ইসলামে শুভ লক্ষণের ধারণা | হুদায়বিয়ার সন্ধি (চুক্তি)-৩, এখানে আমরা আরেকটি ধর্মতাত্ত্বিক বিষয় আলোচনা করব। একটি হাদিস অনুসারে, নবি করিম (সা) বলেছেন, “কুসংস্কার ও অশুভ লক্ষণ বলে কিছু নেই।”
ইসলামে শুভ লক্ষণের ধারণা | হুদায়বিয়ার সন্ধি (চুক্তি)-৩ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

অন্য একটি হাদিস অনুসারে, তিনি বলেছেন, “কোনো প্রকার লক্ষণে বিশ্বাস করা এক প্রকার শিরক।” তারপর তিনি বলেছেন, “কিন্তু আমি শুভ লক্ষণের (‘আল ফাল’, ইতিবাচক আশাবাদ) ব্যাপারটি পছন্দ করি।” সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, “শুভ লক্ষণ বলতে আপনি কী বোঝেন?” তিনি বললেন, “একটি ভালো কথা বা বাক্যাংশ যা কেউ শ্রবণ করে।” [সহিহ বুখারি]। অর্থাৎ আমাদের ধর্মে কোনো কিছুকে ‘শুভ লক্ষণ’ বলতে হলে দুটি শর্ত পূরণ করা বাঞ্ছনীয়:
১. একটি ইতিবাচক চিহ্ন বা বার্তা থাকতে হবে; নেতিবাচক কিছু থাকা চলবে না।
২. বার্তাটি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হতে হবে।

শুভ লক্ষণ হলো আল্লাহর প্রতি আশাব্যঞ্জক ধারণা পোষণ করা। একটি উদাহরণ দিচ্ছি। ধরুন, আমাদের মধ্যে কেউ একজন মেঘলা দিনে আল্লাহর কাছে কিছু চেয়ে দোয়া করছেন। দোয়া শেষ করার পরে তিনি উপরের দিকে তাকিয়ে দেখলেন আকাশ পরিষ্কার হয়ে গেছে এবং একটি সুন্দর রংধনু দেখা যাচ্ছে। তখন যদি তিনি বলেন, ‘আমার দোয়া যে কবুল হবে, সে ব্যাপারে এ হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি নিদর্শন’, তাহলে এতে দোষের কিছু নেই।
আমাদের এই ধারণা পোষণ করা উচিত যে, আমরা যা চাই আল্লাহ তা-ই দেবেন। যা আমাদের মনে আশার আলো জাগায় এবং আমাদের চিত্তকে সুখী করে, তা একটি শুভ লক্ষণ। এ রকম ভাবনা আমাদের ধর্মে অনুমোদিত। এই ঘটনায় সুহায়েলের নামের অর্থের মধ্যে নবিজি (সা) শুভ লক্ষণ দেখতে পেয়েছেন এবং বিষয়টি আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তবে নেতিবাচক লক্ষণ দেখা গেলে শুভ লক্ষণের ব্যাপারটি প্রযোজ্য হবে না। উদাহরণস্বরূপ, আপনি আল্লাহর কাছে দোয়া করছেন। এমন সময় আপনি বজ্রপাতের শব্দ শুনতে পেলেন। এ থেকে মনে করবেন না যে, এটি এই লক্ষণ যে আল্লাহ আপনার দোয়া প্রত্যাখ্যান করেছেন।
আরও পড়ুনঃ