৃঢ়ভাবে সমাসীন ২৫৩৬।

২৫৩৬। অনুরূপ আয়াত [ ১০:৩] এবং ব্যাখ্যার জন্য দেখুন টিকা ১৩৮৬। যেখানে , সিংহাসনে কথাটির ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে। আমাদের সীমিত বিচার বুদ্ধিতে যদি কোনও কিছুকে অন্যায় অবিচার মনে হয় , তবে আল্লাহ্‌কে স্মরণ করতে হবে। আল্লাহ্‌ তাঁর সমস্ত সৃষ্টিকে পরিব্যপ্ত করে দয়া ও করুণার সিংহাসনে সমাসীন আছেন। তিনিই সব কিছুর নির্দ্দেশ দান করেন এবং আমাদের এই বিশ্বাস মনে রাখতে হবে যে আমাদের সকল বিপদ আপদ বাঁধা তাঁর করুণায় কল্যাণে রূপান্তরিত হবে। আল্লাহ্‌র কর্তৃত্ব পৃথিবীর কর্তৃত্বের মত নয়। পৃথিবীর কর্তৃত্বকে প্রশ্ন করা যায়, অস্বীকার করা চলে , প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আহ্বান করা যায় বা তা চিরজীবন স্থায়ী হবে না। কিন্তু আল্লাহ্‌র কর্তৃত্ব চিরস্থায়ী , অবিনশ্বর, অপ্রতিদ্বন্দ্বী। বিশ্ব-ভূবনে ,দ্যুলোকে-ভূলোকে প্রকৃতির যে, আইন তা আল্লাহ্‌র কর্তৃত্বের প্রকাশ মাত্র। এই আইন অমোঘ, অবিনশ্বর ও চিরস্থায়ী ।

তিনি পরম দয়াময়, আরশে সমাসীন হয়েছেন।
The Most Beneficent (Allâh) Istawâ (rose over) the (Mighty) Throne (in a manner that suits His Majesty).

الرَّحْمَنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوَى
Alrrahmanu AAala alAAarshi istawa

YUSUFALI: (Allah) Most Gracious is firmly established on the throne (of authority).
PICKTHAL: The Beneficent One, Who is established on the Throne.
SHAKIR: The Beneficent Allah is firm in power.
KHALIFA: The Most Gracious; He has assumed all authority.

০৪। এটা একটি প্রত্যাদেশ তাঁর নিকট থেকে, যিনি পৃথিবী ও সুউচ্চ আকাশ মন্ডলী সৃষ্টি করেছেন।

০৫। পরম করুণাময় [আল্লাহ্‌ কর্তৃত্বের ] আসনে দৃঢ়ভাবে সমাসীন ২৫৩৬।

২৫৩৬। অনুরূপ আয়াত [ ১০:৩] এবং ব্যাখ্যার জন্য দেখুন টিকা ১৩৮৬। যেখানে , সিংহাসনে কথাটির ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে। আমাদের সীমিত বিচার বুদ্ধিতে যদি কোনও কিছুকে অন্যায় অবিচার মনে হয় , তবে আল্লাহ্‌কে স্মরণ করতে হবে। আল্লাহ্‌ তাঁর সমস্ত সৃষ্টিকে পরিব্যপ্ত করে দয়া ও করুণার সিংহাসনে সমাসীন আছেন। তিনিই সব কিছুর নির্দ্দেশ দান করেন এবং আমাদের এই বিশ্বাস মনে রাখতে হবে যে আমাদের সকল বিপদ আপদ বাঁধা তাঁর করুণায় কল্যাণে রূপান্তরিত হবে। আল্লাহ্‌র কর্তৃত্ব পৃথিবীর কর্তৃত্বের মত নয়। পৃথিবীর কর্তৃত্বকে প্রশ্ন করা যায়, অস্বীকার করা চলে , প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আহ্বান করা যায় বা তা চিরজীবন স্থায়ী হবে না। কিন্তু আল্লাহ্‌র কর্তৃত্ব চিরস্থায়ী , অবিনশ্বর, অপ্রতিদ্বন্দ্বী। বিশ্ব-ভূবনে ,দ্যুলোকে-ভূলোকে প্রকৃতির যে, আইন তা আল্লাহ্‌র কর্তৃত্বের প্রকাশ মাত্র। এই আইন অমোঘ, অবিনশ্বর ও চিরস্থায়ী ।

নভোমন্ডলে, ভুমন্ডলে, এতদুভয়ের মধ্যবর্তী স্থানে এবং সিক্ত ভূগর্ভে যা আছে, তা তাঁরই।
To Him belongs all that is in the heavens and all that is on the earth, and all that is between them, and all that is under the soil.

لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَمَا تَحْتَ الثَّرَى
Lahu ma fee alssamawati wama fee al-ardi wama baynahuma wama tahta alththara

YUSUFALI: To Him belongs what is in the heavens and on earth, and all between them, and all beneath the soil.
PICKTHAL: Unto Him belongeth whatsoever is in the heavens and whatsoever is in the earth, and whatsoever is between them, and whatsoever is beneath the sod.
SHAKIR: His is what is in the heavens and what is in the earth and what is between them two and what is beneath the ground.
KHALIFA: To Him belongs everything in the heavens, and the earth, and everything between them, and everything beneath the ground.

০৬। আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীতে এবং এই দুই এর মধ্যে যা আছে এবং মাটির অভ্যন্তরে যা থাকে সব তাঁর অধিকারে ২৫৩৭।

২৫৩৭। আল্লাহ্‌র কর্তৃত্বের ধারণাকে স্বচ্ছ করার জন্য এই আয়াতটির বিবরণ অত্যন্ত স্পষ্ট ও গভীরতা পূর্ণ। আকাশমন্ডলী অর্থাৎ নভোঃমন্ডল যা গ্রহ নক্ষত্র ও গ্যালাক্সী ধারণ করে, পৃথিবী এবং নভোঃমন্ডলের মধ্যবর্তী স্থান, পৃথিবীতে এবং ভূগর্ভে সর্বত্র আল্লাহ্‌র কর্তৃত্ব বর্তমান।

যদি তুমি উচ্চকন্ঠেও কথা বল, তিনি তো গুপ্ত ও তদপেক্ষাও গুপ্ত বিষয়বস্তু জানেন।
And if you (O Muhammad SAW) speak (the invocation) aloud, then verily, He knows the secret and that which is yet more hidden.

وَإِن تَجْهَرْ بِالْقَوْلِ فَإِنَّهُ يَعْلَمُ السِّرَّ وَأَخْفَى
Wa-in tajhar bialqawli fa-innahu yaAAlamu alssirra waakhfa

YUSUFALI: If thou pronounce the word aloud, (it is no matter): for verily He knoweth what is secret and what is yet more hidden.
PICKTHAL: And if thou speakest aloud, then lo! He knoweth the secret (thought) and (that which is yet) more hidden.
SHAKIR: And if you utter the saying aloud, then surely He knows the secret, and what is yet more hidden.
KHALIFA: Whether you declare your convictions (or not) He knows the secret, and what is even more hidden.

০৭। তুমি যদি উচ্চস্বরে শব্দ উচ্চারণ কর [ তাতে কিছু যায় আসে না ]। কারণ তিনি তো গুপ্ত ও অব্যক্ত সকলই জানেন ২৫৩৮।

২৫৩৮। এই আয়াতটির তিন রকম ভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। ১) প্রকাশ্যে দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করা বা সশব্দে , সজোরে বলার মাধ্যমে কোনও তথ্য বা সংবাদ আল্লাহ্‌র কাছে পৌঁছায় না। কারণ তিনি মনের গুপ্ত, ব্যক্ত ও অব্যক্ত সকল চিন্তা ভাবনার খবর রাখেন। বাইরে সজোরে যাই প্রকাশ করা হোক না কেন অন্তরের গোপন ইচ্ছা, ভাবনা-চিন্তা সবই সেই সর্বশক্তিমানের নিকট দিবালোকের ন্যায় স্বচ্ছ। সুতারাং আল্লাহ্‌কে কিছু জানানোর জন্য সশব্দ হওয়ার প্রয়োজন নাই। ২) মনে এক ও মুখে অন্য কথা এরূপ মিথ্যা ভান ও অবিশ্বস্ততা কোনও মঙ্গল বয়ে আনবে না। কারণ আল্লাহ্‌ এসব বাহ্যিক কথাবার্তার প্রকৃত উদ্দেশ্য অবগত আছেন। আল্লাহ্‌র কাছে যা মূল্যবান তা হচ্ছে আত্মার স্বচ্ছতা, পবিত্রতা ও বিশ্বস্ততা। সুতারাং অবিশ্বস্ত কথা , প্রতিজ্ঞা , প্রার্থনা কোনও কিছুই আল্লাহ্‌র কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ৩) সজোরে কোরাণ আবৃত্তি করা বা উচ্চস্বরে প্রার্থনা করা আল্লাহ্‌র কাছে খুর জরুরী নয়। কারণ এবাদতের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আল্লাহ্‌ বাইরের শব্দচয়ন বা উচ্চস্বরের দ্বারা বিচার করবেন না। তাঁর বিচারের মানদণ্ড হবে পাঠকের বা প্রার্থনায় নিবেদিতের আত্মিক অবস্থা। অন্তরের একাগ্রতা, ও স্রষ্টার কাছে বিনয়ে একান্ত নিবেদনই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ প্রার্থনা। কে আকুলভাবে স্রষ্টার সান্নিধ্য কামনা করে , আর কে করে না তা আল্লাহ্‌ খোলা বই এর মত, প্রখর দিবালোকের মত পাঠ করতে পারেন।

আল্লাহ তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য ইলাহ নেই। সব সৌন্দর্যমন্ডিত নাম তাঁরই।
Allâh! Lâ ilâhla illa Huwa (none has the right to be worshipped but He)! To Him belong the Best Names.

اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ لَهُ الْأَسْمَاء الْحُسْنَى
Allahu la ilaha illa huwa lahu al-asmao alhusna

YUSUFALI: Allah! there is no god but He! To Him belong the most Beautiful Names.
PICKTHAL: Allah! There is no Allah save Him. His are the most beautiful names.
SHAKIR: Allah– there is no god but He; His are the very best names.
KHALIFA: GOD: there is no other god besides Him. To Him belong the most beautiful names.

০৮। আল্লাহ্‌ ! তিনি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নাই ! সুন্দর নাম সকল তারই জন্য নিবেদিত ২৫৩৯।

২৫৩৯। দেখুন আয়াত [ ১৭ : ১১০ ] ও টিকা ২৩২২। জীবনের সকল সৌর্ন্দয্য , পৃথিবীর সকল সুন্দর জিনিষ আল্লাহ্‌র শিল্পী সত্ত্বার প্রকাশ মাত্র। মানুষের সৃষ্ট শিল্প, সঙ্গীত, ভাষা, সাহিত্য সবই মানুষের দ্বারা আল্লাহ্‌ সৃষ্টি করান। আবার বিশ্ব প্রকৃতিতে অহরহ যে সৌন্দর্যের লীলাখেলা চলে, বিশ্ব-ভূমন্ডল যে সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি, তা আল্লাহ্‌রই শিল্পী সত্ত্বার প্রকাশ মাত্র। এই প্রকাশের বিভিন্নতাকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। পৃথিবীর সকল সৌন্দর্য তারই অবদান। তাঁর এই গুণাবলীই তাঁর বিভিন্ন নামের প্রতি আরোপ করা হয়। এই আরোপিত নাম তাঁরই মাহাত্ম্য ও সম্মানকে ঘোষণা করে।

আপনার কাছে মূসার বৃত্তান্ত পৌঁছেছে কি।
And has there come to you the story of Mûsa (Moses)?

وَهَلْ أَتَاكَ حَدِيثُ مُوسَى
Wahal ataka hadeethu moosa

YUSUFALI: Has the story of Moses reached thee?
PICKTHAL: Hath there come unto thee the story of Moses?
SHAKIR: And has the story of Musa come to you?
KHALIFA: Have you noted the history of Moses?

০৯। মুসার কাহিনী কি তোমার নিকট পৌঁছেছে ? ২৫৪০।

২৫৪০। হযরত মুসার কাহিনী কোরাণে বিভিন্ন সূরাতে বর্ণনা করা হয়েছে। বর্ণনায় সময়ে বিভিন্ন ঘটনার উপরে আলোকপাত করা হয় যা কোরাণের বক্তব্যের নির্দ্দিষ্ট উপদেশের বর্ণনার উপরে গুরুত্ব আরোপ করে। বক্তব্যকে প্রাঞ্জল করে অনুধাবনের স্বচ্ছতা বাড়ায়। যেমন : আয়াত [ ২: ৪৯ – ৬১] তে মানুষের ধর্মীয় ইতিহাসের আলোচনার প্রেক্ষিতে মুসার কাহিনীর অবতারণা করা হয়েছে। আয়াত [ ৭ : ১০৩ – ১৬২ ] তে ইসরাঈলী উম্মতের কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে মুসার কাহিনীর মাধ্যমে। মুসার পরেও সে বর্ণনা অব্যাহত আছে। আয়াত [ ১৭ : ১০১ – ১০৩ ] তে ফেরাউনের কাহিনীর মাধ্যমে বলা হয়েছে কি ভাবে উদ্ধত অহংকারে আত্মার অধঃপতন ঘটে। এই সূরাতে আয়াত [ ২০ : ৯ – ২৪ ] তে আল্লাহ্‌ কর্তৃক দায়িত্ব প্রাপ্তির পথে হযরত মুসার আত্মিক উন্নতির ধাপকে চিত্রিত করা হয়েছে। আয়াত [ ২০ : ২৫ – ৩৬ ] তে মুসার সাথে তাঁর ভাই হারুনের আধ্যাত্মিক সম্বন্ধের সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। আয়াত [ ২০ : ৩৭ – ৪০ ] তে মুসার সাথে তাঁর মা ও বোনের আধ্যাত্মিক সম্পর্ককে তুলে ধরা হয়েছে। তাঁর প্রতি প্রতিপালকের স্বর্গীয় ইচ্ছাকে প্রতিফলিত করা হয়েছে। আয়াত [ ২০ : ৪১ – ৭৬ ] তে ফেরাউনের সাথে মুসার আধ্যাত্মিক সংগ্রামকে তুলে ধরা হয়েছে। এবং [ ২০ : ৭৭ – ৯৮ ] তে ইসরাঈলীদের সাথে মুসার আধ্যাত্মিক সংগ্রামকে বর্ণনা করা হয়েছে।

 

তিনি যখন আগুন দেখলেন, তখন পরিবারবর্গকে বললেনঃ তোমরা এখানে অবস্থান কর আমি আগুন দেখেছি। সম্ভবতঃ আমি তা থেকে তোমাদের কাছে কিছু আগুন জালিয়ে আনতে পারব অথবা আগুনে পৌছে পথের সন্ধান পাব।
When he saw a fire, he said to his family: ”Wait! Verily, I have seen a fire, perhaps I can bring you some burning brand therefrom, or find some guidance at the fire.”

إِذْ رَأَى نَارًا فَقَالَ لِأَهْلِهِ امْكُثُوا إِنِّي آنَسْتُ نَارًا لَّعَلِّي آتِيكُم مِّنْهَا بِقَبَسٍ أَوْ أَجِدُ عَلَى النَّارِ هُدًى
Ith raa naran faqala li-ahlihi omkuthoo innee anastu naran laAAallee ateekum minha biqabasin aw ajidu AAala alnnari hudan

YUSUFALI: Behold, he saw a fire: So he said to his family, “Tarry ye; I perceive a fire; perhaps I can bring you some burning brand therefrom, or find some guidance at the fire.”
PICKTHAL: When he saw a fire and said unto his folk: Lo! Wait! I see a fire afar off. Peradventure I may bring you a brand therefrom or may find guidance at the fire.
SHAKIR: When he saw fire, he said to his family: Stop, for surely I see a fire, haply I may bring to you therefrom a live coal or find a guidance at the fire.
KHALIFA: When he saw a fire, he said to his family, “Stay here. I have seen a fire. Maybe I can bring you some of it, or find some guidance at the fire.”

১০। স্মরণ কর! সে একটি আগুন দেখেছিলো ২৫৪১। সুতারাং সে তাঁর পরিবারকে বলেছিলো, ” তোমরা অপেক্ষা কর; আমি আগুন দেখতে পাচ্ছি। সম্ভবতঃ আমি সেখান থেকে তোমাদের জন্য জলন্ত কাষ্ঠ খন্ড আনতে পারবো, অথবা আগুনের নিকটে কোন পথ নির্দ্দেশ পাব ২৫৪২।

২৫৪১। হযরত মুসা স্ত্রীসহ মাদয়ান হতে মিশর যাচ্ছিলেন। পথে রাত্রি হয়, শীতে তাদের কষ্ট হচ্ছিল। তখন তিনি আগুন দেখলেন। মরুভূমির মাঝে, নির্জন স্থানে আগুনের উপস্থিতির অর্থ হচ্ছে মানুষের উপস্থিতি। সুতারাং মুসা স্ত্রী পরিজন সে স্থানে রেখে আগুনের সন্ধানে একা যাত্রা করেন, যেনো পরিবারের জন্য আগুনের বন্দোবস্ত করতে পারেন, এবং মিশর যাওয়ার সঠিক পথের সন্ধান পেতে পারেন। কিন্তু সে আলোর দ্যুতি সাধারণ আগুনের আলোর ন্যায় ছিলো না। তা ছিলো এক জ্বলন্ত সতেজ সবুজ বৃক্ষ। আশ্চর্যের বিষয় এই যে, এই আগুনের কারণে বৃক্ষের কোন ডাল অথবা পাতা পুড়ছে না ; বরং আগুনের কারণে বৃক্ষের সৌন্দর্য , সজীবতা ও উজ্জ্বল্য আরও বেড়ে গেছে। কারণ তা ছিলো আল্লাহ্‌র মহিমার নিদর্শন।

২৫৪২। এখান থেকে হযরত মুসার আধ্যাত্মিক জীবনের ইতিহাস শুরু হয়। এখান থেকেই শুরু হয় তাঁর প্রতি আল্লাহ প্রদত্ত কর্তব্য কর্ম। হযরত মুসার জীবনী কোরাণের বিভিন্ন সূরাতে বর্ণনা করা হয়েছে, বিভিন্ন আধ্যাত্মিক পাঠ শিক্ষাদানের জন্য। তাঁর শৈশব, লালন-পালন, পার্থিব জীবনকে তুলে ধরা হয়েছে অন্যান্য সূরাতে আলোচ্য বিষয়কে স্পষ্টভাবে অনুধাবন করানোর উদ্দেশ্য। হযরত মুসা যখন যৌবন প্রাপ্ত হলেন, তিনি ফেরাউনের রাজপ্রাসাদ ত্যাগ করে, সিনাই উপত্যকার মাদয়ানবাসীদের নিকট গমন করেন। তিনি সেখানে বিয়ে করেন এবং এক দিন তাঁর পরিবারবর্গসহ স্থানান্তরে যাচ্ছিলেন। এ সময়েই আল্লাহ তাঁকে দায়িত্ব দেবার জন্য ডাক দেন। তিনি আগুনের উষ্ণতার আরাম ও পথের নির্দ্দেশের জন্য আগুনের সন্ধানে গিয়েছিলেন যা তাঁর ধ্যান ধারণায় ছিলো সম্পূর্ণ জাগতিক। কিন্তু সেখানে তিনি আরও উচ্চতর ও পবিত্রতম আরাম ও পথের নির্দ্দেশ পান। সম্পূর্ণ আয়াতটিতে এক বিস্ময়কর, আত্যাশ্চার্য ঘটনার বিবরণ আছে যার অর্থ অত্যন্ত গভীর। স্বল্প কয়েকটি আয়াতের মাধ্যমে এই গূঢ় তত্বপূর্ণ ঘটনাকে উপস্থাপন করা হয়েছে।

অতঃপর যখন তিনি আগুনের কাছে পৌছলেন, তখন আওয়াজ আসল হে মূসা,
And when he came to it (the fire), he was called by name: ”O Mûsa (Moses)!

فَلَمَّا أَتَاهَا نُودِي يَا مُوسَى
Falamma ataha noodiya ya moosa

YUSUFALI: But when he came to the fire, a voice was heard: “O Moses!
PICKTHAL: And when he reached it, he was called by name: O Moses!
SHAKIR: So when he came to it, a voice was uttered: O Musa:
KHALIFA: When he came to it, he was called, “O, Moses.

১১। কিন্তু সে যখন আগুনের নিকটবর্তী হলো, একটি স্বর শোনা গেলো ” হে মুসা ” !

১২। ” আমিই তোমার প্রভু! সুতারাং [ আমার উপস্থিতিতে ] তোমার যুতা খুলে ফেল ২৫৪৩। তুমি [ এখন ] পবিত্র ‘তুওয়া ‘ উপত্যকায় রয়েছ। ২৫৪৪

২৫৪৩। ” যুতা খুলে ফেল ” জুতা খুলে ফেলা হচ্ছে সম্মান প্রদর্শনের এক পন্থা। আমরা সম্পূর্ণ বিষয়টিকে এভাবে বিচার করতে পারি। এখন মুসা আল্লাহর কর্তৃক দায়িত্ব পাওয়ার উপযুক্ত, সুতারাং জাগতিক সকল বিষয় থেকে তিনি হবেন মুক্ত। এখানে পাদুকা জাগতিক বিষয়বস্তুর প্রতীক স্বরূপ।

২৫৪৪। ” তুওয়া ” উপত্যকার অবস্থান সিনাই পর্বতের পাদদেশে। এখানেই তিনি পরবর্তীতে তাওরাত গ্রন্থ লাভ করেন।

আমিই তোমার পালনকর্তা, অতএব তুমি জুতা খুলে ফেল, তুমি পবিত্র উপত্যকা তুয়ায় রয়েছ।
”Verily! I am your Lord! So take off your shoes, you are in the sacred valley, Tuwa.

إِنِّي أَنَا رَبُّكَ فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ إِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى
Innee ana rabbuka faikhlaAA naAAlayka innaka bialwadi almuqaddasi tuwan

YUSUFALI: “Verily I am thy Lord! therefore (in My presence) put off thy shoes: thou art in the sacred valley Tuwa.
PICKTHAL: Lo! I, even I, am thy Lord, So take off thy shoes, for lo! thou art in the holy valley of Tuwa.
SHAKIR: Surely I am your Lord, therefore put off your shoes; surely you are in the sacred valley, Tuwa,
KHALIFA: “I am your Lord; remove your sandals. You are in the sacred valley, Tuwaa.

১১। কিন্তু সে যখন আগুনের নিকটবর্তী হলো, একটি স্বর শোনা গেলো ” হে মুসা ” !

১২। ” আমিই তোমার প্রভু! সুতারাং [ আমার উপস্থিতিতে ] তোমার যুতা খুলে ফেল ২৫৪৩। তুমি [ এখন ] পবিত্র ‘তুওয়া ‘ উপত্যকায় রয়েছ। ২৫৪৪

২৫৪৩। ” যুতা খুলে ফেল ” জুতা খুলে ফেলা হচ্ছে সম্মান প্রদর্শনের এক পন্থা। আমরা সম্পূর্ণ বিষয়টিকে এভাবে বিচার করতে পারি। এখন মুসা আল্লাহর কর্তৃক দায়িত্ব পাওয়ার উপযুক্ত, সুতারাং জাগতিক সকল বিষয় থেকে তিনি হবেন মুক্ত। এখানে পাদুকা জাগতিক বিষয়বস্তুর প্রতীক স্বরূপ।

২৫৪৪। ” তুওয়া ” উপত্যকার অবস্থান সিনাই পর্বতের পাদদেশে। এখানেই তিনি পরবর্তীতে তাওরাত গ্রন্থ লাভ করেন।

এবং আমি তোমাকে মনোনীত করেছি, অতএব যা প্রত্যাদেশ করা হচ্ছে, তা শুনতে থাক।
”And I have chosen you. So listen to that which is inspired to you.

وَأَنَا اخْتَرْتُكَ فَاسْتَمِعْ لِمَا يُوحَى
Waana ikhtartuka faistamiAA lima yooha

YUSUFALI: “I have chosen thee: listen, then, to the inspiration (sent to thee).
PICKTHAL: And I have chosen thee, so hearken unto that which is inspired.
SHAKIR: And I have chosen you, so listen to what is revealed:
KHALIFA: “I have chosen you, so listen to what is being revealed.

১৩। ” আমি তোমাকে মনোনীত করেছি; সুতারাং যে ওহী তোমাকে প্রেরণ করা হয় তা শোন।

১৪। “আমিই আল্লাহ্‌ ; আমা ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নাই। সুতারাং তুমি [ শুধুমাত্র ] আমারই এবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে নিয়মিত সালাত কায়েম কর।

১৫। “অবশ্যই কিয়ামত সমাগত ২৫৪৫ – আমার পরিকল্পনা হচ্ছে তা গোপন রাখা ২৫৪৬ ; যেনো প্রতিটি আত্মা তার চেষ্টা অনুযায়ী পুরষ্কার লাভ করতে পারে।”

২৫৪৫। আমাদের কর্তব্য কর্ম সম্বন্ধে এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। আমাদের প্রথম এবং প্রধান কর্তব্য এক আল্লাহর এবাদত করা, এবাদত অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করা এবং সালাত কায়েম করা অর্থাৎ নামাজ বা প্রার্থনার মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্য কামনা করা যা পূর্বের আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। পরবর্তীতে বলা হয়েছে কেয়ামত বা পরকালে বিশ্বাস স্থাপনের জন্য। কেয়ামত হলো সেদিন , যেদিন ইহকালের সকল কর্মের হিসাব নিকাশ হবে এবং প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের পরিতোষিক প্রদান করা হবে।

২৫৪৬। “Ukfi” এই শব্দটির অর্থ ” গোপন রাখা ” অথবা “স্পষ্ট প্রতীয়মান ” হওয়া। কোন কোন তফসীরকার প্রথমটি,কোন কোন তফসীরকার দ্বিতীয় অর্থটি গ্রহণ করেছেন। যদি প্রথম অর্থটি গ্রহণ করা হয় তবে বাক্যটির অর্থ দাঁড়ায় কেয়ামতের সংবাদ গোপন রাখা মানুষের কাছ থেকে। যদি দ্বিতীয়টির অর্থ গ্রহণ করা হয় তবে এর অর্থ দাঁড়ায় কেয়ামতের সংবাদ স্পষ্টভাবে প্রকাশ করা মানুষের কাছে যেনো তারা সাবধানতা অবলম্বন করতে পারে। মওলানা ইউসুফ আলী সাহেবের মতে দুটি অর্থই প্রযোজ্য হতে পারে।

আমিই আল্লাহ আমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। অতএব আমার এবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে নামায কায়েম কর।
”Verily! I am Allâh! Lâ ilâha illa Ana (none has the right to be worshipped but I), so worship Me, and perform As­Salât (Iqâmat-as-Salât) for My Remembrance.

إِنَّنِي أَنَا اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدْنِي وَأَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْرِي
Innanee ana Allahu la ilaha illa ana faoAAbudnee waaqimi alssalata lithikree

YUSUFALI: “Verily, I am Allah: There is no god but I: So serve thou Me (only), and establish regular prayer for celebrating My praise.
PICKTHAL: Lo! I, even I, am Allah, There is no Allah save Me. So serve Me and establish worship for My remembrance.
SHAKIR: Surely I am Allah, there is no god but I, therefore serve Me and keep up prayer for My remembrance:
KHALIFA: “I am GOD; there is no other god beside Me. You shall worship Me alone, and observe the Contact Prayers (Salat) to remember Me.

১৩। ” আমি তোমাকে মনোনীত করেছি; সুতারাং যে ওহী তোমাকে প্রেরণ করা হয় তা শোন।

১৪। “আমিই আল্লাহ্‌ ; আমা ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নাই। সুতারাং তুমি [ শুধুমাত্র ] আমারই এবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে নিয়মিত সালাত কায়েম কর।

১৫। “অবশ্যই কিয়ামত সমাগত ২৫৪৫ – আমার পরিকল্পনা হচ্ছে তা গোপন রাখা ২৫৪৬ ; যেনো প্রতিটি আত্মা তার চেষ্টা অনুযায়ী পুরষ্কার লাভ করতে পারে।”

২৫৪৫। আমাদের কর্তব্য কর্ম সম্বন্ধে এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। আমাদের প্রথম এবং প্রধান কর্তব্য এক আল্লাহর এবাদত করা, এবাদত অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করা এবং সালাত কায়েম করা অর্থাৎ নামাজ বা প্রার্থনার মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্য কামনা করা যা পূর্বের আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। পরবর্তীতে বলা হয়েছে কেয়ামত বা পরকালে বিশ্বাস স্থাপনের জন্য। কেয়ামত হলো সেদিন , যেদিন ইহকালের সকল কর্মের হিসাব নিকাশ হবে এবং প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের পরিতোষিক প্রদান করা হবে।

২৫৪৬। “Ukfi” এই শব্দটির অর্থ ” গোপন রাখা ” অথবা “স্পষ্ট প্রতীয়মান ” হওয়া। কোন কোন তফসীরকার প্রথমটি,কোন কোন তফসীরকার দ্বিতীয় অর্থটি গ্রহণ করেছেন। যদি প্রথম অর্থটি গ্রহণ করা হয় তবে বাক্যটির অর্থ দাঁড়ায় কেয়ামতের সংবাদ গোপন রাখা মানুষের কাছ থেকে। যদি দ্বিতীয়টির অর্থ গ্রহণ করা হয় তবে এর অর্থ দাঁড়ায় কেয়ামতের সংবাদ স্পষ্টভাবে প্রকাশ করা মানুষের কাছে যেনো তারা সাবধানতা অবলম্বন করতে পারে। মওলানা ইউসুফ আলী সাহেবের মতে দুটি অর্থই প্রযোজ্য হতে পারে।

কেয়ামত অবশ্যই আসবে, আমি তা গোপন রাখতে চাই; যাতে প্রত্যেকেই তার কর্মানুযায়ী ফল লাভ করে।
”Verily, the Hour is coming and My Will is to keep it hidden that every person may be rewarded for that which he strives.

إِنَّ السَّاعَةَ ءاَتِيَةٌ أَكَادُ أُخْفِيهَا لِتُجْزَى كُلُّ نَفْسٍ بِمَا تَسْعَى
Inna alssaAAata atiyatun akadu okhfeeha litujza kullu nafsin bima tasAAa

YUSUFALI: “Verily the Hour is coming – My design is to keep it hidden – for every soul to receive its reward by the measure of its Endeavour.
PICKTHAL: Lo! the Hour is surely coming. But I will to keep it hidden, that every soul may be rewarded for that which it striveth (to achieve).
SHAKIR: Surely the hour is coming– I am about to make it manifest– so that every soul may be rewarded as it strives:
KHALIFA: “The Hour (end of the world) is surely coming; I will keep it almost hidden, for each soul must be paid for its works.

১৩। ” আমি তোমাকে মনোনীত করেছি; সুতারাং যে ওহী তোমাকে প্রেরণ করা হয় তা শোন।

১৪। “আমিই আল্লাহ্‌ ; আমা ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নাই। সুতারাং তুমি [ শুধুমাত্র ] আমারই এবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে নিয়মিত সালাত কায়েম কর।

১৫। “অবশ্যই কিয়ামত সমাগত ২৫৪৫ – আমার পরিকল্পনা হচ্ছে তা গোপন রাখা ২৫৪৬ ; যেনো প্রতিটি আত্মা তার চেষ্টা অনুযায়ী পুরষ্কার লাভ করতে পারে।”

২৫৪৫। আমাদের কর্তব্য কর্ম সম্বন্ধে এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। আমাদের প্রথম এবং প্রধান কর্তব্য এক আল্লাহর এবাদত করা, এবাদত অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করা এবং সালাত কায়েম করা অর্থাৎ নামাজ বা প্রার্থনার মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্য কামনা করা যা পূর্বের আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। পরবর্তীতে বলা হয়েছে কেয়ামত বা পরকালে বিশ্বাস স্থাপনের জন্য। কেয়ামত হলো সেদিন , যেদিন ইহকালের সকল কর্মের হিসাব নিকাশ হবে এবং প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের পরিতোষিক প্রদান করা হবে।

২৫৪৬। “Ukfi” এই শব্দটির অর্থ ” গোপন রাখা ” অথবা “স্পষ্ট প্রতীয়মান ” হওয়া। কোন কোন তফসীরকার প্রথমটি,কোন কোন তফসীরকার দ্বিতীয় অর্থটি গ্রহণ করেছেন। যদি প্রথম অর্থটি গ্রহণ করা হয় তবে বাক্যটির অর্থ দাঁড়ায় কেয়ামতের সংবাদ গোপন রাখা মানুষের কাছ থেকে। যদি দ্বিতীয়টির অর্থ গ্রহণ করা হয় তবে এর অর্থ দাঁড়ায় কেয়ামতের সংবাদ স্পষ্টভাবে প্রকাশ করা মানুষের কাছে যেনো তারা সাবধানতা অবলম্বন করতে পারে। মওলানা ইউসুফ আলী সাহেবের মতে দুটি অর্থই প্রযোজ্য হতে পারে।

সুতরাং যে ব্যক্তি কেয়ামতে বিশ্বাস রাখে না এবং নিজ খাহেশের অনুসরণ করে, সে যেন তোমাকে তা থেকে নিবৃত্ত না করে। নিবৃত্ত হলে তুমি ধবংস হয়ে যাবে।
”Therefore, let not the one who believes not therein (i.e. in the Day of Resurrection, Reckoning, Paradise and Hell, etc.), but follows his own lusts, divert you therefrom, lest you perish.

فَلاَ يَصُدَّنَّكَ عَنْهَا مَنْ لاَ يُؤْمِنُ بِهَا وَاتَّبَعَ هَوَاهُ فَتَرْدَى
Fala yasuddannaka AAanha man la yu/minu biha waittabaAAa hawahu fatarda

YUSUFALI: “Therefore let not such as believe not therein but follow their own lusts, divert thee therefrom, lest thou perish!”..
PICKTHAL: Therefor, let not him turn thee aside from (the thought of) it who believeth not therein but followeth his own desire, lest thou perish.
SHAKIR: Therefore let not him who believes not in it and follows his low desires turn you away from it so that you should perish;
KHALIFA: “Do not be diverted therefrom by those who do not believe in it – those who pursue their own opinions – lest you fall.

১৬। ” সুতারাং যারা তাতে বিশ্বাস করে না , উপরন্তু নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তারা যেনো তা থেকে তোমাকে অন্যমস্ক না করে যাতে তুমি ধ্বংস হয়ে যাও !” ২৫৪৭

২৫৪৭। “যারা তাতে বিশ্বাস করে না ” এ স্থলে ” তাতে” দ্বারা “কেয়ামতে বিশ্বাস ” ও নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ না করাকে বোঝানো হয়েছে। এই সাবধান বাণী আল্লাহ মুসাকে লক্ষ্য করে বলেন। মুসার সামনে যে কর্তব্য কর্ম তার প্রধান অংশে বিরাজ করবে ভয়ংকর বাঁধা উদ্ধত অহংকারীদের দ্বারা। ফেরাউন ও ইজিপ্টবাসীরা অন্ধ অহংকারে হযরত মুসার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধাচারণ করে। পরবর্তীতে মুসাকে তাঁর নিজ সম্প্রদায়ের বিদ্রোহের সম্মুখীন হতে হয়। সুতারাং হযরত মুসা যখন আল্লাহর কাছে থেকে দায়িত্ব প্রাপ্ত হন, তখন আল্লাহ তাঁকে এ সব উদ্ধত , অহংকারী , একগুয়ে লোকদের সম্বন্ধে সাবধান করে দেন। যদিও সর্তকবাণীটি ছিলো হযরত মুসার প্রতি কিন্তু তা ছিলো সার্বজনীন, সর্বকালের , সর্বসাধারণের জন্য। সাধারণ মানুষ জাগতিক বিষয়ে নিমগ্ন থাকতে ভালোবাসে , আর এভাবেই সে প্রবৃত্তির দাসে পরিণত হয়। আল্লাহর হেদায়েতের পরিবর্তে সে যদি নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তবে তার ধ্বংস অনিবার্য। হেদায়েতের আলো থেকে বিচ্যুত হওয়ার উপাদান তাঁর চতুর্দ্দিকে ছড়ানো। এদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বিপদজনক যা তারই উল্লেখ এই আয়াতে করা হয়েছে। সবচেয়ে বিপদজনক হচ্ছে আল্লাহর প্রতি অবিশ্বাস ও নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ। এরা সব সময়ে নিজ স্বার্থ ও নিজ প্রবৃত্তি ব্যতীত অন্য কিছুকে মূল্য দেয় না। এদের মধ্যে ন্যায় ও অন্যায়ের কোন সীমারেখা নাই।

হে মূসা, তোমার ডানহাতে ওটা কি?
”And what is that in your right hand, O Mûsa (Moses)?”

وَمَا تِلْكَ بِيَمِينِكَ يَا مُوسَى
Wama tilka biyameenika ya moosa

YUSUFALI: “And what is that in the right hand, O Moses?”
PICKTHAL: And what is that in thy right hand, O Moses?
SHAKIR: And what is this in your right hand, O Musa!
KHALIFA: “What is this in your right hand, Moses?”

১৭। ” হে মুসা তোমার ডান হাতে কি ? ”

১৮। সে বলেছিলো, ” এটা আমার লাঠি ২৫৪৮। এর উপরে আমি ভর দিই ; এর দ্বারা আঘাত করে আমি আমার মেষপালের জন্য বৃক্ষপত্র ফেলে থাকি; এটা অন্যান্য ব্যবহারেও লাগে।”

২৫৪৮। এখানে থেকে শুরু হয়েছে মুসার লাঠির বিবরণ। মুসাকে যখন লাঠির সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হলো , তিনি সে সম্বন্ধে সাধারণ দৈনন্দিক ব্যবহারের বাইরে আর কিছু ভাবতে পারেন নাই।

তিনি বললেনঃ এটা আমার লাঠি, আমি এর উপর ভর দেই এবং এর দ্বারা আমার ছাগপালের জন্যে বৃক্ষপত্র ঝেড়ে ফেলি এবং এতে আমার অন্যান্য কাজ ও চলে।
He said: ”This is my stick, whereon I lean, and wherewith I beat down branches for my sheep, and wherein I find other uses.”

قَالَ هِيَ عَصَايَ أَتَوَكَّأُ عَلَيْهَا وَأَهُشُّ بِهَا عَلَى غَنَمِي وَلِيَ فِيهَا مَآرِبُ أُخْرَى
Qala hiya AAasaya atawakkao AAalayha waahushshu biha AAala ghanamee waliya feeha maaribu okhra

YUSUFALI: He said, “It is my rod: on it I lean; with it I beat down fodder for my flocks; and in it I find other uses.”
PICKTHAL: He said: This is my staff whereon I lean, and wherewith I bear down branches for my sheep, and wherein I find other uses.
SHAKIR: He said: This is my staff: I recline on it and I beat the leaves with it to make them fall upon my sheep, and I have other uses for it.
KHALIFA: He said, “This is my staff. I lean on it, herd my sheep with it, and I use it for other purposes.”

১৭। ” হে মুসা তোমার ডান হাতে কি ? ”

১৮। সে বলেছিলো, ” এটা আমার লাঠি ২৫৪৮। এর উপরে আমি ভর দিই ; এর দ্বারা আঘাত করে আমি আমার মেষপালের জন্য বৃক্ষপত্র ফেলে থাকি; এটা অন্যান্য ব্যবহারেও লাগে।”

২৫৪৮। এখানে থেকে শুরু হয়েছে মুসার লাঠির বিবরণ। মুসাকে যখন লাঠির সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হলো , তিনি সে সম্বন্ধে সাধারণ দৈনন্দিক ব্যবহারের বাইরে আর কিছু ভাবতে পারেন নাই।

আল্লাহ বললেনঃ হে মূসা, তুমি ওটা নিক্ষেপ কর।
(Allâh) said: ”Cast it down, O Mûsa (Moses)!”

قَالَ أَلْقِهَا يَا مُوسَى
Qala alqiha ya moosa

YUSUFALI: (Allah) said, “Throw it, O Moses!”
PICKTHAL: He said: Cast it down, O Moses!
SHAKIR: He said: Cast it down, O Musa!
KHALIFA: He said, “Throw it down, Moses.”

১৯। [আল্লাহ্‌ ] বলেছিলো, ” হে মুসা ! তুমি ইহা নিক্ষেপ কর।”

২০। সে উহা নিক্ষেপ করলো এবং দেখো! সেটা সাপ হয়ে নড়াচড়া করতে থাকলো ২৫৪৯।

২৫৪৯। অনুরূপ আয়াত [ ৭ : ১০৭ ] , যেখানে “Thuban” শব্দটি সাপের সর্বনাম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, যার বর্ণনা হচ্ছে ” সকলের জন্য দর্শনীয় “। অর্থাৎ সাপটি সকলের জন্য দর্শনীয় ছিলো। সেখানে ফেরাউনের রাজসভাতে ছিলো বহুলোক এবং যাদুকরেরা। সেখানে লাঠিকে সাপে রূপান্তরিত করার উদ্দেশ্য ছিলো সর্বসাধারণকে যাদুকরদের প্রতারণা প্রত্যক্ষ করানো। সকলেই প্রত্যক্ষ করলো যে, মুসার লাঠিটি প্রকৃত সাপ হিসেবে চলতে শুরু করলো। এই আয়াতে লাঠিটি সাপে পরিণত হলো, মুসার মনে আল্লাহর ক্ষমতার স্বাক্ষর মুদ্রিত করার জন্য। সে কারণে এখানে “Haiy” শব্দটির ব্যবহার করা হয়েছে , যার অর্থ ” জীবন্ত সাপ” ; এবং তার ” সচলতা ” যা বাংলা অনুবদ করা হয়েছে ” উহা সাপ হয়ে নড়াচড়া করতে লাগলো ” বাক্যটি দ্বারা। এখানে লাঠির সাপে রূপান্তর এবং নড়াচড়া সবই করা হয়েছিলো শুধুমাত্র মুসার মনো জগত ও চিন্তাজগতে আল্লাহর ক্ষমতা সম্বন্ধে দৃঢ় ধারণার সৃষ্টি জন্য। কারণ সেখানে মুসা ব্যতীত আর কেহ ছিলো না।

অতঃপর তিনি তা নিক্ষেপ করলেন, অমনি তা সাপ হয়ে ছুটাছুটি করতে লাগল।
He cast it down, and behold! It was a snake, moving quickly.

فَأَلْقَاهَا فَإِذَا هِيَ حَيَّةٌ تَسْعَى
Faalqaha fa-itha hiya hayyatun tasAAa

YUSUFALI: He threw it, and behold! It was a snake, active in motion.
PICKTHAL: So he cast it down, and lo! it was a serpent, gliding.
SHAKIR: So he cast it down; and lo! it was a serpent running.
KHALIFA: He threw it down, whereupon it turned into a moving serpent.

১৯। [আল্লাহ্‌ ] বলেছিলো, ” হে মুসা ! তুমি ইহা নিক্ষেপ কর।”

২০। সে উহা নিক্ষেপ করলো এবং দেখো! সেটা সাপ হয়ে নড়াচড়া করতে থাকলো ২৫৪৯।

২৫৪৯। অনুরূপ আয়াত [ ৭ : ১০৭ ] , যেখানে “Thuban” শব্দটি সাপের সর্বনাম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, যার বর্ণনা হচ্ছে ” সকলের জন্য দর্শনীয় “। অর্থাৎ সাপটি সকলের জন্য দর্শনীয় ছিলো। সেখানে ফেরাউনের রাজসভাতে ছিলো বহুলোক এবং যাদুকরেরা। সেখানে লাঠিকে সাপে রূপান্তরিত করার উদ্দেশ্য ছিলো সর্বসাধারণকে যাদুকরদের প্রতারণা প্রত্যক্ষ করানো। সকলেই প্রত্যক্ষ করলো যে, মুসার লাঠিটি প্রকৃত সাপ হিসেবে চলতে শুরু করলো। এই আয়াতে লাঠিটি সাপে পরিণত হলো, মুসার মনে আল্লাহর ক্ষমতার স্বাক্ষর মুদ্রিত করার জন্য। সে কারণে এখানে “Haiy” শব্দটির ব্যবহার করা হয়েছে , যার অর্থ ” জীবন্ত সাপ” ; এবং তার ” সচলতা ” যা বাংলা অনুবদ করা হয়েছে ” উহা সাপ হয়ে নড়াচড়া করতে লাগলো ” বাক্যটি দ্বারা। এখানে লাঠির সাপে রূপান্তর এবং নড়াচড়া সবই করা হয়েছিলো শুধুমাত্র মুসার মনো জগত ও চিন্তাজগতে আল্লাহর ক্ষমতা সম্বন্ধে দৃঢ় ধারণার সৃষ্টি জন্য। কারণ সেখানে মুসা ব্যতীত আর কেহ ছিলো না।

আল্লাহ বললেনঃ তুমি তাকে ধর এবং ভয় করো না, আমি এখনি একে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেব।
Allâh said:”Grasp it, and fear not, We shall return it to its former state,

قَالَ خُذْهَا وَلَا تَخَفْ سَنُعِيدُهَا سِيرَتَهَا الْأُولَى
Qala khuthha wala takhaf sanuAAeeduha seerataha al-oola

YUSUFALI: (Allah) said, “Seize it, and fear not: We shall return it at once to its former condition”..
PICKTHAL: He said: Grasp it and fear not. We shall return it to its former state.
SHAKIR: He said: Take hold of it and fear not; We will restore it to its former state:
KHALIFA: He said, “Pick it up; do not be afraid. We will return it to its original state.

