দাসপ্রথা সম্পর্কে ইসলামের ধারণা | আল-মুরাইসি ও বনু আল-মুস্তালিকের অভিযান | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

দাসপ্রথা সম্পর্কে ইসলামের ধারণা | আল-মুরাইসি ও বনু আল-মুস্তালিকের অভিযান, ইসলামে দাসত্বের যে ধারণা রয়েছে, তার সাথে সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতকের আমেরিকান দাসপ্রথার মিল নেই। আফ্রিকান কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের নিয়ে সেই দাসপ্রথা ছিল প্রাচীন গ্রিস, চীন, আরব প্রভৃতি অঞ্চলের চেয়েও খারাপ । সারা পৃথিবীতে যখন দাসত্বের বর্বর ব্যবস্থা চালু ছিল, তখন আমাদের ইসলামি শরিয়া এতে মানবিকতার উপাদান এনেছে এবং উন্নততর ব্যবস্থার জন্ম দিয়েছে। যেমন, যদি কোনো দাস (‘আবদ’) স্বাধীন হওয়ার দাবি করে, তবে তাকে সেই সুযোগ দিতে হবে।

দাসপ্রথা সম্পর্কে ইসলামের ধারণা | আল-মুরাইসি ও বনু আল-মুস্তালিকের অভিযান | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

দাসপ্রথা সম্পর্কে ইসলামের ধারণা | আল-মুরাইসি ও বনু আল-মুস্তালিকের অভিযান | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

দাসত্ব বিদ্যমান থাকলেও শরিয়া দাসদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করতে বলে। আর যদি এই প্রথা বিলুপ্ত হয়ে যায়, তাহলে দাসত্ব সংক্রান্ত বিধিবিধানের পুরো অধ্যায়টিই বাদ দেওয়া যায়; তাতেও আমাদের শরিয়া পরিপূর্ণ ও নিখুঁত থেকে যায়। আমাদের জানা মতে, বর্তমান বিশ্বের কোনো মুসলিম পণ্ডিতই দাসপ্রথায় ফিরে যাওয়ার পক্ষে কিছু বলেন না।

ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে দাস কোথা থেকে আসতে পারে? এর একটিই মাত্র উৎস: যুদ্ধবন্দিদের মধ্যে যাদেরকে মুক্তিপণের মাধমে যুক্ত না করা হয়। নবিজি (সা) বলেছেন, “মানুষের মধ্যে সে-ই নিকৃষ্টতম ব্যক্তি যে একজন মুক্ত মানুষকে ক্রীতদাস হিসাবে বিক্রি করে দেয়। তার ওপর আল্লাহর অভিসম্পাত বর্ষিত হয় এবং আল্লাহ তার দিকে ফিরেও তাকাবেন না ।”

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

অতএব, দেখা যাচ্ছে, দাস কেনা-বেচা স্পষ্টতই হারাম । ইসলামি আইনে যুদ্ধবন্দিদের মধ্যে যারা মুক্তিপণপ্রাপ্ত নয় তারাই শুধু দাস হিসেবে রয়ে যায়। এখন বিষয়টি একটু গভীরভাবে ভাবুন যুদ্ধে বিপক্ষ দলের কিছু লোককে বন্দি করলেন, এখন তাদেরকে নিয়ে কী করবেন? তাদের হত্যা করবেন? তাদের কারাগারে রাখবেন? কারাগারে রাখলে কতদিন রাখবেন? কে তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করবে? এর বাস্তবসম্মত সমাধান হলো: ইসলামি সমাজ সেইসব যুদ্ধবন্দিকে গ্রহণ/আত্মভূত করে।

এর মাধ্যমে তাদের খাদ্য, বস্ত্র ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়। শেষ পর্যন্ত তারা স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করলে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। এটাই বাস্তবতা । ঐতিহাসিকভাবে বলতে গেলে, এই দাসদের মধ্যে অনেকেই শেষ পর্যন্ত তাদের নিজস্ব রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত উদাহরণ হলো মামলুকরা। ‘মামলুক’ শব্দের অর্থ দাস। তারা এক সময় দাস ছিল বলে তাদের মামলুক বলা হতো (৩)।

 

দাসপ্রথা সম্পর্কে ইসলামের ধারণা | আল-মুরাইসি ও বনু আল-মুস্তালিকের অভিযান | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য: ঔপনিবেশবাদ শুরুর আগের শেষ রাজত্ব ছিল মামলুকদের। শেষ পর্যন্ত ১৭৯২ সালে নেপোলিয়ন বোনাপার্ট মিশর আক্রমণের মাধ্যমে মামলুক রাজত্বের অবসান ঘটে মূল কথা হলো, ইসলাম সমসাময়িক বিশ্বের দাসপ্রথাকে মানবিকতা দিয়েছিল, সেই সাথে দাসদের মুক্ত করার জন্য উৎসাহিত করেছিল। বিভিন্ন কাফফারা আদায়ের ক্ষেত্রে দাসকে মুক্ত করার কথা বলা হয়েছে— উহাহরণস্বরূপ: যদি আপনি শপথ ভঙ্গ করেন তবে দাসকে মুক্ত করুন, যদি আপনি রোজা ভেঙে ফেলেন তবে দাসকে মুক্ত করুন ইত্যাদি।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment