উম্মে কুলসুম বিনতে উকবা ইবনে আবি মুআতের হিজরত | হুদায়বিয়ার সন্ধি ( চুক্তি )-৫, আবু বাসিরের পর আরেকজন মুসলিম উম্মে কুলসুম বিনতে উকবা ইবনে আবি মুআত হিজরত করে মদিনায় আসেন। স্মরণ করুন, উকবা ইবনে আবি মুআত নবি করিমের (সা) ওপর উটের নাড়িভুঁড়ি নিক্ষেপ করেছিল । উম্মে কুলসুম নামের তার একটি মেয়ে ছিল । হুদায়বিয়ার সন্ধির সময়কালে উম্মে কুলসুম ইসলাম গ্রহণ করেন এবং মক্কার কুরাইশদের নিপীড়ন থেকে বাঁচার জন্য পালিয়ে মদিনার পথে পাড়ি জমান ।
উম্মে কুলসুম বিনতে উকবা ইবনে আবি মুআতের হিজরত | হুদায়বিয়ার সন্ধি ( চুক্তি )-৫ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

এই ব্যাপারটি খুবই সংবেদনশীল। একজন পুরুষকে ফিরিয়ে দেওয়া এক কথা, কিন্তু একজন নারীকে ফিরিয়ে দেওয়া? এমনকি নবিজিও (সা) জানতেন না এ ব্যাপারে কী করতে হবে।
ঠিক এই সময় আল্লাহ পবিত্র কোরানের আয়াত নাজিল করেন: “হে মুমিনগণ, যখন কোনো মুমিন নারী হিজরত করে তোমাদের কাছে আসে, তখন তোমরা তাদের (ইমানের ব্যাপারটা ভালো করে) পরখ করে নাও; (যদিও) তাদের ইমানের বিষয়টা আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন, অতঃপর একবার যদি তোমরা জানতে পার তারা (আসলেই) মুমিন, তাহলে কোনো অবস্থাতেই তাদের তোমরা কাফেরদের কাছে ফেরত পাঠাবে না;

কারণ (যারা মুমিন নারী) তারা তাদের (কাফের স্বামীদের) জন্য (আর কোনো অবস্থাতেই) বৈধ নয় এবং (যারা কাফের) তারাও তাদের (মুমিন স্ত্রীদের) জন্য বৈধ নয়; (তবে এমন হলে) তোমরা তাদের (আগের স্বামীদের দেওয়া) মোহরানার অংশ ফেরত দিয়ে দিও; অতঃপর তোমরা (কেউ) যদি তাদের বিয়ে করো, তাহলে এতে তোমাদের কোনো পাপ হবে না, অবশ্য তোমাদের (এ জন্য) তাদের মোহর আদায় করে দিতে হবে; (একইভাবে) তোমরাও কাফের নারীদের সঙ্গে (দাম্পত্য) সম্পর্ক বজায় রেখো না, (এ ক্ষেত্রে) তোমরা তাদের যে মোহর দিয়েছ তা তাদের থেকে চেয়ে নাও, একই নিয়মে (যারা কাফের স্বামী) তারা তাদের (মুসলিম স্ত্রীদের) যে মোহর দিয়েছে তা-ও ফেরত চেয়ে নেবে; এটাই হচ্ছে আল্লাহর বিধান; এভাবেই তিনি তোমাদের মাঝে (এ বিষয়টির) ফয়সালা করে দিয়েছেন; আর আল্লাহ তায়ালা মহাজ্ঞানী ও পরম কুশলী।”
[সুরা মুমতাহানা, ৬০:১০] ওপরে উল্লিখিত আয়াত অনুসরণ করে উম্মে কুলসুমকে মদিনায় থাকতে দেওয়া হয়। আবারও নবিজি (সা) চুক্তিপত্রের কথা আক্ষরিক অর্থে গ্রহণ করলেন। সুহায়েলের শর্ত ছিল: কুরাইশদের মধ্য থেকে একজন লোকও (পুরুষ) মদিনায় যেতে পারবে না। যদি কেউ (পুরুষ) মদিনায় যায়, তাকে (পুরুষ) মক্কায় ফিরিয়ে দিতে হবে। এখানে ব্যক্তির ক্ষেত্রে পুরুষবাচক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও চুক্তির অন্তর্নিহিত অর্থ বিবেচনায় নিলে শব্দটি পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্যই প্রযোজ্য, কিন্তু আক্ষরিক অর্থ তা বলে না। এখানে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা মূলত বলতে চেয়েছেন, “তুমি তো চুক্তিপত্রে নারীদের ফেরত পাঠাতে রাজি হওনি, শুধু পুরুষদের ব্যাপারে রাজি হয়েছ।” পরে নবিজির (সা) দত্তক পুত্র জায়েদ ইবনে হারিসার (রা) সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।
আরও পড়ুনঃ