২১। [আল্লাহ্‌ ] বলেছিলেন, ” ইহাকে ধর, ভয় পেয়ো না। আমি তৎক্ষণাত ইহাকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনবো।

২২। ” এখন তোমার হাতকে তোমার বগলে রাখ ২৫৫০। আর একটি নিদর্শন স্বরূপ এটা বের হয়ে আসবে সাদা [উজ্জ্বল ] , নির্মল ভাবে ;

২৫৫০। দ্বিতীয় অলৌকিক ঘটনাটি ছিলো আরও আশ্চর্যজনক তা ছিলো মুসার ” নির্মল উজ্জল ” হাত। সাধারণত চামড়া যখন রোগাক্রান্ত হয়, তখন সাদা রং ধারণ করে। কিন্তু তা থেকে দ্যুতি বিকিরণ করে না। এক্ষেত্রে রোগের প্রশ্নই আসতে পারে না। কারণ তা ছিলো আল্লাহর কুদরত বা অত্যাশ্চর্য নিদর্শন। সেই কারণে মুসার হাত থেকে স্বর্গীয় জ্যোতি বিচ্ছুরিত হতো। এ ধরণের অত্যাশ্চর্য ঘটনা প্রদর্শন পৃথিবীর কোনও যাদুকরের পক্ষেই সম্ভব ছিলো না।

তোমার হাত বগলে রাখ, তা বের হয়ে আসবে নির্মল উজ্জ্বল হয়ে অন্য এক নিদর্শন রূপে; কোন দোষ ছাড়াই।
”And press your (right) hand to your (left) side, it will come forth white (and shining), without any disease as another sign,

وَاضْمُمْ يَدَكَ إِلَى جَنَاحِكَ تَخْرُجْ بَيْضَاء مِنْ غَيْرِ سُوءٍ آيَةً أُخْرَى
Waodmum yadaka ila janahika takhruj baydaa min ghayri soo-in ayatan okhra

YUSUFALI: “Now draw thy hand close to thy side: It shall come forth white (and shining), without harm (or stain),- as another Sign,-
PICKTHAL: And thrust thy hand within thine armpit, it will come forth white without hurt. (That will be) another token.
SHAKIR: And press your hand to your side, it shall come out white without evil: another sign:
KHALIFA: “And hold your hand under your wing; it will come out white without a blemish; another proof.

২১। [আল্লাহ্‌ ] বলেছিলেন, ” ইহাকে ধর, ভয় পেয়ো না। আমি তৎক্ষণাত ইহাকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনবো।

২২। ” এখন তোমার হাতকে তোমার বগলে রাখ ২৫৫০। আর একটি নিদর্শন স্বরূপ এটা বের হয়ে আসবে সাদা [উজ্জ্বল ] , নির্মল ভাবে ;

২৫৫০। দ্বিতীয় অলৌকিক ঘটনাটি ছিলো আরও আশ্চর্যজনক তা ছিলো মুসার ” নির্মল উজ্জল ” হাত। সাধারণত চামড়া যখন রোগাক্রান্ত হয়, তখন সাদা রং ধারণ করে। কিন্তু তা থেকে দ্যুতি বিকিরণ করে না। এক্ষেত্রে রোগের প্রশ্নই আসতে পারে না। কারণ তা ছিলো আল্লাহর কুদরত বা অত্যাশ্চর্য নিদর্শন। সেই কারণে মুসার হাত থেকে স্বর্গীয় জ্যোতি বিচ্ছুরিত হতো। এ ধরণের অত্যাশ্চর্য ঘটনা প্রদর্শন পৃথিবীর কোনও যাদুকরের পক্ষেই সম্ভব ছিলো না।

এটা এজন্যে যে, আমি আমার বিরাট নিদর্শনাবলীর কিছু তোমাকে দেখাই।
”That We may show you (some) of Our Greater Signs.

لِنُرِيَكَ مِنْ آيَاتِنَا الْكُبْرَى
Linuriyaka min ayatina alkubra

YUSUFALI: “In order that We may show thee (two) of our Greater Signs.
PICKTHAL: That We may show thee (some) of Our greater portents,
SHAKIR: That We may show you of Our greater signs:
KHALIFA: “We thus show you some of our great portents.

২৩। “[ এসব এজন্য যে ] , যেনো তোমাকে আমি আমার মহানিদর্শনের [ দুইটি ] দেখাতে পারি।

২৪। “ফেরাউনের কাছে যাও ২৫৫১ , অবশ্যই সে সকল সীমা লংঘন করেছে। ”

২৫৫১। এ ভাবেই আল্লাহ মুসাকে ভবিষ্যত দায়িত্বের জন্য প্রস্তুত করেন এবং নির্দ্দিষ্টভাবে ফেরাউনের নিকট প্রেরণ করেন ও ফেরাউনের পথভ্রষ্টতা নির্দ্দেশ করে দেন এই বলে যে, অহংকার ও গর্বে ফেরাউন ” সীমা লংঘন ” করেছে। ফেরাউনের সীমালংঘন এতটাই সীমা অতিক্রম করে যে, সে নিজেকে আল্লাহ বলে ঘোষণা করে। দেখুন আয়াত [ ৭৯ : ২৪ ]

ফেরাউনের নিকট যাও, সে দারুণ উদ্ধত হয়ে গেছে।
”Go to Fir’aun (Pharaoh)! Verily, he has transgressed (all bounds in disbelief and disobedience, and has behaved as an arrogant, and as a tyrant).”

اذْهَبْ إِلَى فِرْعَوْنَ إِنَّهُ طَغَى
Ithhab ila firAAawna innahu tagha

YUSUFALI: “Go thou to Pharaoh, for he has indeed transgressed all bounds.”
PICKTHAL: Go thou unto Pharaoh! Lo! he hath transgressed (the bounds).
SHAKIR: Go to Firon, surely he has exceeded all limits.
KHALIFA: “Go to Pharaoh, for he has transgressed.”

২৩। “[ এসব এজন্য যে ] , যেনো তোমাকে আমি আমার মহানিদর্শনের [ দুইটি ] দেখাতে পারি।

২৪। “ফেরাউনের কাছে যাও ২৫৫১ , অবশ্যই সে সকল সীমা লংঘন করেছে। ”

২৫৫১। এ ভাবেই আল্লাহ মুসাকে ভবিষ্যত দায়িত্বের জন্য প্রস্তুত করেন এবং নির্দ্দিষ্টভাবে ফেরাউনের নিকট প্রেরণ করেন ও ফেরাউনের পথভ্রষ্টতা নির্দ্দেশ করে দেন এই বলে যে, অহংকার ও গর্বে ফেরাউন ” সীমা লংঘন ” করেছে। ফেরাউনের সীমালংঘন এতটাই সীমা অতিক্রম করে যে, সে নিজেকে আল্লাহ বলে ঘোষণা করে। দেখুন আয়াত [ ৭৯ : ২৪ ]

মূসা বললেনঃ হে আমার পালনকর্তা আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দিন।
[Mûsa (Moses)] said: ”O my Lord! Open for me my chest (grant me self-confidence, contentment, and boldness).

قَالَ رَبِّ اشْرَحْ لِي صَدْرِي
Qala rabbi ishrah lee sadree

YUSUFALI: (Moses) said: “O my Lord! expand me my breast;
PICKTHAL: (Moses) said: My Lord! relieve my mind
SHAKIR: He said: O my Lord! Expand my breast for me,
KHALIFA: He said, “My Lord, cool my temper.

২৫। [ মুসা ] বলেছিলো, ” হে আমার প্রভু! আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দাও ২৫৫২।

২৫৫২। ” বক্ষ প্রশস্ত করে দাও ” এখানে বক্ষ শব্দটি প্রতীকধর্মী। জ্ঞান ও সর্বোচ্চ আবেগ অনুভূতি ও ভালোবাসার প্রকাশকে ব্যক্ত করা হয়েছে, ” বক্ষ” শব্দটি দ্বারা। দেখুন অনুরূপ প্রকাশ আয়াতে [ ৯৪ : ১ ]। মানুষের চরিত্রের সর্বোচ্চ রত্ন হচ্ছে জ্ঞান ও ভালোবাসার ক্ষমতা যা মানুষকে স্রষ্টার নিকটবর্তী করে। হযরত মুসা এই সর্বোচ্চ চারিত্রিক গুণাবলীর জন্য স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করেন যা সেই নির্দ্দিষ্ট সময়ের জন্য ছিলো অতি প্রয়োজনীয়। এ ব্যতীত তিনি আরও তিনটি জিনিষের জন্য প্রার্থনা করেনঃ ১) তাঁর কর্তব্য কর্ম সম্পাদনের জন্য আল্লাহর সাহায্য; যে কর্তব্য কর্ম প্রথমে তাঁর কাছে দুরূহ মনে হয়েছিলো। ২) তাঁর জিহ্বার জড়তা দূর করে বাক্‌পটুতা যাঞা করেছিলেন। ৩) তাঁর সহকর্মী রূপে তাঁর ভাই হারুনকে প্রার্থনা করেছিলেন। কারণ তিনি তাঁর ভাই হারুণকে ভালোবাসতেন ও বিশ্বাস করতেন। ভাইকে ব্যতীত তিনি মিশরবাসীদের মাঝে সম্পূর্ণ একা হয়ে যেতেন।

এবং আমার কাজ সহজ করে দিন।
”And ease my task for me;

وَيَسِّرْ لِي أَمْرِي
Wayassir lee amree

YUSUFALI: “Ease my task for me;
PICKTHAL: And ease my task for me;
SHAKIR: And make my affair easy to me,
KHALIFA: “And make this matter easy for me.

২৬। ” আমার কাজকে সহজ করে দাও ;

২৭। ” আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দাও ; ২৫৫৩।

২৫৫৩। এই আয়াতটির আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে ” আমার জিহ্বার উপর থেকে বন্ধন দূর করে দাও।”

এবং আমার জিহবা থেকে জড়তা দূর করে দিন।
”And make loose the knot (the defect) from my tongue, (i.e. remove the incorrectness from my speech) [That occurred as a result of a brand of fire which Mûsa (Moses) put in his mouth when he was an infant]. [Tafsir At-Tabarî, Vol. 16, Page 159].

وَاحْلُلْ عُقْدَةً مِّن لِّسَانِي
Waohlul AAuqdatan min lisanee

YUSUFALI: “And remove the impediment from my speech,
PICKTHAL: And loose a knot from my tongue,
SHAKIR: And loose the knot from my tongue,
KHALIFA: “And untie a knot from my tongue.

২৬। ” আমার কাজকে সহজ করে দাও ;

২৭। ” আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দাও ; ২৫৫৩।

২৫৫৩। এই আয়াতটির আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে ” আমার জিহ্বার উপর থেকে বন্ধন দূর করে দাও।”

যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে।
”That they understand my speech,

يَفْقَهُوا قَوْلِي
Yafqahoo qawlee

YUSUFALI: “So they may understand what I say:
PICKTHAL: That they may understand my saying.
SHAKIR: (That) they may understand my word;
KHALIFA: “So they can understand my speech.

২৮। ” যেনো তারা আমি যা বলি তা বুঝতে পারে।

২৯। ” আমার পরিবার থেকে আমাকে একজন সাহায্যকারী দাও , –

৩০। ” আমার ভ্রাতা হারুনকে।

৩১। ” তার মাধ্যমে আমার শক্তি বৃদ্ধি কর ২৫৫৪।

২৫৫৪। এই আররী আয়াতটির আক্ষরিক অর্থ ” আমার পিঠকে তাঁর দ্বারা শক্তিশালী কর।” ব্যাখ্যা হিসেবে বলা যায় মানুষের পিঠে বা শিঁর দাড়াতে মানুষের শক্তি। সেই কারণে বাংলা বাগ্‌ধারাতে প্রচলিত আছে ” শিরঁদাড়া শক্ত করে দাড়াও” অর্থাৎ সোজা ভাবে দাড়াতে যেনো তুমি তোমার কর্তব্যের ভার সাহসের সাথে মোকাবিলা করতে পার। অর্থাৎ পিঠ বা শিঁরদাড়া হচ্ছে সাহসের প্রতীক।

এবং আমার পরিবারবর্গের মধ্য থেকে আমার একজন সাহায্যকারী করে দিন।
”And appoint for me a helper from my family,

وَاجْعَل لِّي وَزِيرًا مِّنْ أَهْلِي
WaijAAal lee wazeeran min ahlee

YUSUFALI: “And give me a Minister from my family,
PICKTHAL: Appoint for me a henchman from my folk,
SHAKIR: And give to me an aider from my family:
KHALIFA: “And appoint an assistant for me from my family.

২৮। ” যেনো তারা আমি যা বলি তা বুঝতে পারে।

২৯। ” আমার পরিবার থেকে আমাকে একজন সাহায্যকারী দাও , –

৩০। ” আমার ভ্রাতা হারুনকে।

৩১। ” তার মাধ্যমে আমার শক্তি বৃদ্ধি কর ২৫৫৪।

২৫৫৪। এই আররী আয়াতটির আক্ষরিক অর্থ ” আমার পিঠকে তাঁর দ্বারা শক্তিশালী কর।” ব্যাখ্যা হিসেবে বলা যায় মানুষের পিঠে বা শিঁর দাড়াতে মানুষের শক্তি। সেই কারণে বাংলা বাগ্‌ধারাতে প্রচলিত আছে ” শিরঁদাড়া শক্ত করে দাড়াও” অর্থাৎ সোজা ভাবে দাড়াতে যেনো তুমি তোমার কর্তব্যের ভার সাহসের সাথে মোকাবিলা করতে পার। অর্থাৎ পিঠ বা শিঁরদাড়া হচ্ছে সাহসের প্রতীক।

আমার ভাই হারুনকে।
”Hârûn (Aaron), my brother;

هَارُونَ أَخِي
Haroona akhee

YUSUFALI: “Aaron, my brother;
PICKTHAL: Aaron, my brother.
SHAKIR: Haroun, my brother,
KHALIFA: “My brother Aaron.

২৮। ” যেনো তারা আমি যা বলি তা বুঝতে পারে।

২৯। ” আমার পরিবার থেকে আমাকে একজন সাহায্যকারী দাও , –

৩০। ” আমার ভ্রাতা হারুনকে।

৩১। ” তার মাধ্যমে আমার শক্তি বৃদ্ধি কর ২৫৫৪।

২৫৫৪। এই আররী আয়াতটির আক্ষরিক অর্থ ” আমার পিঠকে তাঁর দ্বারা শক্তিশালী কর।” ব্যাখ্যা হিসেবে বলা যায় মানুষের পিঠে বা শিঁর দাড়াতে মানুষের শক্তি। সেই কারণে বাংলা বাগ্‌ধারাতে প্রচলিত আছে ” শিরঁদাড়া শক্ত করে দাড়াও” অর্থাৎ সোজা ভাবে দাড়াতে যেনো তুমি তোমার কর্তব্যের ভার সাহসের সাথে মোকাবিলা করতে পার। অর্থাৎ পিঠ বা শিঁরদাড়া হচ্ছে সাহসের প্রতীক।

তার মাধ্যমে আমার কোমর মজবুত করুন।
”Increase my strength with him,

اشْدُدْ بِهِ أَزْرِي
Oshdud bihi azree

YUSUFALI: “Add to my strength through him,
PICKTHAL: Confirm my strength with him
SHAKIR: Strengthen my back by him,
KHALIFA: “Strengthen me with him.

২৮। ” যেনো তারা আমি যা বলি তা বুঝতে পারে।

২৯। ” আমার পরিবার থেকে আমাকে একজন সাহায্যকারী দাও , –

৩০। ” আমার ভ্রাতা হারুনকে।

৩১। ” তার মাধ্যমে আমার শক্তি বৃদ্ধি কর ২৫৫৪।

২৫৫৪। এই আররী আয়াতটির আক্ষরিক অর্থ ” আমার পিঠকে তাঁর দ্বারা শক্তিশালী কর।” ব্যাখ্যা হিসেবে বলা যায় মানুষের পিঠে বা শিঁর দাড়াতে মানুষের শক্তি। সেই কারণে বাংলা বাগ্‌ধারাতে প্রচলিত আছে ” শিরঁদাড়া শক্ত করে দাড়াও” অর্থাৎ সোজা ভাবে দাড়াতে যেনো তুমি তোমার কর্তব্যের ভার সাহসের সাথে মোকাবিলা করতে পার। অর্থাৎ পিঠ বা শিঁরদাড়া হচ্ছে সাহসের প্রতীক।

এবং তাকে আমার কাজে অংশীদার করুন।
”And let him share my task (of conveying Allâh’s Message and Prophethood),

وَأَشْرِكْهُ فِي أَمْرِي
Waashrik-hu fee amree

YUSUFALI: “And make him share my task:
PICKTHAL: And let him share my task,
SHAKIR: And associate him (with me) in my affair,
KHALIFA: “Let him be my partner in this matter.

৩২। “এবং তাকে আমার কর্মের অংশী কর।

৩৩। “যাতে আমরা প্রচুর ভাবে তোমার পবিত্রতা ঘোষণা করতে পারি ২৫৫৫।

২৫৫৫। আমরা সাধারণ মানুষ সর্বদা জাগতিক বিষয়ের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে থাকি। হযরত মুসা নবী রাসুলের মতই জাগতিক কিছুই প্রার্থনা করেন নাই, তাঁর প্রার্থনা ছিলো আধ্যাত্মিক। তাঁর নিয়ত বা উদ্দেশ্যকে তিনি সার্বজনীন না করে নির্দ্দিষ্ট করেছিলেন এই বাক্য দ্বারা যে, তিনি যেনো প্রচুরভাবে আল্লাহর মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করতে পারেন। প্রচুর ভাবে অর্থাৎ ধারাবাহিক ও ক্রমাগত ভাবে কখনও না থেমে আল্লাহকে স্মরণ করতে পারেন অধিক মাত্রায়।

এই আয়াত ও পরের আয়াতের উদ্দেশ্যকে চরিতার্থ করার জন্য হযরত মুসা আয়াত ২৫ থেকে ৩২ পর্যন্ত আল্লাহর নেয়ামত ও সাহায্য প্রার্থনা করেন।

যাতে আমরা বেশী করে আপনার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষনা করতে পারি।
”That we may glorify You much,

كَيْ نُسَبِّحَكَ كَثِيرًا
Kay nusabbihaka katheeran

YUSUFALI: “That we may celebrate Thy praise without stint,
PICKTHAL: That we may glorify Thee much
SHAKIR: So that we should glorify Thee much,
KHALIFA: “That we may glorify You frequently.

৩২। “এবং তাকে আমার কর্মের অংশী কর।

৩৩। “যাতে আমরা প্রচুর ভাবে তোমার পবিত্রতা ঘোষণা করতে পারি ২৫৫৫।

২৫৫৫। আমরা সাধারণ মানুষ সর্বদা জাগতিক বিষয়ের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে থাকি। হযরত মুসা নবী রাসুলের মতই জাগতিক কিছুই প্রার্থনা করেন নাই, তাঁর প্রার্থনা ছিলো আধ্যাত্মিক। তাঁর নিয়ত বা উদ্দেশ্যকে তিনি সার্বজনীন না করে নির্দ্দিষ্ট করেছিলেন এই বাক্য দ্বারা যে, তিনি যেনো প্রচুরভাবে আল্লাহর মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করতে পারেন। প্রচুর ভাবে অর্থাৎ ধারাবাহিক ও ক্রমাগত ভাবে কখনও না থেমে আল্লাহকে স্মরণ করতে পারেন অধিক মাত্রায়।

এই আয়াত ও পরের আয়াতের উদ্দেশ্যকে চরিতার্থ করার জন্য হযরত মুসা আয়াত ২৫ থেকে ৩২ পর্যন্ত আল্লাহর নেয়ামত ও সাহায্য প্রার্থনা করেন।

এবং বেশী পরিমাণে আপনাকে স্মরণ করতে পারি।
”And remember You much,

وَنَذْكُرَكَ كَثِيرًا
Wanathkuraka katheeran

YUSUFALI: “And remember Thee without stint:
PICKTHAL: And much remember Thee.
SHAKIR: And remember Thee oft.
KHALIFA: “And commemorate You frequently.

৩৪। ” এবং তোমাকে অনেক স্মরণ করতে পারি।

৩৫। ” তুমি তো আমাদের [ কার্যক্রমের ] সম্যক দ্রষ্টা ” ২৫৫৬।

২৫৫৬। হযরত মুসা আল্লাহকে প্রশংসা ও স্মরণ করার মাধ্যমে আল্লাহ তাঁকে যে নেয়ামতে ধন্য করেছেন তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

আপনি তো আমাদের অবস্থা সবই দেখছেন।
”Verily! You are of us Ever a Well-Seer.”

إِنَّكَ كُنتَ بِنَا بَصِيرًا
Innaka kunta bina baseeran

YUSUFALI: “For Thou art He that (ever) regardeth us.”
PICKTHAL: Lo! Thou art ever Seeing us.
SHAKIR: Surely, Thou art seeing us.
KHALIFA: “You are Seer of us.”

৩৪। ” এবং তোমাকে অনেক স্মরণ করতে পারি।

৩৫। ” তুমি তো আমাদের [ কার্যক্রমের ] সম্যক দ্রষ্টা ” ২৫৫৬।

২৫৫৬। হযরত মুসা আল্লাহকে প্রশংসা ও স্মরণ করার মাধ্যমে আল্লাহ তাঁকে যে নেয়ামতে ধন্য করেছেন তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

আল্লাহ বললেনঃ হে মূসা, তুমি যা চেয়েছ তা তোমাকে দেয়া হল।
Allâh said: ”You are granted your request, O Mûsa (Moses)!

قَالَ قَدْ أُوتِيتَ سُؤْلَكَ يَا مُوسَى
Qala qad ooteeta su/laka ya moosa

YUSUFALI: (Allah) said: “Granted is thy prayer, O Moses!”
PICKTHAL: He said: Thou art granted thy request, O Moses.
SHAKIR: He said: You are indeed granted your petition, O Musa
KHALIFA: He said, “Your request is granted, O Moses.

৩৬। [আল্লাহ্‌ ] বলেছিলেন , ” হে মুসা! তোমার প্রার্থনা মঞ্জুর হলো !

৩৭। ” আমি তো [ পূর্বেও ] তোমার প্রতি আরও একবার অনুগ্রহ করেছিলাম।

৩৮। ” স্মরণ কর! ওহীর মাধ্যমে তোমার মাতাকে বাণী প্রেরণ করেছিলাম ২৫৫৭।

২৫৫৭। এই আয়াতের মাধ্যমে মুসার লালন – পালনের প্রধান প্রধান লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলির উপরে ইঙ্গিত দান করা হয়েছে। হযরত ইউসুফ যখন মিশরের প্রধান মন্ত্রী ছিলেন সে সময়ে বণী ইসরাঈলীদের মিশরে আগমন ঘটে। হযরত ইউসুফের বহু বছর পরে এক ফেরাউন মিশরের সিংহাসনে আরোহণ করেন যিনি ইসরাঈলীদের ঘৃণা করতেন। তিনি ইসরাঈলীদের সদ্যজাত ছেলে শিশুদের মেরে ফেলার আদেশ দান করেন। এসময়েই হযরত মুসার জন্ম হয়। মুসার মা মুসাকে জন্মের পর থেকে গোপন করে রাখেন। কিন্তু যখন তা আর সম্ভব হলো না , তাঁর মনে উদয় হলো যে, শিশুকে একটি সিন্দুকে করে নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার কথা। তাঁর মনের এই কল্পনা কোন খাম-খেয়াল ছিলো না। এ ছিলো মহান আল্লাহর ইঙ্গিত। কারণ আল্লাহর পরিকল্পনা ছিলো যে, হযরত মুসাকে তিনি মিশরের সর্বোচ্চ জ্ঞানে শিক্ষিত করবেন যেনো এই জ্ঞান তাকে এর অসম্পূর্ণতাকে প্রকাশ করতে ও আল্লাহর মহিমাকে ঘোষণা করতে সাহায্য করে। সিন্দুকটি নীল নদীতে ভেসে যাচ্ছিল। সিন্দুকটি যেয়ে নীলনদীর তীরে বাগানের পার্শ্বে আটকে যায়। সিন্দুকটি ফেরাউনের লোকজন তুলে নিয়ে ফেরাউনের প্রাসাদে নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে ফেরাউনের স্ত্রী তাঁকে দত্তক পুত্ররূপে গ্রহণ করেন। এ সম্বন্ধে বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে আয়াত [ ২৮ : ৪ – ১৩ ]।

আমি তোমার প্রতি আরও একবার অনুগ্রহ করেছিলাম।
”And indeed We conferred a favour on you another time (before).

وَلَقَدْ مَنَنَّا عَلَيْكَ مَرَّةً أُخْرَى
Walaqad mananna AAalayka marratan okhra

YUSUFALI: “And indeed We conferred a favour on thee another time (before).
PICKTHAL: And indeed, another time, already We have shown thee favour,
SHAKIR: And certainly We bestowed on you a favor at another time;
KHALIFA: “We have blessed you another time.

৩৬। [আল্লাহ্‌ ] বলেছিলেন , ” হে মুসা! তোমার প্রার্থনা মঞ্জুর হলো !

৩৭। ” আমি তো [ পূর্বেও ] তোমার প্রতি আরও একবার অনুগ্রহ করেছিলাম।

৩৮। ” স্মরণ কর! ওহীর মাধ্যমে তোমার মাতাকে বাণী প্রেরণ করেছিলাম ২৫৫৭।

২৫৫৭। এই আয়াতের মাধ্যমে মুসার লালন – পালনের প্রধান প্রধান লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলির উপরে ইঙ্গিত দান করা হয়েছে। হযরত ইউসুফ যখন মিশরের প্রধান মন্ত্রী ছিলেন সে সময়ে বণী ইসরাঈলীদের মিশরে আগমন ঘটে। হযরত ইউসুফের বহু বছর পরে এক ফেরাউন মিশরের সিংহাসনে আরোহণ করেন যিনি ইসরাঈলীদের ঘৃণা করতেন। তিনি ইসরাঈলীদের সদ্যজাত ছেলে শিশুদের মেরে ফেলার আদেশ দান করেন। এসময়েই হযরত মুসার জন্ম হয়। মুসার মা মুসাকে জন্মের পর থেকে গোপন করে রাখেন। কিন্তু যখন তা আর সম্ভব হলো না , তাঁর মনে উদয় হলো যে, শিশুকে একটি সিন্দুকে করে নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার কথা। তাঁর মনের এই কল্পনা কোন খাম-খেয়াল ছিলো না। এ ছিলো মহান আল্লাহর ইঙ্গিত। কারণ আল্লাহর পরিকল্পনা ছিলো যে, হযরত মুসাকে তিনি মিশরের সর্বোচ্চ জ্ঞানে শিক্ষিত করবেন যেনো এই জ্ঞান তাকে এর অসম্পূর্ণতাকে প্রকাশ করতে ও আল্লাহর মহিমাকে ঘোষণা করতে সাহায্য করে। সিন্দুকটি নীল নদীতে ভেসে যাচ্ছিল। সিন্দুকটি যেয়ে নীলনদীর তীরে বাগানের পার্শ্বে আটকে যায়। সিন্দুকটি ফেরাউনের লোকজন তুলে নিয়ে ফেরাউনের প্রাসাদে নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে ফেরাউনের স্ত্রী তাঁকে দত্তক পুত্ররূপে গ্রহণ করেন। এ সম্বন্ধে বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে আয়াত [ ২৮ : ৪ – ১৩ ]।

 

যখন আমি তোমার মাতাকে নির্দেশ দিয়েছিলাম যা অতঃপর বর্ণিত হচ্ছে।
”When We inspired your mother with that which We inspired.

إِذْ أَوْحَيْنَا إِلَى أُمِّكَ مَا يُوحَى
Ith awhayna ila ommika ma yooha

YUSUFALI: “Behold! We sent to thy mother, by inspiration, the message:
PICKTHAL: When we inspired in thy mother that which is inspired,
SHAKIR: When We revealed to your mother what was revealed;
KHALIFA: “When we revealed to your mother what we revealed.

৩৬। [আল্লাহ্‌ ] বলেছিলেন , ” হে মুসা! তোমার প্রার্থনা মঞ্জুর হলো !

৩৭। ” আমি তো [ পূর্বেও ] তোমার প্রতি আরও একবার অনুগ্রহ করেছিলাম।

৩৮। ” স্মরণ কর! ওহীর মাধ্যমে তোমার মাতাকে বাণী প্রেরণ করেছিলাম ২৫৫৭।

২৫৫৭। এই আয়াতের মাধ্যমে মুসার লালন – পালনের প্রধান প্রধান লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলির উপরে ইঙ্গিত দান করা হয়েছে। হযরত ইউসুফ যখন মিশরের প্রধান মন্ত্রী ছিলেন সে সময়ে বণী ইসরাঈলীদের মিশরে আগমন ঘটে। হযরত ইউসুফের বহু বছর পরে এক ফেরাউন মিশরের সিংহাসনে আরোহণ করেন যিনি ইসরাঈলীদের ঘৃণা করতেন। তিনি ইসরাঈলীদের সদ্যজাত ছেলে শিশুদের মেরে ফেলার আদেশ দান করেন। এসময়েই হযরত মুসার জন্ম হয়। মুসার মা মুসাকে জন্মের পর থেকে গোপন করে রাখেন। কিন্তু যখন তা আর সম্ভব হলো না , তাঁর মনে উদয় হলো যে, শিশুকে একটি সিন্দুকে করে নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার কথা। তাঁর মনের এই কল্পনা কোন খাম-খেয়াল ছিলো না। এ ছিলো মহান আল্লাহর ইঙ্গিত। কারণ আল্লাহর পরিকল্পনা ছিলো যে, হযরত মুসাকে তিনি মিশরের সর্বোচ্চ জ্ঞানে শিক্ষিত করবেন যেনো এই জ্ঞান তাকে এর অসম্পূর্ণতাকে প্রকাশ করতে ও আল্লাহর মহিমাকে ঘোষণা করতে সাহায্য করে। সিন্দুকটি নীল নদীতে ভেসে যাচ্ছিল। সিন্দুকটি যেয়ে নীলনদীর তীরে বাগানের পার্শ্বে আটকে যায়। সিন্দুকটি ফেরাউনের লোকজন তুলে নিয়ে ফেরাউনের প্রাসাদে নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে ফেরাউনের স্ত্রী তাঁকে দত্তক পুত্ররূপে গ্রহণ করেন। এ সম্বন্ধে বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে আয়াত [ ২৮ : ৪ – ১৩ ]।

যে, তুমি (মূসাকে) সিন্দুকে রাখ, অতঃপর তা দরিয়ায় ভাসিয়ে দাও, অতঃপর দরিয়া তাকে তীরে ঠেলে দেবে। তাকে আমার শক্র ও তার শক্র উঠিয়ে নেবে। আমি তোমার প্রতি মহব্বত সঞ্চারিত করেছিলাম আমার নিজের পক্ষ থেকে, যাতে তুমি আমার দৃষ্টির সামনে প্রতি পালিত হও।
”Saying: ’Put him (the child) into the Tabût (a box or a case or a chest) and put it into the river (Nile), then the river shall cast it up on the bank, and there, an enemy of Mine and an enemy of his shall take him.’ And I endued you with love from Me, in order that you may be brought up under My Eye,

أَنِ اقْذِفِيهِ فِي التَّابُوتِ فَاقْذِفِيهِ فِي الْيَمِّ فَلْيُلْقِهِ الْيَمُّ بِالسَّاحِلِ يَأْخُذْهُ عَدُوٌّ لِّي وَعَدُوٌّ لَّهُ وَأَلْقَيْتُ عَلَيْكَ مَحَبَّةً مِّنِّي وَلِتُصْنَعَ عَلَى عَيْنِي
Ani iqthifeehi fee alttabooti faiqthifeehi fee alyammi falyulqihi alyammu bialssahili ya/khuthhu AAaduwwun lee waAAaduwwun lahu waalqaytu AAalayka mahabbatan minnee walitusnaAAa AAala AAaynee

YUSUFALI: “‘Throw (the child) into the chest, and throw (the chest) into the river: the river will cast him up on the bank, and he will be taken up by one who is an enemy to Me and an enemy to him’: But I cast (the garment of) love over thee from Me: and (this) in order that thou mayest be reared under Mine eye.
PICKTHAL: Saying: Throw him into the ark, and throw it into the river, then the river shall throw it on to the bank, and there an enemy to Me and an enemy to him shall take him. And I endued thee with love from Me that thou mightest be trained according to My will,
SHAKIR: Saying: Put him into a chest, then cast it down into the river, then the river shall throw him on the shore; there shall take him up one who is an enemy to Me and enemy to him, and I cast down upon you love from Me, and that you might be brought up before My eyes;
KHALIFA: “Saying: `Throw him into the box, then throw him into the river. The river will throw him onto the shore, to be picked up by an enemy of Mine and an enemy of his.’ I showered you with love from Me, and I had you made before My watchful eye.

৩৯। ” [শিশুকে ] সিন্দুকের মধ্য রাখ, এবং [ সিন্ধুকটি ] নদীতে ভাসিয়ে দাও। নদী তাকে তীরে নিক্ষেপ করবে এবং আমার শত্রু ও তাঁর শত্রু তাঁকে নিয়ে যাবে ২৫৫৮। কিন্তু আমি আমার নিকট থেকে তোমাকে ভালোবাসার [ চাঁদরে] ঢেকে দিয়েছিলাম ২৫৫৯। [ এটা ] এ জন্য যে তুমি যেনো আমার তত্বাবধানে প্রতিপালিত হও” ২৫৬০।

২৫৫৮। ” আমার শত্রু ” অর্থাৎ ফেরাউনকে আল্লাহর শত্রুরূপে বর্ণনা করা হয়েছে। কারণ ফেরাউন গর্বে ও অহংকারে নিজেকে আল্লাহ বলে ঘোষণা করে। “তার” শব্দটির দ্বারা হযরত মুসাকে বোঝানো হয়েছে। ফেরাউনকে মুসারও শত্রু রূপে বর্ণনা করা হয়েছে। কারণ সে ইসরাঈলীদের ঘৃণা করতো এবং তাদের ছেলে শিশুদের মৃত্যুদন্ডাদেশ দান করে। এ ব্যতীত কারণ হচ্ছে মুসা আল্লাহর প্রত্যাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান।

২৫৫৯। আল্লাহ শিশু মুসাকে এত সুন্দর করে সৃষ্টি করেন যে তাঁকে দেখলে কেউ না ভালোবেসে পারতো না। যারা ইসরাঈলীদের শিশুদের হত্যার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলো, তাদেরও ভালোবাসা তিনি আকর্ষণ করেন।

২৫৬০। দেখুন উপরের টিকা ২৫৫৮। শিশু মুসাকে আল্লাহ এত সুন্দর করেছিলেন যে ফেরাউনের স্ত্রী তাঁকে দত্তক পুত্ররূপে গ্রহণ করেন। এর ফলে মুসা পার্থিব দৃষ্টিকোণ থেকে সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধার মাঝে প্রতিপালিত হওয়ার সুযোগ পান। যেহেতু, আল্লাহ স্বয়ং তাঁর প্রতিপালনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, সে জন্য তাকে মাতৃস্নেহ বা মাতৃদুগ্ধ থেকে বঞ্চিত হতে হয় নাই। পরবর্তী আয়াতে দেখুন কিভাবে তিনি ফেরাউনের প্রাসাদে ফেরাউনের দত্তক পুত্র রূপে থাকা সত্ত্বেও নিজ মাতৃক্রোড়ে আশ্রয় পান ও নিজ মাতৃদুগ্ধ পানের সুযোগ লাভ করেন। ফলে নিজ পরিবারের সংস্পর্শে থাকার সুযোগ লাভ করেন।

উপদেশ : এভাবেই মানুষের মাধ্যমেই আল্লাহ্‌র পরিকল্পনা কার্যকর হয়ে থাকে।

 

যখন তোমার ভগিনী এসে বললঃ আমি কি তোমাদেরকে বলে দেব কে তাকে লালন পালন করবে। অতঃপর আমি তোমাকে তোমার মাতার কাছে ফিরিয়ে দিলাম, যাতে তার চক্ষু শীতল হয় এবং দুঃখ না পায়। তুমি এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে, অতঃপর আমি তোমাকে এই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেই; আমি তোমাকে অনেক পরীক্ষা করেছি। অতঃপর তুমি কয়েক বছর মাদইয়ান বাসীদের মধ্যে অবস্থান করেছিলে; হে মূসা, অতঃপর তুমি নির্ধারিত সময়ে এসেছ।
”When your sister went and said: ’Shall I show you one who will nurse him?’ So We restored you to your mother, that she might cool her eyes and she should not grieve. Then you did kill a man, but We saved you from great distress and tried you with a heavy trial. Then you stayed a number of years with the people of Madyan (Midian). Then you came here according to the fixed term which I ordained (for you), O Mûsa (Moses)!

إِذْ تَمْشِي أُخْتُكَ فَتَقُولُ هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَى مَن يَكْفُلُهُ فَرَجَعْنَاكَ إِلَى أُمِّكَ كَيْ تَقَرَّ عَيْنُهَا وَلَا تَحْزَنَ وَقَتَلْتَ نَفْسًا فَنَجَّيْنَاكَ مِنَ الْغَمِّ وَفَتَنَّاكَ فُتُونًا فَلَبِثْتَ سِنِينَ فِي أَهْلِ مَدْيَنَ ثُمَّ جِئْتَ عَلَى قَدَرٍ يَا مُوسَى
Ith tamshee okhtuka fataqoolu hal adullukum AAala man yakfuluhu farajaAAnaka ila ommika kay taqarra AAaynuha wala tahzana waqatalta nafsan fanajjaynaka mina alghammi wafatannaka futoonan falabithta sineena fee ahli madyana thumma ji/ta AAala qadarin ya moosa

YUSUFALI: “Behold! thy sister goeth forth and saith, ‘shall I show you one who will nurse and rear the (child)?’ So We brought thee back to thy mother, that her eye might be cooled and she should not grieve. Then thou didst slay a man, but We saved thee from trouble, and We tried thee in various ways. Then didst thou tarry a number of years with the people of Midian. Then didst thou come hither as ordained, O Moses!
PICKTHAL: When thy sister went and said: Shall I show you one who will nurse him? and we restored thee to thy mother that her eyes might be refreshed and might not sorrow. And thou didst kill a man and We delivered thee from great distress, and tried thee with a heavy trial. And thou didst tarry years among the folk of Midian. Then camest thou (hither) by (My) providence, O Moses,
SHAKIR: When your sister went and said: Shall I direct you to one who will take charge of him? So We brought you back to your mother, that her eye might be cooled and she should not grieve and you killed a man, then We delivered you from the grief, and We tried you with (a severe) trying. Then you stayed for years among the people of Madyan; then you came hither as ordained, O Musa.
KHALIFA: “Your sister walked to them and said, `I can tell you about a nursing mother who can take good care of him.’ We thus returned you to your mother, that she may be happy and stop worrying. And when you killed a person, we saved you from the grievous consequences; indeed we tested you thoroughly. You stayed years with the people of Midyan, and now you have come back in accordance with a precise plan.

৪০। স্মরণ কর ! তোমার ভগ্নী এগিয়ে এসে বললো, ” আমি কি তোমাদের দেখিয়ে দেবো কে [ এই শিশুকে ] বুকের দুধ খাওয়াবে ও লালন পালন করবে? ” ২৫৬১ সুতারাং [ এ ভাবেই ] আমি তোমাকে তোমার মায়ের ২৫৬২ নিকট ফিরিয়ে দিলাম, যাতে তার চক্ষু জুড়িয়ে যায় এবং সে দুঃখ প্রকাশ না করে। এরপরে তুমি একটি লোককে হত্যা করেছিলে, ২৫৬৩। কিন্তু আমি তোমাকে গোলযোগ থেকে রক্ষা করি, এবং বহুভাবে তোমাকে পরীক্ষা করি। অতঃপর কয়েক বছর তুমি মাদইয়ানবাসীদের মধ্যে ছিলে ২৫৬৪। এর পরে, হে মুসা! নির্ধারিত সময়ে তুমি এখানে উপস্থিত হলে।

২৫৬১। মুসার ভগ্নীর উল্লেখ থেকে মনে হয়, ভগ্নহৃদয় মাতা মুসাকে নদীতে ভাসিয়ে দিয়ে দুঃশ্চিন্তা ও উদ্বেগে অস্থির হয়ে পড়েন এবং মুসার বড় বোনকে নদীর পার্শ্ব দিয়ে সিন্দুকটিকে অনুসরণ করতে বলেন যাতে সে লক্ষ্য রাখতে পারে সিন্দুকটি কে সংগ্রহ করে বা শেষ পর্যন্ত সিন্দুকটির কি পরিণতি ঘটে। যখন সিন্দুকটিকে ফেরাউনের পরিবারের দ্বারা গৃহিত হয়, এবং তারা শিশুটিকে সাদরে গ্রহণ করে, সে সময়ে মুসার বোন সেখানে সহসা আর্বিভূত হয় এবং বলে “আমি কি তোমাদের জন্য ভালো একজন ধাত্রীর খবর দিব, যে শিশুর ভার নেবে ?” সেই মুহুর্তে ফেরাউনের স্ত্রী ঠিক এরূপ একজনের খোঁজই করছিলেন। সুতারাং তাদের সম্মতি পাওয়া মাত্রই মুসার বোন দ্রুত তার মায়ের নিকট সংবাদ পৌঁছাতে গেলো। মুসার মা শিশু মুসার ধাত্রী হিসেবে নিয়োজিত হলেন এবং তার ফলে মায়ের চক্ষু জুড়ায় এবং তাঁকে বক্ষে ধারণ করেন। এখন আর শিশুকে নিজ দুগ্ধ পান করাবার জন্য কোনও গোপনীয়তার প্রয়োজনীয়তা রইল না।

২৫৬২। মনে হয় শিশু মুসাকে নদীতে ভাসানোর পরে , মায়ের চক্ষু দিয়ে অবিরল ধারাতে অশ্রু ঝড়ে পড়ছিলো। ফলে তাঁর অশ্রুসিক্ত চক্ষুতে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছিলো। মুসাকে ফিরে পাওয়ায় সন্তান হারানোর ব্যথা তিনি ভুলেছিলেন এবং তার অশ্রুর নিবারণ ঘটেছিলো। ” চক্ষু জুড়ানো ” বাক্যটি একটি বাগ্‌ধারা যার অর্থ অন্তরে শান্তি লাভ করা। মুসাকে ফিরে পেয়ে মুসার মা অন্তরে শান্তি লাভ করেছিলেন।

২৫৬৩। সময় পার হয়ে যায়। মুসা ধীরে ধীরে ফেরাউনের প্রাসাদে বড় হতে থাকেন। সেখানে থেকে তিনি মিশরের যাবতীয় জ্ঞান বিজ্ঞান শিক্ষা লাভ করেন। তিনি যদিও ফেরাউনের প্রাসাদে লালিত পালিত হন, কিন্তু প্রতিপালিত হন বাহ্যিকভাবে ইসরাঈল ধাত্রী দ্বারা। তিনি তারই বুকের দুধ খেয়ে বড় হন। সুতারাং ফেরাউনের প্রাসাদে পালিত হওয়া সত্ত্বেও তাঁর ইসরাঈলীদের জন্য সমবেদনা ছিলো। একদিন তিনি ইসরাঈলীদের কলোণীতে গমন করেন। সেখানে তিনি দেখতে পান যে, একজন মিশরবাসী ইসরাঈল শ্রমিককে প্রহার করছে। মুসা ইসরাঈলীটির জন্য ভাতৃমমত্ব বোধ করেন এবং মিশরীয়টিকে পাল্টা আঘাত হানেন। তিনি অবশ্য মিশরীয়টিকে হত্যা করতে চান নাই। কিন্তু তাঁর আঘাতের ফলে মিশরীয়টি মারা যায়। যখন তা জানাজানি হয়ে যায় , এর পরে ফেরাউনের প্রাসাদে তাঁর উপস্থিতি বিপদজনক হয়ে পড়ে। তিনি মিশর থেকে পলায়ন করেন এবং আল্লাহর অনুগ্রহে রক্ষা পান। তিনি মিশর থেকে সিনাই উপত্যকাতে গমন করেন, মাদ্‌য়াইন জাতিদের বাসভূমিতে। সেখান তিনি মাদ্‌য়াইন সর্দ্দারের কন্যাকে বিয়ে করেন এবং অনেক বছর সেখানে বসবাস করেন। এভাবেই বহু পরীক্ষা ও প্রলোভনের মধ্যে দিয়ে মুসাকে আল্লাহ্‌ পরিচালিত করেন এবং মুসা তাঁর চরিত্রের বিশুদ্ধতা ও ন্যায়পরণতা শেষ পর্যন্ত বজায় রাখেন। এ ভাবেই আল্লাহ তাঁর কাজের জন্য মুসাকে প্রস্তুত করে নেন।

উপদেশ : আগুনে পুড়ে যেরূপ সোনা খাঁটি হয়, দুঃখ ও বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে আত্মা বিশুদ্ধ হয়। আত্মিক গুণাবলীর প্রকাশ ঘটে।

২৫৬৪। পূর্বের টিকাটি দেখুন। বহু বছর মুসা মাদ্‌য়াইন বাসীদের মধ্যে বসবাস
করেন। তিনি তাঁর শ্বশুরের মেষপালকে তৃণভূমিতে চড়াতেন। একদিন তিনি সিনাই
পর্বতের পাদদেশে ” তুওয়া” উপত্যকাতে পৌঁছালেন। আরবীতে সিনাই পর্বতকে ‘তূর
পর্বত ‘ বলে। এই পর্বতের চূড়ার যে পার্শ্বটি আরবের দিকে অবস্থিত তা
হিব্রুদের দ্বারা হোরেব [Horeb] নামে পরিচিত। এখানেই আল্লাহর ইচ্ছার বা
পরিকল্পনার পরিপূর্ণতা ঘটে। যখন তিনি আগুন সংগ্রহের জন্য পর্ততে আরোহণ
করলেন, আল্লাহ তাঁকে সম্বোধন করে জানালেন যে, তিনি আল্লাহ কর্তৃক নির্বাচিত
ব্যক্তি তাঁর যুগের জন্য আল্লাহ্‌র রাসুল।

এবং আমি তোমাকে আমার নিজের জন্য তৈরী করে নিয়েছি।
”And I have Istana’tuka, for Myself.

وَاصْطَنَعْتُكَ لِنَفْسِي
WaistanaAAtuka linafsee

YUSUFALI: “And I have prepared thee for Myself (for service)”..
PICKTHAL: And I have attached thee to Myself.
SHAKIR: And I have chosen you for Myself:
KHALIFA: “I have made you just for Me.

৪১। ” এবং আমি তোমাকে আমার নিজের [ কাজের ] জন্য প্রস্তুত করে নিয়েছি।

৪২। ” তুমি ও তোমার ভ্রাতা আমরা নিদর্শনসহ যাও ২৫৬৫ এবং তোমরা উভয়েই আমার স্মরণে শৈথিল্য প্রদর্শন করো না।

২৫৬৫। আমরা অনুমান করতে পারি যে, হযরত মুসা একাই মাদ্‌য়াইনাদের দেশে গিয়েছিলেন। সুতারাং তুওয়া উপত্যকাতে তিনি তাঁর পরিবারবর্গের সাথে ছিলেন , সেখানে তার ভাই হারুন ছিলো না। এ ভাবেই বর্ণনা করা হয়েছে ২৫৪২ টিকাতে। যখন মুসাকে আল্লাহ্‌ তাঁর বাণী প্রচারের জন্য মনোনীত করে সম্মানীত করেন এবং আল্লাহ্‌র তাঁর অনুরোধে তাঁর ভাই হারুনকে তুওয়া উপত্যকাতে নিয়ে আসার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। সম্ভবতঃ তাঁদের দেখা হয়েছিলো তুওয়া উপত্যকাতে। অর্থাৎ মিশরে প্রবেশের পূর্বে বেশ কিছু সময় অতিবাহিত হয়। এরপরে তারা প্রার্থনা করেন এবং মিশর অভিমুখে যাত্রা করেন।

হারুন সম্ভবতঃ মুসার বড় বা ছোট ভাই ছিলেন, কারণ এ সম্বন্ধে ধর্মগ্রন্থে কোনও উল্লেখ নাই। তবে মনে হয়, হারুনের জন্ম তখনই হয়, যখন ইসরাঈলীদের নবজাত শিশুর উপরে কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিলো না। মুসার সাথে হারুনের কোনও যোগাযোগ ছিলো না। তবুও মুসার তাঁর পরিবারের জন্য প্রচন্ড ভালোবাসা ছিলো এবং হারুনকে তিনি তাঁর কাজের সঙ্গী হিসেবে আল্লাহ্‌র কাছে যাঞ্চা করে নেন যে কাজ ছিলো তাঁর জীবনের সর্বোচ্চ এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

তুমি ও তোমার ভাই আমার নিদর্শনাবলীসহ যাও এবং আমার স্মরণে শৈথিল্য করো না।
”Go you and your brother with My Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.), and do not, you both, slacken and become weak in My Remembrance.

اذْهَبْ أَنتَ وَأَخُوكَ بِآيَاتِي وَلَا تَنِيَا فِي ذِكْرِي
Ithhab anta waakhooka bi-ayatee wala taniya fee thikree

YUSUFALI: “Go, thou and thy brother, with My Signs, and slacken not, either of you, in keeping Me in remembrance.
PICKTHAL: Go, thou and thy brother, with My tokens, and be not faint in remembrance of Me.
SHAKIR: Go you and your brother with My communications and be not remiss in remembering Me;
KHALIFA: “Go with your brother, supported by My signs, and do not waver in remembering Me.

৪১। ” এবং আমি তোমাকে আমার নিজের [ কাজের ] জন্য প্রস্তুত করে নিয়েছি।

৪২। ” তুমি ও তোমার ভ্রাতা আমরা নিদর্শনসহ যাও ২৫৬৫ এবং তোমরা উভয়েই আমার স্মরণে শৈথিল্য প্রদর্শন করো না।

২৫৬৫। আমরা অনুমান করতে পারি যে, হযরত মুসা একাই মাদ্‌য়াইনাদের দেশে গিয়েছিলেন। সুতারাং তুওয়া উপত্যকাতে তিনি তাঁর পরিবারবর্গের সাথে ছিলেন , সেখানে তার ভাই হারুন ছিলো না। এ ভাবেই বর্ণনা করা হয়েছে ২৫৪২ টিকাতে। যখন মুসাকে আল্লাহ্‌ তাঁর বাণী প্রচারের জন্য মনোনীত করে সম্মানীত করেন এবং আল্লাহ্‌র তাঁর অনুরোধে তাঁর ভাই হারুনকে তুওয়া উপত্যকাতে নিয়ে আসার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। সম্ভবতঃ তাঁদের দেখা হয়েছিলো তুওয়া উপত্যকাতে। অর্থাৎ মিশরে প্রবেশের পূর্বে বেশ কিছু সময় অতিবাহিত হয়। এরপরে তারা প্রার্থনা করেন এবং মিশর অভিমুখে যাত্রা করেন।

সূরা ত্বোয়া-হা

হারুন সম্ভবতঃ মুসার বড় বা ছোট ভাই ছিলেন, কারণ এ সম্বন্ধে ধর্মগ্রন্থে কোনও উল্লেখ নাই। তবে মনে হয়, হারুনের জন্ম তখনই হয়, যখন ইসরাঈলীদের নবজাত শিশুর উপরে কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিলো না। মুসার সাথে হারুনের কোনও যোগাযোগ ছিলো না। তবুও মুসার তাঁর পরিবারের জন্য প্রচন্ড ভালোবাসা ছিলো এবং হারুনকে তিনি তাঁর কাজের সঙ্গী হিসেবে আল্লাহ্‌র কাছে যাঞ্চা করে নেন যে কাজ ছিলো তাঁর জীবনের সর্বোচ্চ এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

তোমরা উভয়ে ফেরআউনের কাছে যাও সে খুব উদ্ধত হয়ে গেছে।
”Go, both of you, to Fir’aun (Pharaoh), verily, he has transgressed (all bounds in disbelief and disobedience and behaved as an arrogant and as a tyrant).

اذْهَبَا إِلَى فِرْعَوْنَ إِنَّهُ طَغَى
Ithhaba ila firAAawna innahu tagha

YUSUFALI: “Go, both of you, to Pharaoh, for he has indeed transgressed all bounds;
PICKTHAL: Go, both of you, unto Pharaoh. Lo! he hath transgressed (the bounds).
SHAKIR: Go both to Firon, surely he has become inordinate;
KHALIFA: “Go to Pharaoh, for he transgressed.

৪৩। ” তোমরা উভয়েই ফেরাউনের কাছে যাও ২৫৬৬, অবশ্যই সে সকল সীমা লংঘন করেছে ২৫৬৭।

২৫৬৬। মুসার কর্তব্য কর্মের প্রথম ধাপ ছিলো ফেরাউন ও মিশরবাসীদের নিকট গমন করা এবং তার পরে ইসরাঈলীদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে আসা।

২৫৬৭। এই আয়াতটি [ ২০ : ২৪ ] আয়াতের অনুরূপ। মুসার রসুল হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পূর্বে তাঁর জীবনকে সংক্ষেপে বর্ণনা করে তাঁর আসল কাজের সূচনার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। মুসার পূর্ব জীবনের বর্ণনা এখানেই শেষ করা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে ফেরাউনের আচরণের কথা। উদ্ধত অহংকারে ফেরাউন ভুলে গিয়েছিলো , আল্লাহ্‌র নিকট সে কত ক্ষুদ্র , কত নগণ্য।

উপদেশ : অহংকার একটি খারাপ রীপু যা মানুষের সকল গুণাবলী নষ্ট করে দেয় । ফলে সে অন্যের গুণাবলী প্রত্যক্ষ করতে অক্ষম হয়। যেরূপ চোখের সামনে ধরা মুষ্ঠিবদ্ধ হাত দূরের হিমালয়কে ঢেকে দেয়।

অতঃপর তোমরা তাকে নম্র কথা বল, হয়তো সে চিন্তা-ভাবনা করবে অথবা ভীত হবে।
”And speak to him mildly, perhaps he may accept admonition or fear Allâh.”

فَقُولَا لَهُ قَوْلًا لَّيِّنًا لَّعَلَّهُ يَتَذَكَّرُ أَوْ يَخْشَى
Faqoola lahu qawlan layyinan laAAallahu yatathakkaru aw yakhsha

YUSUFALI: “But speak to him mildly; perchance he may take warning or fear (Allah).”
PICKTHAL: And speak unto him a gentle word, that peradventure he may heed or fear.
SHAKIR: Then speak to him a gentle word haply he may mind or fear.
KHALIFA: “Speak to him nicely; he may take heed, or become reverent.”

৪৪। ” তার সাথে নম্রভাবে কথা বলবে। হয়তো সে সর্তকবাণী গ্রহণ করবে অথবা [আল্লাহকে ] ভয় করবে ২৫৬৮। ”

২৫৬৮। গর্ব ও অহংকারে ফেরাউন আল্লাহ্‌র অস্তিত্ব ভুলে গিয়েছিলো। বিশ্ব স্রষ্টার কাছে মানুষের অস্তিত্ব কত ক্ষুদ্র কত নগণ্য , সে কথা মুসাকে স্মরণ করিয়ে দিতে বলা হয়। সম্ভবতঃ সে অনুতাপের মাধ্যমে আল্লাহ্‌র প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে পারে। নিদেন পক্ষে , ফেরাউন আল্লাহ্‌র ভয়ে ” সীমা লংঘন ” থেকে বিরত থাকবে। সংসারে কিছু লোক থাকে যারা ” উপদেশ ” গ্রহণ করে এবং পাপ ও অন্যায় থেকে বিরত থাকে শুধু মাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য। এরা অত্যন্ত উন্নত চরিত্রের। এদের দ্বারা মানবতা উপকৃত হয়। আবার আর একদল আছে যারা কৃত কর্মের ভয়াবহ পরিণামের জন্য ভীত হয়ে , পাপ ও অন্যায় থেকে বিরত থাকে। এরা আত্মিক উন্নতিতে পূর্বোক্ত শ্রেণী থেকে অনুন্নত। তবে তারা পূর্বোক্ত শ্রেণীতে আরোহণের যোগ্যতা রাখেন।

এই আয়াতের অন্যতম প্রধান উপদেশ হচ্ছে কোনও বড় ও মহৎ কাজের আবেদন আল্লাহ্‌র কাছে হতে হবে বিনয়ের মাধ্যমে।

তারা বললঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা আশঙ্কা করি যে, সে আমাদের প্রতি জুলুম করবে কিংবা উত্তেজিত হয়ে উঠবে।
They said: ”Our Lord! Verily! We fear lest he should hasten to punish us or lest he should transgress (all bounds against us).”

قَالَا رَبَّنَا إِنَّنَا نَخَافُ أَن يَفْرُطَ عَلَيْنَا أَوْ أَن يَطْغَى
Qala rabbana innana nakhafu an yafruta AAalayna aw an yatgha

YUSUFALI: They (Moses and Aaron) said: “Our Lord! We fear lest he hasten with insolence against us, or lest he transgress all bounds.”
PICKTHAL: They said: Our Lord! Lo! we fear that he may be beforehand with us or that he may play the tyrant.
SHAKIR: Both said: O our Lord! Surely we fear that he may hasten to do evil to us or that he may become inordinate.
KHALIFA: They said, “Our Lord, we fear lest he may attack us, or transgress.”

৪৫। তারা [মুসা ও হারুন ] বলেছিলো, ” হে আমাদের প্রভু! আমরা আশংকা করি সে আমাদের প্রতি ঔদ্ধত্যে বাড়াবাড়ি করবে ২৫৬৯, অথবা [ অন্যায় আচরণে ] সকল সীমা লংঘন করবে। ”

২৫৬৯। মুসা এবং হারুন বর্তমানে মিশরে [ দেখুন টিকা ২৫৬৫ ]। সুতারাং ফেরাউনের ক্ষমতার অধীনে। ফেরাউনের মন-মানসিকতার সাথে মুসা ও হারুন পূর্ব পরিচিত ছিলেন। সুতারাং তাঁরা বুঝতে পেরেছিলেনা যে, তাদের অভিযান কতটা বিপদজনক। তারা ফেরাউনের নিকট থেকে শাস্তির আশংকা করেছিলেন। যে ভয়াবহ বিপদজনক গুরুদায়িত্ব তাদের দেয়া হয়েছে তা কার্যে পরিণত করতে সাহসের প্রয়োজন তাদের জন্য।

আল্লাহ বললেনঃ তোমরা ভয় করো না, আমি তোমাদের সাথে আছি, আমি শুনি ও দেখি।
He (Allâh) said: ”Fear not, verily! I am with you both, hearing and seeing.

قَالَ لَا تَخَافَا إِنَّنِي مَعَكُمَا أَسْمَعُ وَأَرَى
Qala la takhafa innanee maAAakuma asmaAAu waara

YUSUFALI: He said: “Fear not: for I am with you: I hear and see (everything).
PICKTHAL: He said: Fear not. Lo! I am with you twain, Hearing and Seeing.
SHAKIR: He said: Fear not, surely I am with you both: I do hear and see.
KHALIFA: He said, “Do not be afraid, for I will be with you, listening and watching.

৪৬। আল্লাহ্‌ বলেছিলেন, ” ভয় পেয়ো না ! আমি তোমাদের সাথে আছি। আমি [ সব কিছু ] শুনি ও দেখি। ”

৪৭। সুতারাং তোমরা উভয়েই তার নিকট যাও এবং বল, “আমরা তোমার প্রভুর প্রেরিত রাসুল। সুতারাং বণী ইসরাঈলীদের আমাদের সাথে যেতে দাও এবং তাদের কষ্ট দিও না ২৫৭০। অবশ্যই আমরা তোমার প্রভুর নিকট থেকে নিদর্শনসহ এসেছি। যারা সৎ পথ অনুসরণ করে তাদের প্রতি শান্তি ২৫৭১।

৪৮। ” আমাদের প্রতি ওহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, শাস্তি তাদের জন্য যারা প্রত্যাখান করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়। ”

২৫৭০। বণী ইসরাঈলীদের মিশরে ফেরাউনের লোকদের দ্বারা নগ্নভাবে নির্যাতিত ও অত্যাচারিত হতে হতো। তাদের দ্বারা কঠোর পরিশ্রম করানো হতো, তাদের নেতাকে অন্যায়ভাবে মারধর করা হতো। এ সব নির্যাতন ও অত্যাচারের অন্যতম উপায় ছিলো ইসরাঈলীদের দ্বারা খড় ব্যতীত ইট তৈরীর পদ্ধতি। তারা ছিলো দাসত্বের নিগড়ে বাঁধা। দেখুন [Exod . V. 6 – 19, VI . 5 ] .

২৫৭১। সবচেয়ে কঠিন ও মন্দ যে পাপী , যারা সর্বদা আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে থাকে আল্লাহ্‌র করুণার ধারা তাদের সবার জন্যও অবারিত। কিন্তু তাদের পাপের কৃত মন্দ পরিণাম থেকে তারা অনির্দ্দিষ্ট কালের জন্য অব্যহতি পেতে পারে না। পরবর্তী আয়াতে এ সম্বন্ধে বক্তব্য আছে। পাপী অবশ্যই শাস্তি পাবো তা সে যতবড় ক্ষমতাধর হোক বা যত ক্ষুদ্রই হোক। অপরপক্ষে যারা সৎপথ অবলম্বন করে তাদের জন্য আছে শান্তি।

অতএব তোমরা তার কাছে যাও এবং বলঃ আমরা উভয়েই তোমার পালনকর্তার প্রেরিত রসূল, অতএব আমাদের সাথে বনী ইসরাঈলকে যেতে দাও এবং তাদেরকে নিপীড়ন করো না। আমরা তোমার পালনকর্তার কাছ থেকে নিদর্শন নিয়ে তোমার কাছে আগমন করেছি। এবং যে সৎপথ অনুসরণ করে, তার প্রতি শান্তি।
”So go you both to him, and say: ’Verily, we are Messengers of your Lord, so let the Children of Israel go with us, and torment them not; indeed, we have come with a sign from your Lord! And peace will be upon him who follows the guidance!

فَأْتِيَاهُ فَقُولَا إِنَّا رَسُولَا رَبِّكَ فَأَرْسِلْ مَعَنَا بَنِي إِسْرَائِيلَ وَلَا تُعَذِّبْهُمْ قَدْ جِئْنَاكَ بِآيَةٍ مِّن رَّبِّكَ وَالسَّلَامُ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى
Fa/tiyahu faqoola inna rasoola rabbika faarsil maAAana banee isra-eela wala tuAAaththibhum qad ji/naka bi-ayatin min rabbika waalssalamu AAala mani ittabaAAa alhuda

YUSUFALI: “So go ye both to him, and say, ‘Verily we are messengers sent by thy Lord: Send forth, therefore, the Children of Israel with us, and afflict them not: with a Sign, indeed, have we come from thy Lord! and peace to all who follow guidance!
PICKTHAL: So go ye unto him and say: Lo! we are two messengers of thy Lord. So let the children of Israel go with us, and torment them not. We bring thee a token from thy Lord. And peace will be for him who followeth right guidance.
SHAKIR: So go you both to him and say: Surely we are two messengers of your Lord; therefore send the children of Israel with us and do not torment them! Indeed we have brought to you a communication from your Lord, and peace is on him who follows the guidance;
KHALIFA: “Go to him and say, `We are two messengers from your Lord. Let the Children of Israel go. You must refrain from persecuting them. We bring a sign from your Lord, and peace is the lot of those who heed the guidance.

৪৬। আল্লাহ্‌ বলেছিলেন, ” ভয় পেয়ো না ! আমি তোমাদের সাথে আছি। আমি [ সব কিছু ] শুনি ও দেখি। ”

৪৭। সুতারাং তোমরা উভয়েই তার নিকট যাও এবং বল, “আমরা তোমার প্রভুর প্রেরিত রাসুল। সুতারাং বণী ইসরাঈলীদের আমাদের সাথে যেতে দাও এবং তাদের কষ্ট দিও না ২৫৭০। অবশ্যই আমরা তোমার প্রভুর নিকট থেকে নিদর্শনসহ এসেছি। যারা সৎ পথ অনুসরণ করে তাদের প্রতি শান্তি ২৫৭১।

৪৮। ” আমাদের প্রতি ওহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, শাস্তি তাদের জন্য যারা প্রত্যাখান করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়। ”

২৫৭০। বণী ইসরাঈলীদের মিশরে ফেরাউনের লোকদের দ্বারা নগ্নভাবে নির্যাতিত ও অত্যাচারিত হতে হতো। তাদের দ্বারা কঠোর পরিশ্রম করানো হতো, তাদের নেতাকে অন্যায়ভাবে মারধর করা হতো। এ সব নির্যাতন ও অত্যাচারের অন্যতম উপায় ছিলো ইসরাঈলীদের দ্বারা খড় ব্যতীত ইট তৈরীর পদ্ধতি। তারা ছিলো দাসত্বের নিগড়ে বাঁধা। দেখুন [Exod . V. 6 – 19, VI . 5 ] .

২৫৭১। সবচেয়ে কঠিন ও মন্দ যে পাপী , যারা সর্বদা আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে থাকে আল্লাহ্‌র করুণার ধারা তাদের সবার জন্যও অবারিত। কিন্তু তাদের পাপের কৃত মন্দ পরিণাম থেকে তারা অনির্দ্দিষ্ট কালের জন্য অব্যহতি পেতে পারে না। পরবর্তী আয়াতে এ সম্বন্ধে বক্তব্য আছে। পাপী অবশ্যই শাস্তি পাবো তা সে যতবড় ক্ষমতাধর হোক বা যত ক্ষুদ্রই হোক। অপরপক্ষে যারা সৎপথ অবলম্বন করে তাদের জন্য আছে শান্তি।

আমরা ওহী লাভ করেছি যে, যে ব্যক্তি মিথ্যারোপ করে এবং মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার উপর আযাব পড়বে।
’Truly, it has been revealed to us that the torment will be for him who denies [believes not in the Oneness of Allâh, and in His Messengers, etc.], and turns away.’(from the truth and obedience of Allâh)”

إِنَّا قَدْ أُوحِيَ إِلَيْنَا أَنَّ الْعَذَابَ عَلَى مَن كَذَّبَ وَتَوَلَّى
Inna qad oohiya ilayna anna alAAathaba AAala man kaththaba watawalla

YUSUFALI: “‘Verily it has been revealed to us that the Penalty (awaits) those who reject and turn away.’”
PICKTHAL: Lo! it hath been revealed unto us that the doom will be for him who denieth and turneth away.
SHAKIR: Surely it has been revealed to us that the chastisement will surely come upon him who rejects and turns back.
KHALIFA: “`We have been inspired that the retribution will inevitably afflict those who disbelieve and turn away.’ ”

৪৬। আল্লাহ্‌ বলেছিলেন, ” ভয় পেয়ো না ! আমি তোমাদের সাথে আছি। আমি [ সব কিছু ] শুনি ও দেখি। ”

৪৭। সুতারাং তোমরা উভয়েই তার নিকট যাও এবং বল, “আমরা তোমার প্রভুর প্রেরিত রাসুল। সুতারাং বণী ইসরাঈলীদের আমাদের সাথে যেতে দাও এবং তাদের কষ্ট দিও না ২৫৭০। অবশ্যই আমরা তোমার প্রভুর নিকট থেকে নিদর্শনসহ এসেছি। যারা সৎ পথ অনুসরণ করে তাদের প্রতি শান্তি ২৫৭১।

৪৮। ” আমাদের প্রতি ওহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, শাস্তি তাদের জন্য যারা প্রত্যাখান করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়। ”

২৫৭০। বণী ইসরাঈলীদের মিশরে ফেরাউনের লোকদের দ্বারা নগ্নভাবে নির্যাতিত ও অত্যাচারিত হতে হতো। তাদের দ্বারা কঠোর পরিশ্রম করানো হতো, তাদের নেতাকে অন্যায়ভাবে মারধর করা হতো। এ সব নির্যাতন ও অত্যাচারের অন্যতম উপায় ছিলো ইসরাঈলীদের দ্বারা খড় ব্যতীত ইট তৈরীর পদ্ধতি। তারা ছিলো দাসত্বের নিগড়ে বাঁধা। দেখুন [Exod . V. 6 – 19, VI . 5 ] .

২৫৭১। সবচেয়ে কঠিন ও মন্দ যে পাপী , যারা সর্বদা আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে থাকে আল্লাহ্‌র করুণার ধারা তাদের সবার জন্যও অবারিত। কিন্তু তাদের পাপের কৃত মন্দ পরিণাম থেকে তারা অনির্দ্দিষ্ট কালের জন্য অব্যহতি পেতে পারে না। পরবর্তী আয়াতে এ সম্বন্ধে বক্তব্য আছে। পাপী অবশ্যই শাস্তি পাবো তা সে যতবড় ক্ষমতাধর হোক বা যত ক্ষুদ্রই হোক। অপরপক্ষে যারা সৎপথ অবলম্বন করে তাদের জন্য আছে শান্তি।

সে বললঃ তবে হে মূসা, তোমাদের পালনকর্তা কে?
Fir’aun (Pharaoh) said: ”Who then, O Mûsa (Moses), is the Lord of you two?”

قَالَ فَمَن رَّبُّكُمَا يَا مُوسَى
Qala faman rabbukuma ya moosa

YUSUFALI: (When this message was delivered), (Pharaoh) said: “Who, then, O Moses, is the Lord of you two?”
PICKTHAL: (Pharaoh) said: Who then is the Lord of you twain, O Moses?
SHAKIR: (Firon) said: And who is your Lord, O Musa?
KHALIFA: He said, “Who is your Lord, O Moses.”

৪৯। [ যখন এই সংবাদ প্রচার করা হলো , ফেরাউন ] বলেছিলো, ” তাহলে তোমাদের দুজনের প্রভু কে ? ২৫৭২

২৫৭২। লক্ষ্য করার বিষয় হচ্ছে , কিরূপ চতুরতার সাথে ফেরাউন মুসার বক্তব্যকে গুরুত্বহীন করার প্রয়াস পায়। আয়াতে [ ২০ : ৪৭ ] মুসা ফেরাউনকে সম্বোধন করেছিলেন ” তোমার প্রভু ” রূপে। মুসা ও হারুনের যে প্রভু, সেই একই মহাপ্রভু যে ফেরাউনের প্রভু এই বক্তব্যকে ফেরাউন চতুরতার সাথে ছুড়ে ফেলে দেয়। উদ্ধত অহংকারের সাথে তার বক্তব্য ছিলো, ” কে তোমাদিগের প্রভু, ? কে তোমাদিগকে প্রেরণ করেছেন ?” ক্ষমতা ও দম্ভ সাধারণ মানুষকে ঠিক এ ভাবেই আল্লাহ্‌কে অস্বীকার করতে শেখায় , প্রকৃত সত্যকে অনুধাবনের ক্ষমতা রহিত করে।

মূসা বললেনঃ আমাদের পালনকর্তা তিনি, যিনি প্রত্যেক বস্তুকে তার যোগ্য আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর পথপ্রদর্শন করেছেন।
[Mûsa (Moses)] said: ”Our Lord is He Who gave to each thing its form and nature, then guided it aright.”

قَالَ رَبُّنَا الَّذِي أَعْطَى كُلَّ شَيْءٍ خَلْقَهُ ثُمَّ هَدَى
Qala rabbuna allathee aAAta kulla shay-in khalqahu thumma hada

YUSUFALI: He said: “Our Lord is He Who gave to each (created) thing its form and nature, and further, gave (it) guidance.”
PICKTHAL: He said: Our Lord is He Who gave unto everything its nature, then guided it aright.
SHAKIR: He said: Our Lord is He Who gave to everything its creation, then guided it (to its goal).
KHALIFA: He said, “Our Lord is the One who granted everything its existence, and its guidance.”

৫০। সে বলেছিলো, ” আমাদের প্রভু তিনি, যিনি প্রতিটি [সৃষ্ট ] বস্তুর আকৃতি ও প্রকৃতি দান করেন, উপরন্তু [ইহাকে] পথ নির্দ্দেশ দেন ২৫৭৩। ”

২৫৭৩। হযরত মুসা ফেরাউনের সাথে ” আমার প্রভু ” এবং ” তোমার প্রভু” অথবা ” ইসরাঈলীদের প্রভু” এবং ” মিশরবাসীর প্রভু ” এই বির্তকে লিপ্ত হন নাই। তাঁর প্রতি উত্তর ছিলো সহজ সরল , মর্যাদাপূর্ণ ও দ্যুতিময়। তিনি সগর্বে ঘোষণা করেন যে তিনি ও তাঁর ভাই তাঁদের প্রভুর সেবার জন্য নিবেদিত। তাঁদের প্রভু হচ্ছেন বিশ্ব ভূবনের একমাত্র প্রভু ও প্রতিপালক। যিনি পৃথিবীর সকল বস্তুকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি প্রত্যেক বস্তুকে তার নির্দ্দিষ্ট যোগ্য আকৃতি স্বভাব বা ধর্ম দান করে থাকেন। মানুষের স্বভাবে তিনি ” সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি ” দান করেছেন। এ ভাবেই মুসা নির্দ্দেশ করেন যে ফেরাউনও সেই বিশ্ববিধাতার ক্ষমতার অধীনে। মানুষের “স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির ” সঠিক ব্যবহারের জন্য আল্লাহ্‌ যুগে যুগে নবী ও রসুলদের প্রেরণ করেছেন। তাঁরা মানুষদের হেদায়েতের পথে আহ্বান করেছেন। মুসা ও হারুনকেও এরূপ পথ নির্দ্দেশের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।‌ ফেরাউন কি সঠিক পথের নির্দ্দেশ অনুধাবন করবে না ও সঠিক পথে ফিরে আসবে না? “

ফেরাউন বললঃ তাহলে অতীত যুগের লোকদের অবস্থা কি?
[Fir’aun (Pharaoh)] said: ”What about the generations of old?”

قَالَ فَمَا بَالُ الْقُرُونِ الْأُولَى
Qala fama balu alqurooni al-oola

YUSUFALI: (Pharaoh) said: “What then is the condition of previous generations?”
PICKTHAL: He said: What then is the state of the generations of old?
SHAKIR: He said: Then what is the state of the former generations?
KHALIFA: He said, “What about the past generations?”

৫১। [ ফেরাউন ] বলেছিলো, ” তাহলে পূর্ববর্তী লোকদের অবস্থা কি হবে ? ” ২৫৭৪

২৫৭৪। মুসার আবেদন উদ্ধত অহংকারী ফেরাউনকে স্পর্শ করলো না। কারণ ফেরাউনের দৃষ্টিতে মুসা ছিলেন ঘৃণিত ,অবাঞ্ছিত এবং উন্নত মিশরীয় সভ্যতা বঞ্চিত এক দলত্যাগী। ফেরাউন কৌশলে সর্বসাধারণকে মুসার বিরুদ্ধে প্ররোচিত করতে প্রয়াস পায়। তার বক্তব্য ছিলো যদি মুসার বক্তব্য অনুযায়ী স্রষ্টা শুধু একজনই হয় এবং তাঁর কাছে সকলকে জবাবদিহি করতে হয় , তবে তা হচ্ছে এক নূতন ধর্ম। তাহলে মিশরবাসীদের পূর্বপুরুষের কোন ধর্ম ছিলো ? তারা কি মিশরের দেব-দেবীদের পূঁজা করে ভুল করেছিলো ? মুসার কথা অনুযায়ী তারা যদি ভুল করে থাকেন , তবে তারা কি এখন দুঃখ – দুর্দ্দশাতে নিপতিত ? এভাবেই সর্ব সাধারণের সামনে পূর্ব পুরুষদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযোগের মাধ্যমে জনসাধারণের মধ্যে মুসার বিরুদ্ধে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টির প্রয়াস করা হয়। এ ভাবেই ফেরাউন কৌশলে সর্বসাধারণের জন্য ফাঁদ পাতে যেনো মুসার জন্য তাদের কোনও সহানুভূতি না থাকে।

মূসা বললেনঃ তাদের খবর আমার পালনকর্তার কাছে লিখিত আছে। আমার পালনকর্তা ভ্রান্ত হন না এং বিস্মৃতও হন না।
[Mûsa (Moses)] said: ”The knowledge thereof is with my Lord, in a Record. My Lord is neither unaware nor He forgets, ”

قَالَ عِلْمُهَا عِندَ رَبِّي فِي كِتَابٍ لَّا يَضِلُّ رَبِّي وَلَا يَنسَى
Qala AAilmuha AAinda rabbee fee kitabin la yadillu rabbee wala yansa

YUSUFALI: He replied: “The knowledge of that is with my Lord, duly recorded: my Lord never errs, nor forgets,-
PICKTHAL: He said: The knowledge thereof is with my Lord in a Record. My Lord neither erreth nor forgetteth,
SHAKIR: He said: The knowledge thereof is with my Lord in a book, my Lord errs not, nor does He forget;
KHALIFA: He said, “The knowledge thereof is with my Lord in a record. My Lord never errs, nor does He forget.”

৫২। সে উত্তর দিয়েছিলো, ” ইহার জ্ঞান আমার প্রভুর নিকট উপযুক্ত নথিভুক্ত করা আছে। আমার প্রভু কখনও ভুল করেন না , ভুলেও যান না ২৫৭৫।

২৫৭৫। মুসা কিন্তু ফেরাউনের এই ফাঁদে পা দেন নাই। তিনি কোনওরূপ হঠকারিতার আশ্রয় না নিয়ে নম্র ভাষাতে তাঁর বক্তব্য পেশ করেন, কারণ আল্লাহ্‌ তাঁকে নম্র ভাষাতে ফেরাউনের সাথে কথা বলার আদেশ দান করেছেন [ ২০ : ৪৪ ]। মুসা নম্র ভাষাতে কথা বলেন কিন্তু কোনও অবস্থাতেই তিনি সত্যকে দ্বিখন্ডিত করেন নাই। তিনি বলেন যে, “আল্লাহ্‌র জ্ঞান স্বয়ং সম্পূর্ণ এবং তা লিপিবদ্ধ আছে লওহে মাহ্‌ফুজে। মানুষ ভুল করে, ভুলে যেতে পারে, কিন্তু আল্লাহ্‌ কখনও ভুল করেন না বা ভুলে যান না। আল্লাহ্‌ শুধু সর্বজ্ঞ -ই নন, তিনি সর্ব কল্যাণের অধিকারী। আল্লাহ্‌র কল্যাণময় স্পর্শের বিবরণ আছে পরের আয়াতে। চারিদিকে তাকাও সমস্ত পৃথিবী কার্পেটের ন্যায় আরামদায়ক রূপে সৃষ্টি করা হয়েছে। মানুষ এখানে নিরাপদে বিচরণ করে। তিনি আকাশ থেকে বৃষ্টি রূপ পানি প্রেরণ করেন, যা নীল নদীরূপে প্রবাহিত হয় মিশরের ভূমিকে উর্বর করে এবং মানুষের আহারের বন্দোবস্ত করেন। “

তিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে শয্যা করেছেন এবং তাতে চলার পথ করেছেন, আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন এবং তা দ্বারা আমি বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদ উৎপন্ন করেছি।
Who has made earth for you like a bed (spread out); and has opened roads (ways and paths etc.) for you therein; and has sent down water (rain) from the sky. And We have brought forth with it various kinds of vegetation.

الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ مَهْدًا وَسَلَكَ لَكُمْ فِيهَا سُبُلًا وَأَنزَلَ مِنَ السَّمَاء مَاء فَأَخْرَجْنَا بِهِ أَزْوَاجًا مِّن نَّبَاتٍ شَتَّى
Allathee jaAAala lakumu al-arda mahdan wasalaka lakum feeha subulan waanzala mina alssama-i maan faakhrajna bihi azwajan min nabatin shatta

YUSUFALI: “He Who has, made for you the earth like a carpet spread out; has enabled you to go about therein by roads (and channels); and has sent down water from the sky.” With it have We produced diverse pairs of plants each separate from the others.
PICKTHAL: Who hath appointed the earth as a bed and hath threaded roads for you therein and hath sent down water from the sky and thereby We have brought forth divers kinds of vegetation,
SHAKIR: Who made the earth for you an expanse and made for you therein paths and sent down water from the cloud; then thereby We have brought forth many species of various herbs.
KHALIFA: He is the One who made the earth habitable for you, and paved in it roads for you. And He sends down from the sky water with which we produce many different kinds of plants.

৫৩। ” তিনিই তোমাদের জন্য জমিনকে কার্পেটের ন্যায় বিছিয়ে দিয়েছেন ,সেখানে চলাচলের জন্য রাস্তা , [ ও নদী নালা ] দিয়েছেন ২৫৭৬। তিনি আকাশ থেকে বৃষ্টি প্রেরণ করেন।” এর সাহায্যে আমি বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদ উৎপন্ন করি , যার প্রত্যেকটিই স্বতন্ত্র ২৫৭৭ , ২৫৭৮।

২৫৭৬। “Sabil ” অর্থ শুধুমাত্র স্থলপথ নয়, এর অর্থ জলপথ, ও খাল এবং বর্তমান কালে তা আকাশ পথ ও যোগাযোগের সকল মাধ্যম।

২৫৭৭। “আমি উহা দ্বারা বিভিন্ন প্রকারের উদ্ভিদ উৎপন্ন করি।” এই বাক্যটি দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, মুসার বক্তব্যের পরে আল্লাহ্‌র বক্তব্যকে তুলে ধরা হয়েছে কারণ এই আয়াতটিকে আয়াত [ ২০ : ৫৪ – ৫৬ ] এর সাথে সংযুক্ত করলে আল্লাহ্‌র বক্তব্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্ফুটিত হয়। এই আয়াতগুলিতে বিশ্ব প্রকৃতিতে আল্লাহ্‌র মহিমাকে তুলে ধরা হয়েছে।

২৫৭৮। “Azway ” এখানে এই শব্দটিকে বিভিন্ন ” প্রকার ” বাক্য দ্বারা অনুবাদ করা হয়েছে। আবার ইংরেজীতে এর অনুবাদ করা হয়েছে “Diverse Pair” . সেখানে আয়াত [ ১৩ : ৩ এবং টিকা ১৮০৪ ] এর অনুসরণ করা হয়েছে।

তোমরা আহার কর এবং তোমাদের চতুস্পদ জন্তু চরাও। নিশ্চয় এতে বিবেক বানদের জন্যে নিদর্শন রয়েছে।
Eat and pasture your cattle, (therein); verily, in this are proofs and signs for men of understanding.

كُلُوا وَارْعَوْا أَنْعَامَكُمْ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِّأُوْلِي النُّهَى
Kuloo wairAAaw anAAamakum inna fee thalika laayatin li-olee alnnuha

YUSUFALI: Eat (for yourselves) and pasture your cattle: verily, in this are Signs for men endued with understanding.
PICKTHAL: (Saying): Eat ye and feed your cattle. Lo! herein verily are portents for men of thought.
SHAKIR: Eat and pasture your cattle; most surely there are signs in this for those endowed with understanding.
KHALIFA: Eat and raise your livestock. These are sufficient proofs for those who possess intelligence.

৫৪। [ যা থেকে ] তোমরা আহার কর এবং তোমাদের পশু পালকে চরাও। নিশ্চয়ই এর মধ্যে নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্য যারা বুঝতে পারে।

রুকু – ৩

৫৫। [ মৃত্তিকা ] থেকে তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে, ও তাতেই তোমাদের ফিরিয়ে নেবো এবং তা থেকেই পুর্নবার তোমাদের বের করবো ২৫৭৯।

২৫৭৯। এই আয়াতটির সাথে শেষ অধ্যায়ের ধারাবাহিকতার সামঞ্জস্য আছে। ইউসুফ আলী সাহেবের মতে আয়াতটি শেষ অধ্যায়েই সন্নিবেশিত হওয়া প্রয়োজন।

এ মাটি থেকেই আমি তোমাদেরকে সৃজন করেছি, এতেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে দিব এবং পুনরায় এ থেকেই আমি তোমাদেরকে উত্থিত করব।
Thereof (the earth) We created you, and into it We shall return you, and from it We shall bring you out once again.

مِنْهَا خَلَقْنَاكُمْ وَفِيهَا نُعِيدُكُمْ وَمِنْهَا نُخْرِجُكُمْ تَارَةً أُخْرَى
Minha khalaqnakum wafeeha nuAAeedukum waminha nukhrijukum taratan okhra

YUSUFALI: From the (earth) did We create you, and into it shall We return you, and from it shall We bring you out once again.
PICKTHAL: Thereof We created you, and thereunto We return you, and thence We bring you forth a second time.
SHAKIR: From it We created you and into it We shall send you back and from it will We raise you a second time.
KHALIFA: From it we created you, into it we return you, and from it we bring you out once more.

রুকু – ৩

৫৫। [ মৃত্তিকা ] থেকে তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে, ও তাতেই তোমাদের ফিরিয়ে নেবো এবং তা থেকেই পুর্নবার তোমাদের বের করবো ২৫৭৯।

২৫৭৯। এই আয়াতটির সাথে শেষ অধ্যায়ের ধারাবাহিকতার সামঞ্জস্য আছে। ইউসুফ আলী সাহেবের মতে আয়াতটি শেষ অধ্যায়েই সন্নিবেশিত হওয়া প্রয়োজন।

আমি ফেরাউনকে আমার সব নিদর্শন দেখিয়ে দিয়েছি, অতঃপর সে মিথ্যা আরোপ করেছে এবং অমান্য করেছে।
And indeed We showed him [Fir’aun (Pharaoh)] all Our Signs and Evidences, but he denied and refused.

وَلَقَدْ أَرَيْنَاهُ آيَاتِنَا كُلَّهَا فَكَذَّبَ وَأَبَى
Walaqad araynahu ayatina kullaha fakaththaba waaba

YUSUFALI: And We showed Pharaoh all Our Signs, but he did reject and refuse.
PICKTHAL: And We verily did show him all Our tokens, but he denied them and refused.
SHAKIR: And truly We showed him Our signs, all of them, but he rejected and refused.
KHALIFA: We showed him all our proofs, but he disbelieved and refused.

৫৬। এবং আমি ফেরাউনকে আমার সকল নিদর্শন দেখিয়েছিলাম, কিন্তু সে প্রত্যাখান করেছে এবং অমান্য করেছে ২৫৮০।

২৫৮০। এই আয়াতটি হযরত মুসা ও ফেরাউনের মধ্যে যে সংঘর্ষ ঘটে তারই ভূমিকা স্বরূপ। আল্লাহ্‌র নিদর্শন সমূহ মিশরীয়দের প্রতারণামূলক ম্যাজিককেই শুধুমাত্র মিথ্যা প্রমাণ করে নাই ,পরবর্তীতে প্লেগ [ এখানে উল্লেখ করা হয় নাই ] ও লোহিত সাগর অতিক্রম , এর থেকেও অধিক অলৌকিক ক্ষমতার নিদর্শন।

সে বললঃ হে মূসা, তুমি কি যাদুর জোরে আমাদেরকে দেশ থেকে বহিষ্কার করার জন্যে আগমন করেছ?
He [Fir’aun (Pharaoh)] said: ”Have you come to drive us out of our land with your magic, O Mûsa (Moses)?

قَالَ أَجِئْتَنَا لِتُخْرِجَنَا مِنْ أَرْضِنَا بِسِحْرِكَ يَا مُوسَى
Qala aji/tana litukhrijana min ardina bisihrika ya moosa

YUSUFALI: He said: “Hast thou come to drive us out of our land with thy magic, O Moses?
PICKTHAL: He said: Hast come to drive us out from our land by thy magic, O Moses?
SHAKIR: Said he: Have you come to us that you should turn us out of our land by your magic, O Musa?
KHALIFA: He said, “Did you come here to take us out of our land with your magic, O Moses?

৫৭। সে বলেছিলো, ” হে মুসা ! তুমি কি তোমার জাদু দ্বারা আমাদেরকে ,আমাদের দেশ থেকে বের করে দিবার জন্য এসেছ ? ২৫৮১

২৫৮১। মিশরবাসীরা হযরত মুসাকে অভিযুক্ত করেন যে তিনি মিশরবাসীদের দেশ থেকে বিতাড়িত করার ষড়যন্ত্র করছেন , তাঁর যাদু বিদ্যার প্রদর্শন দ্বারা। কিন্তু তাঁদের এই অভিযোগ ছিলো স্পষ্টতঃ মিথ্যা। মুসার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিলো ইসরাঈলীদের মিশরে মুক্ত করা। যে উদ্দেশ্যে আল্লাহ্‌ তাঁকে প্রেরণ করেন। মিশরবাসীরা ক্ষমতার দম্ভে আল্লাহ্‌র অলৌকিক ক্ষমতাকে অনুধাবন করতে অক্ষম হয়েছিলো। তারা তাদের যাদু বিদ্যার ক্ষমতার সাথে মুসার অলৌকিক ক্ষমতা যা আল্লাহ্‌ তাঁকে দান করেন তা তুলনা করে। তারা আল্লাহ্‌র নবীর অলৌকিক ক্ষমতাকে যাদুবিদ্যা বলে অভিযুক্ত করে। তারা বুঝতে ও উপলব্ধি করতে অক্ষম হয়েছিলো যে, মুসার অলৌকিক শক্তি ও ক্ষমতার উৎস সম্পূর্ণ আলাদা।

অতএব, আমরাও তোমার মোকাবেলায় তোমার নিকট অনুরূপ যাদু উপস্থিত করব। সুতরাং আমাদের ও তোমার মধ্যে একটি ওয়াদার দিন ঠিক কর, যার খেলাফ আমরাও করব না এবং তুমিও করবে না একটি পরিষ্কার প্রান্তরে।
”Then verily, we can produce magic the like thereof; so appoint a meeting between us and you, which neither we, nor you shall fail to keep, in an open wide place where both shall have a just and equal chance (and beholders could witness the competition).”

فَلَنَأْتِيَنَّكَ بِسِحْرٍ مِّثْلِهِ فَاجْعَلْ بَيْنَنَا وَبَيْنَكَ مَوْعِدًا لَّا نُخْلِفُهُ نَحْنُ وَلَا أَنتَ مَكَانًا سُوًى
Falana/tiyannaka bisihrin mithlihi faijAAal baynana wabaynaka mawAAidan la nukhlifuhu nahnu wala anta makanan suwan

YUSUFALI: “But we can surely produce magic to match thine! So make a tryst between us and thee, which we shall not fail to keep – neither we nor thou – in a place where both shall have even chances.”
PICKTHAL: But we surely can produce for thee magic the like thereof; so appoint a tryst between us and you, which neither we nor thou shall fail to keep, at a place convenient (to us both).
SHAKIR: So we too will produce before you magic like it, therefore make between us and you an appointment, which we should not break, (neither) we nor you, (in) a central place.
KHALIFA: “We will surely show you similar magic. Therefore, set an appointment that neither we, nor you will violate; in a neutral place.”

৫৮। ” কিন্তু আমরাও তোমার অনুরূপ যাদু উপস্থিত করতে পারি। সুতারাং আমাদের ও তোমার মধ্যে নির্ধারণ কর একটি মিলন স্থান [ ও সময় ]। যেখানে আমাদের উভয়েরই সমান সুযোগ থাকবে, যার ব্যতিক্রম আমরাও করবো না এবং তুমিও করবে না। ” ২৫৮২।

২৫৮২। “Suwan” আক্ষরিক অর্থ সমান, মসৃণ। এর দ্বারা এই আয়াতে নিম্নোক্ত ভাবসমূহ প্রকাশ করা যায় :
১) দুদিক থেকেই সমদূরবর্তী বা মধ্যবর্তী স্থান।
২) দু পক্ষের জন্য সম উপযোগী;
৩) সমান মসৃণ ভূমি যেখানে থেকে সকলেই দেখতে পাবে।

মূসা বললঃ তোমাদের ওয়াদার দিন উৎসবের দিন এবং পূর্বাহেß লোকজন সমবেত হবে।
[Mûsa (Moses)] said: ”Your appointed meeting is the day of the festival, and let the people assemble when the sun has risen (forenoon).”

قَالَ مَوْعِدُكُمْ يَوْمُ الزِّينَةِ وَأَن يُحْشَرَ النَّاسُ ضُحًى

Qala mawAAidukum yawmu alzzeenati waan yuhshara alnnasu duhan
YUSUFALI: Moses said: “Your tryst is the Day of the Festival, and let the people be assembled when the sun is well up.”
PICKTHAL: (Moses) said: Your tryst shall be the day of the feast, and let the people assemble when the sun hath risen high.
SHAKIR: (Musa) said: Your appointment is the day of the Festival and let the people be gathered together in the early forenoon.
KHALIFA: He said, “Your appointed time shall be the day of festivities. Let us all meet in the forenoon.”

৫৯। মুসা বলেছিলো, ” তোমাদের [ নির্ধারিত ] মিলন স্থান ও [ সময় ] হবে উৎসবের দিন এবং জনগণকে সমবেত হতে দেবে যখন সূর্য মধ্যাহ্ন গগনে থাকবে।” ২৫৮৩

২৫৮৩। মিশরবাসীদের বিশেষ উৎসবের দিনকে হযরত মুসা নির্ধারিত করেন। এদিনে মন্দির ও রাস্তা ঘাট বিশেষ ভাবে সজ্জিত করা হয়। জনসাধারণ পূঁজা উপলক্ষে কাজ থেকে অবসর গ্রহণ করে। এ দিনে মিশরের আপামর জনসাধারণ মন্দিরে সমবেত হয়। হযরত মুসা তাঁর অলৌকিক ক্ষমতা বা আল্লাহ্‌র মোজেজা প্রদর্শনের জন্য এ দিনকেই নির্ধারিত করেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিলো তিনি যেনো বিরাট জনগোষ্ঠির সামনে আল্লাহ্‌র সত্যকে প্রকাশ করার সুযোগ লাভ করেন। তাঁর এই উদ্দেশ্য কিছুটা হলেও সফল হয়। কারণ মিশরের কিছু প্রভাবশালী যাদুকর মুসার অলৌকিক ক্ষমতার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পড়েন [ ২০ : ৭০, ৭২ – ৭৬ ]।

অতঃপর ফেরাউন প্রস্থান করল এবং তার সব কলাকৌশল জমা করল অতঃপর উপস্থিত হল।
So Fir’aun (Pharaoh) withdrew, devised his plot and then came back.

فَتَوَلَّى فِرْعَوْنُ فَجَمَعَ كَيْدَهُ ثُمَّ أَتَى
Fatawalla firAAawnu fajamaAAa kaydahu thumma ata

YUSUFALI: So Pharaoh withdrew: He concerted his plan, and then came (back).
PICKTHAL: Then Pharaoh went and gathered his strength, then came (to the appointed tryst).
SHAKIR: So Firon turned his back and settled his plan, then came.
KHALIFA: Pharaoh summoned his forces, then came.

৬০। সুতারাং ফেরাউন উঠে গেল এবং সকলে একত্রে মিলে মতলব করলো , অতঃপর [ ফিরে ] এলো ২৫৮৪।

২৫৮৪। ঘটনার বিবরণ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, মুসা কর্তৃক জন সাধারণের উৎসবের দিনটিকে ধার্য করার ফলে ফেরাউন কিছুটা হতাশ হয়ে পড়েন। কারণ সাধারণ ভাবেই সেদিন বিপুল লোকের সমাগম ঘটবে। আর এই বিপুল জন সমাবেশের মাঝে কিছু লোক অবশ্যই থাকবে যারা ফেরাউনের যাদুকরদের কৌশলের সমালোচক হবে। এই ব্যাপারটি ফেরাউনের অত্যন্ত অপছন্দ ছিলো। পরবর্তী আয়াতে মুসার বক্তব্য থেকেও এ কথা প্রতীয়মান হয় যে, ফেরাউন ও তার লোকেরা গভীর ষড়যন্ত্র করেছিলো যা ছিলো অন্যায় ও কুচক্রান্তে ভরা।

মূসা (আঃ) তাদেরকে বললেনঃ দুর্ভাগ্য তোমাদের; তোমরা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করো না। তাহলে তিনি তোমাদেরকে আযাব দ্বারা ধবংস করে দেবেন। যে মিথ্যা উদভাবন করে, সেই বিফল মনোরথ হয়েছে।
Mûsa (Moses) said to them: ”Woe unto you! Invent not a lie against Allâh, lest He should destroy you completely by a torment. And surely, he who invents a lie (against Allâh) will fail miserably.”

قَالَ لَهُم مُّوسَى وَيْلَكُمْ لَا تَفْتَرُوا عَلَى اللَّهِ كَذِبًا فَيُسْحِتَكُمْ بِعَذَابٍ وَقَدْ خَابَ مَنِ افْتَرَى
Qala lahum moosa waylakum la taftaroo AAala Allahi kathiban fayushitakum biAAathabin waqad khaba mani iftara

YUSUFALI: Moses said to him: Woe to you! Forge not ye a lie against Allah, lest He destroy you (at once) utterly by chastisement: the forger must suffer frustration!”
PICKTHAL: Moses said unto them: Woe unto you! Invent not a lie against Allah, lest He extirpate you by some punishment. He who lieth faileth miserably.
SHAKIR: Musa said to them: Woe to you! do not forge a lie against Allah, lest He destroy you by a punishment, and he who forges (a lie) indeed fails to attain (his desire).
KHALIFA: Moses said to them, “Woe to you. Do you fabricate lies to fight GOD and thus incur His retribution? Such fabricators will surely fail.”

৬১। মুসা তাকে বলেছিলো, ” দুর্ভোগ তোমাদের ! আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে তোমরা মিথ্যা আরোপ করো না ;করলে তিনি শাস্তি দ্বারা তোমাদের সমূলে ধ্বংস করবেন। যে মিথ্যার উদ্ভাবন করেছে, সে পরাজিত হয়েছে ২৫৮৫। ”

২৫৮৫। মুসার ফেরাউনের লোকদের কুচক্র, প্রতারণা ও কৌশল সম্পর্কে সম্যক ধারণা ছিলো। এই সব যাদুকরেরা তাদের প্রতারণাপূর্ণ কৌশলকে তাদের উপাস্যের মোজেজারূপে প্রকাশ করার প্রয়াস পায়। সাধারণ লোকদের প্রতারিত করতে চেয়েছিলো এই ভাবে যে তাদের উপাস্য দেবতারা আল্লাহ্‌ অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী। মুসা তাদের এই বলে সর্তক করে দেন যে, তাদের কুচক্রী কৌশল জন সাধারণের নিকট প্রকাশিত করা হবে, এবং তারা সমূলে ধ্বংস হবে।

অতঃপর তারা তাদের কাজে নিজেদের মধ্যে বিতর্ক করল এবং গোপনে পরামর্শ করল।
Then they debated with one another what they must do, and they kept their talk secret.

فَتَنَازَعُوا أَمْرَهُم بَيْنَهُمْ وَأَسَرُّوا النَّجْوَى
FatanazaAAoo amrahum baynahum waasarroo alnnajwa

YUSUFALI: So they disputed, one with another, over their affair, but they kept their talk secret.
PICKTHAL: Then they debated one with another what they must do, and they kept their counsel secret.
SHAKIR: So they disputed with one another about their affair and kept the discourse secret.
KHALIFA: They disputed among themselves, as they conferred privately.

৬২। সুতারাং তারা , তাদের কাজ সম্বন্ধে নিজেদের মধ্যে তর্কবিতর্ক করেছিলো ,কিন্তু তারা তাদের আলোচনা গোপন রাখলো ২৫৮৬।

২৫৮৬। যাদুকরেরা বুঝতে পেরেছিলো যে, তারা কোন সাধারণ ব্যক্তির সাথে বোঝাপড়া করছে না। কারণ মুসা ছিলেন তাদের পূর্ব পরিচিত। সুতারাং তারা আশঙ্কা করেছিলো যে, মুসার ক্ষমতা তাদের থেকে বেশী হতে পারে। মন্দ সব সময়েই মন্দভাবে চিন্তা করতে ভালোবাসে। তারা মুসার ক্ষমতার উৎস যে স্বর্গীয় তা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলো না। সে কারণে তারা মুসা ও হারুনকে তাদের নিজেদের সমমান সম্পন্ন বলে ধারণা করেছিলো। সুতারাং তারা একতাবদ্ধ ভাবে মুসা ও হারুনকে পরাজিত করার পরিকল্পনা করে। এখানে আয়াত [ ২০:৬৩ – ৬৪ ] হচ্ছে যাদুকরদের গোপন আলোচনা এবং আয়াত [ ২০ : ৬৫ ] হচ্ছে গোপন আলোচনার পরে যাদুকরদের প্রকাশ্য প্রতিদ্বন্দীতার আহ্বান মুসার প্রতি।

তারা বললঃ এই দুইজন নিশ্চিতই যাদুকর, তারা তাদের যাদু দ্বারা তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে বহিস্কার করতে চায় এবং তোমাদের উৎকৃষ্ট জীবন ব্যবস্থা রহিত করতে চায়।
They said: ”Verily! These are two magicians. Their object is to drive you out from your land with magic, and overcome your chiefs and nobles.

قَالُوا إِنْ هَذَانِ لَسَاحِرَانِ يُرِيدَانِ أَن يُخْرِجَاكُم مِّنْ أَرْضِكُم بِسِحْرِهِمَا وَيَذْهَبَا بِطَرِيقَتِكُمُ الْمُثْلَى
Qaloo in hathani lasahirani yureedani an yukhrijakum min ardikum bisihrihima wayathhaba bitareeqatikumu almuthla

YUSUFALI: They said: “These two are certainly (expert) magicians: their object is to drive you out from your land with their magic, and to do away with your most cherished institutions.
PICKTHAL: They said: Lo! these are two wizards who would drive you out from your country by their magic, and destroy your best traditions;
SHAKIR: They said: These are most surely two magicians who wish to turn you out from your land by their magic and to take away your best traditions.
KHALIFA: They said, “These two are no more than magicians who wish to take you out of your land with their magic, and to destroy your ideal way of life.

৬৩। তারা বলেছিলো, ” এই দুজন অবশ্যই [দক্ষ ] জাদুকর। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদের জাদু দ্বারা তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করা, এবং তোমাদের লালিত জীবন ব্যবস্থা ধ্বংস করা ২৫৮৭।

২৫৮৭। ” লালিত জীবন ব্যবস্থা ” দ্বারা এই আয়াতে বুঝাতে চাওয়া হয়েছে যে, তাদের পূর্বপুরুষদের যাদুবিদ্যা সমৃদ্ধ বিলাসী জীবন ব্যবস্থা “Amthal” এর স্ত্রী লিঙ্গে “Muthla “। “Amthal” এর সকল অর্থ এখানে প্রযোজ্য যার অর্থ সম্মানীয় , বিশিষ্ট, ইত্যাদি। “Tariqat” – জীবন ব্যবস্থা, প্রতিষ্ঠান, চরিত্র।

অতএব, তোমরা তোমাদের কলাকৌশল সুসংহত কর, অতঃপর সারিবদ্ধ হয়ে আস। আজ যে জয়ী হবে, সেই সফলকাম হবে।
”So devise your plot, and then assemble in line. And whoever overcomes this day will be indeed successful.”

فَأَجْمِعُوا كَيْدَكُمْ ثُمَّ ائْتُوا صَفًّا وَقَدْ أَفْلَحَ الْيَوْمَ مَنِ اسْتَعْلَى
FaajmiAAoo kaydakum thumma i/too saffan waqad aflaha alyawma mani istaAAla

YUSUFALI: “Therefore concert your plan, and then assemble in (serried) ranks: He wins (all along) today who gains the upper hand.”
PICKTHAL: So arrange your plan, and come in battle line. Whoso is uppermost this day will be indeed successful.
SHAKIR: Therefore settle your plan, then come standing in ranks and he will prosper indeed this day who overcomes.
KHALIFA: “Let us agree upon one scheme and face them as a united front. The winner today will have the upper hand.”

৬৪। ” অতএব তোমরা একত্রে পরিকল্পনা কর অতঃপর সারিবদ্ধ ভাবে উপস্থিত হও। আজ [সব কিছুতে] যে জয়ী হবে সেই শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করবে।” ২৫৮৮

২৫৮৮। এই আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ফেরাউন সে সময়ে সম্ভবতঃ তাঁর গোপন মন্ত্রণা কক্ষে পরামর্শে ব্যস্ত ছিলো। ফেরাউন বললো যে, যাদুকরেরা যদি মুসাকে পরাজিত করতে পারে তবে, তাদের জন্য আছে অঢেল পুরষ্কারের ব্যবস্থা। [ দেখুন আয়াত ৭ : ১১৪ ]। যাদুকরদের জন্য দিনটি ছিলো অত্যন্ত সঙ্কটাপন্ন। যদি তারা জয়লাভ করে, তবে তাদের জন্য তা হবে চিরস্থায়ী বিজয়। পরিণামে মুসা ও তাঁর লোকজন ধ্বংস হয়ে যাবে।

তারা বললঃ হে মূসা, হয় তুমি নিক্ষেপ কর, না হয় আমরা প্রথমে নিক্ষেপ করি।
They said:”O Mûsa (Moses)! Either you throw first or we be the first to throw?”

قَالُوا يَا مُوسَى إِمَّا أَن تُلْقِيَ وَإِمَّا أَن نَّكُونَ أَوَّلَ مَنْ أَلْقَى
Qaloo ya moosa imma an tulqiya wa-imma an nakoona awwala man alqa

YUSUFALI: They said: “O Moses! whether wilt thou that thou throw (first) or that we be the first to throw?”
PICKTHAL: They said: O Moses! Either throw first, or let us be the first to throw?
SHAKIR: They said: O Musa! will you cast, or shall we be the first who cast down?
KHALIFA: They said, “O Moses, either you throw, or we will be the first to throw.”

৬৫। তারা বলেছিলো, ” হে মুসা ! হয় তুমি [প্রথমে ] নিক্ষেপ করবে , অথবা আমরাই প্রথমে নিক্ষেপ করবো।”

৬৬। সে বলেছিলো, ” বরং তোমরাই প্রথমে নিক্ষেপ কর।” তাদের জাদুর প্রভাবে ,তাদের দড়ি ও লাঠি মুসার নিকট মনে হলো জীবন্ত হয়ে নড়াচড়া করছে ২৫৮৯।

২৫৮৯। যাদুকরদের যাদুর কৌশলগুলি এতই চমকপ্রদ ছিলো যে, সকল দর্শকেরা এবং মুসার চোখে দৃষ্টিবিভ্রম ঘটালো। তাদের দড়ি এবং লাঠিকে সাধারণ মানুষের চোখে সাপ বলে ভ্রম হচ্ছিল। এমন কি মুসার চোখেও তা জীবন্ত সাপ বলে ভ্রম হচ্ছিল। কিন্তু যাদুকরদের সবই ছিলো শুধুমাত্র প্রতারণার কৌশল মাত্র।

মূসা বললেনঃ বরং তোমরাই নিক্ষেপ কর। তাদের যাদুর প্রভাবে হঠাৎ তাঁর মনে হল, যেন তাদের রশিগুলো ও লাঠিগুলো চুটাছুটি করছে।
[Mûsa (Moses)] said: ”Nay, throw you (first)!” Then behold, their ropes and their sticks, by their magic, appeared to him as though they moved fast.

قَالَ بَلْ أَلْقُوا فَإِذَا حِبَالُهُمْ وَعِصِيُّهُمْ يُخَيَّلُ إِلَيْهِ مِن سِحْرِهِمْ أَنَّهَا تَسْعَى
Qala bal alqoo fa-itha hibaluhum waAAisiyyuhum yukhayyalu ilayhi min sihrihim annaha tasAAa

YUSUFALI: He said, “Nay, throw ye first!” Then behold their ropes and their rods-so it seemed to him on account of their magic – began to be in lively motion!
PICKTHAL: He said: Nay, do ye throw! Then lo! their cords and their staves, by their magic, appeared to him as though they ran.
SHAKIR: He said: Nay! cast down. then lo! their cords and their rods– it was imaged to him on account of their magic as if they were running.
KHALIFA: He said, “You throw.” Whereupon, their ropes and sticks appeared to him, because of their magic, as if they were moving.

৬৫। তারা বলেছিলো, ” হে মুসা ! হয় তুমি [প্রথমে ] নিক্ষেপ করবে , অথবা আমরাই প্রথমে নিক্ষেপ করবো।”

৬৬। সে বলেছিলো, ” বরং তোমরাই প্রথমে নিক্ষেপ কর।” তাদের জাদুর প্রভাবে ,তাদের দড়ি ও লাঠি মুসার নিকট মনে হলো জীবন্ত হয়ে নড়াচড়া করছে ২৫৮৯।

২৫৮৯। যাদুকরদের যাদুর কৌশলগুলি এতই চমকপ্রদ ছিলো যে, সকল দর্শকেরা এবং মুসার চোখে দৃষ্টিবিভ্রম ঘটালো। তাদের দড়ি এবং লাঠিকে সাধারণ মানুষের চোখে সাপ বলে ভ্রম হচ্ছিল। এমন কি মুসার চোখেও তা জীবন্ত সাপ বলে ভ্রম হচ্ছিল। কিন্তু যাদুকরদের সবই ছিলো শুধুমাত্র প্রতারণার কৌশল মাত্র।

অতঃপর মূসা মনে মনে কিছুটা ভীতি অনুভব করলেন।
So Mûsa (Moses) conceived a fear in himself.

فَأَوْجَسَ فِي نَفْسِهِ خِيفَةً مُّوسَى
Faawjasa fee nafsihi kheefatan moosa

YUSUFALI: So Moses conceived in his mind a (sort of) fear.
PICKTHAL: And Moses conceived a fear in his mind.
SHAKIR: So Musa conceived in his mind a fear.
KHALIFA: Moses harbored some fear.

৬৭। সুতারাং মুসা তাঁর অন্তরে [ এক ধরণের ] ভয় অনুভব করলো ২৫৯০।

২৫৯০। ঐক্যবদ্ধ ও সুপরিকল্পিত মিথ্যার আক্রমণ অনেক সময়েই প্রকৃত সত্যকে প্রকাশে বাঁধা দান করে। সে সময়ে মিথ্যাকে সত্য বলে প্রতিভাত হয়, এবং মিথ্যা সর্বক্ষেত্রে প্রশংসিত হয়। এ সব ক্ষেত্রে সত্যে বিশ্বাসীদের বিভ্রান্তিতে নিপতিত করে। এ হচ্ছে সাধারণ নিয়ম। মুসার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটে নাই। মিথ্যার আক্রমণে তিনি অন্তরে কিছু ভীতির অনুভব করেন, কিন্তু আল্লাহ্‌র করুণা ও দয়া তাঁকে আত্মপ্রত্যয়ী হতে সাহায্য করে। শেষ পর্যন্ত প্রকৃত সত্য মিথ্যা কৌশলকে ধ্বংস করে।

আমি বললামঃ ভয় করো না, তুমি বিজয়ী হবে।
We (Allâh) said: ”Fear not! Surely, you will have the upper hand.

قُلْنَا لَا تَخَفْ إِنَّكَ أَنتَ الْأَعْلَى
Qulna la takhaf innaka anta al-aAAla

YUSUFALI: We said: “Fear not! for thou hast indeed the upper hand:
PICKTHAL: We said: Fear not! Lo! thou art the higher.
SHAKIR: We said: Fear not, surely you shall be the uppermost,
KHALIFA: We said, “Have no fear. You will prevail.

৬৮। আমি বলেছিলাম, ” ভয় পেয়ো না ! কারণ তোমারই [ আজ ] প্রাধাণ্য।

৬৯। তোমার ডান হাতে যা আছে তা নিক্ষেপ কর। ইহা তারা যে প্রতারণা করেছে তা গ্রাস করে ফেলবে। ওরা যে প্রতারণা করেছে তা তো কেবল জাদুকরের কৌশল মাত্র। জাদুকরেরা যেখানেই থাকুক না কেন [ তাতে কিছু আসে যায় না ] ; তারা সমৃদ্ধি লাভ করবে না ২৫৯১।

২৫৯১। এই আয়াতটি সমগ্র ঘটনাটির উপদেশ স্বরূপ। উপদেশ হচ্ছে : ১) মিথ্যা এবং প্রতারণা চিরস্থায়ী হতে পারে না। কিছুদিন মিথ্যা বিভ্রান্ত করার ক্ষমতা রাখে সত্য, কিন্তু সত্যের উপস্থিতিতে তা ধ্বংস হয়ে যাবে। অথবা ২) প্রতারণা ও কৌশলের শেষ পরিণতি অবশ্যই মন্দ। তা কখনই সাফল্য লাভ করবে না।।

তোমার ডান হাতে যা আছে তুমি তা নিক্ষেপ কর। এটা যা কিছু তারা করেছে তা গ্রাস করে ফেলবে। তারা যা করেছে তা তো কেবল যাদুকরের কলাকৌশল। যাদুকর যেখানেই থাকুক, সফল হবে না।
”And throw that which is in your right hand! It will swallow up that which they have made. That which they have made is only a magician’s trick, and the magician will never be successful, no matter whatever amount (of skill) he may attain.”

وَأَلْقِ مَا فِي يَمِينِكَ تَلْقَفْ مَا صَنَعُوا إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَى
Waalqi ma fee yameenika talqaf ma sanaAAoo innama sanaAAoo kaydu sahirin wala yuflihu alssahiru haythu ata

YUSUFALI: “Throw that which is in thy right hand: Quickly will it swallow up that which they have faked what they have faked is but a magician’s trick: and the magician thrives not, (no matter) where he goes.”
PICKTHAL: Throw that which is in thy right hand! It will eat up that which they have made. Lo! that which they have made is but a wizard’s artifice, and a wizard shall not be successful to whatever point (of skill) he may attain.
SHAKIR: And cast down what is in your right hand; it shall devour what they have wrought; they have wrought only the plan of a magician, and the magician shall not be successful wheresoever he may come from.
KHALIFA: “Throw what you hold in your right hand, and it will swallow what they fabricated. What they fabricated is no more than the scheming of a magician. The magician’s work will not succeed.”

৬৮। আমি বলেছিলাম, ” ভয় পেয়ো না ! কারণ তোমারই [ আজ ] প্রাধাণ্য।

৬৯। তোমার ডান হাতে যা আছে তা নিক্ষেপ কর। ইহা তারা যে প্রতারণা করেছে তা গ্রাস করে ফেলবে। ওরা যে প্রতারণা করেছে তা তো কেবল জাদুকরের কৌশল মাত্র। জাদুকরেরা যেখানেই থাকুক না কেন [ তাতে কিছু আসে যায় না ] ; তারা সমৃদ্ধি লাভ করবে না ২৫৯১।

২৫৯১। এই আয়াতটি সমগ্র ঘটনাটির উপদেশ স্বরূপ। উপদেশ হচ্ছে : ১) মিথ্যা এবং প্রতারণা চিরস্থায়ী হতে পারে না। কিছুদিন মিথ্যা বিভ্রান্ত করার ক্ষমতা রাখে সত্য, কিন্তু সত্যের উপস্থিতিতে তা ধ্বংস হয়ে যাবে। অথবা ২) প্রতারণা ও কৌশলের শেষ পরিণতি অবশ্যই মন্দ। তা কখনই সাফল্য লাভ করবে না।।

অতঃপর যাদুকররা সেজদায় পড়ে গেল। তারা বললঃ আমরা হারুন ও মূসার পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম।
So the magicians fell down prostrate. They said: ”We believe in the Lord of Hârûn (Aaron) and Mûsa (Moses).”

فَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سُجَّدًا قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ هَارُونَ وَمُوسَى
Faolqiya alssaharatu sujjadan qaloo amanna birabbi haroona wamoosa

YUSUFALI: So the magicians were thrown down to prostration: they said, “We believe in the Lord of Aaron and Moses”.
PICKTHAL: Then the wizards were (all) flung down prostrate, crying: We believe in the Lord of Aaron and Moses.
SHAKIR: And the magicians were cast down making obeisance; they said: We believe in the Lord of Haroun and Musa.
KHALIFA: The magicians fell prostrate, saying, “We believe in the Lord of Aaron and Moses.”

৭০। সুতারাং জাদুকরেরা সেজ্‌দায় লুটিয়ে পড়লো। তারা বলেছিলো, ” হারুন ও মুসার প্রভুর প্রতি ঈমান আনলাম ২৫৯২। ”

২৫৯২। এই আয়াতটি [ ৭ : ১২০ – ১২৬ ] আয়াতের এবং এর টিকার সমরূপ।

ফেরাউন বললঃ আমার অনুমতি দানের পূর্বেই? তোমরা কি তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলে; দেখছি সেই তোমাদের প্রধান, সে তোমাদেরকে যাদু শিক্ষা দিয়েছে। অতএব আমি অবশ্যই তোমাদের হস্তপদ বিপরীত দিক থেকে কর্তন করব এবং আমি তোমাদেরকে খর্জুর বৃক্ষের কান্ডে শূলে চড়াব এবং তোমরা নিশ্চিত রূপেই জানতে পারবে আমাদের মধ্যে কার আযাব কঠোরতর এবং অধিক্ষণ স্থায়ী।
[Fir’aun (Pharaoh)] said: ”Believe you in him [Mûsa (Moses)] before I give you permission? Verily! He is your chief who taught you magic. So I will surely cut off your hands and feet on opposite sides, and I will surely crucify you on the trunks of date-palms, and you shall surely know which of us [I (Fir’aun ­ Pharaoh) or the Lord of Mûsa (Moses) (Allâh)] can give the severe and more lasting torment.”

قَالَ آمَنتُمْ لَهُ قَبْلَ أَنْ آذَنَ لَكُمْ إِنَّهُ لَكَبِيرُكُمُ الَّذِي عَلَّمَكُمُ السِّحْرَ فَلَأُقَطِّعَنَّ أَيْدِيَكُمْ وَأَرْجُلَكُم مِّنْ خِلَافٍ وَلَأُصَلِّبَنَّكُمْ فِي جُذُوعِ النَّخْلِ وَلَتَعْلَمُنَّ أَيُّنَا أَشَدُّ عَذَابًا وَأَبْقَى
Qala amantum lahu qabla an athana lakum innahu lakabeerukumu allathee AAallamakumu alssihra falaoqattiAAanna aydiyakum waarjulakum min khilafin walaosallibannakum fee juthooAAi alnnakhli walataAAlamunna ayyuna ashaddu AAathaban waabqa

YUSUFALI: (Pharaoh) said: “Believe ye in Him before I give you permission? Surely this must be your leader, who has taught you magic! be sure I will cut off your hands and feet on opposite sides, and I will have you crucified on trunks of palm-trees: so shall ye know for certain, which of us can give the more severe and the more lasting punishment!”
PICKTHAL: (Pharaoh) said: Ye put faith in him before I give you leave. Lo! he is your chief who taught you magic. Now surely I shall cut off your hands and your feet alternately, and I shall crucify you on the trunks of palm trees, and ye shall know for certain which of us hath sterner and more lasting punishment.
SHAKIR: (Firon) said: You believe in him before I give you leave; most surely he is the chief of you who taught you enchantment, therefore I will certainly cut off your hands and your feet on opposite sides, and I will certainly crucify you on the trunks of the palm trees, and certainly you will come to know which of us is the more severe and the more abiding in chastising.
KHALIFA: He said, “Did you believe in him without my permission? He must be your chief; the one who taught you magic. I will surely sever your hands and feet on alternate sides. I will crucify you on the palm trunks. You will find out which of us can inflict the worst retribution, and who outlasts whom.”

৭১। [ফেরাউন ] বলেছিলো, ” অনুমতি দেয়ার পূর্বেই তোমরা তার [ মুসার ] প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলে ? নিশ্চয়ই সেই তোমাদের গুরু, যে তোমাদের যাদু শিক্ষা দিয়েছে ২৫৯৩। নিশ্চিত থাক, আমি তোমাদের হাত ও পা বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলবো, এবং আমি তোমাদের খেজুর গাছের কান্ডে শূলবিদ্ধ করবই। তারপরে তোমরা নিশ্চিতভাবে জানবে, আমাদের মধ্যে কে কঠোরতম ও অধিক স্থায়ী শাস্তি দিতে পারে।”

২৫৯৩। ফেরাউন যাদুকরদের মুসার অনুসারীরূপে অভিযুক্ত করলো। তার ধারণা হলো মুসা যাদুকরদের বশীভূত করেছে এবং তাদের পরিচালিত করছে। সে প্রকৃত সত্যকে প্রত্যক্ষ করতে ছিলো অপারগ। এ ভাবেই মানুষের উদ্ধত্য দম্ভ অহংকার মানুষকে সত্য প্রত্যক্ষ করতে বাঁধার সৃষ্টি করে। যারা অহংকারী তাদের গর্ব ,অহংকার তাদের উদ্ধত ও দাম্ভিক করে তোলে। ফলে তারা প্রকৃত সত্যকে , আল্লাহ্‌র নিদর্শনকে উপলব্ধি করতে পারে না। কারণ ঔদ্ধত্য তাদের উপলব্ধির ক্ষমতাকে সঙ্কীর্ণ করে তোলে। এ ভাবেই তাদের সঙ্কীর্ণ দৃষ্টিতে সত্যের মহিমান্বিত রূপ ধরা পড়ে না। সত্যিকার অর্থে তারা অন্ধ ব্যক্তির ন্যায়। কারণ চতুরতা ও অহংকার তাদের সত্য পথ থেকে বহুদূরে নিক্ষিপ্ত করে।

উপদেশ : গর্ব ও অহংকার মানুষকে দাম্ভিক উদ্ধত করে তোলে, পরিণামে মানুষ সত্যকে প্রত্যক্ষ করার ক্ষমতা হারায়। ফলে সে হয় বিভ্রান্ত।

যাদুকররা বললঃ আমাদের কাছে যে, সুস্পষ্ট প্রমাণ এসেছে তার উপর এবং যিনি আমাদের কে সৃষ্টি করেছেন, তাঁর উপর আমরা কিছুতেই তোমাকে প্রাধান্য দেব না। অতএব, তুমি যা ইচ্ছা করতে পার। তুমি তো শুধু এই পার্থিব জীবনেই যা করার করবে।
They said: ”We prefer you not over the clear signs that have come to us, and to Him (Allâh) Who created us. So decree whatever you desire to decree, for you can only decree (regarding) this life of the world.

قَالُوا لَن نُّؤْثِرَكَ عَلَى مَا جَاءنَا مِنَ الْبَيِّنَاتِ وَالَّذِي فَطَرَنَا فَاقْضِ مَا أَنتَ قَاضٍ إِنَّمَا تَقْضِي هَذِهِ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا
Qaloo lan nu/thiraka AAala ma jaana mina albayyinati waallathee fatarana faiqdi ma anta qadin innama taqdee hathihi alhayata alddunya

YUSUFALI: They said: “Never shall we regard thee as more than the Clear Signs that have come to us, or than Him Who created us! so decree whatever thou desirest to decree: for thou canst only decree (touching) the life of this world.
PICKTHAL: They said: We choose thee not above the clear proofs that have come unto us, and above Him Who created us. So decree what thou wilt decree. Thou wilt end for us only this life of the world.
SHAKIR: They said: We do not prefer you to what has come to us of clear arguments and to He Who made us, therefore decide what you are going to decide; you can only decide about this world’s life.
KHALIFA: They said, “We will not prefer you over the clear proofs that came to us, and over the One who created us. Therefore, issue whatever judgment you wish to issue. You can only rule in this lowly life.

৭২। তারা বলেছিলো ,” আমাদের নিকট যে স্পষ্ট নিদর্শন ২৫৯৪ এসেছে তার উপর অথবা যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন তার উপর তোমাকে আমরা কিছুতেই প্রাধাণ্য দিব না। সুতারাং তুমি যা করতে চাও তা কর। তুমি তো কেবল এই পৃথিবীর জীবনের উপর কর্তৃত্ব করতে পার ২৫৯৫।

২৫৯৪। স্পষ্ট নিদর্শন ; অলৌকিক ঘটনা, আল্লাহ্‌র প্রেরিত দূতের ব্যক্তিত্ব, ঘটনার ধারাবাহিকতা যেভাবে তা সংঘটিত হয়েছে , তাদের বিবেকের দৃঢ় বিশ্বাস – এ সকলই হচ্ছে স্পষ্ট নিদর্শন। আল্লাহ্‌র নিদর্শনের আরও প্রমাণ আছে সূরার অন্যান্য জায়গায় যেমনঃ [ ২০ : ৫৩ – ৫৪ ]।

২৫৯৫। এ ভাবেই মুসার উপরে প্রদত্ত মিশরবাসীদের প্রতি দায়িত্বের প্রথম অংশ সম্পন্ন হয়। দেখুন আয়াত [ ৭ : ১২৬ ] ও টিকা ১০৮৩।

 

আমরা আমাদের পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি যাতে তিনি আমাদের পাপ এবং তুমি আমাদেরকে যে যাদু করতে বাধ্য করেছ, তা মার্জনা করেন। আল্লাহ শ্রেষ্ঠ ও চিরস্থায়ী।
”Verily! We have believed in our Lord, that He may forgive us our faults, and the magic to which you did compel us. And Allâh is better as regards reward in comparison to your [Fir’aun’s (Pharaoh)] reward, and more lasting (as regards punishment in comparison to your punishment).”

إِنَّا آمَنَّا بِرَبِّنَا لِيَغْفِرَ لَنَا خَطَايَانَا وَمَا أَكْرَهْتَنَا عَلَيْهِ مِنَ السِّحْرِ وَاللَّهُ خَيْرٌ وَأَبْقَى
Inna amanna birabbina liyaghfira lana khatayana wama akrahtana AAalayhi mina alssihri waAllahu khayrun waabqa

YUSUFALI: “For us, we have believed in our Lord: may He forgive us our faults, and the magic to which thou didst compel us: for Allah is Best and Most Abiding.”
PICKTHAL: Lo! we believe in our Lord, that He may forgive us our sins and the magic unto which thou didst force us. Allah is better and more lasting.
SHAKIR: Surely we believe in our Lord that He may forgive us our sins and the magic to which you compelled us; and Allah is better and more abiding.
KHALIFA: “We have believed in our Lord, that He may forgive us our sins, and the magic that you forced us to perform. GOD is far better and Everlasting.”

৭৩। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা আমাদের প্রভুর উপর ঈমান এনেছি। তিনি যেনো ক্ষমা করেন আমাদের দোষত্রুটি এবং জাদুবিদ্যা যা তুমি আমাদের করতে বাধ্য করেছ। নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ সর্বশ্রেষ্ঠ ও স্থায়ী ২৫৯৬।
২৫৯৬। মিশরবাসীদের ধর্মমতে এক প্রধান অংশ ছিলো যাদুকরদের প্রতারণার হাস্যকর অনুষ্ঠান , যা প্রতিটি মিশরবাসীকে মানতে বাধ্য করা হতো, এবং যা ধর্ম যাজকেরা অনুশীলন করতো। ফেরাউন ছিলো এ সবের প্রধান পুরোহিত বা তাদের প্রধান ও সর্বশক্তিমান ঈশ্বর। সত্যের আলো যাদুকরদের মাঝে বিবেক – বুদ্ধির উদয় করে। ফলে তারা আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান আনে এবং সদ্য পরিবর্তিত যাদুকরেরা সমস্ত দোষ ফেরাউনের প্রতি অর্পণ করে। এ ভাবেই ফেরাউন যে কুটিল অভিযোগ উত্থাপন করে বলেছিলো যে, যাদুকরেরা ফেরাউনের অনুসারী, সে অভিযোগ তারা খন্ডন করে।

উপদেশ : বিচিত্র পদ্ধতিতে আল্লাহ্‌র পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয় এবং তা হবেই।

নিশ্চয়ই যে তার পালনকর্তার কাছে অপরাধী হয়ে আসে, তার জন্য রয়েছে জাহান্নাম। সেখানে সে মরবে না এবং বাঁচবেও না।
Verily! Whoever comes to his Lord as a Mujrim (criminal, polytheist, disbeliever in the Oneness of Allâh and His Messengers, sinner, etc.), then surely, for him is Hell, therein he will neither die nor live.

إِنَّهُ مَن يَأْتِ رَبَّهُ مُجْرِمًا فَإِنَّ لَهُ جَهَنَّمَ لَا يَمُوتُ فِيهَا وَلَا يَحْيى
Innahu man ya/ti rabbahu mujriman fa-inna lahu jahannama la yamootu feeha wala yahya

YUSUFALI: Verily he who comes to his Lord as a sinner (at Judgment),- for him is Hell: therein shall he neither die nor live.
PICKTHAL: Lo! whoso cometh guilty unto his Lord, verily for him is hell. There he will neither die nor live.
SHAKIR: Whoever comes to his Lord (being) guilty, for him is surely hell; he shall not die therein, nor shall he live.
KHALIFA: Anyone who comes to his Lord guilty will incur Hell, wherein he never dies, nor stays alive.

৭৪। [ শেষ বিচারের দিনে ] যে তার প্রভুর নিকট পাপী হিসেবে আগমন করবে, তার জন্য আছে জাহান্নাম। সেখানে সে মরবেও না বাঁচবেও না ২৫৯৭।

২৫৯৭। আয়াত [ ২০ : ৭৪ – ৭৬ ] পর্যন্ত সেই সব মিশরবাসীদের জন্য প্রযোজ্য যারা মিথ্যাকে ত্যাগ করে সত্যকে গ্রহণ করেছিলো এবং নিজেকে পাপ থেকে রক্ষা করে পবিত্র হয়েছিলো তাদের জন্য মন্তব্য হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে। আবার অনেক অনুবাদকের মতে এই আয়াত কয়টি যাদুকরদের বক্তব্যের ধারাবাহিকতা।

আর যারা তাঁর কাছে আসে এমন ঈমানদার হয়ে যায় সৎকর্ম সম্পাদন করেছে, তাদের জন্যে রয়েছে সুউচ্চ মর্তবা।
But whoever comes to Him (Allâh) as a believer (in the Oneness of Allâh, etc.), and has done righteous good deeds, for such are the high ranks (in the Hereafter),

وَمَنْ يَأْتِهِ مُؤْمِنًا قَدْ عَمِلَ الصَّالِحَاتِ فَأُوْلَئِكَ لَهُمُ الدَّرَجَاتُ الْعُلَى
Waman ya/tihi mu/minan qad AAamila alssalihati faola-ika lahumu alddarajatu alAAula

YUSUFALI: But such as come to Him as Believers who have worked righteous deeds,- for them are ranks exalted,-
PICKTHAL: But whoso cometh unto Him a believer, having done good works, for such are the high stations;
SHAKIR: And whoever comes to Him a believer (and) he has done good deeds indeed, these it is who shall have the high ranks,
KHALIFA: As for those who come to Him as believers who had led a righteous life, they attain the high ranks.

৭৫। কিন্তু যে ঈমান ও সৎকাজ নিয়ে আসবে, তাদের জন্য আছে উচ্চ মর্যদা , –

৭৬। অনন্ত জান্নাত , যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। হ্যাঁ , সেখানে তারা বাস করবে। যারা নিজেদের পবিত্র রাখে [পাপ থেকে] ,তাদের পুরষ্কার হবে এরূপই ২৫৯৮।

২৫৯৮। মিশরের যাদুকরেরা যেরূপ সত্যকে গ্রহণ করে এবং আল্লাহ্‌র একত্বকে স্বীকার করে নিজেকে বেহেশতের যোগ্যরূপে গড়ে তোলে, সেরূপ সকল মোমেন বান্দাদের কথা বলা হয়েছে।

বসবাসের এমন পুষ্পোদ্যান রয়েছে যার তলদেশে দিয়ে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হয়। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে এটা তাদেরই পুরস্কার, যারা পবিত্র হয়।
’Adn (Edn) Paradise (everlasting Gardens), under which rivers flow, wherein they will abide forever: such is the reward of those who purify themselves [(by abstaining from all kinds of sins and evil deeds) which Allâh has forbidden and by doing all that which Allâh has ordained)].

جَنَّاتُ عَدْنٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَذَلِكَ جَزَاء مَن تَزَكَّى
Jannatu AAadnin tajree min tahtiha al-anharu khalideena feeha wathalika jazao man tazakka

YUSUFALI: Gardens of Eternity, beneath which flow rivers: they will dwell therein for aye: such is the reward of those who purify themselves (from evil).
PICKTHAL: Gardens of Eden underneath which rivers flow, wherein they will abide for ever. That is the reward of him who groweth.
SHAKIR: The gardens of perpetuity, beneath which rivers flow, to abide therein; and this is the reward of him who has purified himself.
KHALIFA: The gardens of Eden, beneath which rivers flow, will be their abode forever. Such is the reward for those who purify themselves.

৭৫। কিন্তু যে ঈমান ও সৎকাজ নিয়ে আসবে, তাদের জন্য আছে উচ্চ মর্যদা , –

৭৬। অনন্ত জান্নাত , যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। হ্যাঁ , সেখানে তারা বাস করবে। যারা নিজেদের পবিত্র রাখে [পাপ থেকে] ,তাদের পুরষ্কার হবে এরূপই ২৫৯৮।

২৫৯৮। মিশরের যাদুকরেরা যেরূপ সত্যকে গ্রহণ করে এবং আল্লাহ্‌র একত্বকে স্বীকার করে নিজেকে বেহেশতের যোগ্যরূপে গড়ে তোলে, সেরূপ সকল মোমেন বান্দাদের কথা বলা হয়েছে।

আমি মূসা প্রতি এই মর্মে ওহী করলাম যে, আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাত্রিযোগে বের হয়ে যাও এবং তাদের জন্যে সমুদ্রে শুষ্কপথ নির্মাণ কর। পেছন থেকে এসে তোমাদের ধরে ফেলার আশঙ্কা করো না এবং পানিতে ডুবে যাওয়ার ভয় করো না।
And indeed We inspired Mûsa (Moses) (saying): ”Travel by night with Ibâdi (My slaves) and strike a dry path for them in the sea, fearing neither to be overtaken [by Fir’aun (Pharaoh)] nor being afraid (of drowning in the sea).”

وَلَقَدْ أَوْحَيْنَا إِلَى مُوسَى أَنْ أَسْرِ بِعِبَادِي فَاضْرِبْ لَهُمْ طَرِيقًا فِي الْبَحْرِ يَبَسًا لَّا تَخَافُ دَرَكًا وَلَا تَخْشَى
Walaqad awhayna ila moosa an asri biAAibadee faidrib lahum tareeqan fee albahri yabasan la takhafu darakan wala takhsha

YUSUFALI: We sent an inspiration to Moses: “Travel by night with My servants, and strike a dry path for them through the sea, without fear of being overtaken (by Pharaoh) and without (any other) fear.”
PICKTHAL: And verily We inspired Moses, saying: Take away My slaves by night and strike for them a dry path in the sea, fearing not to be overtaken, neither being afraid (of the sea).
SHAKIR: And certainly We revealed to Musa, saying: Travel by night with My servants, then make for them a dry path in the sea, not fearing to be overtaken, nor being afraid.
KHALIFA: We inspired Moses: “Lead My servants out, and strike for them a dry road across the sea. You shall not fear that you may get caught, nor shall you worry.”

৭৭। আমি মুসাকে ওহী প্রেরণ করেছিলাম ২৫৯৯। ” আমার বান্দাদের নিয়ে রাতে বহির্গত হও, এবং সমুদ্রের মধ্য দিয়ে শুষ্ক পথ বের কর। ফেরাউন তোমাদের নাগাল পাবে এ আশংকা করো না এবং ভয় পেয়ো না। ”

২৫৯৯। মুসার মিশরে আগমনের পরে সময় অতিবাহিত হয়ে যায়। অবশেষে একদিন মুসার প্রতি আল্লাহ্‌র আদেশ প্রেরিত হয় রাত্রিযোগে সকল ইসরাঈলীদের নিয়ে মিশর ত্যাগ করার। তাদের লোহিত সাগর অতিক্রম করে সিনাই উপত্যকাতে যেতে বলা হয়। তাদের এই বলে আস্বস্ত করা হয় যে, তারা যেনো সাগর বা অচেনা মরুভূমির দেশ সিনাই দেখে ভয় না পায়। তারা সমুদ্রের মধ্যে তৈরী শুকনা পথ অতিক্রম করে চলে যায়, কিন্তু পশ্চাৎ ধাবনকারী ফেরাউন তার দলবলসহ সমুদ্রে নিমজ্জিত হয়ে যায়। এ ভাবেই ফেরাউন ও তার সকল লোকজন ধ্বংস হয়ে যায়। এই আয়াত পর্যন্ত মুসার কর্তব্য কর্মের সম্পাদনের জন্য কোনও বিশেষ কঠোর পরিশ্রমের উল্লেখ করা হয় নাই। কিন্তু ইসরাঈলীদের মিশরের দাসত্ব থেকে মুক্তি দান করার পরে কর্তব্য কর্ম সম্পাদনের জন্য মুসাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয় তাঁর নিজ লোকজনের মধ্যে।

অতঃপর ফেরাউন তার সৈন্যবাহিনী নিয়ে তাদের পশ্চাদ্ধাবন করল এবং সমুদ্র তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জত করল।
Then Fir’aun (Pharaoh) pursued them with his hosts, but the sea-water completely overwhelmed them and covered them up.

فَأَتْبَعَهُمْ فِرْعَوْنُ بِجُنُودِهِ فَغَشِيَهُم مِّنَ الْيَمِّ مَا غَشِيَهُمْ
FaatbaAAahum firAAawnu bijunoodihi faghashiyahum mina alyammi ma ghashiyahum

YUSUFALI: Then Pharaoh pursued them with his forces, but the waters completely overwhelmed them and covered them up.
PICKTHAL: Then Pharaoh followed them with his hosts and there covered them that which did cover them of the sea.
SHAKIR: And Firon followed them with his armies, so there came upon them of the sea that which came upon them.
KHALIFA: Pharaoh pursued them with his troops, but the sea overwhelmed them, as it was destined to overwhelm them.

৭৮। অতঃপর ফেরাউন তার সেনাবাহিনী নিয়ে তাদের অনুসরণ করলো, কিন্তু [ সমুদ্রের ] জলরাশি তাদের সম্পূর্ণ আচ্ছন্ন করে ঢেকে দিল।

৭৯। ফেরাউন তার সম্প্রদায়কে সঠিক পথের পরিবর্তে ভুল পথে পরিচালিত করেছিলো ২৬০০।

২৬০০। নেতা ও দেশের নৃপতির দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে সাধারণ জনসাধারণকে সঠিক পথে পরিচালিত করা। কিন্তু যে সব নেতা ও নৃপতি পাপী ও মন্দ , তারা জন সাধারণকে সঠিক পথের পরিবর্তে ভ্রান্ত পথে পরিচালিত করে। ফলে বিশাল জনগোষ্ঠির ধ্বংসের কারণ হয়।

ফেরআউন তার সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করেছিল এবং সৎপথ দেখায়নি।
And Fir’aun (Pharaoh) led his people astray, and he did not guide them.

وَأَضَلَّ فِرْعَوْنُ قَوْمَهُ وَمَا هَدَى
Waadalla firAAawnu qawmahu wama hada

YUSUFALI: Pharaoh led his people astray instead of leading them aright.
PICKTHAL: And Pharaoh led his folk astray, he did not guide them.
SHAKIR: And Firon led astray his people and he did not guide (them) aright.
KHALIFA: Thus, Pharaoh misled his people; he did not guide them.

৭৮। অতঃপর ফেরাউন তার সেনাবাহিনী নিয়ে তাদের অনুসরণ করলো, কিন্তু [ সমুদ্রের ] জলরাশি তাদের সম্পূর্ণ আচ্ছন্ন করে ঢেকে দিল।

৭৯। ফেরাউন তার সম্প্রদায়কে সঠিক পথের পরিবর্তে ভুল পথে পরিচালিত করেছিলো ২৬০০।

২৬০০। নেতা ও দেশের নৃপতির দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে সাধারণ জনসাধারণকে সঠিক পথে পরিচালিত করা। কিন্তু যে সব নেতা ও নৃপতি পাপী ও মন্দ , তারা জন সাধারণকে সঠিক পথের পরিবর্তে ভ্রান্ত পথে পরিচালিত করে। ফলে বিশাল জনগোষ্ঠির ধ্বংসের কারণ হয়।

হে বনী-ইসরাঈল! আমি তোমাদেরকে তোমাদের শক্রুর কবল থেকে উদ্ধার করেছি, তুর পাহাড়ের দক্ষিণ পার্শ্বে তোমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দান করেছি এবং তোমাদের কাছে ‘মান্না’ ও ‘সালওয়া’ নাযিল করেছি।
O Children of Israel! We delivered you from your enemy, and We made a covenant with you on the right side of the Mount, and We sent down to you Al-Manna and quails,

يَا بَنِي إِسْرَائِيلَ قَدْ أَنجَيْنَاكُم مِّنْ عَدُوِّكُمْ وَوَاعَدْنَاكُمْ جَانِبَ الطُّورِ الْأَيْمَنَ وَنَزَّلْنَا عَلَيْكُمُ الْمَنَّ وَالسَّلْوَى
Ya banee isra-eela qad anjaynakum min AAaduwwikum wawaAAadnakum janiba alttoori al-aymana wanazzalna AAalaykumu almanna waalssalwa

YUSUFALI: O ye Children of Israel! We delivered you from your enemy, and We made a Covenant with you on the right side of Mount (Sinai), and We sent down to you Manna and quails:
PICKTHAL: O Children of Israel! We delivered you from your enemy, and we made a covenant with you on the holy mountain’s side, and sent down on you the manna and the quails,
SHAKIR: O children of Israel! indeed We delivered you from your enemy, and We made a covenant with you on the blessed side of the mountain, and We sent to you the manna and the quails.
KHALIFA: O Children of Israel, we delivered you from your enemy, summoned you to the right side of Mount Sinai, and we sent down to you manna and quails.

৮০। হে বণী ইসরাঈলী! আমি তোমাদের শত্রুদের থেকে উদ্ধার করেছিলাম এবং আমি [ সিনাই ] পর্বতের দক্ষিণ পার্শ্বে তোমাদের সাথে অঙ্গীকার করেছিলাম ২৬০১। এবং তোমাদের নিকট মান্না ও কোয়েল প্রেরণ করেছিলাম।

২৬০১। দেখুন আয়াত [ ১৯ : ৫২ ] এবং টিকা ২৫০৪। সিনাই পর্বতের যে পার্শ্ব সৌদী আরবের দিকে অবস্থিত তা জাবাল মুসা নামে পরিচিত। এখানেই মুসা মিশর গমনের পূর্বে আল্লাহ্‌ কর্তৃক দায়িত্ব প্রাপ্ত হন এবং মিশর থেকে ইসরাঈলীদের বহিষ্কার করে নিয়ে আসার পরে তাওরাত গ্রন্থ লাভ করেন।

 

বলেছিঃ আমার দেয়া পবিত্র বস্তুসমূহ খাও এবং এতে সীমালংঘন করো না, তা হলে তোমাদের উপর আমার ক্রোধ নেমে আসবে এবং যার উপর আমার ক্রোধ নেমে আসে সে ধবংস হয়ে যায়।
(Saying) eat of the Taiyibât (good lawful things) wherewith We have provided you, and commit no oppression therein, lest My Anger should justly descend on you. And he on whom My Anger descends, he is indeed perished.

كُلُوا مِن طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ وَلَا تَطْغَوْا فِيهِ فَيَحِلَّ عَلَيْكُمْ غَضَبِي وَمَن يَحْلِلْ عَلَيْهِ غَضَبِي فَقَدْ هَوَى
Kuloo min tayyibati ma razaqnakum wala tatghaw feehi fayahilla AAalaykum ghadabee waman yahlil AAalayhi ghadabee faqad hawa

YUSUFALI: (Saying): “Eat of the good things We have provided for your sustenance, but commit no excess therein, lest My Wrath should justly descend on you: and those on whom descends My Wrath do perish indeed!
PICKTHAL: (Saying): Eat of the good things wherewith We have provided you, and transgress not in respect thereof lest My wrath come upon you: and he on whom My wrath cometh, he is lost indeed.
SHAKIR: Eat of the good things We have given you for sustenance, and be not inordinate with respect to them, lest My wrath should be due to you, and to whomsoever My wrath is due be shall perish indeed.
KHALIFA: Eat from the good things we provided for you, and do not transgress, lest you incur My wrath. Whoever incurs My wrath has fallen.

৮১। [ এই বলে ] : ” জীবনোপকরণ হিসেবে ভালো বস্তু যা কিছু দান করেছি তা থেকে আহার কর ২৬০২। এ ব্যাপারে সীমালংঘন করো না। করলে তোমাদের উপর আমার ক্রোধ অবধারিত ভাবে পতিত হবে। যার উপর আমার ক্রোধ পতিত হয়, তার ধবংস অনিবার্য ২৬০৩।

২৬০২। দেখুন আয়াত [ ২ : ৫৭ ] ও টিকা ৭১ এবং [ ৭ : ১৬০ ]। “ভাল বস্তু আহার কর” – এই লাইনটি আক্ষরিক অর্থে অনুধাবন করার কোনও কারণ নাই। কারণ পরবর্তী লাইনগুলি থেকে এ কথা সুস্পষ্ট যে, বাক্যটির অর্থ আক্ষরিক অপেক্ষা অধিক গভীর , আলংকারিক ও প্রতীক ধর্মী। আল্লাহ্‌ ইসরাঈলীদের সম্বোধন করে পূর্বের আয়াত বলেছেন, “তোমরা আল্লাহ্‌র কৃপায় রক্ষা পেয়েছ। তিনি তোমাদের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক হেদায়েত দান করেছেন। এর যে সুফল তা ভোগ কর, কিন্তু গর্বে ও অহংকারে সীমালংঘন করো না, সীমালংঘনকারীরা আল্লাহ্‌র ক্রোধের পাত্র। ভাল ভাল বস্তু আহার কর বাক্যটি এখানে রূপক অর্থে ব্যবহৃত।

২৬০৩। এই আয়াতটি থেকে এ কথাই প্রতীয়মান হয় যে, হযরত মুসাকে সর্বদা বিদ্রোহী ইসরাঈলীদের সাথে সংগ্রাম করতে হয়েছিলো। কারণ আল্লাহ্‌ তাদের সম্বন্ধে সাবধান বাণী উচ্চারণ করেছেন। পরবর্তী আয়াতে ইসরাঈলীদের স্বর্ণের বাছুর দ্বারা এ কথার সত্যতাই প্রমাণিত হয়।

আর যে তওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে অতঃপর সৎপথে অটল থাকে, আমি তার প্রতি অবশ্যই ক্ষমাশীল।
And verily, I am indeed Forgiving to him who repents, believes (in My Oneness, and associates none in worship with Me) and does righteous good deeds, and then remains constant in doing them, (till his death).

وَإِنِّي لَغَفَّارٌ لِّمَن تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا ثُمَّ اهْتَدَى
Wa-innee laghaffarun liman taba waamana waAAamila salihan thumma ihtada

YUSUFALI: “But, without doubt, I am (also) He that forgives again and again, to those who repent, believe, and do right, who,- in fine, are ready to receive true guidance.”
PICKTHAL: And lo! verily I am Forgiving toward him who repenteth and believeth and doeth good, and afterward walketh aright.
SHAKIR: And most surely I am most Forgiving to him who repents and believes and does good, then continues to follow the right direction.
KHALIFA: I am surely Forgiving for those who repent, believe, lead a righteous life, and steadfastly remain guided.

৮২। কিন্তু , নিঃসন্দেহে , আমি বারে বারে ক্ষমাশীল তাদের প্রতি, যারা অনুতপ্ত হয়, ঈমান আনে এবং সৎকাজ করে, এবং পরিশেষে ,সৎপথ পাওয়ার উপযোগী হয়। ”

৮৩। [ যখন মুসা পর্বতে আরোহণ করেছিলেন ২৬০৪ আল্লাহ্‌ বলেছিলেন! ] ” হে মুসা ! তোমার সম্প্রদায়কে পশ্চাতে ফেলে তোমাকে ত্বরা করতে বাধ্য করলো কি সে ?”

২৬০৪। দেখুন আয়াত [ ২ : ৫১ ] এবং টিকা ৬৬। হযরত মুসার তাওরাত আনতে তূর পাহাড়ে যাওয়ার সময়ে তাঁর পশ্চাতে ইসরাঈলী সম্প্রদায়কে হারুনের তত্বাবধানে রেখে আসেন। [ Exod xxiv. 14 ]। এ কথারই উল্লেখ এখানে করা হয়েছে। মুসা যখন আল্লাহ্‌ কর্তৃক সর্বোচ্চ সম্মানে ভূষিত হচ্ছিলেন, তূর পাহাড়ে , তখন তার অনুসারীরা নীচে নাটকের অন্য দৃশ্যের অভিনয় করছে। আল্লাহ্‌ তাদের ঈমানের পরীক্ষা করেছিলেন কিন্তু তারা সে পরীক্ষাতে কৃতকার্য হতে পারে নাই, নীচের আয়াতে দেখুন তারা স্বর্ণের বাছুর তৈরী করে পূঁজা আরম্ভ করে। আরও দেখুন আয়াত [ ৭ : ১৪৮ – ১৫০ ] এবং এর টিকা।

 

হে মূসা, তোমার সম্প্রদায়কে পেছনে ফেলে তুমি ত্বরা করলে কেন?
”And what made you hasten from your people, O Mûsa (Moses)?”

وَمَا أَعْجَلَكَ عَن قَوْمِكَ يَا مُوسَى
Wama aAAjalaka AAan qawmika ya moosa

YUSUFALI: (When Moses was up on the Mount, Allah said:) “What made thee hasten in advance of thy people, O Moses?”
PICKTHAL: And (it was said): What hath made thee hasten from thy folk, O Moses?
SHAKIR: And what caused you to hasten from your people, O Musa?
KHALIFA: “Why did you rush away from your people, O Moses?”

৮২। কিন্তু , নিঃসন্দেহে , আমি বারে বারে ক্ষমাশীল তাদের প্রতি, যারা অনুতপ্ত হয়, ঈমান আনে এবং সৎকাজ করে, এবং পরিশেষে ,সৎপথ পাওয়ার উপযোগী হয়। ”

৮৩। [ যখন মুসা পর্বতে আরোহণ করেছিলেন ২৬০৪ আল্লাহ্‌ বলেছিলেন! ] ” হে মুসা ! তোমার সম্প্রদায়কে পশ্চাতে ফেলে তোমাকে ত্বরা করতে বাধ্য করলো কি সে ?”

২৬০৪। দেখুন আয়াত [ ২ : ৫১ ] এবং টিকা ৬৬। হযরত মুসার তাওরাত আনতে তূর পাহাড়ে যাওয়ার সময়ে তাঁর পশ্চাতে ইসরাঈলী সম্প্রদায়কে হারুনের তত্বাবধানে রেখে আসেন। [ Exod xxiv. 14 ]। এ কথারই উল্লেখ এখানে করা হয়েছে। মুসা যখন আল্লাহ্‌ কর্তৃক সর্বোচ্চ সম্মানে ভূষিত হচ্ছিলেন, তূর পাহাড়ে , তখন তার অনুসারীরা নীচে নাটকের অন্য দৃশ্যের অভিনয় করছে। আল্লাহ্‌ তাদের ঈমানের পরীক্ষা করেছিলেন কিন্তু তারা সে পরীক্ষাতে কৃতকার্য হতে পারে নাই, নীচের আয়াতে দেখুন তারা স্বর্ণের বাছুর তৈরী করে পূঁজা আরম্ভ করে। আরও দেখুন আয়াত [ ৭ : ১৪৮ – ১৫০ ] এবং এর টিকা।

তিনি বললেনঃ এই তো তারা আমার পেছনে আসছে এবং হে আমার পালনকর্তা, আমি তাড়াতাড়ি তোমার কাছে এলাম, যাতে তুমি সন্তুষ্ট হও।
He said: ”They are close on my footsteps, and I hastened to You, O my Lord, that You might be pleased.”

قَالَ هُمْ أُولَاء عَلَى أَثَرِي وَعَجِلْتُ إِلَيْكَ رَبِّ لِتَرْضَى
Qala hum ola-i AAala atharee waAAajiltu ilayka rabbi litarda

YUSUFALI: He replied: “Behold, they are close on my footsteps: I hastened to thee, O my Lord, to please thee.”
PICKTHAL: He said: They are close upon my track. I hastened unto Thee, my Lord, that Thou mightest be well pleased.
SHAKIR: He said: They are here on my track and I hastened on to Thee, my Lord, that Thou mightest be pleased.
KHALIFA: He said, “They are close behind me. I have rushed to You my Lord, that You may be pleased.”

৮৪। সে উত্তর করেছিলো, ” দেখুন , ওরা তো আমার পিছনেই। হে আমার প্রভু ! তুমি সন্তুষ্ট হবে এ জন্য তাড়াতাড়ি আসলাম।”

৮৫। [আল্লাহ্‌ ] বলেছিলেন, ” তোমার অনুপস্থিতিতে তোমার সম্প্রদায়কে পরীক্ষা করেছি। সামিরী তো ওদের পথভ্রষ্ট করেছে।” ২৬০৫

২৬০৫। এই সামিরী কে ছিলো ? যদি এই নামটি ব্যক্তিগত হয় , তবে তা মূল শব্দের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। “সামিরীর” মূল শব্দটি কি ছিলো ? মিশরের ইতিহাস বলে যে, সেমের [ Shemer ] নামে এক আগন্তুক ছিলো, [ Sir E. A Wallis Budges Egyptian Hieroglyghtic Dictionary 1920, P. 815b ]। ইসরাঈলীরা যখন মিশর ত্যাগ করে সে তখন তাদের সাথে ছিলো সম্ভবতঃ সে একজন ইহুদীই ছিলো যার ডাক নাম ছিলো সামিরী। পরবর্তীতে তাওরাতে [ Shemer ] নামটির উল্লেখ খুব অপরিচিত ছিলো না। তাওরাতে [ I King xvi . 21 ] উল্লেখ আছে যে ইসরাঈলীদের রাজা Omri যিনি ৯০৩ – ৮৯৬ খৃষ্টপূর্বে রাজত্ব করেন। তিনি পাহাড়ের চূড়াতে Samaria নামে এক শহরের স্থাপন করেন, যে স্থানটি তিনি Shemer নামে এক ব্যক্তির নিকট থেকে ক্রয় করেন। দেখুন [ Renan এর রচিত History of Isrel , ii 210 ]।

বললেনঃ আমি তোমার সম্প্রদায়কে পরীক্ষা করেছি তোমার পর এবং সামেরী তাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে।
(Allâh) said: ”Verily! We have tried your people in your absence, and As-Samiri has led them astray.”

قَالَ فَإِنَّا قَدْ فَتَنَّا قَوْمَكَ مِن بَعْدِكَ وَأَضَلَّهُمُ السَّامِرِيُّ
Qala fa-inna qad fatanna qawmaka min baAAdika waadallahumu alssamiriyyu

YUSUFALI: (Allah) said: “We have tested thy people in thy absence: the Samiri has led them astray.”
PICKTHAL: He said: Lo! We have tried thy folk in thine absence, and As-Samiri hath misled them.
SHAKIR: He said: So surely We have tried your people after you, and the Samiri has led them astray.
KHALIFA: He said, “We have put your people to the test after you left, but the Samarian misled them.”

৮৪। সে উত্তর করেছিলো, ” দেখুন , ওরা তো আমার পিছনেই। হে আমার প্রভু ! তুমি সন্তুষ্ট হবে এ জন্য তাড়াতাড়ি আসলাম।”

৮৫। [আল্লাহ্‌ ] বলেছিলেন, ” তোমার অনুপস্থিতিতে তোমার সম্প্রদায়কে পরীক্ষা করেছি। সামিরী তো ওদের পথভ্রষ্ট করেছে।” ২৬০৫

২৬০৫। এই সামিরী কে ছিলো ? যদি এই নামটি ব্যক্তিগত হয় , তবে তা মূল শব্দের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। “সামিরীর” মূল শব্দটি কি ছিলো ? মিশরের ইতিহাস বলে যে, সেমের [ Shemer ] নামে এক আগন্তুক ছিলো, [ Sir E. A Wallis Budges Egyptian Hieroglyghtic Dictionary 1920, P. 815b ]। ইসরাঈলীরা যখন মিশর ত্যাগ করে সে তখন তাদের সাথে ছিলো সম্ভবতঃ সে একজন ইহুদীই ছিলো যার ডাক নাম ছিলো সামিরী। পরবর্তীতে তাওরাতে [ Shemer ] নামটির উল্লেখ খুব অপরিচিত ছিলো না। তাওরাতে [ I King xvi . 21 ] উল্লেখ আছে যে ইসরাঈলীদের রাজা Omri যিনি ৯০৩ – ৮৯৬ খৃষ্টপূর্বে রাজত্ব করেন। তিনি পাহাড়ের চূড়াতে Samaria নামে এক শহরের স্থাপন করেন, যে স্থানটি তিনি Shemer নামে এক ব্যক্তির নিকট থেকে ক্রয় করেন। দেখুন [ Renan এর রচিত History of Isrel , ii 210 ]।

অতঃপর মূসা তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে ফিরে গেলেন ক্রদ্ধ ও অনুতপ্ত অবস্থায়। তিনি বললেনঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমাদের পালনকর্তা কি তোমাদেরকে একটি উত্তম প্রতিশ্রুতি দেননি? তবে কি প্রতিশ্রুতির সময়কাল তোমাদের কাছে দীর্ঘ হয়েছে, না তোমরা চেয়েছ যে, তোমাদের উপর তোমাদের পালনকর্তার ক্রোধ নেমে আসুক, যে কারণে তোমরা আমার সাথে কৃত ওয়াদা ভঙ্গ করলে?
Then Mûsa (Moses) returned to his people in a state of anger and sorrow. He said: ”O my people! Did not your Lord promise you a fair promise? Did then the promise seem to you long in coming? Or did you desire that wrath should descend from your Lord on you, so you broke your promise to me (i.e disbelieving in Allâh and worshipping the calf)?”

فَرَجَعَ مُوسَى إِلَى قَوْمِهِ غَضْبَانَ أَسِفًا قَالَ يَا قَوْمِ أَلَمْ يَعِدْكُمْ رَبُّكُمْ وَعْدًا حَسَنًا أَفَطَالَ عَلَيْكُمُ الْعَهْدُ أَمْ أَرَدتُّمْ أَن يَحِلَّ عَلَيْكُمْ غَضَبٌ مِّن رَّبِّكُمْ فَأَخْلَفْتُم مَّوْعِدِي
FarajaAAa moosa ila qawmihi ghadbana asifan qala ya qawmi alam yaAAidkum rabbukum waAAdan hasanan afatala AAalaykumu alAAahdu am aradtum an yahilla AAalaykum ghadabun min rabbikum faakhlaftum mawAAidee

YUSUFALI: So Moses returned to his people in a state of indignation and sorrow. He said: “O my people! did not your Lord make a handsome promise to you? Did then the promise seem to you long (in coming)? Or did ye desire that Wrath should descend from your Lord on you, and so ye broke your promise to me?”
PICKTHAL: Then Moses went back unto his folk, angry and sad. He said: O my people! Hath not your Lord promised you a fair promise? Did the time appointed then appear too long for you, or did ye wish that wrath from your Lord should come upon you, that ye broke tryst with me?
SHAKIR: So Musa returned to his people wrathful, sorrowing. Said he: O my people! did not your Lord promise you a goodly promise: did then the time seem long to you, or did you wish that displeasure from your Lord should be due to you, so that you broke (your) promise to me?
KHALIFA: Moses returned to his people, angry and disappointed, saying, “O my people, did your Lord not promise you a good promise? Could you not wait? Did you want to incur wrath from your Lord? Is this why you broke your agreement with me?”

৮৬। সুতারাং মুসা ক্রুদ্ধ ও ক্ষুব্ধ অবস্থায় তাঁর সম্প্রদায়ের নিকট প্রত্যাবর্তন করলো। সে বলেছিলো , ” হে আমার সম্প্রদায় ! তোমাদের প্রভু কি তোমাদের এক উত্তম প্রতিশ্রুতি দেন নাই ২৬০৬? তবে কি প্রতিশ্রুতি কাল তোমাদের কাছে সুদীর্ঘ মনে হয়েছে ? না কি তোমরা তোমাদের প্রভুর ক্রোধ আপাতিত হোক তাই চেয়েছ ? এবং সে জন্য তোমরা তোমাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছ ?”

২৬০৬। এই আয়াতে দুইটি প্রতিশ্রুতি উল্লেখ আছে। একটি প্রতিশ্রুতি হচ্ছে , আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি। অন্যটি ইসরাঈলীদের প্রতিশ্রুতি। আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতির উল্লেখ আছে আয়াতে [ ২০ : ৮০ ] এবং ইসরাঈলীদের প্রতিশ্রুতির উল্লেখ আছে [ ২ : ৬৩ ] আয়াতে এবং ব্যাখ্যা আছে টিকা নং ৭৮। আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি ছিলো ইসরাঈলীদের রক্ষা করা এবং প্রতিশ্রুত দেশে পৌঁছানো এবং ইসরাঈলীদের প্রতিশ্রুতি ছিলো আল্লাহ্‌র আইন বা প্রত্যাদেশকে মেনে চলার।

তারা বললঃ আমরা তোমার সাথে কৃত ওয়াদা স্বেচ্ছায় ভঙ্গ করিনি; কিন্তু আমাদের উপর ফেরউনীদের অলংকারের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। অতঃপর আমরা তা নিক্ষেপ করে দিয়েছি। এমনি ভাবে সামেরীও নিক্ষেপ করেছে।
They said: ”We broke not the promise to you, of our own will, but we were made to carry the weight of the ornaments of the [Fir’aun’s (Pharaoh)] people, then we cast them (into the fire), and that was what As-Samiri suggested.”

قَالُوا مَا أَخْلَفْنَا مَوْعِدَكَ بِمَلْكِنَا وَلَكِنَّا حُمِّلْنَا أَوْزَارًا مِّن زِينَةِ الْقَوْمِ فَقَذَفْنَاهَا فَكَذَلِكَ أَلْقَى السَّامِرِيُّ
Qaloo ma akhlafna mawAAidaka bimalkina walakinna hummilna awzaran min zeenati alqawmi faqathafnaha fakathalika alqa alssamiriyyu

YUSUFALI: They said: “We broke not the promise to thee, as far as lay in our power: but we were made to carry the weight of the ornaments of the (whole) people, and we threw them (into the fire), and that was what the Samiri suggested.
PICKTHAL: They said: We broke not tryst with thee of our own will, but we were laden with burdens of ornaments of the folk, then cast them (in the fire), for thus As-Samiri proposed.
SHAKIR: They said: We did not break (our) promise to you of our own accord, but we were made to bear the burdens of the ornaments of the people, then we made a casting of them, and thus did the Samiri suggest.
KHALIFA: They said, “We did not break our agreement with you on purpose. But we were loaded down with jewelry, and decided to throw our loads in. This is what the Samarian suggested.”

৮৭। তারা বলেছিলো, ” আমরা তোমার প্রতি প্রদত্ত অংগীকার স্বেচ্ছায় ভংগ করি নাই। যেহেতু [ সমস্ত ] সম্প্রদায়ের অলংকারের বোঝা বহনের দায়িত্ব আমাদের চাপিয়ে দেয়া হয়েছিলো ২৬০৭। আমরা তা [ অগ্নিকুন্ডে ] নিক্ষেপ করি। এটাই ছিলো সামিরীর প্রস্তাব ২৬০৮।

২৬০৭। দেখুন [ Exod . xii 35 – 36 ] বণী ইসরাঈলীরা ঈদের বাহানায় মিশরবাসীদের কাছ থেকে অলংকার ধার করেছিলো এবং সেগুলো তাদের সাথে ছিলো। তাওরাতের বর্ণনা অনুযায়ী “Jewels of silver and jewels of gold and raiment and they spoiled the Egyptian” অলংকারগুলো তাদের ফেরত দেয়া কর্তব্য ছিলো। কিন্তু তা না দিয়ে তারা অন্যভাবে তা চিত্রিত করার প্রয়াস পায়। সত্য পথ পরিত্যাগকারী ও কুটিল ইহুদীদের বক্তব্য এখানে অনুধাবনযোগ্য ১) সামিরী তাদের সোনার গোবৎস তৈরীর জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিলো সত্য, কিন্তু, তাই বলে তাদের নিজস্ব দায় দায়িত্ব তা থেকে কমে যায় না। প্রত্যেকের কৃত পাপের বোঝা স্ব স্ব ব্যক্তিকে বহন করতে হবে। কৃত পাপকে পরিহার করার ক্ষমতা তার ছিলো না , এ কথা অজুহাত ব্যতীত আর কিছু নয়। সে যতই ভান করুক যে পাপকে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তার ছিলো না, কিন্তু তা সত্য নয়। ২) যদি সমস্ত স্বর্ণালঙ্কার একজন বা দুজন বহন করে তবে তা ভারী হবে সত্য, কিন্তু তা যদি সমগ্র ইসরাঈলীদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়, তবে তার ওজন হবে খুবই নগণ্য। সুতারাং অলংকারের ভারের কথা বলা অজুহাত বই আর কিছু নয়। ৩) সোনা মূল্যবান বস্তু। যদি সত্যিই তারা এই মূল্যবান বস্তুর ভার বহনে অপারগ হয়, তবে তার জন্য সোনাকে আগুনে ফেলার প্রয়োজন হয় না , কারণ আগুন সোনাকে ধ্বংস করে না। শুধুমাত্র গলিয়ে ফেলতে পারে। সুতারাং সোনার বোঝাকে হালকা করার কথা ছিলো শুধুমাত্র একটা অজুহাত।

উপদেশ : দুষ্ট লোকেরা সর্বদা অজুহাত প্রদর্শনে অত্যন্ত দক্ষ।

২৬০৮। সামিরীর সম্বন্ধে বর্ণনা করা হয়েছে টিকা ২৬০৫ এ। যদি মূল শব্দটিকে মিশরীয় না ধরে হিব্রু ধরা হয় তবে “Shemer ” শব্দটির অর্থ হবে পাহারাদার, রাত্রিকালীন প্রহরী, রক্ষী। সম্ভবতঃ সেই ব্যক্তি ছিলো প্রহরী বা তার নাম হতে পারে সামিরী।

অতঃপর সে তাদের জন্য তৈরী করে বের করল একটি গো-বৎস, একটা দেহ, যার মধ্যে গরুর শব্দ ছিল। তারা বললঃ এটা তোমাদের উপাস্য এবং মূসার ও উপাস্য, অতঃপর মূসা ভুলে গেছে।
Then he took out (of the fire) for them a statue of a calf which seemed to low. They said: ”This is your ilâh (god), and the ilâh (god) of Mûsa (Moses), but [Mûsa (Moses)] has forgotten (his god).’”

فَأَخْرَجَ لَهُمْ عِجْلًا جَسَدًا لَهُ خُوَارٌ فَقَالُوا هَذَا إِلَهُكُمْ وَإِلَهُ مُوسَى فَنَسِيَ
Faakhraja lahum AAijlan jasadan lahu khuwarun faqaloo hatha ilahukum wa-ilahu moosa fanasiya

YUSUFALI: “Then he brought out (of the fire) before the (people) the image of a calf: It seemed to low: so they said: This is your god, and the god of Moses, but (Moses) has forgotten!”
PICKTHAL: Then he produced for them a calf, of saffron hue, which gave forth a lowing sound. And they cried: This is your god and the god of Moses, but he hath forgotten.
SHAKIR: So he brought forth for them a calf, a (mere) body, which had a mooing sound, so they said: This is your god and the god of Musa, but he forgot.
KHALIFA: He produced for them a sculpted calf, complete with a calf’s sound. They said, “This is your god, and the god of Moses.” Thus, he forgot.

৮৮। অতঃপর সে লোকজনের সম্মুখে [ অগ্নিকুন্ড থেকে ] একটি বাছুর গরুর অবয়ব বের করলো, ২৬০৯। মনে হলো এটা হাম্বা রব করে ২৬১০। সুতারাং তারা বললো,” এটা তোমাদের উপাস্য এবং মুসারও উপাস্য , কিন্তু মুসা [ তা ] ভুলে গেছে ২৬১১। ”

২৬০৯। দেখুন আয়াত [ ৭ : ১৪৮ ] ও টিকা ১১১৩।

২৬১০। দেখুন আয়াত [ ৭ : ১৪৮ ] ও টিকা ১১১৪।

২৬১১। ” কিন্তু মুসা তা ভুলে গেছে।” – অর্থাৎ মুসা ইসরাঈলীদের কথা এবং তাঁর উপাস্য গোবৎসের কথা ভুলে গেছে। কারণ মুসা বহুদিন হলো ইসরাঈলীদের ত্যাগ করে তূর পর্বতে গেছেন। সেখানে মুসা মিথ্যাই ঘুরে বেড়াচ্ছেন উপাস্যের সন্ধানে। তার সত্যিকারের উপাস্য আছে এখানে সোনার তৈরী গোবৎস। এরূপই একটি ভাষণ দিয়েছিলো সামিরী ও তার অনুসারীরা। কিন্তু তাদের এই প্ররোচনাকে কেউ-ই বাধা দেয় নাই। ইসরাঈলীরা সামগ্রিকভাবে সামিরীর এই বক্তব্যকে গ্রহণ করে। সুতারাং সে হিসেবে বলা চলে যে বক্তব্যটি সমগ্র ইসরাঈলীদের ছিলো।

তারা কি দেখে না যে, এটা তাদের কোন কথার উত্তর দেয় না এবং তারে কোন ক্ষতি ও উপকার করার ক্ষমতাও রাখে না?
Did they not see that it could not return them a word (for answer), and that it had no power either to harm them or to do them good?

أَفَلَا يَرَوْنَ أَلَّا يَرْجِعُ إِلَيْهِمْ قَوْلًا وَلَا يَمْلِكُ لَهُمْ ضَرًّا وَلَا نَفْعًا
Afala yarawna alla yarjiAAu ilayhim qawlan wala yamliku lahum darran wala nafAAan

YUSUFALI: Could they not see that it could not return them a word (for answer), and that it had no power either to harm them or to do them good?
PICKTHAL: See they not, then, that it returneth no saying unto them and possesseth for them neither hurt nor use?
SHAKIR: What! could they not see that it did not return to them a reply, and (that) it did not control any harm or benefit for them?
KHALIFA: Could they not see that it neither responded to them, nor possessed any power to harm them, or benefit them?

৮৯। তারা কি দেখতে পায় না যে, এটা তাদের একটি কথারও [ উত্তর ] ফেরত দিতে পারে না। এবং ইহা তাদের কোন ক্ষতি অথবা কোন উপকার করার ক্ষমতা রাখে না ? ২৬১২।

২৬১২। সমস্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে এই আয়াতে মন্তব্য করা হয়েছে। ইসরাঈলীরা সর্বশক্তিমান অল্লাহ্‌র বিভিন্ন ক্ষমতার সাক্ষী, তবুও তারা সেই সর্বশক্তিমানের এবাদত ত্যাগ করে মূর্তি পূঁজাতে অধিক আগ্রহী। আল্লাহ্‌ তাদের নির্দ্দিষ্ট আদেশ দান করেছেন। ইহুদীরা সেই আদেশকে অমান্য করে গোবৎসের হাম্বা রবের প্রতি অধিক মনোযোগী হয়। এ কথা তাদের চিন্তায় আসে নাই যে গোবৎসের হাম্বা রব হয়তো পূঁজারীর প্রতারণা – যা অহরহই ঘটে থাকে। গো বৎসের এই মূর্তি ভালো বা মন্দ করার কোনও ক্ষমতাই রাখে না। আল্লাহ্‌ হচ্ছেন সমস্ত বিশ্বভূবনের পালনকর্তা , রক্ষাকর্তা। যার দয়া ও করুণা অপরসীম, যার ক্রোধ ভয়াবহ।

হারুন তাদেরকে পুর্বেই বলেছিলেনঃ হে আমার কওম, তোমরা তো এই গো-বৎস দ্বারা পরীক্ষায় নিপতিত হয়েছ এবং তোমাদের পালনকর্তা দয়াময়। অতএব, তোমরা আমার অনুসরণ কর এবং আমার আদেশ মেনে চল।
And Hârûn (Aaron) indeed had said to them beforehand: ”O my people! You are being tried in this, and verily, your Lord is (Allâh) the Most Beneficent, so follow me and obey my order.”

وَلَقَدْ قَالَ لَهُمْ هَارُونُ مِن قَبْلُ يَا قَوْمِ إِنَّمَا فُتِنتُم بِهِ وَإِنَّ رَبَّكُمُ الرَّحْمَنُ فَاتَّبِعُونِي وَأَطِيعُوا أَمْرِي
Walaqad qala lahum haroonu min qablu ya qawmi innama futintum bihi wa-inna rabbakumu alrrahmanu faittabiAAoonee waateeAAoo amree

YUSUFALI: Aaron had already, before this said to them: “O my people! ye are being tested in this: for verily your Lord is (Allah) Most Gracious; so follow me and obey my command.”
PICKTHAL: And Aaron indeed had told them beforehand: O my people! Ye are but being seduced therewith, for lo! your Lord is the Beneficent, so follow me and obey my order.
SHAKIR: And certainly Haroun had said to them before: O my people! you are only tried by it, and surely your Lord is the Beneficent Allah, therefore follow me and obey my order.
KHALIFA: And Aaron had told them, “O my people, this is a test for you. Your only Lord is the Most Gracious, so follow me, and obey my commands.”

রুকু – ৫

৯০। এর পূর্বেই হারুন ইতিমধ্যেই তাদের বলেছিলো, ” হে আমার সম্প্রদায় ! এর দ্বারা তো তোমাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে ২৬১৩। নিশ্চয়ই তোমার প্রভু [আল্লাহ্‌ ] পরম করুণাময়। সুতারাং আমার অনুসরণ কর এবং আমার আদেশ মেনে চল ২৬১৪। ”

২৬১৩। দীর্ঘদিন মিশরে থাকার ফলে ইসরাঈলীরা মিশরের ভাবধারাতে প্রভাবিত ছিলো। আল্লাহ্‌র প্রচন্ড ক্ষমতা দর্শনের পরেও তারা সে প্রভাব মুক্ত হতে পারে নাই। তাদের আল্লাহ্‌ সামিরীর দ্বারা মিশরের মূর্তি পূঁজার দিকে প্রলোভিত করেন। তারা যেনো সামিরীর প্রভাব মুক্ত হয়ে শুধু মাত্র এক আল্লাহ্‌র উপাসনা করে। এ ছিলো আল্লাহ্‌র তরফ থেকে এক পরীক্ষা।

২৬১৪। বাইবেলে হারুনকে প্রধান অপরাধী হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে যাকে আল্লাহ্‌ কর্তৃক মনোনীত মুসার সাহায্যকারী রূপে কোরাণে বর্ণিত। হারুনের দায়িত্বের বিপরীত ভাবধারাকে প্রকাশ করে [ দেখুন ৭ : ১৫০ ও টিকা ১১১৬ ]। অপর পক্ষে কোরাণের বক্তব্য সামঞ্জস্যপূর্ণ। কারণ হারুনকে হযরত মুসার সাহায্যকারী রূপে আল্লাহ্‌ মনোনীত করেছেন।। তাঁর পক্ষে সামিরীর তৈরী গোবৎসের পূঁজাতে অংশগ্রহণ সম্ভব নয়। মিশরবাসীর ষাড় দেবতা Osiris এর অনুকরণে সামিরী সোনার গোবৎসকে তৈরী করে যেনো ইসরাঈলীরা মিশরবাসীদের প্রভাবমুক্ত হতে না পারে।

সূরা ত্বোয়া-হা

তারা বললঃ মূসা আমাদের কাছে ফিরে আসা পর্যন্ত আমরা সদাসর্বদা এর সাথেই সংযুক্ত হয়ে বসে থাকব।
They said: ”We will not stop worshipping it (i.e. the calf), until Mûsa (Moses) returns to us.”

قَالُوا لَن نَّبْرَحَ عَلَيْهِ عَاكِفِينَ حَتَّى يَرْجِعَ إِلَيْنَا مُوسَى
Qaloo lan nabraha AAalayhi AAakifeena hatta yarjiAAa ilayna moosa

YUSUFALI: They had said: “We will not abandon this cult, but we will devote ourselves to it until Moses returns to us.”
PICKTHAL: They said: We shall by no means cease to be its votaries till Moses return unto us.
SHAKIR: They said: We will by no means cease to keep to its worship until Musa returns to us.
KHALIFA: They said, “We will continue to worship it, until Moses comes back.”

৯১। তারা বলেছিলো, ২৬১৫, ” আমরা এই ধর্মীয় পদ্ধতি কিছুতেই পরিত্যাগ করবো না ,বরং মুসা ফিরে না আসা পর্যন্ত আমরা এতে আত্মসমর্পন করবো ২৬১৬। ”

২৬১৫। আয়াত [ ২০ : ৯০ ] ছিলো হারুনের আবেদন ইসরাঈলীদের প্রতি এবং [ ২০ : ৯১ ] আয়াত ছিলো ইসরাঈলীদের বিরোধিতাপূর্ণ প্রতিউত্তর। অবশ্য এ দুটো আয়াতের বক্তব্য ছিলো মুসার তূর পর্বত থেকে তাওরাত সহযোগে ফিরে আসার পূর্বে।

২৬১৬। বিদ্রোহী ইসরাঈলীদের বিশ্বাসের ভিত্তি এত ভঙ্গুর ছিলো যে, তাদের ধারণা হয়েছিলো যে, হযরত মুসা আর ফিরে আসবে না।

মূসা বললেনঃ হে হারুন, তুমি যখন তাদেরকে পথ ভ্রষ্ট হতে দেখলে, তখন তোমাকে কিসে নিবৃত্ত করল ?
[Mûsa (Moses)] said: ”O Hârûn (Aaron)! What stopped you when you saw them going astray;

قَالَ يَا هَارُونُ مَا مَنَعَكَ إِذْ رَأَيْتَهُمْ ضَلُّوا
Qala ya haroonu ma manaAAaka ith raaytahum dalloo

YUSUFALI: (Moses) said: “O Aaron! what kept thee back, when thou sawest them going wrong,
PICKTHAL: He (Moses) said: O Aaron! What held thee back when thou didst see them gone astray,
SHAKIR: (Musa) said: O Haroun! what prevented you, when you saw them going astray,
KHALIFA: (Moses) said, “O Aaron, what is it that prevented you, when you saw them go astray,

৯২। মুসা বলেছিলো, ” হে হারুন ! তুমি যখন দেখলে যে তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে ,তখন কি সে তোমাকে নিবৃত্ত করলো ,

৯৩। “আমার অনুসরণ করা থেকে ? তবে কি তুমি আমার আদেশ অমান্য করলে ? “২৬১৭

২৬১৭। হযরত মুসা ফিরে এসে ইসরাঈলীদের অবস্থা দর্শনে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে গেলেন। তাঁর অন্তর দুঃখে পরিপূর্ণ হয়ে গেলো। তিনি তাঁর ভাই হারুনকে র্ভৎসনা এবং দুর্ব্যবহার করেছিলেন , যার বর্ণনা পাওয়া যায় পরবর্তী আয়াতে। তূর পর্বতের গমনের পূর্বে হারুনকে দেয়া নির্দেশ সমূহ আছে আয়াত [ ৭ : ১৪২ ] ;

আমার পদাঙ্ক অনুসরণ করা থেকে? তবে তুমি কি আমার আদেশ অমান্য করেছ?
”That you followed me not (according to my advice to you)? Have you then disobeyed my order?”

أَلَّا تَتَّبِعَنِ أَفَعَصَيْتَ أَمْرِي
Alla tattabiAAani afaAAasayta amree

YUSUFALI: “From following me? Didst thou then disobey my order?”
PICKTHAL: That thou followedst me not? Hast thou then disobeyed my order?
SHAKIR: So that you did not follow me? Did you then disobey my order?
KHALIFA: “from following my orders? Have you rebelled against me?”

৯২। মুসা বলেছিলো, ” হে হারুন ! তুমি যখন দেখলে যে তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে ,তখন কি সে তোমাকে নিবৃত্ত করলো ,

৯৩। “আমার অনুসরণ করা থেকে ? তবে কি তুমি আমার আদেশ অমান্য করলে ? “২৬১৭

২৬১৭। হযরত মুসা ফিরে এসে ইসরাঈলীদের অবস্থা দর্শনে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে গেলেন। তাঁর অন্তর দুঃখে পরিপূর্ণ হয়ে গেলো। তিনি তাঁর ভাই হারুনকে র্ভৎসনা এবং দুর্ব্যবহার করেছিলেন , যার বর্ণনা পাওয়া যায় পরবর্তী আয়াতে। তূর পর্বতের গমনের পূর্বে হারুনকে দেয়া নির্দেশ সমূহ আছে আয়াত [ ৭ : ১৪২ ] ;

তিনি বললেনঃ হে আমার জননী-তনয়, আমার শ্মশ্রু ও মাথার চুল ধরে আকর্ষণ করো না; আমি আশঙ্কা করলাম যে, তুমি বলবেঃ তুমি বনী-ইসরাঈলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছ এবং আমার কথা স্মরণে রাখনি।
He [Hârûn (Aaron)] said: ”O son of my mother! Seize (me) not by my beard, nor by my head! Verily, I feared lest you should say: ’You have caused a division among the Children of Israel, and you have not respected my word!’ ”

قَالَ يَا ابْنَ أُمَّ لَا تَأْخُذْ بِلِحْيَتِي وَلَا بِرَأْسِي إِنِّي خَشِيتُ أَن تَقُولَ فَرَّقْتَ بَيْنَ بَنِي إِسْرَائِيلَ وَلَمْ تَرْقُبْ قَوْلِي
Qala yabnaomma la ta/khuth bilihyatee wala bira/see innee khasheetu an taqoola farraqta bayna banee isra-eela walam tarqub qawlee

YUSUFALI: (Aaron) replied: “O son of my mother! Seize (me) not by my beard nor by (the hair of) my head! Truly I feared lest thou shouldst say, ‘Thou has caused a division among the children of Israel, and thou didst not respect my word!’”
PICKTHAL: He said: O son of my mother! Clutch not my beard nor my head! I feared lest thou shouldst say: Thou hast caused division among the Children of Israel, and hast not waited for my word.
SHAKIR: He said: O son of my mother! seize me not by my beard nor by my head; surely I was afraid lest you should say: You have caused a division among the children of Israel and not waited for my word.
KHALIFA: He said, “O son of my mother; do not pull me by my beard and my head. I was afraid that you might say, `You have divided the Children of Israel, and disobeyed my orders.’ ”

৯৪। হারুন উত্তর করেছিলো, “হে আমার সহোদর ! আমার শ্মশ্রু ও মাথার [ চুল ] ধরো না ২৬১৮। প্রকৃতপক্ষে, আমি আশংকা করেছিলাম যে, তুমি বলবে, তুমি বণী ইসরাঈলীদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করেছ, এবং তুমি আমার কথাকে সম্মান কর নাই। ” ২৬১৯

২৬১৮। দেখুন [ ৭ : ১৫০ ]।

২৬১৯। এই আয়াতের হারুনের বক্তব্য ও সূরা [ ৭ : ১৫০ ] এর হারুনের বক্তব্য একই। দুটো বক্তব্যের মধ্যে অসংলগ্ন কিছু নাই। তবে এই দুই ক্ষেত্রেই বক্তব্যের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রসঙ্গের উপরে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। সূরা – ৭ ইসরাঈলী উম্মতের উপরে আলোচনা করা হয়েছে। যেখানে হারুনের বক্তব্য ছিলো ” সাধারণ লোকেরা ………………………….।

এই উক্তি দ্বারা হারুন তাঁর ভাই মুসার ঐকান্তিক ইচ্ছার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন মাত্র। মুসার ইচ্ছার নিহিতার্থ ছিলো উম্মতের ” বিশ্বাসের” একতা। এই আয়াতের মূল বক্তব্যে সেই ” ইচ্ছারই ” প্রকাশ ঘটানো হয়েছে। মূল বক্তব্যে ইসরাঈলী উম্মতের একতার উপরে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে সামিরীকে অপরাধ সংঘটক রূপে চিত্রিত করা হয়েছে, যে ইসরাঈলী সম্প্রদায়ের মাঝে বিভেদের বীজ বপন করেছিলো।

মূসা বললেন হে সামেরী, এখন তোমার ব্যাপার কি?
[Mûsa (Moses)] said: ”And what is the matter with you. O Samiri? (i.e. why did you do so?)”

قَالَ فَمَا خَطْبُكَ يَا سَامِرِيُّ
Qala fama khatbuka ya samiriyyu

YUSUFALI: (Moses) said: “What then is thy case, O Samiri?”
PICKTHAL: (Moses) said: And what hast thou to say, O Samiri?
SHAKIR: He said: What was then your object, O Samiri?
KHALIFA: He said, “What is the matter with you, O Samarian?”

৯৫। মুসা বলেছিলো, ” হে সামিরী ! তোমার ব্যাপার কি ?” ২৬২০।

২৬২০। এবারে মুসা হারুনকে ত্যাগ করে সামিরীর দিকে মনোযোগ নিবদ্ধ করলেন। মুসার প্রশ্নের উত্তরে সামিরী বক্তব্যের উত্থাপন করেছিলো যার মাধ্যমে তার চরিত্রের বিশেষ দিক উন্মোচিত হয়। সম্পূর্ণ ঘটনার যে চিত্র এখানে তুলে ধরা হয়েছে তা প্রতীকধর্মী। যাদের ঈমানের ভিত্তি মজবুত নয় তারা অনুকূল পরিবেশে সত্যে বিশ্বাসী এবং আল্লাহ্‌র অনুগত থাকে। কিন্তু প্রতিকূল পরিবেশে বা সুযোগ পেলেই তারা আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধাচারণ করতে দ্বিধা বোধ করে না । এ সব লোক ফেরাউনের মত অহংকারী উদ্ধত ব্যক্তির থেকে কোন অংশে কম নয়। এরা ফেরাউনের মতই নেতা হিসেবে জাতিকে দুর্ভোগ ও দুর্যোগের পথে পরিচালিত করে।

সে বললঃ আমি দেখলাম যা অন্যেরা দেখেনি। অতঃপর আমি সেই প্রেরিত ব্যক্তির পদচিহেßর নীচ থেকে এক মুঠি মাটি নিয়ে নিলাম। অতঃপর আমি তা নিক্ষেপ করলাম। আমাকে আমার মন এই মন্ত্রণাই দিল।
(Samiri) said: ”I saw what they saw not, so I took a handful (of dust) from the hoof print of the messenger [Jibrael’s (Gabriel) horse] and threw it [into the fire in which were put the ornaments of the Fir’aun’s (Pharaoh) people, or into the calf]. Thus my inner-self suggested to me.”

قَالَ بَصُرْتُ بِمَا لَمْ يَبْصُرُوا بِهِ فَقَبَضْتُ قَبْضَةً مِّنْ أَثَرِ الرَّسُولِ فَنَبَذْتُهَا وَكَذَلِكَ سَوَّلَتْ لِي نَفْسِي
Qala basurtu bima lam yabsuroo bihi faqabadtu qabdatan min athari alrrasooli fanabathtuha wakathalika sawwalat lee nafsee

YUSUFALI: He replied: “I saw what they saw not: so I took a handful (of dust) from the footprint of the Messenger, and threw it (into the calf): thus did my soul suggest to me.”
PICKTHAL: He said: I perceived what they perceive not, so I seized a handful from the footsteps of the messenger, and then threw it in. Thus my soul commended to me.
SHAKIR: He said: I saw (Jibreel) what they did not see, so I took a handful (of the dust) from the footsteps of the messenger, then I threw it in the casting; thus did my soul commend to me
KHALIFA: He said, “I saw what they could not see. I grabbed a fistful (of dust) from the place where the messenger stood, and used it (to mix into the golden calf). This is what my mind inspired me to do.”

৯৬। সে উত্তর দিয়েছিলো, ” আমি যা দেখেছিলাম তারা তা দেখে নাই : সুতারাং আমি সেই দূতের পদচিহ্ন থেকে একমুঠি [ ধূলা ] নিয়ে তা [ গোবৎসের ] উপর নিক্ষেপ করেছিলাম। এ ভাবেই আমার আত্মা আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলো ২৬২১। ”

২৬২১। হযরত মুসার প্রশ্নের জবাবে সামিরী যে উত্তর দান করে তা ছিলো, মিথ্যা ওজর দ্বারা সত্যকে এড়ানোর এক ধৃষ্টতাপূর্ণ নির্লজ্জ্ব অপচেষ্টা মাত্র। সে এমন এক ভানের আশ্রয় গ্রহণ করলো যাতে মনে হতে পারে সে সাধারণ অশিক্ষিত জনসাধারণের থেকে উন্নত চরিত্রের অধিকারী। সে যা প্রত্যক্ষ করতে পারে, সাধারণ অশিক্ষিত জনসাধারণ তা পারে নাই। সে দাবী করে যে সে এক অলৌকিক দৃশ্য অবলোকন করেছে। সে দেবদূতের অবতরণ প্রত্যক্ষ করেছে, যা সাধারণ লোক করে নাই। ” রাসুল ” [ রসুলের বহুবচন শব্দটি এখানে দেবদূতের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়েছে যা এক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে [ ১১: ৬৯, ৭৭ ] এবং [ ৩৫ : ১ ] আয়াতে। এখানে ” রাসুল ” শব্দটি দ্বারা জিবরাঈলকে বোঝানো হয়েছে। যদি এখানে রাসুল শব্দটি দ্বারা আল্লাহ্‌র দূত হিসেবে হযরত মুসাকে উল্লেখ করা হয়, তবে এর অর্থ দাঁড়াবে সামিরী হযরত মুসার পদচিহ্নে অলৌকিক রহস্যের সন্ধান পান। সে কারণেই সে তাঁর পদচিহ্নের ধূলি ব্যবহার করে। হতে পারে তা ধূর্ত সামিরীর এক কূট কৌশল মাত্র। সম্ভবতঃ সে মনে করেছিলো যে, তোষামোদ দ্বারা সে মুসার মন আর্দ্র করতে পারবে ও ক্ষমা লাভ করবে। মুসার পবিত্র পদচিহ্নের ধূলিও পবিত্র , তাই সোনার গোবৎস নিম্নস্বরে হাম্বা রব করে। সে এ ভাবেই বক্তব্যের উপস্থাপন করেছে যেনো দূতদের বা মুসার পদচিহ্নের ধূলার অলৌকিক ক্ষমতাই আসল বস্তু। মূল অভিযোগ যে আল্লাহ্‌ ব্যতীত সোনার গোবৎসের পূঁজা , তা সে কৌশলে এড়িয়ে যায়। মূল অভিযোগের সে কোনও উত্তরই দেয় নাই। তবে শেষ পর্যন্ত সে ধৃষ্টতার সাথে উত্তর দান করে যে, ” এ ভাবেই আমার আত্মা আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলো।”

মূসা বললেনঃ দূর হ, তোর জন্য সারা জীবন এ শাস্তিই রইল যে, তুই বলবি; আমাকে স্পর্শ করো না, এবং তোর জন্য একটি নির্দিষ্ট ওয়াদা আছে, যার ব্যতিক্রম হবে না। তুই তোর সেই ইলাহের প্রতি লক্ষ্য কর, যাকে তুই ঘিরে থাকতি। আমরা সেটি জালিয়ে দেবই। অতঃপর একে বিক্ষিপ্ত করে সাগরে ছড়িয়ে দেবই।
Mûsa (Moses) said: ”Then go away! And verily, your (punishment) in this life will be that you will say: ”Touch me not (i.e.you will live alone exiled away from mankind); and verily (for a future torment), you have a promise that will not fail. And look at your ilâh (god), to which you have been devoted. We will certainly burn it, and scatter its particles in the sea.”

قَالَ فَاذْهَبْ فَإِنَّ لَكَ فِي الْحَيَاةِ أَن تَقُولَ لَا مِسَاسَ وَإِنَّ لَكَ مَوْعِدًا لَّنْ تُخْلَفَهُ وَانظُرْ إِلَى إِلَهِكَ الَّذِي ظَلْتَ عَلَيْهِ عَاكِفًا لَّنُحَرِّقَنَّهُ ثُمَّ لَنَنسِفَنَّهُ فِي الْيَمِّ نَسْفًا
Qala faithhab fa-inna laka fee alhayati an taqoola la misasa wa-inna laka mawAAidan lan tukhlafahu waonthur ila ilahika allathee thalta AAalayhi AAakifan lanuharriqannahu thumma lanansifannahu fee alyammi nasfan

YUSUFALI: (Moses) said: “Get thee gone! but thy (punishment) in this life will be that thou wilt say, ‘touch me not’; and moreover (for a future penalty) thou hast a promise that will not fail: Now look at thy god, of whom thou hast become a devoted worshipper: We will certainly (melt) it in a blazing fire and scatter it broadcast in the sea!”
PICKTHAL: (Moses) said: Then go! and lo! in this life it is for thee to say: Touch me not! and lo! there is for thee a tryst thou canst not break. Now look upon thy god of which thou hast remained a votary. Verily we will burn it and will scatter its dust over the sea.
SHAKIR: He said: Begone then, surely for you it will be in this life to say, Touch (me) not; and surely there is a threat for you, which shall not be made to fail to you, and look at your god to whose worship you kept (so long); we will certainly burn it, then we will certainly scatter it a (wide) scattering in the sea.
KHALIFA: He said, “Then go, and, throughout your life, do not even come close. You have an appointed time (for your final judgment) that you can never evade. Look at your god that you used to worship; we will burn it and throw it into the sea, to stay down there forever.”

৯৭। মুসা বলেছিলো, ” দূর হও! এই জীবনে তোমার [ শাস্তি ] হবে এই যে, তুমি বলবে, আমাকে ছুঁয়ো না; ২৬২২ উপরন্তু [ ভবিষ্যতের শাস্তির ] জন্য অঙ্গীকার রইল যার ব্যত্যয় হবে না ২৬২৩। এখন তোমার উপাস্যের প্রতি লক্ষ্য কর,যার পূঁজায় তুমি আত্মনিয়োগ করেছিলে। অবশ্যই আমি তা জ্বলন্ত আগুনে [ গলিয়ে ] ফেলবো এবং টুকরা টুকরা করে সাগরে নিক্ষেপ করবো ২৬২৪। ”

২৬২২। হযরত মুসা সামিরীর জন্য পার্থিব জীবনে এই শাস্তি ধার্য করেন যে, সবাই তাকে বর্জন করবে এবং কেউ তার কাছে ঘেষবে না। তিনি তাকেও নির্দ্দেশ দেন যে, কারও গায়ে হাত লাগাবে না। সম্ভবতঃ এই শাস্তিটি একটি আইনের আকারে ছিলো।

২৬২৩। “উপরন্তু [ভবিষ্যতের শাস্তির] জন্য অঙ্গীকার রইল যার ব্যত্যয় হবে না।” অর্থাৎ নির্দ্দিষ্ট সময় অন্তে আল্লাহ্‌র শাস্তির ব্যতিক্রম ঘটবে না।

২৬২৪। এ ভাবেই সোনার গোবৎসকে ধবংস করা হয়। এখানেই সামিরীর কাহিনীর শেষ হয় এবং এই কাহিনীর উপদেশ পূর্ব টিকা ২৬২০ তে উল্লেখ করা হয়েছে।

তোমাদের ইলাহ তো কেবল আল্লাহই, যিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই। সব বিষয় তাঁর জ্ঞানের পরিধিভুক্ত।
Your Ilâh (God) is only Allâh, the One (Lâ ilâha illa Huwa) (none has the right to be worshipped but He). He has full knowledge of all things.

إِنَّمَا إِلَهُكُمُ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ وَسِعَ كُلَّ شَيْءٍ عِلْمًا
Innama ilahukumu Allahu allathee la ilaha illa huwa wasiAAa kulla shay-in AAilman

YUSUFALI: But the god of you all is the One Allah: there is no god but He: all things He comprehends in His knowledge.
PICKTHAL: Your Allah is only Allah, than Whom there is no other Allah. He embraceth all things in His knowledge.
SHAKIR: Your Allah is only Allah, there is no god but He; He comprehends all things in (His) knowledge.
KHALIFA: Your only god is GOD; the One beside whom there is no other god. His knowledge encompasses all things.

৯৮। তোমাদের আল্লাহ্‌ তো এক ও অদ্বিতীয়। তিনি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নাই। তাঁর জ্ঞান সকল কিছুকে পরিব্যপ্ত করে আছে।

৯৯। এভাবেই পূর্বে যা ঘটেছে তার কাহিনী তোমার নিকট বর্ণনা করি। আমার নিকট থেকে তোমাকে প্রেরণ করেছি উপদেশ ২৬২৫।

২৬২৫। এ ভাবেই পূর্ববর্তী আদেশসমূহ রহিত করা হয়েছে, উপদেশ [ কোরাণ ] দ্বারা। কারণ কোরাণ সরাসরি আল্লাহ্‌র নিকট থেকে প্রাপ্ত, এখানে অন্য কারও কর্তৃত্ব স্বীকার করা হয় নাই।

এমনিভাবে আমি পূর্বে যা ঘটেছে, তার সংবাদ আপনার কাছে বর্ণনা করি। আমি আমার কাছ থেকে আপনাকে দান করেছি পড়ার গ্রন্থ।
Thus We relate to you (O Muhammad SAW) some information of what happened before. And indeed We have given you from Us a Reminder (this Qur’ân).

كَذَلِكَ نَقُصُّ عَلَيْكَ مِنْ أَنبَاء مَا قَدْ سَبَقَ وَقَدْ آتَيْنَاكَ مِن لَّدُنَّا ذِكْرًا
Kathalika naqussu AAalayka min anba-i ma qad sabaqa waqad ataynaka min ladunna thikran

YUSUFALI: Thus do We relate to thee some stories of what happened before: for We have sent thee a Message from Our own Presence.
PICKTHAL: Thus relate We unto thee (Muhammad) some tidings of that which happened of old, and We have given thee from Our presence a reminder.
SHAKIR: Thus do We relate to you (some) of the news of what has gone before; and indeed We have given to you a Reminder from Ourselves.
KHALIFA: We thus narrate to you some news from the past generations. We have revealed to you a message from us.

৯৮। তোমাদের আল্লাহ্‌ তো এক ও অদ্বিতীয়। তিনি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নাই। তাঁর জ্ঞান সকল কিছুকে পরিব্যপ্ত করে আছে।

৯৯। এভাবেই পূর্বে যা ঘটেছে তার কাহিনী তোমার নিকট বর্ণনা করি। আমার নিকট থেকে তোমাকে প্রেরণ করেছি উপদেশ ২৬২৫।

২৬২৫। এ ভাবেই পূর্ববর্তী আদেশসমূহ রহিত করা হয়েছে, উপদেশ [ কোরাণ ] দ্বারা। কারণ কোরাণ সরাসরি আল্লাহ্‌র নিকট থেকে প্রাপ্ত, এখানে অন্য কারও কর্তৃত্ব স্বীকার করা হয় নাই।

যে এ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, সে কেয়ামতের দিন বোঝা বহন করবে।
Whoever turns away from it (this Qur’ân i.e. does not believe in it, nor acts on its orders), verily, they will bear a heavy burden (of sins) on the Day of Resurrection,

مَنْ أَعْرَضَ عَنْهُ فَإِنَّهُ يَحْمِلُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وِزْرًا
Man aAArada AAanhu fa-innahu yahmilu yawma alqiyamati wizran

YUSUFALI: If any do turn away therefrom, verily they will bear a burden on the Day of judgment;
PICKTHAL: Whoso turneth away from it, he verily will bear a burden on the Day of Resurrection,
SHAKIR: Whoever turns aside from it, he shall surely bear a burden on the day of resurrection
KHALIFA: Those who disregard it will bear a load (of sins) on the Day of Resurrection.

১০০। এর থেকে যে ফিরে যাবে, শেষ বিচারের দিনে সে [ পাপের ] বোঝা বহন করবে।

১০১। তারা এই [ অবস্থায় ] স্থায়ী হবে। সেদিন এই বোঝা হবে কষ্টকর , ২৬২৬

২৬২৬। দেখুন আয়াত [ ৬ : ৩১ ] যেখানে এই ” বোঝার ” উল্লেখ আছে। মানুষ পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী জীবনে এতটাই নিমগ্ন হয়ে যায় যে, পৃথিবীর লোভ-লালসা ভরা ক্ষণস্থায়ী জীবনটাকেই সে শ্বাশত সত্য বলে বিশ্বাস করে। মিথ্যা ও পাপের চাকচিক্য তাকে বিমোহিত করে ফেলে। ফলে পরকালের অনন্ত শ্বাশত জীবনকে সে ইহাকালে অনুভব করতে পারে না। তার সমস্ত সত্তা শুধুমাত্র এই পৃথিবীকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হতে থাকে। শেষ বিচারের দিনে এ সব লোকদের চেতনাতে , অনুভবে পরকালের জীবন ভাস্বর হবে। নিষ্ঠুর সত্যের মুখোমুখি হবে তারা। পৃথিবীর জীবন ছিলো তাদের জন্য মধুর। অপরকে ঠকানো, শুধুমাত্র জাগতিক সুখের অন্বেষণ করা , বিদ্বেষ – ঘৃণা , হিংসা ইত্যাদিই ছিলো সেই জীবনের একমাত্র বিষয়বস্তু। এ সব লোকেরা পার্থিব জীবনে কোনও দিনই আল্লাহ্‌কে খুশী করার জন্য সৎ কাজের অন্বেষণ করে নাই, আজ বিচারের ময়দানে তাদের স্বপ্নভঙ্গ হবে – তারা জেগে দেখবে তাদের অসৎ কর্মকান্ড তাদের উপরে বোঝার ন্যায় চেপে বসে আছে। সেই ” বোঝা ” থেকে কিছুতেই তারা নিজেদের মুক্ত করতে পারছে ন।

তারা তাতে চিরকাল থাকবে এবং কেয়ামতের দিন এই বোঝা তাদের জন্যে মন্দ হবে।
They will abide in that (state in the Fire of Hell), and evil indeed will it be that load for them on the Day of Resurrection;

خَالِدِينَ فِيهِ وَسَاء لَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حِمْلًا
Khalideena feehi wasaa lahum yawma alqiyamati himlan

YUSUFALI: They will abide in this (state): and grievous will the burden be to them on that Day,-
PICKTHAL: Abiding under it – an evil burden for them on the Day of Resurrection,
SHAKIR: Abiding in this (state), and evil will it be for them to bear on the day of resurrection;
KHALIFA: Eternally they abide therein; what a miserable load on the Day of Resurrection!

১০০। এর থেকে যে ফিরে যাবে, শেষ বিচারের দিনে সে [ পাপের ] বোঝা বহন করবে।

১০১। তারা এই [ অবস্থায় ] স্থায়ী হবে। সেদিন এই বোঝা হবে কষ্টকর , ২৬২৬

২৬২৬। দেখুন আয়াত [ ৬ : ৩১ ] যেখানে এই ” বোঝার ” উল্লেখ আছে। মানুষ পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী জীবনে এতটাই নিমগ্ন হয়ে যায় যে, পৃথিবীর লোভ-লালসা ভরা ক্ষণস্থায়ী জীবনটাকেই সে শ্বাশত সত্য বলে বিশ্বাস করে। মিথ্যা ও পাপের চাকচিক্য তাকে বিমোহিত করে ফেলে। ফলে পরকালের অনন্ত শ্বাশত জীবনকে সে ইহাকালে অনুভব করতে পারে না। তার সমস্ত সত্তা শুধুমাত্র এই পৃথিবীকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হতে থাকে। শেষ বিচারের দিনে এ সব লোকদের চেতনাতে , অনুভবে পরকালের জীবন ভাস্বর হবে। নিষ্ঠুর সত্যের মুখোমুখি হবে তারা। পৃথিবীর জীবন ছিলো তাদের জন্য মধুর। অপরকে ঠকানো, শুধুমাত্র জাগতিক সুখের অন্বেষণ করা , বিদ্বেষ – ঘৃণা , হিংসা ইত্যাদিই ছিলো সেই জীবনের একমাত্র বিষয়বস্তু। এ সব লোকেরা পার্থিব জীবনে কোনও দিনই আল্লাহ্‌কে খুশী করার জন্য সৎ কাজের অন্বেষণ করে নাই, আজ বিচারের ময়দানে তাদের স্বপ্নভঙ্গ হবে – তারা জেগে দেখবে তাদের অসৎ কর্মকান্ড তাদের উপরে বোঝার ন্যায় চেপে বসে আছে। সেই ” বোঝা ” থেকে কিছুতেই তারা নিজেদের মুক্ত করতে পারছে ন।

যেদিন সিঙ্গায় ফূৎকার দেয়া হবে, সেদিন আমি অপরাধীদেরকে সমবেত করব নীল চক্ষু অবস্থায়।
The Day when the Trumpet will be blown (the second blowing): that Day, We shall gather the Mujrimûn (criminals, polytheists, sinners, disbelievers in the Oneness of Allâh, etc.) Zurqa: (blue or blind eyed with black faces).

يَوْمَ يُنفَخُ فِي الصُّورِ وَنَحْشُرُ الْمُجْرِمِينَ يَوْمَئِذٍ زُرْقًا
Yawma yunfakhu fee alssoori wanahshuru almujrimeena yawma-ithin zurqan

YUSUFALI: The Day when the Trumpet will be sounded: that Day, We shall gather the sinful, blear-eyed (with terror).
PICKTHAL: The day when the Trumpet is blown. On that day we assemble the guilty white-eyed (with terror),
SHAKIR: On the day when the trumpet shall be blown, and We will gather the guilty, blue-eyed, on that day
KHALIFA: That is the day when the horn is blown, and we summon the guilty on that day blue.

১০২। যেদিন সিঙ্গাতে ফুৎকার দেয়া হবে। সেদিন আমি পাপীদের এমন অবস্থায় জমায়েত করবো যে [ আতঙ্কে ] তাদের চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাবে ২৬২৭।

২৬২৭। “Zurq” শব্দের অর্থ নীলচক্ষু বিশিষ্ট। অর্থাৎ চক্ষুর স্বাভাবিক যে রং তা না হওয়া। এটা একটি আরবী বাগধারা , যার অর্থ ভয়ে দৃষ্টিহীন হয়ে যাওয়া।

তারা চুপিসারে পরস্পরে বলাবলি করবেঃ তোমরা মাত্র দশ দিন অবস্থান করেছিলে।
In whispers will they speak to each other (saying): ”You stayed not longer than ten (days).”

يَتَخَافَتُونَ بَيْنَهُمْ إِن لَّبِثْتُمْ إِلَّا عَشْرًا
Yatakhafatoona baynahum in labithtum illa AAashran

YUSUFALI: In whispers will they consult each other: “Yet tarried not longer than ten (Days);
PICKTHAL: Murmuring among themselves: Ye have tarried but ten (days).
SHAKIR: They shall consult together secretly: You did tarry but ten (centuries).
KHALIFA: Whispering among themselves, they will say, “You have stayed (in the first life) no more than ten days!”

১০৩। তারা নিজেদের মধ্যে ফিসফিস করে আলোচনা করবে, ” দশ [ দিনের ] বেশী তোমরা অবস্থান কর নাই। ” ২৬২৮।

২৬২৮। পরকালে শেষ বিচারের দিনে এ সব পাপীদের চৈতন্যদয় ঘটবে যে , পৃথিবীর জীবন শেষ ,এবং তারা পরকালের অনন্ত জীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। অনন্ত জীবনের ধারণা তাদের আতংকগ্রস্থ করে তুলবে। অনন্ত জীবনের তুলনায় পৃথিবীর জীবনকে তাদের কাছে মনে হবে অকিঞ্চিৎকর, যেনো কয়েকটি দিনের সমষ্টি মাত্র। ” দশ দিন ” বাক্যটি একটি বাগ্‌ধারা বিশেষ , যার দ্বারা খুব সামান্য কয়েকটি দিনকে বোঝানো হয়েছে।

তারা কি বলে তা আমি ভালোভাবে জানি। তাদের মধ্যে যে, অপেক্ষাকৃত উত্তম পথের অনুসারী সে বলবেঃ তোমরা মাত্র একদিন অবস্থান করেছিলে।
We know very well what they will say, when the best among them in knowledge and wisdom will say: ”You stayed no longer than a day!”

نَحْنُ أَعْلَمُ بِمَا يَقُولُونَ إِذْ يَقُولُ أَمْثَلُهُمْ طَرِيقَةً إِن لَّبِثْتُمْ إِلَّا يَوْمًا
Nahnu aAAlamu bima yaqooloona ith yaqoolu amthaluhum tareeqatan in labithtum illa yawman

YUSUFALI: We know best what they will say, when their leader most eminent in conduct will say: “Ye tarried not longer than a day!”
PICKTHAL: We are Best Aware of what they utter when their best in conduct say: Ye have tarried but a day.
SHAKIR: We know best what they say, when the fairest of them in course would say: You tarried but a day.
KHALIFA: We are fully aware of their utterances. The most accurate among them will say, “You stayed no more than a day.”

১০৪। আমি ভালো জানি ওরা কি বলবে; যখন তাদের নেতা , যে ছিলো তাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উন্নত চরিত্রের ; সে বলবে, ” তোমরা তো একদিনের বেশী অবস্থান কর নাই।” ২৬২৯

২৬২৯। “সর্বাপেক্ষা উন্নত চরিত্রের ” ভিন্নমতে ইহার অর্থ ইহাদের মধ্যে যে বুদ্ধিমত্তায় অপেক্ষাকৃত উন্নত। এরাই প্রকৃত অবস্থা খুব সহজেই অনুধাবন করতে পারবে।

তারা আপনাকে পাহাড় সম্পর্কে প্রশ্ন করা। অতএব, আপনি বলুনঃ আমার পালনকর্তা পহাড়সমূহকে সমূলে উৎপাটন করে বিক্ষিপ্ত করে দিবেন।
And they ask you concerning the mountains, say; ”My Lord will blast them and scatter them as particles of dust.

وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْجِبَالِ فَقُلْ يَنسِفُهَا رَبِّي نَسْفًا
Wayas-aloonaka AAani aljibali faqul yansifuha rabbee nasfan

YUSUFALI: They ask thee concerning the Mountains: say, “My Lord will uproot them and scatter them as dust;
PICKTHAL: They will ask thee of the mountains (on that day). Say: My Lord will break them into scattered dust.
SHAKIR: And they ask you about the mountains. Say: My Lord will carry them away from the roots.
KHALIFA: They ask you about the mountains. Say, “My Lord will wipe them out.

রুকু – ৬

১০৫। যখন তারা তোমাকে পর্বত সমূহ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করে ২৬৩০, বলো, ” আমার প্রভু ওগুলি সমূলে উৎপাটন করে বিক্ষিপ্ত করে দেবেন।” ২৬৩১

২৬৩০। পূর্বের আয়াতে সময়ের প্রতারণামূলক ধারণা সম্পর্কে এবং সময় যে আপেক্ষিক সে সম্বন্ধে বলা হয়েছে। অর্থাৎ সময় সম্বন্ধে আমাদের যে ধারণা, তা হচ্ছে দিন ও রাত্রির ধারণা থেকে সৃষ্টি। কিন্তু যদি সুদীর্ঘ দিন ও সুদীর্ঘ রাত্রি হতো, বা শুধু দিন বা শুধু রাত্রি চলতো তবে সময়ের হিসেবের ধারণা অন্যরকম হতে বাধ্য। সে কারণে মহাশূন্যে গমনকারী নভোচারীরা সময়ের হিসেব পৃথিবীর সাথে তুলনা করে হিসেব করেন, কারণ সেখানে সুনির্দ্দিষ্ট দিন বা রাত্রি নাই। এই সত্যকেই পূর্বের আয়াতের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। এই আয়াতে চতুর্দ্দিকের বিস্তৃতি বা প্রসার দৃঢ়তা, আকার, আয়তন এর উপরে আলোকপাত করা হয়েছে। উপমা হিসেবে পর্বতের কথা বলা হয়েছে। রসুলকে [ সা ] প্রশ্ন করা হয়েছিলো, ” পর্বতসমূহের কি হবে ? ” পর্বত অনন্তকাল থেকে পৃথিবীতে দাড়িয়ে আছে। পর্বত অনন্তকালের সাক্ষ্য। এই পৃথিবীর সব কিছুই ক্ষণস্থায়ী। সে ভাবে বিবেচনা করলে পর্বতকে মনে করা যায় অনন্ত কালের সাক্ষী। অবিশ্বাসীরা নূতন পৃথিবী সৃষ্টি সম্বন্ধে সন্দেহ প্রকাশ করে [ দেখুন আয়াত ১৩ : ৫ ]। কিন্তু হাশরের দিনে যখন পৃথিবীকে নূতনভাবে সৃষ্টি করা হবে, তখন স্থায়ী , দৃঢ়, উন্নত পর্বতের চিহ্ন মাত্র থাকবে না। তা হবে এক নূতন পৃথিবী। আমরা শেষ বিচারের সভার দৃশ্যটি কল্পনা করতে পারি এ ভাবে। বিরাট , বিশাল, আদিগন্ত বিস্তৃত সমভূমি যার কোথাও উচুঁ বা নীচু নাই। দিগন্ত বিস্তৃত এই সমভূমিতে কোথাও লুকানোর কোনও স্থান থাকবে না। যত দূরে চোখ যায়, দৃষ্টি চলে যাবে বাধা বন্ধন হীন ভাবে। হাশরের মাঠে কারও কোনও রহস্য লুকানো থাকবে না।

২৬৩১। “Nasafa” শব্দটির ভাবার্থ হচ্ছে ১) শিকড়সহ উপরানো। ২) ধূলিতে চুর্ণবিচূর্ণ করা এবং ৩) তুষের ন্যায় উড়ানো।

অতঃপর পৃথিবীকে মসৃণ সমতলভূমি করে ছাড়বেন।
”Then He shall leave it as a level smooth plain.

فَيَذَرُهَا قَاعًا صَفْصَفًا
Fayatharuha qaAAan safsafan

YUSUFALI: “He will leave them as plains smooth and level;
PICKTHAL: And leave it as an empty plain,
SHAKIR: Then leave it a plain, smooth level
KHALIFA: “He will leave them like a barren, flat land.

১০৬। তিনি উহাদের মসৃণ সমতল ভূমিতে পরিণত করবেন।

১০৭। কোন বক্রতা বা উচ্চতা দেখতে পাবে না।

১০৮। সেদিন তারা আহ্বানকারীকে [ সোজা ] অনুসরণ করবে ২৬৩২। কোন বক্রতাই তার মাঝে থাকবে না। পরম করুণাময় [আল্লাহ্‌র ] সম্মুখে সকল শব্দ বিনম্র হয়ে যাবে ২৬৩৩। সুতারাং মৃদু পদধ্বনি ব্যতীত তুমি কিছুই শুনবে না।

২৬৩২। ” আহ্বানকারী” অর্থাৎ ফেরেশতারা আহ্বান করবে এবং সকল আত্মাকে তাদের অনুসরণ করতে হবে।

২৬৩৩। এই আয়াতগুলির মাধ্যমে হাশরের ময়দানের এক অনবদ্য দৃশ্যকে তুলে ধরা হয়েছে। প্রথমে শিঙ্গা ফুৎকারের এক বিরাট বিস্ফোরণের শব্দ , তারপর মৃদু ডাক শোনা যাবে ” জাগো”। নিঃশব্দতা সমগ্র বিশ্বচরাচরকে গ্রাস করবে। শুধুমাত্র অনুসরণকারীদের মৃদু পদশব্দ ব্যতীত আর কিছুই শ্রুতিগোচর হবে না।

তুমি তাতে মোড় ও টিলা দেখবে না।
”You will see therein nothing crooked or curved.”

لَا تَرَى فِيهَا عِوَجًا وَلَا أَمْتًا
La tara feeha AAiwajan wala amtan

YUSUFALI: “Nothing crooked or curved wilt thou see in their place.”
PICKTHAL: Wherein thou seest neither curve nor ruggedness.
SHAKIR: You shall not see therein any crookedness or unevenness.
KHALIFA: “Not even the slightest hill will you see therein, nor a dip.”

১০৬। তিনি উহাদের মসৃণ সমতল ভূমিতে পরিণত করবেন।

১০৭। কোন বক্রতা বা উচ্চতা দেখতে পাবে না।

১০৮। সেদিন তারা আহ্বানকারীকে [ সোজা ] অনুসরণ করবে ২৬৩২। কোন বক্রতাই তার মাঝে থাকবে না। পরম করুণাময় [আল্লাহ্‌র ] সম্মুখে সকল শব্দ বিনম্র হয়ে যাবে ২৬৩৩। সুতারাং মৃদু পদধ্বনি ব্যতীত তুমি কিছুই শুনবে না।

২৬৩২। ” আহ্বানকারী” অর্থাৎ ফেরেশতারা আহ্বান করবে এবং সকল আত্মাকে তাদের অনুসরণ করতে হবে।

২৬৩৩। এই আয়াতগুলির মাধ্যমে হাশরের ময়দানের এক অনবদ্য দৃশ্যকে তুলে ধরা হয়েছে। প্রথমে শিঙ্গা ফুৎকারের এক বিরাট বিস্ফোরণের শব্দ , তারপর মৃদু ডাক শোনা যাবে ” জাগো”। নিঃশব্দতা সমগ্র বিশ্বচরাচরকে গ্রাস করবে। শুধুমাত্র অনুসরণকারীদের মৃদু পদশব্দ ব্যতীত আর কিছুই শ্রুতিগোচর হবে না।

সেই দিন তারা আহবানকারীর অনুসরণ করবে, যার কথা এদিক-সেদিক হবে না এবং দয়াময় আল্লাহর ভয়ে সব শব্দ ক্ষীণ হয়ে যাবে। সুতরাং মৃদু গুঞ্জন ব্যতীত তুমি কিছুই শুনবে না।
On that Day mankind will follow strictly (the voice of) Allâh’s caller, no crookedness (that is without going to the right or left of that voice) will they show him (Allâh’s caller). And all voices will be humbled for the Most Beneficent (Allâh), and nothing shall you hear but the low voice of their footsteps.

يَوْمَئِذٍ يَتَّبِعُونَ الدَّاعِيَ لَا عِوَجَ لَهُ وَخَشَعَت الْأَصْوَاتُ لِلرَّحْمَنِ فَلَا تَسْمَعُ إِلَّا هَمْسًا
Yawma-ithin yattabiAAoona alddaAAiya la AAiwaja lahu wakhashaAAati al-aswatu lilrrahmani fala tasmaAAu illa hamsan

YUSUFALI: On that Day will they follow the Caller (straight): no crookedness (can they show) him: all sounds shall humble themselves in the Presence of (Allah) Most Gracious: nothing shalt thou hear but the tramp of their feet (as they march).
PICKTHAL: On that day they follow the summoner who deceiveth not, and voices are hushed for the Beneficent, and thou hearest but a faint murmur.
SHAKIR: On that day they shall follow the inviter, there is no crookedness in him, and the voices shall be low before the Beneficent Allah so that you shall not hear aught but a soft sound.
KHALIFA: On that day, everyone will follow the caller, without the slightest deviation. All sounds will be hushed before the Most Gracious; you will hear nothing but whispers.

১০৬। তিনি উহাদের মসৃণ সমতল ভূমিতে পরিণত করবেন।

১০৭। কোন বক্রতা বা উচ্চতা দেখতে পাবে না।

১০৮। সেদিন তারা আহ্বানকারীকে [ সোজা ] অনুসরণ করবে ২৬৩২। কোন বক্রতাই তার মাঝে থাকবে না। পরম করুণাময় [আল্লাহ্‌র ] সম্মুখে সকল শব্দ বিনম্র হয়ে যাবে ২৬৩৩। সুতারাং মৃদু পদধ্বনি ব্যতীত তুমি কিছুই শুনবে না।

২৬৩২। ” আহ্বানকারী” অর্থাৎ ফেরেশতারা আহ্বান করবে এবং সকল আত্মাকে তাদের অনুসরণ করতে হবে।

২৬৩৩। এই আয়াতগুলির মাধ্যমে হাশরের ময়দানের এক অনবদ্য দৃশ্যকে তুলে ধরা হয়েছে। প্রথমে শিঙ্গা ফুৎকারের এক বিরাট বিস্ফোরণের শব্দ , তারপর মৃদু ডাক শোনা যাবে ” জাগো”। নিঃশব্দতা সমগ্র বিশ্বচরাচরকে গ্রাস করবে। শুধুমাত্র অনুসরণকারীদের মৃদু পদশব্দ ব্যতীত আর কিছুই শ্রুতিগোচর হবে না।

দয়াময় আল্লাহ যাকে অনুমতি দেবেন এবং যার কথায় সন্তুষ্ট হবেন সে ছাড়া কারও সুপারিশ সেদিন কোন উপকারে আসবে না।
On that day no intercession shall avail, except the one for whom the Most Beneficent (Allâh) has given permission and whose word is acceptable to Him.

يَوْمَئِذٍ لَّا تَنفَعُ الشَّفَاعَةُ إِلَّا مَنْ أَذِنَ لَهُ الرَّحْمَنُ وَرَضِيَ لَهُ قَوْلًا
Yawma-ithin la tanfaAAu alshshafaAAatu illa man athina lahu alrrahmanu waradiya lahu qawlan

YUSUFALI: On that Day shall no intercession avail except for those for whom permission has been granted by (Allah) Most Gracious and whose word is acceptable to Him.
PICKTHAL: On that day no intercession availeth save (that of) him unto whom the Beneficent hath given leave and whose word He accepteth.
SHAKIR: On that day shall no intercession avail except of him whom the Beneficent Allah allows and whose word He is pleased with.
KHALIFA: On that day, intercession will be useless, except for those permitted by the Most Gracious, and whose utterances conform to His will.

১০৯। সেদিন , পরম করুণাময় [আল্লাহ্‌ ] যাকে অনুমতি দেবেন এবং যার বক্তব্য তাঁর নিকট গ্রহণযোগ্য হবে সে ব্যতীত অন্য কারও সুপারিশ সেই দিন কোন কাজে আসবে না ২৬৩৪।

২৬৩৪। অনুরূপ লাইন আছে, ” আয়াতাল কুরশী ” আয়াতে [ ২ : ২৫৫ ] যাদের আল্লাহ্‌ অনুমতি দেবেন তারা ব্যতীত আর কারও মধ্যস্ততা সেদিন কারও উপকারে আসবে না। সেই দিন তারাই আল্লাহ্‌র অনুগ্রহের যোগ্য হবে যারা আন্তরিক ভাবে অনুতপ্ত ছিলো অথবা আল্লাহ্‌ যাদের অনুমতি দেবেন তারা ব্যতীত আর কারও মধ্যস্ততা গ্রহণ করা হবে না।

তিনি জানেন যা কিছু তাদের সামনে ও পশ্চাতে আছে এবং তারা তাকে জ্ঞান দ্বারা আয়ত্ত করতে পারে না।
He (Allâh) knows what happens to them (His creatures) in this world, and what will happen to them (in the Hereafter), and they will never compass anything of His Knowledge.

يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيطُونَ بِهِ عِلْمًا
YaAAlamu ma bayna aydeehim wama khalfahum wala yuheetoona bihi AAilman

YUSUFALI: He knows what (appears to His creatures as) before or after or behind them: but they shall not compass it with their knowledge.
PICKTHAL: He knoweth (all) that is before them and (all) that is behind them, while they cannot compass it in knowledge.
SHAKIR: He knows what is before them and what is behind them, while they do not comprehend it in knowledge.
KHALIFA: He knows their past and their future, while none encompasses His knowledge.

১১০। [ তার সৃষ্ট প্রাণীর ] পূর্বে অথবা পরে অথবা পিছনে যা কিছু আছে আল্লাহ্‌ তা অবগত ২৬৩৫। কিন্তু তাদের জ্ঞান দ্বারা তারা তা আয়ত্ত করতে পারে না।

২৬৩৫। একই রকম ধারা বর্ণনা আছে আয়াতাল কুরশী আয়াতে। দেখুন [ ২ : ২২৫ ] এবং টিকা ২৯৭। পার্থক্য হচ্ছে এই আয়াতে শেষ বিচারের দিনকে উপলক্ষ্য করে উপরের লাইনটিকে উপস্থাপন করা হয়েছে এবং আয়াতাল কুরশী আয়াতের বক্তব্য সার্বজনীন – সময়, যুগ ও কাল অতিক্রান্ত। বর্তমান পৃথিবীর জন্য প্রযোজ্য ও পরকালে বিচারের দিনের জন্যও প্রযোজ্য।

সেই চিরঞ্জীব চিরস্থায়ীর সামনে সব মুখমন্ডল অবনমিত হবে এবং সে ব্যর্থ হবে যে জুলুমের বোঝা বহন করবে।
And (all) faces shall be humbled before (Allâh), the Ever Living, the One Who sustains and protects all that exists. And he who carried (a burden of) wrongdoing (i.e. he who disbelieved in Allâh, ascribed partners to Him, and did deeds of His disobedience), became indeed a complete failure (on that Day).

وَعَنَتِ الْوُجُوهُ لِلْحَيِّ الْقَيُّومِ وَقَدْ خَابَ مَنْ حَمَلَ ظُلْمًا
WaAAanati alwujoohu lilhayyi alqayyoomi waqad khaba man hamala thulman

YUSUFALI: (All) faces shall be humbled before (Him) – the Living, the Self-Subsisting, Eternal: hopeless indeed will be the man that carries iniquity (on his back).
PICKTHAL: And faces humble themselves before the Living, the Eternal. And he who beareth (a burden of) wrongdoing is indeed a failure (on that day).
SHAKIR: And the faces shall be humbled before the Living, the Self-subsistent Allah, and he who bears iniquity is indeed a failure.
KHALIFA: All faces will submit to the Living, the Eternal, and those who are burdened by their transgressions will fail.

১১১। চিরঞ্জীব, স্বনির্ভর, অনাদি, অনন্ত সত্ত্বার সম্মুখে সকলে বিণীত হবে। সেই হবে নিরাশ যে তার [ পিঠে ] অন্যায়ের বোঝা বহন করবে ২৬৩৬।

২৬৩৬। ” অন্যায়ের বোঝা” বা ” পাপের বোঝা ” বা অন্যায় কাজের ফলাফল। শেষ বিচারে দিনে জুলুমকারী বা অন্যায়কারী তার পাপের বোঝা তার পিঠে বহন করবে। দেখুন [ ২০ : ১০০ – ১০১ ] এবং [ ৬ : ৩১ ] যেখানে এই বোঝার উল্লেখ আছে। সেদিন পাপী ও পূণ্যবান সকলেই বিনয়ের সাথে ভয়ের সাথে আল্লাহ্‌র দরবারে ” অধোবদন” ভাবে উপস্থিত হবে। পৃথিবীর জীবন – পঙ্কিলময় জীবন। পূন্যাত্মারাও সম্পূর্ণ নিষ্পাপ এ দাবী করতে পারেন না। কারণ পৃথিবীতে পাপের ফাঁদ ঘাটে ঘাটে পাতা। শেষ বিচারের দিনে একমাত্র আল্লাহ্‌র করুণাই তাঁদের ভরসা।তাঁর দয়াই শেষ এবং একমাত্র ভরসাস্থল। মৃত্যুর দুয়ার অতিক্রমের ফলে সেদিন সকলের চোখের সামনে বাস্তব সত্য প্রতিভাত হবে, জাগতিক সব মিথ্যা মূল্যবোধ ও ধ্যান ধারণার অবসান ঘটবে, প্রকৃত সত্যর অনুধাবন ঘটবে। সেদিন যারা পাপের বোঝা বহন করে আল্লাহ্‌র দরবারে হাজির হবে, তারা প্রকৃত সত্যকে অনুধাবনের ফলে, হতাশার অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে।

যে ঈমানদার অবস্থায় সৎকর্ম সম্পাদন করে, সে জুলুম ও ক্ষতির আশঙ্কা করবে না।
And he who works deeds of righteousness, while he is a believer (in Islâmic Monotheism) then he will have no fear of injustice, nor of any curtailment (of his reward).

وَمَن يَعْمَلْ مِنَ الصَّالِحَاتِ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَا يَخَافُ ظُلْمًا وَلَا هَضْمًا
Waman yaAAmal mina alssalihati wahuwa mu/minun fala yakhafu thulman wala hadman

YUSUFALI: But he who works deeds of righteousness, and has faith, will have no fear of harm nor of any curtailment (of what is his due).
PICKTHAL: And he who hath done some good works, being a believer, he feareth not injustice nor begrudging (of his wage).
SHAKIR: And whoever does good works and he is a believer, he shall have no fear of injustice nor of the withholding of his due.
KHALIFA: As for those who worked righteousness, while believing, they will have no fear of injustice or adversity.

১১২। কিন্তু যে সৎ কাজ করে এবং ঈমান রাখে, তার [ কোন ] ক্ষতির অথবা [ তার প্রাপ্য ] কমে যাওয়ার কোন ভয় নাই ২৬৩৭।

২৬৩৭। তুলনা করুন পূর্বের টিকার সাথে, যেখানে অন্যায়কারী বা জুলুমবাজের কথা বলা হয়েছে। এই আয়াতে পূণ্যাত্মাদের কথা বলা হয়েছে, যারা তাদের “বিশ্বাসের” বা ঈমানের মজবুত ভিত্তির উপরে পৃথিবীতে অধিষ্ঠিত ছিলেন। পরলোকে আল্লাহ্‌র দরবারে এসব লোকেরা নিজেদের বিশ্বাস বা ঈমানকে ন্যায়সঙ্গতরূপে প্রত্যক্ষ করবে। এই আয়াতে আল্লাহ্‌ এসব বিশ্বাসী লোকদের আশ্বাস দিয়েছেন যে, তাদের কোন ভয় নাই , কোনও ক্ষতিও তাদের ঘটবে না। তাদের কর্মের পূর্ণ পুরষ্কার তাদের দেয়া হবে। তাদের প্রতি কোন অন্যায় করা হবে না। শুধু তাই নয় আয়াত [ ৩ : ২৭ ] এবং যা প্রাপ্য পুরষ্কার হিসেবে তার থেকেও বেশী তাদের দান করা হবে।

এমনিভাবে আমি আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছি এবং এতে নানাভাবে সতর্কবাণী ব্যক্ত করেছি, যাতে তারা আল্লাহভীরু হয় অথবা তাদের অন্তরে চিন্তার খোরাক যোগায়।
And thus We have sent it down as a Qur’ân in Arabic, and have explained therein in detail the warnings, in order that they may fear Allâh, or that it may cause them to have a lesson from it (or to have the honour for believing and acting on its teachings).

وَكَذَلِكَ أَنزَلْنَاهُ قُرْآنًا عَرَبِيًّا وَصَرَّفْنَا فِيهِ مِنَ الْوَعِيدِ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ أَوْ يُحْدِثُ لَهُمْ ذِكْرًا
Wakathalika anzalnahu qur-anan AAarabiyyan wasarrafna feehi mina alwaAAeedi laAAallahum yattaqoona aw yuhdithu lahum thikran

YUSUFALI: Thus have We sent this down – an arabic Qur’an – and explained therein in detail some of the warnings, in order that they may fear Allah, or that it may cause their remembrance (of Him).
PICKTHAL: Thus we have revealed it as a Lecture in Arabic, and have displayed therein certain threats, that peradventure they may keep from evil or that it may cause them to take heed.
SHAKIR: And thus have We sent it down an Arabic Quran, and have distinctly set forth therein of threats that they may guard (against evil) or that it may produce a reminder for them.
KHALIFA: We thus revealed it, an Arabic Quran, and we cited in it all kinds of prophecies, that they may be saved, or it may cause them to take heed.

১১৩। এভাবেই আমি আরবী ভাষায় কুর-আন প্রেরণ করেছি। এবং সেখানে বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেছি সতর্কবাণী যেনো, তারা আল্লাহকে ভয় পায় অথবা তা তাদের জন্য [আল্লাহ্‌কে ] স্মরণ করার কারণ হয় ২৬৩৮।

২৬৩৮। কোরাণ আরবী ভাষাতে অবতীর্ণ, এর উদ্দেশ্য হচ্ছে যে, আরবভাষী অজ্ঞ লোকেরাও যেনো এই ঐশী গ্রন্থের মূল বক্তব্যকে অনুধাবন করতে পারে, এবং বাণীকে অনুধাবনের মাধ্যমে ও প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় তার প্রতিফলনের দ্বারা সে সর্তক হতে পারে, উপকৃত হতে পারে। কোরাণকে আল্লাহ্‌ রসুলের [সা] অন্তরে ওহী বা অনুপ্রেরণার [ Inspiration] মাধ্যমে প্রেরণ করেন যা রসুলের [ সা ] মাতৃভাষা আরবীতে প্রকাশ পায়। এ যেনো এক প্রদীপ্ত প্রদীপ অগ্নি শিখা, যার আলো মূল আঁধার থেকে চর্তুদ্দিকে বিচ্ছুরিত হয়। আরব থেকে ইসলামের প্রচার শুরু হয় যা পরবর্তীতে ধীরে ধীরে সারা পৃথিবীকে আলোকিত করতে সক্ষম হবে। ইসলামের প্রচারের প্রথম কয়েক শতাব্দীতে এই বক্তব্যের সমর্থন মেলে। যদি আমরা কোরাণের দীপ্তিকে সঠিকভাবে ধারণ করতে পারি, তবে এ বিশ্বসভায় এ কথার সত্যতা আবার প্রমাণ হতে বাধ্য। পাপীদের জন্য এতে আছে সর্তকবাণী যেনো তারা অনুতাপের মাধ্যমে নিজেকে সংশোধনের চেষ্টা করে। পূণ্যাত্মাদের জন্য কোরাণ হচ্ছে বিশ্বাসের অঙ্গীকার যা আল্লাহ্‌র স্মরণ দ্বারা শক্তি লাভ করে ও শান্তি পায়।

উপদেশ : কোরাণকে বুঝে পড়তে হবে , সেই জন্য আরবীর সাথে সাথে কোরাণের অনুবাদ ও তফসীর পাঠের প্রয়োজন।

 

সত্যিকার অধীশ্বর আল্লাহ মহান। আপনার প্রতি আল্লাহর ওহী সম্পুর্ণ হওয়ার পূর্বে আপনি কোরআন গ্রহণের ব্যপারে তাড়াহুড়া করবেন না এবং বলুনঃ হে আমার পালনকর্তা, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন।
Then High above all be Allâh, the True King. And be not in haste (O Muhammad SAW) with the Qur’ân before its revelation is completed to you, and say: ”My Lord! Increase me in knowledge.”

فَتَعَالَى اللَّهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ وَلَا تَعْجَلْ بِالْقُرْآنِ مِن قَبْلِ أَن يُقْضَى إِلَيْكَ وَحْيُهُ وَقُل رَّبِّ زِدْنِي عِلْمًا
FataAAala Allahu almaliku alhaqqu wala taAAjal bialqur-ani min qabli an yuqda ilayka wahyuhu waqul rabbi zidnee AAilman

YUSUFALI: High above all is Allah, the King, the Truth! Be not in haste with the Qur’an before its revelation to thee is completed, but say, “O my Lord! advance me in knowledge.”
PICKTHAL: Then exalted be Allah, the True King! And hasten not (O Muhammad) with the Qur’an ere its revelation hath been perfected unto thee, and say: My Lord! Increase me in knowledge.
SHAKIR: Supremely exalted is therefore Allah, the King, the Truth, and do not make haste with the Quran before its revelation is made complete to you and say: O my Lord ! increase me in knowledge.
KHALIFA: Most Exalted is GOD, the only true King. Do not rush into uttering the Quran before it is revealed to you, and say, “My Lord, increase my knowledge.”

১১৪। আল্লাহ্‌ অতি মহান, প্রকৃত অধিপতি, শাশ্বত সত্য। তোমার প্রতি ওহী প্রেরণ সম্পূর্ণ হওয়ার পূর্বে , কুর-আন পাঠে তুমি ত্বরা করো না ২৬৩৯। অধিকন্তু বল, ” হে আমার প্রভু! আমাকে জ্ঞানে সমৃদ্ধ কর।”

২৬৩৯। পার্থিব সকল ঘটনা ও মানুষের সকল ইচ্ছা বা আশা-আকাঙ্খার উর্দ্ধে আল্লাহর অবস্থান। পার্থিব সকল কিছুকেই পরিবেষ্টন করে থাকে সর্বশক্তিমানের ইচ্ছা। বিশ্বব্রহ্মান্ডের সকল কিছুই তাঁর ইচ্ছার প্রকাশ মাত্র। সারা বিশ্ব ভূবন একই উদ্দেশ্যের প্রতি নিবেদিত, তিনি আদি ও অন্ত। আল্লাহ্‌ -ই হচ্ছেন একমাত্র সত্য , ধ্রুব সত্য, সম্পূর্ণ সত্য। বিশ্ব ভূবনে তাঁর আইন বা শাসন হচ্ছে সত্যের প্রকাশ মাত্র। তাঁর আইনের মাধ্যমে তাঁর ইচ্ছার প্রকাশ ঘটে যা পৃথিবীর জন্য ধ্রুব সত্য। পৃথিবীতে এই সত্যের প্রকাশ ঘটে ধীরে ধীরে, ধাপে ধাপে। কোরাণকেও সেই ভাবে আল্লাহ্‌ রসুলের [সা] অন্তরে ধীরে ধীরে ওহীর মাধ্যমে প্রেরণ করেছেন। ধীরে ধীরে , ধাপে ধাপে এই জন্য যে, প্রতিটি ধাপ পরিপূর্ণতা লাভের পরে পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হওয়ার জন্য। এই আয়াতে ” হে আমার প্রতিপালক! আমাকে জ্ঞানে সমৃদ্ধ কর, ” এই বাক্যটি দ্বারা এ বার্তার দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, কোরানের সম্পূর্ণ জ্ঞানকে একবারে কেউ অনুধাবনে সক্ষম নয়। এর জ্ঞান ধীরে ধীরে প্রতিদিনের চেষ্টায় ধাপে ধাপে ব্যক্তির অন্তরে বিকাশ লাভ করে পরিষ্ফুট হয়। কোরাণের জ্ঞান হচ্ছে সত্যের আলো, বিবেকের বিকাশ – হতে পারে তা ব্যক্তির জীবনে বা জাতির জীবনে। বিবেকের বিকাশই হচ্ছে সত্যের জ্ঞানকে আত্মার মাঝে ধারণের নিদর্শন। বিবেকবান ব্যক্তি অবশ্যই সত্য জ্ঞানকে নিজের অন্তরে ধারণ করার ক্ষমতা লাভ করেছেন। এ ক্ষমতা ধীরে ধীরে অর্জিত হয়। একটি জাতিও সত্য জ্ঞানের দ্বারা বিবেকবান জাতিরূপে পৃথিবীতে স্বীকৃতি লাভ করে। এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ্‌ আমাদের বলছেন যে, রসুলের [ সা ] মাঝে সত্যকে যেরূপ ধীরে ধীরে প্রকাশ করা হয়েছে, সকল মানুষই সেরূপ কোরানের জ্ঞানকে ধীরে ধীরে ধৈর্য্য , প্রচেষ্টার মাধ্যমে নিজের আত্মার মাঝে ধারণ করতে সক্ষম হবে। এ ব্যাপারে অধৈর্য্য হওয়ার কোনও কারণ নাই। আমাদের কর্তব্য হচ্ছে আমাদের একাগ্র চিত্তে আন্তরিক ভাবে মহান আল্লাহ্‌র দরবারে প্রার্থনা করতে হবে আমাদের জ্ঞানকে বৃদ্ধি সাধন করার জন্য। যে জ্ঞানের সমুদ্রের কোন শেষ নাই সীমা নাই। যা অসীম।

আমি ইতিপূর্বে আদমকে নির্দেশ দিয়েছিলাম। অতঃপর সে ভুলে গিয়েছিল এবং আমি তার মধ্যে দৃঢ়তা পাইনি।
And indeed We made a covenant with Adam before, but he forgot, and We found on his part no firm will-power.

وَلَقَدْ عَهِدْنَا إِلَى آدَمَ مِن قَبْلُ فَنَسِيَ وَلَمْ نَجِدْ لَهُ عَزْمًا
Walaqad AAahidna ila adama min qablu fanasiya walam najid lahu AAazman

YUSUFALI: We had already, beforehand, taken the covenant of Adam, but he forgot: and We found on his part no firm resolve.
PICKTHAL: And verily We made a covenant of old with Adam, but he forgot, and We found no constancy in him.
SHAKIR: And certainly We gave a commandment to Adam before, but he forgot; and We did not find in him any determination.
KHALIFA: We tested Adam in the past, but he forgot, and we found him indecisive.

১১৫। ইতিপূর্বে আমি তো আদমের অঙ্গীকার নিয়েছিলাম ২৬৪০। কিন্তু সে ভুলে গিয়েছিলো। আমি তো তাকে সংকল্পে দৃঢ় পাই নাই।

২৬৪০। আমাদের পূর্বেও আধ্যাত্মিক জগতে পতনের ইতিহাস বর্ণনার ক্ষেত্রে ফেরাউন ও সামিরীর উল্লেখ করা হয়েছে। ফেরাউনের আধ্যাত্মিক পতন ঘটেছিলো দাম্ভিকতা ও উদ্ধতপনার জন্য। সামিরীর পতন ঘটে তার দুষ্ট প্রকৃতির জন্য যে প্রকৃতি সকলের ক্ষতির চেষ্টা চালাতো। এই আয়াতে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে অশুভ শক্তির প্রতীক শয়তানের দিকে, যার দ্বারা হযরত আদম প্রলোভিত এবং প্রতারিত হন। এই আয়াতে হযরত আদমের উদাহরণের মাধ্যমে সমগ্র মানব জাতির বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরা হয়েছে। হযরত আদমকে শয়তান সম্বন্ধে সাবধান করা সত্বেও তিনি শয়তানের প্রলোভনের ফাঁদে পা রাখেন। ঠিক সেই একই বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় সমগ্র মানব জাতির মধ্যে। মানুষ জানে ” লোভে পাপ , পাপে মৃত্যু ” – শয়তান মানুষকে লোভের ফাঁদে ফেলে ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়। শয়তানের এই অশুভ শক্তি সম্বন্ধে মানবকূলকে সাবধান করা সত্ত্বেও মানুষ খুব কমই শয়তানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে। প্রথম সুযোগেই তারা শয়তানের শক্তির কাছে আত্মসমর্পন করে – ঠিক যেভাবে আমাদের আদি পিতা হযরত আদম করেছিলেন। সাধারণ মানুষের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা ” সংকল্পে দৃঢ় নয়।”

যখন আমি ফেরেশতাদেরকে বললামঃ তোমরা আদমকে সেজদা কর, তখন ইবলীস ব্যতীত সবাই সেজদা করল। সে অমান্য করল।
And (remember) when We said to the angels: ”Prostrate yourselves to Adam.” They prostrated (all) except Iblîs (Satan), who refused.

وَإِذْ قُلْنَا لِلْمَلَائِكَةِ اسْجُدُوا لِآدَمَ فَسَجَدُوا إِلَّا إِبْلِيسَ أَبَى
Wa-ith qulna lilmala-ikati osjudoo li-adama fasajadoo illa ibleesa aba

YUSUFALI: When We said to the angels, “Prostrate yourselves to Adam”, they prostrated themselves, but not Iblis: he refused.
PICKTHAL: And when We said unto the angels: Fall prostrate before Adam, they fell prostrate (all) save Iblis; he refused.
SHAKIR: And when We said to the angels: Make obeisance to Adam, they made obeisance, but Iblis (did it not); he refused.
KHALIFA: Recall that we said to the angels, “Fall prostrate before Adam.” They fell prostrate, except Satan; he refused.

রুকু – ৭

১১৬। যখন আমি ফেরেশতাদের বলেছিলাম,” আদমকে সেজ্‌দা কর।” তারা [ সকলেই ] সেজ্‌দা করলো , কিন্তু ইব্‌লীস করলো না। সে অস্বীকার করলো।

১১৭। অতঃপর আমি বললাম, ” হে আদম ! অবশ্যই সে তোমার ও তোমার স্ত্রীর শত্রু। সুতারাং তোমাদের জান্নাত থেকে বের করে দিতে তাকে [ প্রশয় ] দিও না। তাহলে তোমরা দুঃখ কষ্টের মাঝে নিপতিত হবে ২৬৪১।

২৬৪১। উপরের টিকাতে দ্রষ্টব্য। হযরত আদমের কাহিনীর মাধ্যমে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে মানুষের স্বাভাবিক দুর্বলতার প্রতি। সাধারণ মানুষ লোভের বশবর্তী হয়ে খুব সহজেই শয়তানের খপ্পরে নিজেকে সমর্পন করে। যদিও তাঁকে পূর্বে সাবধান করা হয়ে থাকে কিন্তু লোভ-লালসার সর্বগ্রাসী ক্ষুধা তাকে সঠিক পথে চলতে বাঁধার সৃষ্টি করে। সে শয়তানের নিকট আত্মসমর্পন করে।

অতঃপর আমি বললামঃ হে আদম, এ তোমার ও তোমার স্ত্রীর শত্রু, সুতরাং সে যেন বের করে না দেয় তোমাদের জান্নাত থেকে। তাহলে তোমরা কষ্টে পতিত হবে।
Then We said: ”O Adam! Verily, this is an enemy to you and to your wife. So let him not get you both out of Paradise, so that you be distressed in misery.

فَقُلْنَا يَا آدَمُ إِنَّ هَذَا عَدُوٌّ لَّكَ وَلِزَوْجِكَ فَلَا يُخْرِجَنَّكُمَا مِنَ الْجَنَّةِ فَتَشْقَى
Faqulna ya adamu inna hatha AAaduwwun laka walizawjika fala yukhrijannakuma mina aljannati fatashqa

YUSUFALI: Then We said: “O Adam! verily, this is an enemy to thee and thy wife: so let him not get you both out of the Garden, so that thou art landed in misery.
PICKTHAL: Therefor we said: O Adam! This is an enemy unto thee and unto thy wife, so let him not drive you both out of the Garden so that thou come to toil.
SHAKIR: So We said: O Adam! This is an enemy to you and to your wife; therefore let him not drive you both forth from the garden so that you should be unhappy;
KHALIFA: We then said, “O Adam, this is an enemy of you and your wife. Do not let him evict you from Paradise, lest you become miserable.

রুকু – ৭

১১৬। যখন আমি ফেরেশতাদের বলেছিলাম,” আদমকে সেজ্‌দা কর।” তারা [ সকলেই ] সেজ্‌দা করলো , কিন্তু ইব্‌লীস করলো না। সে অস্বীকার করলো।

১১৭। অতঃপর আমি বললাম, ” হে আদম ! অবশ্যই সে তোমার ও তোমার স্ত্রীর শত্রু। সুতারাং তোমাদের জান্নাত থেকে বের করে দিতে তাকে [ প্রশয় ] দিও না। তাহলে তোমরা দুঃখ কষ্টের মাঝে নিপতিত হবে ২৬৪১।

২৬৪১। উপরের টিকাতে দ্রষ্টব্য। হযরত আদমের কাহিনীর মাধ্যমে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে মানুষের স্বাভাবিক দুর্বলতার প্রতি। সাধারণ মানুষ লোভের বশবর্তী হয়ে খুব সহজেই শয়তানের খপ্পরে নিজেকে সমর্পন করে। যদিও তাঁকে পূর্বে সাবধান করা হয়ে থাকে কিন্তু লোভ-লালসার সর্বগ্রাসী ক্ষুধা তাকে সঠিক পথে চলতে বাঁধার সৃষ্টি করে। সে শয়তানের নিকট আত্মসমর্পন করে।

তোমাকে এই দেয়া হল যে, তুমি এতে ক্ষুধার্ত হবে না এবং বস্ত্রহীণ হবে না।
Verily, you have (a promise from Us) that you will never be hungry therein nor naked.

إِنَّ لَكَ أَلَّا تَجُوعَ فِيهَا وَلَا تَعْرَى
Inna laka alla tajooAAa feeha wala taAAra

YUSUFALI: “There is therein (enough provision) for thee not to go hungry nor to go naked,
PICKTHAL: It is (vouchsafed) unto thee that thou hungerest not therein nor art naked,
SHAKIR: Surely it is (ordained) for you that you shall not be hungry therein nor bare of clothing;
KHALIFA: “You are guaranteed never to hunger therein, nor go unsheltered.

১১৮। ” তুমি যাতে ক্ষুধার্ত না হও সে জন্য সেখানে [ প্রচুর খাদ্য সম্ভার ] থাকবে এবং তোমরা [ সেখানে ] নগ্নও থাকবে না ২৬৪২।

১১৯। ” সেখানে তৃষ্ণার্ত হবে না বা রৌদ্র ক্লিষ্টও হবে না। ”
২৬৪২। এই আয়াতের মাধ্যমে মনুষ্য চরিত্রের এক বিশেষ দিককে উম্মোচন করা হয়েছে হযরত আদমের উদাহরণের মাধ্যমে। হযরত আদমকে আল্লাহ্‌ মানুষের মৌলিক যে চাহিদা, খাদ্য, পানীয়, এবং আরামদায়ক বাসস্থানের সুবন্দোবস্ত করে ছিলেন এবং সেই সাথে সাবধান করে দিলেন যে শয়তান তার আজন্ম শত্রু। তার ফাঁদে যেনো হযরত আদম পা না দেন। কিন্তু হযরত আদম আল্লাহ্‌র দেয়া সকল নেয়ামত ভোগ করা সত্বেও, জীবন ধারণের জন্য কোন মৌলিক অভাববোধ না থাকা সত্ত্বেও অলীক ও অভূতপূর্ব জিনিষ পাওয়ার আশায় শয়তানের ফাঁদে পা দেন , এখানে শয়তানের ফাঁদ ছিলো ” লোভ”। সমাজে যারা প্রতিষ্ঠিত ও ঐশ্বর্যবান। তাদের আরাম আয়েশের কোনও অভাব নাই। তবুও প্রতি নিয়ত এসব মানব সন্তান লোভের ফাঁদে পা দেয়। স্বার্থপরতা তাকে আরও লোভী করে তোলে। আরও পাওয়ার আশায় সে আকণ্ঠ পাপে ডুবে যায়। এ কথা শুধু বিত্তবান ও প্রভাবশালীদের জন্য প্রযোজ্য নয়। এ কথা প্রযোজ্য সকল মনুষ্য সমাজের জন্য। সৃষ্টির আদিলগ্ন থেকে অদ্যাবধি ধনী, গরীব সকলেই শয়তানের লোভের ফাঁদে বন্দী।

উপদেশ : লোভ মানুষকে ধ্বংস করে।

এবং তোমার পিপাসাও হবে না এবং রৌদ্রেও কষ্ট পাবে না।
And you (will) suffer not from thirst therein nor from the sun’s heat.

وَأَنَّكَ لَا تَظْمَأُ فِيهَا وَلَا تَضْحَى
Waannaka la tathmao feeha wala tadha

YUSUFALI: “Nor to suffer from thirst, nor from the sun’s heat.”
PICKTHAL: And that thou thirstest not therein nor art exposed to the sun’s heat.
SHAKIR: And that you shall not be thirsty therein nor shall you feel the heat of the sun.
KHALIFA: “Nor will you thirst therein, nor suffer from any heat.”

১১৮। ” তুমি যাতে ক্ষুধার্ত না হও সে জন্য সেখানে [ প্রচুর খাদ্য সম্ভার ] থাকবে এবং তোমরা [ সেখানে ] নগ্নও থাকবে না ২৬৪২।

১১৯। ” সেখানে তৃষ্ণার্ত হবে না বা রৌদ্র ক্লিষ্টও হবে না। ”
২৬৪২। এই আয়াতের মাধ্যমে মনুষ্য চরিত্রের এক বিশেষ দিককে উম্মোচন করা হয়েছে হযরত আদমের উদাহরণের মাধ্যমে। হযরত আদমকে আল্লাহ্‌ মানুষের মৌলিক যে চাহিদা, খাদ্য, পানীয়, এবং আরামদায়ক বাসস্থানের সুবন্দোবস্ত করে ছিলেন এবং সেই সাথে সাবধান করে দিলেন যে শয়তান তার আজন্ম শত্রু। তার ফাঁদে যেনো হযরত আদম পা না দেন। কিন্তু হযরত আদম আল্লাহ্‌র দেয়া সকল নেয়ামত ভোগ করা সত্বেও, জীবন ধারণের জন্য কোন মৌলিক অভাববোধ না থাকা সত্ত্বেও অলীক ও অভূতপূর্ব জিনিষ পাওয়ার আশায় শয়তানের ফাঁদে পা দেন , এখানে শয়তানের ফাঁদ ছিলো ” লোভ”। সমাজে যারা প্রতিষ্ঠিত ও ঐশ্বর্যবান। তাদের আরাম আয়েশের কোনও অভাব নাই। তবুও প্রতি নিয়ত এসব মানব সন্তান লোভের ফাঁদে পা দেয়। স্বার্থপরতা তাকে আরও লোভী করে তোলে। আরও পাওয়ার আশায় সে আকণ্ঠ পাপে ডুবে যায়। এ কথা শুধু বিত্তবান ও প্রভাবশালীদের জন্য প্রযোজ্য নয়। এ কথা প্রযোজ্য সকল মনুষ্য সমাজের জন্য। সৃষ্টির আদিলগ্ন থেকে অদ্যাবধি ধনী, গরীব সকলেই শয়তানের লোভের ফাঁদে বন্দী।

উপদেশ : লোভ মানুষকে ধ্বংস করে।

অতঃপর শয়তান তাকে কুমন্ত্রনা দিল, বললঃ হে আদম, আমি কি তোমাকে বলে দিব অনন্তকাল জীবিত থাকার বৃক্ষের কথা এবং অবিনশ্বর রাজত্বের কথা?
Then Shaitân (Satan) whispered to him, saying : ”O Adam! Shall I lead you to the Tree of Eternity and to a kingdom that will never waste away?”

فَوَسْوَسَ إِلَيْهِ الشَّيْطَانُ قَالَ يَا آدَمُ هَلْ أَدُلُّكَ عَلَى شَجَرَةِ الْخُلْدِ وَمُلْكٍ لَّا يَبْلَى
Fawaswasa ilayhi alshshaytanu qala ya adamu hal adulluka AAala shajarati alkhuldi wamulkin la yabla

YUSUFALI: But Satan whispered evil to him: he said, “O Adam! shall I lead thee to the Tree of Eternity and to a kingdom that never decays?”
PICKTHAL: But the devil whispered to him, saying: O Adam! Shall I show thee the tree of immortality and power that wasteth not away?
SHAKIR: But the Shaitan made an evil suggestion to him; he said: O Adam! Shall I guide you to the tree of immortality and a kingdom which decays not?
KHALIFA: But the devil whispered to him, saying, “O Adam, let me show you the tree of eternity and unending kingship.”

১২০। কিন্তু শয়তান তাকে কুমন্ত্রণা দিল, ” হে আদম! আমি কি তোমাকে অনন্ত জীবন দানকারী বৃক্ষের কথা ও এমন রাজ্যের কথা বলবো যা কখনও ক্ষয় হয় না” ২৬৪৩।

২৬৪৩। হযরত আদমের কাছে শয়তানের প্রতারণামূলক প্রস্তাব ছিলো সুক্ষ কৌশলে ভরা। সচারচর যেমনটি হয়ে থাকে। যদিও শয়তানের কুমন্ত্রণা ছিলো মিথ্যার বেসাতি কিন্তু আপাতঃদৃষ্টিতে তা ছিলো ন্যায়সঙ্গত ও লোভনীয়। মিথ্যা এই কারণে যে ১) শয়তানের কুমন্ত্রণায় হযরত আদম বিভ্রান্ত হন যে বেহেশতের বাগানের সুখ শান্তি চিরস্থায়ী নয় তা ক্ষণস্থায়ী, পৃথিবীর জীবনের ন্যায়। সুতারাং হযরত আদম অনন্ত সুখের ঠিকানার লোভে শয়তানের ফাঁদে পা দেন। ২) তাদের অক্ষয় রাজ্যপাটের প্রলোভন দেখানো হলো , রাজ্যপাট অর্থাৎ অসীম ক্ষমতা। শয়তান আদমকে দুটো জিনিষের লোভ দেখিয়েছিলো প্রথমতঃ অনন্ত অসীম সুখের জীবন ও দ্বিতীয়তঃ অসীম ক্ষমতা। সৃষ্টির সেই আদি থেকে অদ্যাবধি মানুষ জাগতিক সুখ ও ক্ষমতার পিছনে ছুটে বেড়াচ্ছে। কিন্তু এ দুটো তার জীবনে স্থায়ী সুখের পরিবর্তে দুঃখের পরিমাণ বাড়ায়। বিপথে চালনার জন্য এটা শয়তানের এক ধরনের টোপ বৈকি, কারণ ১) আদমকে আল্লাহ্‌ অনন্ত সুখের জীবনের কথা কিছুই বলেন নাই। কারণ তারা অনন্ত জীবন সম্বন্ধে কিছুই জানতেন না, তবুও তারা লোভের ফাঁদে পা দেন। ২) খ্যাতির আকাঙ্খা ও অন্যের প্রতি আধিপত্যের মনোভাব থেকে ক্ষমতার মোহ জন্মায়। এই মোহের মনোমুগ্ধকর আকর্ষণ ব্যক্তিকে ক্ষমতার জন্য বিপথে চালিত করতে প্রয়াস পায়।

উপদেশ : সৃষ্টির সেই আদি থেকে অদ্যাবধি মানুষ শয়তানের সৃষ্ট এই দ্বিবিধ ফাঁদে ধরা পড়ে নিজের সর্বনাশ নিজে ডেকে আনে।

 

অতঃপর তারা উভয়েই এর ফল ভক্ষণ করল, তখন তাদের সামনে তাদের লজ্জাস্থান খুলে গেল এবং তারা জান্নাতের বৃক্ষ-পত্র দ্বারা নিজেদেরকে আবৃত করতে শুরু করল। আদম তার পালনকর্তার অবাধ্যতা করল, ফলে সে পথ ভ্রষ্ঠ হয়ে গেল।
Then they both ate of the tree, and so their private parts appeared to them, and they began to stick on themselves the leaves from Paradise for their covering. Thus did Adam disobey his Lord, so he went astray.

فَأَكَلَا مِنْهَا فَبَدَتْ لَهُمَا سَوْآتُهُمَا وَطَفِقَا يَخْصِفَانِ عَلَيْهِمَا مِن وَرَقِ الْجَنَّةِ وَعَصَى آدَمُ رَبَّهُ فَغَوَى
Faakala minha fabadat lahuma saw-atuhuma watafiqa yakhsifani AAalayhima min waraqi aljannati waAAasa adamu rabbahu faghawa

YUSUFALI: In the result, they both ate of the tree, and so their nakedness appeared to them: they began to sew together, for their covering, leaves from the Garden: thus did Adam disobey his Lord, and allow himself to be seduced.
PICKTHAL: Then they twain ate thereof, so that their shame became apparent unto them, and they began to hide by heaping on themselves some of the leaves of the Garden. And Adam disobeyed his Lord, so went astray.
SHAKIR: Then they both ate of it, so their evil inclinations became manifest to them, and they both began to cover themselves with leaves of the garden, and Adam disobeyed his Lord, so his life became evil (to him).
KHALIFA: They ate from it, whereupon their bodies became visible to them, and they tried to cover themselves with the leaves of Paradise. Adam thus disobeyed his Lord, and fell.

১২১। ফলে তারা উভয়েই বৃক্ষ থেকে [ ফল ] ভক্ষণ করলো। সুতারাং তাদের নিকট তাদের নগ্নতা প্রকাশ পেল ২৬৪৪। তারা নিজেদের আবৃত করার জন্য উভয়েই বেহেশতের বাগানের বৃক্ষপত্র সেলাই করতে আরম্ভ করলো। এ ভাবেই আদম তার প্রভুকে অমান্য করেছিলো এবং নিজেকে পাপ পথে প্রলুব্ধ করেছিলো ২৬৪৫।

২৬৪৪। ” তারা উভয়েই বৃক্ষ থেকে ভক্ষণ করলো ” – অর্থাৎ গাছের ফল ভক্ষণ করলেন। এই ফল ভক্ষণের পূর্বে তাদের পাপ কাজ সম্বন্ধে কোনরূপ ধারণাই ছিলো না। তাঁরা ছিলেন নিষ্পাপ। এখন আল্লাহ্‌র আদেশ অমান্য করার অপরাধ তাদের আত্মাকে গ্রাস করে ফেললো। তাঁদের আত্মা কলঙ্কিত হয়ে গেলো। ” নগ্নতা প্রকাশ পেল ” অর্থাৎ তাঁদের পোষাক ছিন্নভিন্ন হয় গেলো এবং নগ্নতা প্রকাশ পেলো। আক্ষরিক অর্থে তাদের আদিম রীপু যৌনতার প্রকাশ ঘটে যা এতদিন তাদের নিকট অজ্ঞাত ছিলো।

“নগ্নতা প্রকাশ পেল ” বাক্যটি যদি আলঙ্কারিক বা উপমার্থে ব্যবহার করি তবে এর অর্থ দাঁড়াবে আল্লাহ্‌র হুকুম অস্বীকার করার ফলে তাদের পূণ্যের আবরণ বা পোষাক ছিড়ে যায় বা বেহেশতের পোষাক ছিনিয়ে নেয়া হয়। আত্মা অপবিত্র হয়ে পড়ে এবং অপবিত্র আত্মার বিভৎস রূপ বা পাপের বিভিন্ন রূপ তাদের সামনে উলঙ্গভাবে প্রকাশ লাভ করে। তারা বৃক্ষপত্র দ্বারা নিজেদের আবৃত করতে লাগল। আক্ষরিক অর্থে এখানে মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতাকেই বর্ণনা করা হয়েছে। মানুষ সর্বদা নিজের পাপের কাজকে সর্ব সমক্ষে প্রকাশ না করে গোপন রাখতে ব্যস্ত থাকে। হযরত আদমও সেই চেষ্টাই করেছিলেন।

২৬৪৫। হযরত আদম আমাদের আদি পিতা। আল্লাহ্‌ তাকে ” সীমিত আকারে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি ” দান করেছিলেন ভালোকে গ্রহণ করা ও মন্দকে বর্জন করার পূর্ণ স্বাধীনতা তাঁর ছিলো। কিন্তু তিনি তার এই স্বাধীনতার অপব্যবহার করেন। এই অপব্যবহারের ফলে তিনি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যেতেন, যদি না আল্লাহ্‌র রহমত তাকে উদ্ধার করতো। আল্লাহ্‌ তাঁর অনুতাপ গ্রহণ করেন এবং আল্লাহ্‌ তাঁকে বিশেষ নেয়ামতে ধন্য করেন। তাঁকে মনোনীত করেন। দেখুন পরের আয়াতে।

এরপর তার পালনকর্তা তাকে মনোনীত করলেন, তার প্রতি মনোযোগী হলেন এবং তাকে সুপথে আনয়ন করলেন।
Then his Lord chose him, and turned to him with forgiveness, and gave him guidance.

ثُمَّ اجْتَبَاهُ رَبُّهُ فَتَابَ عَلَيْهِ وَهَدَى
Thumma ijtabahu rabbuhu fataba AAalayhi wahada

YUSUFALI: But his Lord chose him (for His Grace): He turned to him, and gave him Guidance.
PICKTHAL: Then his Lord chose him, and relented toward him, and guided him.
SHAKIR: Then his Lord chose him, so He turned to him and guided (him).
KHALIFA: Subsequently, his Lord chose him, redeemed him, and guided him.

১২২। কিন্তু তাঁর প্রভু [ অনুগ্রহের জন্য ] তাকে মনোনীত করেছিলেন। তিনি তার দিকে ফিরলেন এবং তাঁকে পথ নির্দ্দেশ দান করলেন।

১২৩। তিনি বলেছিলেন, ” তোমরা উভয়েই একই সঙ্গে জান্নাত থেকে নেমে যাও; তোমরা পরস্পর পরস্পরের শত্রু ২৬৪৬। যদি আমার পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট পথ নির্দ্দেশ আসে, যে আমার পথ নির্দ্দেশ অনুসরণ করবে নিশ্চয়ই সে পথ হারাবে না , বা দুঃখ কষ্ট পাবে না ২৬৪৭।

২৬৪৬। “Ihbita” উভয়ে নামিয়া যাও। এখানে উভয়ে অর্থাৎ আদম ও হাওয়া যারা আমাদের পূর্বপুরুষ ছিলেন। অনেকের মতে উভয় অর্থ আদম ও শয়তান। [ ২ : ৩৮ ] আয়াতে “Ihbitu” হচ্ছে বহুবচন যা ব্যবহার করা হয়েছে শয়তান ও মানুষ সকলের জন্য। এখানে মানুষ অর্থ সকল মনুষ্য সম্প্রদায়। কিন্তু শয়তান তো পূর্বেই বেহেশত থেকে বিতাড়িত হয়েছে। সুতারাং বেহেশতে শুধুমাত্র দুজনেরই থাকার অধিকার ছিলো। হযরত আদম ও বিবি হাওয়া। তাহলে এখানে আদম ও বিবি হাওয়াকে সম্বোধন করা হয়েছে। ইংরেজী অনুবাদ হয়েছে : He said, “get ye down,/ Both of you all together,/ From the garden, with enmity/ One to another” একই সঙ্গে “সকলে” শব্দটি দ্বারা শয়তানকে অন্তর্গত করা হয়েছে। এবং ” পরস্পরের শত্রু ” বাক্যটি দ্বারা মানুষ ও শয়তানের মাঝে অনন্তকাল স্থায়ী শত্রুতাকে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ মানুষের সুপ্রবৃত্তির ও কুপ্রবৃত্তির সংগ্রামকে বোঝানো হয়েছে।

২৬৪৭। যে আল্লাহ্‌র নির্দ্দেশ অনুসরণ করবে, সে বিপথগামী হবে না বা পাপে আসক্ত হবে না, এবং পরিণামে হতাশা ও দুঃখ কষ্ট থেকে রক্ষা পাবে। আয়াতে [ ২ : ৩৮ ] সম্বোধন করা হয়েছে বহুবচনে, ” যাহারা আমার সৎ পথের নির্দ্দেশ অনুসরণ করবে”। এই আয়াতে একবচনে, ” যে আমার পথ অনুসরণ করিবে।” একবচনে সম্বোধন করা হলেও এর বক্তব্য সকলের জন্যই প্রযোজ্য।

তিনি বললেনঃ তোমরা উভয়েই এখান থেকে এক সঙ্গে নেমে যাও। তোমরা একে অপরের শত্রু। এরপর যদি আমার পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে হেদায়েত আসে, তখন যে আমার বর্ণিত পথ অনুসরণ করবে, সে পথভ্রষ্ঠ হবে না এবং কষ্টে পতিত হবে না।
(Allâh) said:”Get you down (from the Paradise to the earth), both of you, together, some of you are an enemy to some others. Then if there comes to you guidance from Me, then whoever follows My Guidance shall neither go astray, nor fall into distress and misery.

قَالَ اهْبِطَا مِنْهَا جَمِيعًا بَعْضُكُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ فَإِمَّا يَأْتِيَنَّكُم مِّنِّي هُدًى فَمَنِ اتَّبَعَ هُدَايَ فَلَا يَضِلُّ وَلَا يَشْقَى
Qala ihbita minha jameeAAan baAAdukum libaAAdin AAaduwwun fa-imma ya/tiyannakum minnee hudan famani ittabaAAa hudaya fala yadillu wala yashqa

YUSUFALI: He said: “Get ye down, both of you,- all together, from the Garden, with enmity one to another: but if, as is sure, there comes to you Guidance from Me, whosoever follows My Guidance, will not lose his way, nor fall into misery.
PICKTHAL: He said: Go down hence, both of you, one of you a foe unto the other. But when there come unto you from Me a guidance, then whoso followeth My guidance, he will not go astray nor come to grief.
SHAKIR: He said: Get forth you two therefrom, all (of you), one of you (is) enemy to another. So there will surely come to you guidance from Me, then whoever follows My guidance, he shall not go astray nor be unhappy;
KHALIFA: He said, “Go down therefrom, all of you. You are enemies of one another. When guidance comes to you from Me, anyone who follows My guidance will not go astray, nor suffer any misery.

১২২। কিন্তু তাঁর প্রভু [ অনুগ্রহের জন্য ] তাকে মনোনীত করেছিলেন। তিনি তার দিকে ফিরলেন এবং তাঁকে পথ নির্দ্দেশ দান করলেন।

১২৩। তিনি বলেছিলেন, ” তোমরা উভয়েই একই সঙ্গে জান্নাত থেকে নেমে যাও; তোমরা পরস্পর পরস্পরের শত্রু ২৬৪৬। যদি আমার পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট পথ নির্দ্দেশ আসে, যে আমার পথ নির্দ্দেশ অনুসরণ করবে নিশ্চয়ই সে পথ হারাবে না , বা দুঃখ কষ্ট পাবে না ২৬৪৭।

২৬৪৬। “Ihbita” উভয়ে নামিয়া যাও। এখানে উভয়ে অর্থাৎ আদম ও হাওয়া যারা আমাদের পূর্বপুরুষ ছিলেন। অনেকের মতে উভয় অর্থ আদম ও শয়তান। [ ২ : ৩৮ ] আয়াতে “Ihbitu” হচ্ছে বহুবচন যা ব্যবহার করা হয়েছে শয়তান ও মানুষ সকলের জন্য। এখানে মানুষ অর্থ সকল মনুষ্য সম্প্রদায়। কিন্তু শয়তান তো পূর্বেই বেহেশত থেকে বিতাড়িত হয়েছে। সুতারাং বেহেশতে শুধুমাত্র দুজনেরই থাকার অধিকার ছিলো। হযরত আদম ও বিবি হাওয়া। তাহলে এখানে আদম ও বিবি হাওয়াকে সম্বোধন করা হয়েছে। ইংরেজী অনুবাদ হয়েছে : He said, “get ye down,/ Both of you all together,/ From the garden, with enmity/ One to another” একই সঙ্গে “সকলে” শব্দটি দ্বারা শয়তানকে অন্তর্গত করা হয়েছে। এবং ” পরস্পরের শত্রু ” বাক্যটি দ্বারা মানুষ ও শয়তানের মাঝে অনন্তকাল স্থায়ী শত্রুতাকে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ মানুষের সুপ্রবৃত্তির ও কুপ্রবৃত্তির সংগ্রামকে বোঝানো হয়েছে।

২৬৪৭। যে আল্লাহ্‌র নির্দ্দেশ অনুসরণ করবে, সে বিপথগামী হবে না বা পাপে আসক্ত হবে না, এবং পরিণামে হতাশা ও দুঃখ কষ্ট থেকে রক্ষা পাবে। আয়াতে [ ২ : ৩৮ ] সম্বোধন করা হয়েছে বহুবচনে, ” যাহারা আমার সৎ পথের নির্দ্দেশ অনুসরণ করবে”। এই আয়াতে একবচনে, ” যে আমার পথ অনুসরণ করিবে।” একবচনে সম্বোধন করা হলেও এর বক্তব্য সকলের জন্যই প্রযোজ্য।

এবং যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কেয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব।
”But whosoever turns away from My Reminder (i.e. neither believes in this Qur’ân nor acts on its orders, etc.) verily, for him is a life of hardship, and We shall raise him up blind on the Day of Resurrection.”

وَمَنْ أَعْرَضَ عَن ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنكًا وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَى
Waman aAArada AAan thikree fa-inna lahu maAAeeshatan dankan wanahshuruhu yawma alqiyamati aAAman

YUSUFALI: “But whosoever turns away from My Message, verily for him is a life narrowed down, and We shall raise him up blind on the Day of Judgment.”
PICKTHAL: But he who turneth away from remembrance of Me, his will be a narrow life, and I shall bring him blind to the assembly on the Day of Resurrection.
SHAKIR: And whoever turns away from My reminder, his shall be a straitened life, and We will raise him on the day of resurrection, blind.
KHALIFA: “As for the one who disregards My message, he will have a miserable life, and we resurrect him, on the Day of Resurrection, blind.”

১২৪। কিন্তু যে আমার বাণী থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, অবশ্যই তার জন্য জীবন হবে সংকুচিত এবং শেষ বিচারের দিনে আমি তাকে উত্থিত করবো অন্ধ অবস্থায় ২৬৪৮। ২৬৪৮-ক

২৬৪৮। পূর্বের আয়াত [ ২ : ৩৯ ] এ সাধারণভাবে বর্ণনা করা হয়েছে , আল্লাহ্‌র নির্দ্দেশসমূহ অমান্য করার ফল। এই আয়াতে ব্যক্তিগত ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে আল্লাহ্‌র নির্দ্দেশ অমান্য করার ফলাফল। ” জীবন যাপন সংকুচিত ” হওয়া এবং ” উত্থিত করিব অন্ধ অবস্থায় ” বাক্যগুলি তাৎপর্যপূর্ণ। ” জীবিকার সঙ্কীর্ণতার” অর্থ যে, তাদের কাছ থেকে অল্পে তুষ্টির গুণটি ছিনিয়ে নেয়া হবে। অল্পে তুষ্টি লাভ করার ক্ষমতা আল্লাহ্‌র বিশেষ নেয়ামত বান্দার জন্য। যার এই গুণ নাই সে পৃথিবীর সমস্ত সম্পদ কুক্ষিগত করার পরেও থাকবে অতৃপ্ত। কারণ তার মাঝে সাংসারিক লোভ লালসার বৃদ্ধি পাবে আগুনের ন্যায়। তাদের আত্মার মাঝে লোভ লালসার আগুন বৃদ্ধি করা হবে। এর ফলে তাদের যত অর্থ সম্পদই সঞ্চিত হোক না কেন; আন্তরিক শান্তি তাদের ভাগ্যে জুটবে না। সদাসর্বদা সম্পদ বৃদ্ধি করার চিন্তা, রক্ষা করার চিন্তা এবং ক্ষতির আশঙ্কা তাদের অস্থির করে রাখবে। ফলে জাগতিক সুখের সামগ্রী প্রচুর থাকা সত্ত্বেও শান্তি তাদের ভাগ্যে জোটে না। কারণ তাদের উপরে আল্লাহ্‌র রহমত অনুপস্থিত। সত্যিকারের অভাব না থাকা সত্বেও তাদের আত্মার মাঝে তীব্র অভাব বোধ বিরাজ করবে। এই বাক্যটির আর একটি অর্থ হচ্ছে ব্যক্তি বা জাতি যখন আল্লাহ্‌র নির্দ্দেশিত পথকে পরিহার করে তখন সেই ব্যক্তি বা জাতির উপর থেকে আল্লাহ্‌র রহমত তুলে নেয়া হয়- ফলে বিশ্ব সভায় তার ভাগ্যে জোটে লাঞ্ছনা ও গঞ্জনা। এর বিশদ ব্যাখ্যা হচ্ছে ব্যক্তিগত জীবনে বা জাতীয় জীবনে যখন কেউ আল্লাহ্‌র নির্দ্দেশিত পথ অর্থাৎ সৎ পথকে ত্যাগ করে অসৎ পথ অবলম্বন করে,তার শেষ পরিণতি কখনও ভালো হবে না। অসৎ পথে অর্জিত সম্পদ ব্যক্তির জীবনে স্থায়ী সাফল্য বয়ে আনতে পারে না। ঠিক সেই একই ভাবে যাদের জাতীয় জীবনে মিথ্যা, প্রতারণা, অন্যায় বিরাজ করে [ যেমন বাংলাদেশে ] সে জাতি কখনও বিশ্ব সভায় স্থান পেতে পারে না। তাদের জীবিকাকে আল্লাহ্‌ সংকুচিত করে দেবেন। আল্লাহ্‌র দেয়া প্রাকৃতিক সম্পদ থাকলেও জাতীয় জীবনে তারা সে সম্পদকে ধরে রাখতে সক্ষম হবে না। প্রাচুর্যের পরিবর্তে জাতীয় জীবনে তাদের জীবনোপকরণ হবে সংকুচিত। একমাত্র ন্যায় ও সত্যের পথেই প্রাচুর্য অর্জন করা ও প্রাচুর্য ধরে রাখা সম্ভব।

২৬৪৮ -ক। “উত্থিত করিব অন্ধ অবস্থায়” – এই বাক্যটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। যারা শুধুমাত্র জাগতিক বিষয়বস্তুর প্রতি তাদের সর্ব সত্তাকে নিয়োজিত করে; পার্থিব সম্পদ ও ক্ষমতার লোভে যারা আল্লাহ্‌র নির্দ্দেশিত ন্যায় ও সত্য পথকে পরিত্যাগ করে, তাদের মানসিক অবস্থাকে এখানে উপরের বাক্যটির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। ন্যায় – অন্যায় , ভালো-মন্দ, সত্য – মিথ্যার মধ্যে যারা ভেদাভেদ না করে শুধুমাত্র জাগতিক বিষয়ের প্রতি তাদের সর্ব আকর্ষণ , চিন্তা ও ধ্যান ধারণাকে নিয়োজিত করে,তারা জীবনের প্রকৃত রূপকে অনুধাবনে অক্ষম। অন্ধ ব্যক্তি যেমন স্পর্শাতীত কোনও জিনিষই অনুধাবনে সক্ষম নয় এসব ব্যক্তিরা সেরূপ জীবনের প্রকৃত স্বরূপকে অনুধাবনে হবে অক্ষম। এরা ন্যায়কে অন্যায় থেকে, ভালোকে মন্দ থেকে , সত্যকে মিথ্যা থেকে , পূণ্যকে পাপ থেকে পার্থক্য করতে পারবে না। মনুষ্য জন্মের সার্থকতাই হচ্ছে তার বিবেক- যা প্রাণীকুলের মধ্যে অনুপস্থিত। এসব জাগতিক বিষয়বুদ্ধি সম্পন্ন লোক তাদের কর্মের ফলে, নিজস্ব বিবেকের অস্তিত্বকে ধ্বংস করে ফেলে। বিবেকহীন লোক ঐ সব অন্ধ ব্যক্তির ন্যায় যারা তাদের চারিপার্শ্বের পৃথিবীর প্রকৃত দৃশ্যকে অনুধাবন করতে পারে না। এরা অন্ধ স্বরূপ। বিবেক বিহীন লোক প্রকৃত সত্যকে অনুধাবনে ব্যর্থ। পৃথিবীতেও তাদের এই অবস্থা থাকবে, মৃত্যুর পরেও তাদের সেই অবস্থায় পুণরুত্থিত করা হবে। কারণ মৃত্যু তো আত্মাকে ধ্বংস করে না। আত্মা শুধুমাত্র তার বাহন এই নশ্বর দেহকে ত্যাগ করে অনন্ত লোকে যাত্রা করে। মৃত্যু হচ্ছে জীবনের ধারাবাহিকতার আর এক রূপ। আত্মা তার জাগতিক সকল অভিজ্ঞতাই পরলোকে বহন করে নিয়ে যায়। বিবেক হচ্ছে অন্তর্দৃষ্টি বা আত্মার চোখ, যে ব্যক্তি এই পৃথিবীতে বিবেকহীন বা আত্মার চক্ষুহীন, সে সেই ভাবেই তার পরলোকের যাত্রা শুরু করবে।

সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা আমাকে কেন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করলেন? আমি তো চক্ষুমান ছিলাম।
He will say:”O my Lord! Why have you raised me up blind, while I had sight (before).”

قَالَ رَبِّ لِمَ حَشَرْتَنِي أَعْمَى وَقَدْ كُنتُ بَصِيرًا
Qala rabbi lima hashartanee aAAma waqad kuntu baseeran

YUSUFALI: He will say: “O my Lord! why hast Thou raised me up blind, while I had sight (before)?”
PICKTHAL: He will say: My Lord! Wherefor hast Thou gathered me (hither) blind, when I was wont to see?
SHAKIR: He shall say: My Lord! why hast Thou raised me blind and I was a seeing one indeed?
KHALIFA: He will say, “My Lord, why did you summon me blind, when I used to be a seer?”

১২৫। সে বলবে, ” হে আমার প্রভু! কেন তুমি আমাকে দৃষ্টিহীন ভাবে উত্থিত করলে, যখন [ পূর্বে ] আমার দৃষ্টিশক্তি ছিলো ? ” ২৬৪৯।

২৬৪৯। এই পৃথিবীতে আল্লাহ্‌ আদম সন্তানকে পঞ্চ ইন্দ্রিয় শোভিত করে প্রেরণ করেন। এই পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে সে পার্থিব জ্ঞান লাভ করে। আর এই পার্থিব জ্ঞান আল্লাহ্‌র প্রদর্শিত পথে পরিশুদ্ধ হয়ে ব্যক্তির জীবনে বিবেকের জন্ম দেয়। সে আল্লাহ্‌র প্রদর্শিত পথে থেকে ন্যায় – অন্যায় , সত্য – মিথ্যা , ভালো – মন্দ ও পূণ্য – পাপের মধ্যে পার্থক্য করতে শেখে। এই হচ্ছে বিবেক বা অন্তর্দৃষ্টি বা আত্মার চক্ষু। পৃথিবীতে বিবেকহীন ব্যক্তিরও শারিরীক চক্ষু বিদ্যমান। সে ভুলে যায় এই চক্ষু তাকে দান করা হয়েছে তাকে পরীক্ষার জন্য। কিভাবে সে এই পৃথিবীতে তার চক্ষুকে ব্যবহার করে অন্তর্দৃষ্টি লাভ করে তা পরীক্ষার জন্য। যদি সে এই পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়, তবে মৃত্যুর সাথে সাথে সে যখন জাগতিক দৃষ্টি থেকে বঞ্চিত হবে, পরকালের জন্য সে হবে অন্ধ সদৃশ্য, কারণ পৃথিবীতে সে ছিলো অন্তর্দৃষ্টি হীন।

আল্লাহ বলবেনঃ এমনিভাবে তোমার কাছে আমার আয়াতসমূহ এসেছিল, অতঃপর তুমি সেগুলো ভুলে গিয়েছিলে। তেমনিভাবে আজ তোমাকে ভুলে যাব।
(Allâh) will say: ”Like this, Our Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.) came unto you, but you disregarded them (i.e. you left them, did not think deeply in them, and you turned away from them), and so this Day, you will be neglected (in the Hell-fire, away from Allâh’s Mercy).”

قَالَ كَذَلِكَ أَتَتْكَ آيَاتُنَا فَنَسِيتَهَا وَكَذَلِكَ الْيَوْمَ تُنسَى
Qala kathalika atatka ayatuna fanaseetaha wakathalika alyawma tunsa

YUSUFALI: (Allah) will say: “Thus didst Thou, when Our Signs came unto thee, disregard them: so wilt thou, this day, be disregarded.”
PICKTHAL: He will say: So (it must be). Our revelations came unto thee but thou didst forget them. In like manner thou art forgotten this Day.
SHAKIR: He will say: Even so, Our communications came to you but you neglected them; even thus shall you be forsaken this day.
KHALIFA: He will say, “Because you forgot our revelations when they came to you, you are now forgotten.”

১২৬। [আল্লাহ্‌ ] বলবেন, ” যখন আমার নিদর্শনসমূহ তোমার নিকট এসেছিলো , এভাবেই তুমি তা অগ্রাহ্য করেছিলে ২৬৫০।

২৬৫০। পৃথিবীতে যে বান্দা ইচ্ছাকৃত ভাবে আল্লাহ্‌র নিদর্শন সমূহকে অস্বীকার করে, সে ইচ্ছাকৃত ভাবেই অনুগ্রহ সমূহ বর্জন করে, ফলে পরলোকেও সে আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ সমূহ অনুধাবনে অক্ষম হবে এবং আল্লাহ্‌র রহমত বঞ্চিত হবে। “এই ভাবেই তুমি তা অগ্রাহ্য করেছিলে ” বাক্যটি তাৎপর্যপূর্ণ। আল্লাহ্‌র নৈকট্য লাভের ইচ্ছা এবং আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ আত্মার মাঝে অনুধাবন করা এ সবই পূণ্যাত্মা লোকের আত্মপ্রকাশ। পৃথিবী থেকেই পূণ্যাত্মাদের আল্লাহ্‌র অনুগ্রহকে অনুধাবনের ক্ষমতা জন্মে এবং তারা এ কারণে আল্লাহ্‌র দরবারে কৃতজ্ঞ থাকেন। এই নশ্বর দেহ ত্যাগ করে মৃত্যুর সিংহদুয়ার অতিক্রম করার পরেও তাদের আত্মার এই অবস্থা বর্তমান থাকে এবং আল্লাহ্‌র অপার করুণাতে তা বৃদ্ধি পায়। অপর পক্ষে যারা আল্লাহকে এবং আল্লাহ্‌র নিদর্শন ও রহমতকে এই পৃথিবীতে সনাক্ত করতে অক্ষম ছিলো ,যারা ছিলো এ সম্বন্ধে বিস্মৃত – তাদের আত্মায় মৃত্যুর পরেও সেই বিস্মৃতি বিরাজ করবে। কারণ পৃথিবী থেকে পরলোকে আত্মার যাত্রা অবিচ্ছিন্ন ও ধারাবাহিক। পৃথিবীর অভিজ্ঞতাই সে পরলোকে বহন করে নেবে তার আত্মার মাঝে।

এমনিভাবে আমি তাকে প্রতিফল দেব, যে সীমালঙ্ঘন করে এবং পালনকর্তার কথায় বিশ্বাস স্থাপন না করে। তার পরকালের শাস্তি কঠোরতর এবং অনেক স্থায়ী।
And thus do We requite him who transgresses beyond bounds [i.e. commits the great sins and disobeys his Lord (Allâh) and believes not in His Messengers, and His revealed Books, like this Qur’ân, etc.], and believes not in the Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.) of his Lord, and the torment of the Hereafter is far more severe and more lasting.

وَكَذَلِكَ نَجْزِي مَنْ أَسْرَفَ وَلَمْ يُؤْمِن بِآيَاتِ رَبِّهِ وَلَعَذَابُ الْآخِرَةِ أَشَدُّ وَأَبْقَى
Wakathalika najzee man asrafa walam yu/min bi-ayati rabbihi walaAAathabu al-akhirati ashaddu waabqa

YUSUFALI: And thus do We recompense him who transgresses beyond bounds and believes not in the Signs of his Lord: and the Penalty of the Hereafter is far more grievous and more enduring.
PICKTHAL: Thus do We reward him who is prodigal and believeth not the revelations of his Lord; and verily the doom of the Hereafter will be sterner and more lasting.
SHAKIR: And thus do We recompense him who is extravagant and does not believe in the communications of his Lord, and certainly the chastisement of the hereafter is severer and more
KHALIFA: We thus requite those who transgress and refuse to believe in the revelations of their Lord. The retribution in the Hereafter is far worse and everlasting.

১২৭। যে সীমালংঘন করে ও তার প্রতিপালকের নিদর্শনে বিশ্বাস স্থাপন করে না, এভাবেই আমি তাকে প্রতিফল দেই। এবং পরলোকের শাস্তি হবে আরও ভয়াবহ এবং অধিক স্থায়ী ২৬৫১।

২৬৫১। এই পৃথিবীর জীবন পরকালের জীবনের শিক্ষানবীশকাল মাত্র। পৃথিবীতে আত্মার যে অভিজ্ঞতা তাই সে পরলোকে বহন করে নিয়ে যাবে। উপরের আয়াতগুলির মাধ্যমে এ কথারই সত্যতাকে বিবৃত করা হয়েছে। যে ইহকালে আল্লাহ্‌র নিদর্শনের প্রতি অন্ধ সে পরকালেও অন্ধরূপেই স্রষ্টার নিকট নীত হবে। আর সে অন্ধত্ব হবে “কঠিনতর এবং অধিক স্থায়ী “। “অধিক স্থায়ী “। এই বাক্যটির অর্থ ইহকালের জীবন ক্ষণস্থায়ী। নির্দ্দিষ্ট মেয়াদান্তে তার সমাপ্তি ঘটে। সুতারাং পার্থিব জীবনের চক্ষুহীনতা বা অন্ধত্বও ক্ষণস্থায়ী। সে তুলনায় পরলোকের জীবন অনন্ত ও সীমাহীন। সেই সীমাহীন জীবনের সীমাহীন অন্ধত্ব অবশ্যই কঠিনতর হবে।

আমি এদের পূর্বে অনেক সম্প্রদায়কে ধবংস করেছি। যাদের বাসভুমিতে এরা বিচরণ করে, এটা কি এদেরকে সৎপথ প্রদর্শন করল না? নিশ্চয় এতে বুদ্ধিমানদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।
Is it not a guidance for them (to know) how many generations We have destroyed before them, in whose dwellings they walk? Verily, in this are signs indeed for men of understanding.

أَفَلَمْ يَهْدِ لَهُمْ كَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُم مِّنَ الْقُرُونِ يَمْشُونَ فِي مَسَاكِنِهِمْ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِّأُوْلِي النُّهَى
Afalam yahdi lahum kam ahlakna qablahum mina alqurooni yamshoona fee masakinihim inna fee thalika laayatin li-olee alnnuha

YUSUFALI: Is it not a warning to such men (to call to mind) how many generations before them We destroyed, in whose haunts they (now) move? Verily, in this are Signs for men endued with understanding.
PICKTHAL: Is it not a guidance for them (to know) how many a generation We destroyed before them, amid whose dwellings they walk? Lo! therein verily are signs for men of thought.
SHAKIR: Does it not then direct them aright how many of the generations In whose dwelling-places they go about We destroyed before them? Most surely there are signs in this for those endowed with understanding.
KHALIFA: Does it ever occur to them how many previous generations we have annihilated? They are now walking in the homes of those before them. These are signs for those who possess intelligence.

১২৮। এসব লোকের জন্য এটা কি সাবধান বাণী ছিলো না যে, তাদের পূর্বে কত মানব গোষ্ঠিকে আমি ধ্বংস করেছি, যাদের বাসভূমিতে তারা [ এখন ] বিচরণ করে ? অবশ্যই যারা বুঝতে পারে, তাদের জন্য এতে রয়েছে নিদর্শন ২৬৫২।

২৬৫২। ” যারা বুঝতে পারে, ” এই বাক্যটি পূর্বেও ব্যবহার করা হয়েছে আয়াত [ ২০ : ৫৪ ] তে। হযরত মুসা ও ফেরাউনেরর মধ্যে যে যুক্তি তর্কের অবতারণা ঘটেছিলো তারই সমাপ্তি পর্বে এই বাক্যটির উল্লেখ করা হয়েছে। ফেরাউন অন্ধ বিদ্বেষে ক্রমাগত আল্লাহ্‌ নির্দ্দেশ সমূহ অস্বীকার করেছিলো – ফলে তাঁর আত্মা পাপের অন্ধকারে হারিয়ে যায়। সে আধ্যাত্মিক অন্ধত্ব বরণ করে। ফেরাউনের আত্মিক অন্ধত্বের বর্ণনা প্রসঙ্গে উক্ত উক্তি করা হয়। কিন্তু এই আয়াতে বাক্যটির প্রয়োগ হয়েছে সার্বজনীন ভাবে, যে মানুষ ইচ্ছাকৃত ভাবে আল্লাহ্‌র নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করে সার্বজনীন ভাবে তাদের পরিপ্রেক্ষিতেই উপরের বক্তব্য প্রদান করা হয়েছে। এরা হচ্ছে তারা যারা চক্ষু থাকতেও অন্ধ – অর্থাৎ বিবেকবুদ্ধি বর্জিত ফলে অন্তর্দৃষ্টিহীন।

আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে পূর্ব সিদ্ধান্ত এবং একটি কাল নির্দিষ্ট না থাকলে শাস্তি অবশ্যম্ভাবী হয়ে যেত।
And had it not been for a Word that went forth before from your Lord, and a term determined, (their punishment) must necessarily have come (in this world).

وَلَوْلَا كَلِمَةٌ سَبَقَتْ مِن رَّبِّكَ لَكَانَ لِزَامًا وَأَجَلٌ مُسَمًّى
Walawla kalimatun sabaqat min rabbika lakana lizaman waajalun musamman

YUSUFALI: Had it not been for a Word that went forth before from thy Lord, (their punishment) must necessarily have come; but there is a Term appointed (for respite).
PICKTHAL: And but for a decree that had already gone forth from thy Lord, and a term already fixed, the judgment would have been inevitable (in this world).
SHAKIR: And had there not been a word (that had) already gone forth from your Lord and an appointed term, it would surely have been made to cleave (to them).
KHALIFA: If it were not for your Lord’s predetermined plan, they would have been judged immediately.

রুকু – ৮

১২৯। যদি তোমার প্রভুর [ এদের অবকাশ দেয়ার ] পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকতো ,তবে [ তাদের শাস্তি ] অবশ্যই আসতো। কিন্তু তাদের [ অবকাশের জন্য ] নির্দ্দিষ্ট সময় কাল রয়েছে ২৬৫৩।

২৬৫৩। পূর্ব সিদ্ধান্ত বা পূর্ব ঘোষণার কথা পূর্বেও উল্লেখ করা হয়েছে আয়াত [ ১০ : ১৯ ] ও টিকা ১৪০৭ এবং আয়াত [ ১১ : ১১০ ] তে। বিশ্ব প্রকৃতিতে আল্লাহ্‌র বিধান বা আইন এমন সুনির্দ্দিষ্ট ভাবে প্রয়োগ করা আছে যার ফলে সমস্ত সৃষ্টি সমন্বিত ভাবে শৃঙ্খলার সাথে আল্লাহ্‌র মহৎ উদ্দেশ্যের সার্থকতার দিকে অগ্রসরমান হয়। বিশ্ব প্রকৃতির সকল কিছুর জন্য হিতাকাঙ্খা আল্লাহ্‌র সুনির্দ্দিষ্ট পরিকল্পনাতে বিদ্যমান। পাপী , পূণ্যাত্মা সকলকে তিনি সমভাবে নির্দ্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সময় ও সুযোগ দান করে থাকেন। তাঁর করুণার হস্ত সকলের জন্য সমভাবে প্রসারিত। এই হচ্ছে আল্লাহ্‌র “পূর্ব সিদ্ধান্ত।” জঘন্য পাপীদের তিনি তৎক্ষণাত শাস্তি দান করেন না। তাদেরও এক নির্দ্দিষ্ট সময়কাল সময় দান করা হয়, যেনো তারা অনুতাপ করার সুযোগ পায় এবং অনুতাপের মাধ্যমে আল্লাহ্‌র রাস্তায় ফিরে আসে। যদি এই অবকাশ দান আল্লাহ্‌র পূর্ব নির্ধারিত বিধান না হতো, তবে পাপীরা তাদের পাপের শাস্তি তৎক্ষণাত লাভ করতো।

সূরা ত্বোয়া-হা

সুতরাং এরা যা বলে সে বিষয়ে ধৈর্য্য ধারণ করুন এবং আপনার পালনকর্তার প্রশংসা পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষনা করুন সূর্যোদয়ের পূর্বে, সূর্যাস্তের পূর্বে এবং পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষনা করুন রাত্রির কিছু অংশ ও দিবাভাগে, সম্ভবতঃ তাতে আপনি সন্তুষ্ট হবেন।
So bear patiently (O Muhammad SAW) what they say, and glorify the praises of your Lord before the rising of the sun, and before its setting, and during some of the hours of the night, and at the sides of the day (an indication for the five compulsory congregational prayers), that you may become pleased with the reward which Allâh shall give you.

فَاصْبِرْ عَلَى مَا يَقُولُونَ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ غُرُوبِهَا وَمِنْ آنَاء اللَّيْلِ فَسَبِّحْ وَأَطْرَافَ النَّهَارِ لَعَلَّكَ تَرْضَى
Faisbir AAala ma yaqooloona wasabbih bihamdi rabbika qabla tulooAAi alshshamsi waqabla ghuroobiha wamin ana-i allayli fasabbih waatrafa alnnahari laAAallaka tarda

YUSUFALI: Therefore be patient with what they say, and celebrate (constantly) the praises of thy Lord, before the rising of the sun, and before its setting; yea, celebrate them for part of the hours of the night, and at the sides of the day: that thou mayest have (spiritual) joy.
PICKTHAL: Therefor (O Muhammad), bear with what they say, and celebrate the praise of thy Lord ere the rising of the sun and ere the going down thereof. And glorify Him some hours of the night and at the two ends of the day, that thou mayst find acceptance.
SHAKIR: Bear then patiently what they say, and glorify your Lord by the praising of Him before the rising of the sun and before its setting, and during hours of the night do also glorify (Him) and during parts of the day, that you may be well pleased
KHALIFA: Therefore, be patient in the face of their utterances, and praise and glorify your Lord before sunrise and before sunset. And during the night glorify Him, as well as at both ends of the day, that you may be happy.

১৩০। সুতারাং তারা যা বলে , সে বিষয়ে তুমি ধৈর্য ধারণ কর, এবং সূর্যদয়ের পূর্বে এবং সূর্যাস্তের পূর্বে তোমার প্রভুর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর ২৬৫৪। হ্যাঁ , রাত্রির কিছু অংশ এবং দিবসের প্রান্ত সমূহে মহিমা ঘোষণা কর যেনো তুমি [ আধ্যাত্মিক ] আনন্দ লাভ করতে পার ২৬৫৫।

২৬৫৪। যদিও এই আয়াতটিতে রসুলের [সা] প্রতি উপদেশ দান করা হয়েছে, কিন্তু এর আবেদন সকল যুগের পূণ্যাত্মাদের জন্য প্রযোজ্য। চারিদিকে পাপীদের তান্ডবলীলা দর্শনে পূণ্যাত্মারা অধৈর্য্য হবে না। তারা ধৈর্য্য ধারণ করবে। এই ধৈর্য্য ধারণের অর্থ এই নয় যে, নিষ্ক্রিয়তা, হাত পা গুটিয়ে নিষ্কৃয়ভাবে বসে থাকা। পাপীদের অন্যায় কাজকে বা পাপকে প্রতিহত করার জন্য কোন উদ্যোগই সে গ্রহণ করবে না, একে ধৈর্য্য ধারণ করা বলে না। ইসলামের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পাপের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হবে এবং এই সংগ্রামে একান্ত বিশ্বস্তভাবে আল্লাহ্‌র প্রতি নির্ভরশীলতায় পথ অতিক্রম করতে হবে। কোন অবস্থাতেই অধৈর্য হয়ে সংগ্রামের পথকে পরিহার করা চলবে না। আল্লাহ্‌র কাছে তারা প্রার্থনা করবে , যোগাযোগ স্থাপন করবে যেনো আল্লাহ্‌ তাদের সৎপথে থাকার ও পাপের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার তৌফিক দান করেন। প্রার্থনার মাধ্যমে তাদের মনোবল ও বিশ্বাসের ভিত্তি আরও সুদৃঢ় হবে। ফলে তারা অন্যায় ও পাপের বিরুদ্ধে আরও সুদৃঢ় ভাবে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবে। তাদের এই সংগ্রামে শুধু যে ইহকালেই তাদের ধৈর্য্য;মনোবল ও বিশ্বাসের ভিত্তি সুদৃঢ় হবে তাই – ই নয় , পরকালেও তারা আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি লাভ করবে।

২৬৫৫। সূর্যদয়ের পূর্বের প্রার্থনা হচ্ছে ‘ফজর’। সূর্যাস্তের পূর্বে ‘ আসর’ , রাত্রির একাংশ হচ্ছে ‘মাগরিব’ এবং ‘এশা’। মাগরিব হচ্ছে রাত্রির প্রথমাংশ এবং এশা শয়ন গ্রহনের পূর্বে। দিবসের প্রান্তে অর্থাৎ সূর্য মধ্যাহ্ন গগন থেকে হেলে যাওয়ার পরে অর্থাৎ ‘জোহর’। এই পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের বিবরণ, এখানে দেয়া হয়েছে। অধিকাংশ তফসীরকারগণ এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের কথাই বলেছেন। তবে কেউ কেউ এর সাথে ঐচ্ছিক বা নফল এবাদতেরও উল্লেখ করেছেন। আসলে পূণ্যাত্মা ব্যক্তির জীবন হচ্ছে আল্লাহ্‌র এবাদতে নিবেদিত প্রাণ। তার সর্ব সত্তাই হচ্ছে আল্লাহ্‌র প্রশংসা গীত। অর্থাৎ নির্দ্দিষ্ট সময়ের বাইরেও তাদের অন্তরাত্মা সর্বদা প্রার্থনায় নিয়োজিত থাকে।

আমি এদের বিভিন্ন প্রকার লোককে পরীক্ষা করার জন্যে পার্থিবজীবনের সৌন্দর্য স্বরূপ ভোগ-বিলাসের যে উপকরণ দিয়েছি, আপনি সেই সব বস্তুর প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করবেন না। আপনার পালনকর্তার দেয়া রিযিক উৎকৃষ্ট ও অধিক স্থায়ী।
And strain not your eyes in longing for the things We have given for enjoyment to various groups of them (polytheists and disbelievers in the Oneness of Allâh), the splendour of the life of this world that We may test them thereby. But the provision (good reward in the Hereafter) of your Lord is better and more lasting.

وَلَا تَمُدَّنَّ عَيْنَيْكَ إِلَى مَا مَتَّعْنَا بِهِ أَزْوَاجًا مِّنْهُمْ زَهْرَةَ الْحَيَاةِ الدُّنيَا لِنَفْتِنَهُمْ فِيهِ وَرِزْقُ رَبِّكَ خَيْرٌ وَأَبْقَى
Wala tamuddanna AAaynayka ila ma mattaAAna bihi azwajan minhum zahrata alhayati alddunya linaftinahum feehi warizqu rabbika khayrun waabqa

YUSUFALI: Nor strain thine eyes in longing for the things We have given for enjoyment to parties of them, the splendour of the life of this world, through which We test them: but the provision of thy Lord is better and more enduring.
PICKTHAL: And strain not thine eyes toward that which We cause some wedded pairs among them to enjoy, the flower of the life of the world, that We may try them thereby. The provision of thy Lord is better and more lasting.
SHAKIR: And do not stretch your eyes after that with which We have provided different classes of them, (of) the splendor of this world’s life, that We may thereby try them; and the sustenance (given) by your Lord is better and more abiding.
KHALIFA: And do not covet what we bestowed upon any other people. Such are temporary ornaments of this life, whereby we put them to the test. What your Lord provides for you is far better, and everlasting.

১৩১। পার্থিব জীবনের জাঁকজমক দ্বারা পরীক্ষার নিমিত্তে আমি বিভিন্ন শ্রেণীকে উপভোগের যে সব উপকরণ দিয়েছি তা আকাঙ্খা করে তোমার চক্ষুদ্বয়কে পীড়িত করো না। [ মনে রেখো] তোমার প্রভুর প্রদত্ত জীবনোপকরণ উৎকৃষ্ট ও অধিক স্থায়ী ২৬৫৬।

২৫৫৬। এই পৃথিবীতে সম্পদ ,বিত্ত , ক্ষমতা, মেধা, প্রতিভা প্রভৃতি যা পৃথিবীতে সাফল্যের মাপকাঠি রূপে পরিগণিত তা সকলের মধ্যে আল্লাহ্‌ সমভাবে বণ্টন করেন নাই। কারও বেশী থাকলে তাতে ঈর্ষান্বিত হতে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে , এসব আল্লাহ্‌ বান্দাকে দান করেন পৃথিবীতে তাকে পরীক্ষার জন্য। আল্লাহ্‌র বিশেষ নেয়ামতসমূহকে সে কিভাবে ব্যয় করেছে সে হিসাব তাকে দাখিল করতে হবে পরলোকে। আর এসব নেয়ামত ক্ষণস্থায়ী। পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী জীবন শেষে এই পৃথিবীর বিত্ত,সম্পদ, প্রভাব প্রতিপত্তি সব রেখে অনন্তলোকে যাত্রা করতে হয়। সুতারাং সবই ক্ষণস্থায়ী। অপর পক্ষে পরকালের সাফল্য হচ্ছে স্থায়ী সাফল্য। পৃথিবীর সাফল্য একদিন শেষ হয়ে যাবে, কিন্তু পরকালের সাফল্য হচ্ছে স্থায়ী সাফল্য, যা স্বয়ং আল্লাহ্‌ তাঁর অনুগত বান্দাকে দান করে থাকেন। পরলোকের সাফল্য হচ্ছে অমূল্য এবং যা অনন্তকাল ব্যপী স্থায়ী। সকলকেই আল্লাহ্‌ তাঁর কোন না কোন নেয়ামত সমূহ দ্বারা এই পৃথিবীতে ধন্য করে থাকেন। যে বান্দা সঠিক ভাবে সেই নেয়ামত ব্যয় করতে পারে সেই পূণ্যাত্মা – আর যে না পারে সে মহাকালের অতলগর্ভে নিক্ষিপ্ত হয়।

আপনি আপনার পরিবারের লোকদেরকে নামাযের আদেশ দিন এবং নিজেও এর ওপর অবিচল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোন রিযিক চাই না। আমি আপনাকে রিযিক দেই এবং আল্লাহ ভীরুতার পরিণাম শুভ।
And enjoin As-Salât (the prayer) on your family, and be patient in offering them [i.e. the Salât (prayers)]. We ask not of you a provision (i.e. to give Us something: money, etc.); We provide for you. And the good end (i.e. Paradise) is for the Muttaqûn (pious – see V.2:2).

وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلَاةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا لَا نَسْأَلُكَ رِزْقًا نَّحْنُ نَرْزُقُكَ وَالْعَاقِبَةُ لِلتَّقْوَى
Wa/mur ahlaka bialssalati waistabir AAalayha la nas-aluka rizqan nahnu narzuquka waalAAaqibatu lilttaqwa

YUSUFALI: Enjoin prayer on thy people, and be constant therein. We ask thee not to provide sustenance: We provide it for thee. But the (fruit of) the Hereafter is for righteousness.
PICKTHAL: And enjoin upon thy people worship, and be constant therein. We ask not of thee a provision: We provided for thee. And the sequel is for righteousness.
SHAKIR: And enjoin prayer on your followers, and steadily adhere to it; We do not ask you for subsistence; We do give you subsistence, and the (good) end is for guarding (against evil).
KHALIFA: You shall enjoin your family to observe the contact prayers (Salat), and steadfastly persevere in doing so. We do not ask you for any provisions; we are the ones who provide for you. The ultimate triumph belongs to the righteous.

১৩২। তোমার পরিবারবর্গকে সালাতের আদেশ দাও এবং তাতে অবিচলিত থাক। আমি তোমার নিকট কোন প্রকার জীবনোপকরণ চাই না [ বরং ] আমিই তোমার জন্য তা সরবরাহ করে থাকি। শুভ পরিণাম পূণ্যাত্মাদের জন্য ২৬৫৭।

২৬৫৭। ” জীবনোপকরণ” – অর্থাৎ জীবনকে ধারণ করার জন্য যে সব উপকরণের প্রয়োজন হয়। আল্লাহ্‌ অভাবমুক্ত। তিনি কারও মুখাপেক্ষী নন। আমরা আমাদের প্রতিদিনের জীবন যাপনের জন্য জীবনোপকরণ সংগ্রহের জন্য আল্লাহ্‌র মুখাপেক্ষি। পূণ্যাত্মা , পাপী সকলের জীবনোপকরণ দান করেন আল্লাহ্‌। “শুভ পরিণাম মুত্তাকীদের জন্য ” – শুভ পরিণাম অর্থাৎ কর্মের শেষ ফলাফল। আল্লাহ্‌র নেয়ামত পাপী , পূণ্যাত্মা সকলের জন্য বিদ্যমান। কিন্তু যে পূণ্যাত্মা , যে নিজের জীবনকে আল্লাহ্‌র রাস্তায় ব্যয় করে, পৃথিবীর কর্মফলের শেষ পরিণাম তার জন্য শুভ ফল বহন করে আনবে। কারণ পার্থিব জীবনোপকরণের সাথে সাথে পূণ্য কর্ম দ্বারা তার আধ্যাত্মিক জীবনও সমৃদ্ধি লাভ করবে। পরিণামে সে আল্লাহ্‌র নৈকট্য লাভে ধন্য হবে।

এরা বলেঃ সে আমাদের কাছে তার পালনকর্তার কাছ থেকে কোন নিদর্শন আনয়ন করে না কেন? তাদের কাছে কি প্রমাণ আসেনি, যা পূর্ববর্তী গ্রন্থসমূহে আছে?
They say: ”Why does he not bring us a sign (proof) from his Lord?” Has there not come to them the proof of that which is (written) in the former papers [Scriptures, i.e. the Taurât (Torah), and the Injeel (Gospel), etc. about the coming of the Prophet Muhammad SAW ].

وَقَالُوا لَوْلَا يَأْتِينَا بِآيَةٍ مِّن رَّبِّهِ أَوَلَمْ تَأْتِهِم بَيِّنَةُ مَا فِي الصُّحُفِ الْأُولَى
Waqaloo lawla ya/teena bi-ayatin min rabbihi awa lam ta/tihim bayyinatu ma fee alssuhufi al-oola

YUSUFALI: They say: “Why does he not bring us a sign from his Lord?” Has not a Clear Sign come to them of all that was in the former Books of revelation?
PICKTHAL: And they say: If only he would bring us a miracle from his Lord! Hath there not come unto them the proof of what is in the former scriptures?
SHAKIR: And they say: Why does he not bring to us a sign from his Lord? Has not there come to them a clear evidence of what is m the previous books?
KHALIFA: They said, “If he could only show us a miracle from his Lord!” Did they not receive sufficient miracles with the previous messages?

১৩৩। তারা বলে, ” সে তাঁর প্রভুর নিকট থেকে কেন আমাদের জন্য নিদর্শন আনে না ?” ২৬৫৮। পূর্ববর্তী কিতাব সমূহের মাধ্যমে তাদের নিকট কি সুস্পষ্ট নিদর্শন আসে নাই?

২৬৫৮। অবিশ্বাসীদের শঠতাপূর্ণ ধূর্ত মানসিকতার দিকে এখানে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কোরাণ স্বয়ং স্রষ্টার সুস্পষ্ট নিদর্শন ও প্রমাণ। যারা পূর্ববর্তী ধর্মগ্রন্থে বিশ্বাসী , তারা তাদের ধর্ম গ্রন্থেই সুস্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছে যা তাওরাত, ইঞ্জিল ইত্যাদি। আল্লাহ্‌র কিতাবে সব কালেই শেষ নবী হযরত মুহম্মদ [সা] এর নবুয়ত ও রেসালাতের সাক্ষ্য দিয়েছে তার পরেও অবিশ্বাসীরা কিভাবে কৌশল অবলম্বন করে ?

 

যদি আমি এদেরকে ইতিপূর্বে কোন শাস্তি দ্বারা ধ্বংস করতাম, তবে এরা বলতঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আপনি আমাদের কাছে একজন রসূল প্রেরণ করলেন না কেন? তাহলে তো আমরা অপমানিত ও হেয় হওয়ার পূর্বেই আপনার নিদর্শন সমূহ মেনে চলতাম।
And if We had destroyed them with a torment before this (i.e. Messenger Muhammad SAW and the Qur’ân), they would surely have said: ”Our Lord! If only You had sent us a Messenger, we should certainly have followed Your Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.), before we were humiliated and disgraced.”

وَلَوْ أَنَّا أَهْلَكْنَاهُم بِعَذَابٍ مِّن قَبْلِهِ لَقَالُوا رَبَّنَا لَوْلَا أَرْسَلْتَ إِلَيْنَا رَسُولًا فَنَتَّبِعَ آيَاتِكَ مِن قَبْلِ أَن نَّذِلَّ وَنَخْزَى
Walaw anna ahlaknahum biAAathabin min qablihi laqaloo rabbana lawla arsalta ilayna rasoolan fanattabiAAa ayatika min qabli an nathilla wanakhza

YUSUFALI: And if We had inflicted on them a penalty before this, they would have said: “Our Lord! If only Thou hadst sent us a messenger, we should certainly have followed Thy Signs before we were humbled and put to shame.”
PICKTHAL: And if we had destroyed them with some punishment before it, they would assuredly have said: Our Lord! If only Thou hadst sent unto us a messenger, so that we might have followed Thy revelations before we were (thus) humbled and disgraced!
SHAKIR: And had We destroyed them with chastisement before this, they would certainly have said: O our Lord! why didst Thou not send to us a messenger, for then we should have followed Thy communications before that we met disgrace and shame.
KHALIFA: Had we annihilated them before this, they would have said, “Our Lord, had You sent a messenger to us, we would have followed Your revelations, and would have avoided this shame and humiliation.”

১৩৪। যদি আমি ইতিপূর্বে তাদের উপরে শাস্তি আরোপ করতাম ২৬৫৯; তবে তারা বলতো, ” হে আমাদের প্রভু ! যদি তুমি আমাদের নিকট একজন রাসুল প্রেরণ করতে তবে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হবার পূর্বেই তোমার নিদর্শন মেনে চলতাম।”

২৬৫৯। পূর্ববর্তী আয়াতে রসুলের প্রতি ঈমান আনার ব্যাপারে যে যুক্তির অবতারণা করা হয়েছে , তাতে প্রতীয়মান হয় যে, এ সব অবিশ্বাসীরা নিজ ধর্ম এবং ধর্মগ্রন্থের বাণীর প্রতিও বিশ্বস্ত নয়। তারা মিথ্যা দাবী করে যে, তারা পূর্ববর্তী ধর্মগ্রন্থ ও ধর্মে বিশ্বাসী। যদি তারা তাদের ধর্মগ্রন্থে বিশ্বাসই হতো, তবে তারা তাদের ধর্মগ্রন্থ পাঠের মাধ্যমেই শেষ নবীকে সনাক্ত করতে সক্ষম হতো। তারা সত্যবাদী নয়, তারা মিথ্যাবাদী ও অবিশ্বাসী। তারা নিজের কাছে নিজে বিশ্বস্ত নয়। তাদের মিথ্যা আচরণ ও অবিশ্বস্ততার দরুণ তাদের তাৎক্ষণিক শাস্তি প্রাপ্য হয়ে যায় – যদি ন্যায় বিচার করা হয়। কিন্তু আল্লাহ্‌ তাদের অবকাশ দান করেন কারণ তা না হলে তারা নূতন যুক্তি তর্কের অবতারণা করবে। কারণ মিথ্যাবাদী ও অবিশ্বাসীরা সব সময়েই হয় ধূর্ত, শঠ ও কৌশলপূর্ণ। অনুতাপ করার জন্য অবকাশ না দিলে তারা বলতো যে, “আল্লাহ্‌ যদি আমাদের জন্য একজন রসুল প্রেরণ করতেন তবে, আমরা ঈমান আনতাম।” কিন্তু সত্যিই যখন তারা একজন রসুলকে স্বশরীরে লাভ করলো তারা আরও প্রমাণের জন্য বায়না ধরলো এবং রসুলল্লাহকে [ সা] অপমান ও অবজ্ঞা করলো।

 

বলুন, প্রত্যেকেই পথপানে চেয়ে আছে, সুতরাং তোমরাও পথপানে চেয়ে থাক। অদূর ভবিষ্যতে তোমরা জানতে পারবে কে সরল পথের পথিক এবং কে সৎপথ প্রাপ্ত হয়েছে।
Say (O Muhammad SAW): ”Each one (believer and disbeliever, etc.) is waiting, so wait you too, and you shall know who are they that are on the Straight and Even Path (i.e. Allâh’s Religion of Islâmic Monotheism), and who are they that have let themselves be guided (on the Right Path).

قُلْ كُلٌّ مُّتَرَبِّصٌ فَتَرَبَّصُوا فَسَتَعْلَمُونَ مَنْ أَصْحَابُ الصِّرَاطِ السَّوِيِّ وَمَنِ اهْتَدَى
Qul kullun mutarabbisun fatarabbasoo fasataAAlamoona man as-habu alssirati alssawiyyi wamani ihtada

YUSUFALI: Say: “Each one (of us) is waiting: wait ye, therefore, and soon shall ye know who it is that is on the straight and even way, and who it is that has received Guidance.”
PICKTHAL: Say: Each is awaiting; so await ye! Ye will come to know who are the owners of the path of equity, and who is right.
SHAKIR: Say: Every one (of us) is awaiting, therefore do await: So you will come to know who is the follower of the even path and who goes aright.
KHALIFA: Say, “All of us are waiting, so wait; you will surely find out who are on the correct path, and who are truly guided.”

১৩৫। বল, ” [ আমরা] প্রত্যেকেই অপেক্ষা করছি। সুতারাং তোমরাও অপেক্ষা কর ২৬৬০। শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে কারা রয়েছে সরল ও সহজ পথে এবং কারা সৎ পথের নির্দ্দেশ গ্রহণ করেছে ” ২৬৬১।

২৬৬০। যদি কিতাবধারী জাতিরা তাদের নিজেদের ধর্মগ্রন্থ সম্বন্ধে বিশ্বস্ত হতো তবে, তারা শেষ নবী হযরত মুহম্মদ মুস্তফার [ সা ] আগমন সম্বন্ধে কোন সন্দেহ পোষণ করতো না কোন যুক্তি তর্কের অবতারণা করতো না। কারণ তাদের ধর্মগ্রন্থেই শেষ নবীর আগমন সম্বন্ধে বলা হয়েছে। এরা কোন ধর্মেই বিশ্বাসী নয় – শুধু ধর্মের লেবেলধারী। এদের সম্বন্ধে কি বা বলার থাকে ? আল্লাহ্‌র নবী শুধুমাত্র বলতে পারেন যে, ” আমরা প্রত্যেকেই অপেক্ষা করছি, শেষ পর্যন্ত আল্লাহ্‌র সত্য বা বিধানই স্থায়ীত্ব লাভ করবে ও বিরাজ করবে।” দেখুন আয়াত [ ৯ : ৫২ ] যেখানে সত্যকে প্রত্যক্ষ করার জন্য অপেক্ষা করার কথা আছে।

২৬৬১। দেখুন আয়াত [ ১৯ : ৪৩ ] যেখানে সরল ও সত্য পথের উল্লেখ আছে। সরল ও সত্য পথ হচ্ছে সৎ পথ। পৃথিবীতে সৎপথই স্থায়ীত্ব লাভ করবে – এই হচ্ছে আল্লাহ্‌র শ্বাশত বাণী। যারা সৎ পথে জীবন ধারণ করেন শুধুমাত্র তারাই আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ লাভে সক্ষম। আল্লাহ্‌ স্বয়ং তাদের পথ নির্দ্দেশ দান করেন ও হেদায়েত দান করেন। যে জীবন যাপন প্রণালীতে সত্য পথের , সরল পথের অনুসারী ,সততা ও ন্যায়নীতি যার জীবনের অঙ্গ, তার পরিশুদ্ধ ও নির্মল হৃদয়ে আল্লাহ্‌র হেদায়েতের আলো পরিষ্ফুট হয়। মিথ্যা ও চক্রান্তকারীরা শেষ পর্যন্ত ধ্বংস হয়ে যাবে – পৃথিবীতে একমাত্র স্থায়ী হচ্ছে ‘সত্য’ যা আল্লাহ্‌র নিকট থেকে আগত।

 

আরও দেখুন :

 

 

 

 

 

Leave a Comment