নবিজিও (সা) আনুষ্ঠানিক দূত পাঠানোর সিদ্ধান্ত | হুদায়বিয়ার সন্ধি-২, এবার নবিজির (সা) দিক থেকে দূত পাঠানোর পালা। যেহেতু কুরাইশ মুশরিকরা কোনো নিরপেক্ষ গোত্রের ব্যক্তিকে গ্রহণ করছিল না, তাই তিনি একজন কুরাইশ মুসলিমকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। প্রথমে তিনি উমর ইবনুল খাত্তাবকে (রা) বেছে নিলেন তাঁর শক্তিমত্তা ও সাহসিকতার কারণে। এ ক্ষেত্রে যাকেই পাঠানো হোক না কেন তাকে সিংহের খাঁচায় প্রবেশ করতে হবে। সুতরাং তাঁর চেয়ে আর কে বেশি সাহসী যিনি ঘোষণা দিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে হিজরত করেছিলেন।
নবিজিও (সা) আনুষ্ঠানিক দূত পাঠানোর সিদ্ধান্ত | হুদায়বিয়ার সন্ধি-২ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

কিন্তু উমর (রা) বললেন, “হে আল্লাহর রসুল, কুরাইশদের প্রতি আমার শত্রুতা তো সর্বজনবিদিত। আমার ভয় হচ্ছে, তারা আমাকে গ্রহণ করবে না এবং আমাকে মেরে ফেলবে। সেখানে আমাকে রক্ষা করার জন্য আমার গোত্র (অর্থাৎ বনু আদি) থেকে কেউ এগিয়ে আসবে না। কিন্তু যদি আপনি আমাকে যেতে বলেন, তাহলে আমি অবশ্যই যাব। তবে এ ক্ষেত্রে উসমান ইবনে আফফান (রা) আমার চেয়ে অনেক বেশি যোগ্যতা রাখে।”

এখানে উমর যে ভয় পেয়েছিলেন তা তাঁর নিজের মৃত্যুর ভয় নয়। তাঁর জীবনের বহু ঘটনা প্রমাণ করে যে তিনি কাপুরুষ ছিলেন না। তিনি বদর, ওহুদ ইত্যাদি যুদ্ধে যে অকুতোভয় যোদ্ধা হিসেবে লড়েছিলেন তা সর্বজনবিদিত। তিনি যে ভয়টি করেছিলেন তা হলো, তাঁকে যদি হত্যা করা হয় তাহলে আলোচনা আর সামনে এগোবে না। তাহলে পুরো উদ্যোগটিই বৃথা যাবে। উমর (রা) আসলে পুরো বিষয়টি দেখেছিলেন বৃহত্তর পরিসরে এবং বাস্তবতার নিরিখে।
উসমানের (রা) নাম প্রস্তাব করার কারণ হলো, তিনি এসেছেন বনু আবদ শামস থেকে। আর বনু আবদ শামসের আরেক বিশিষ্ট কুরাইশ আবু সুফিয়ান মক্কার অবিসংবাদিত নেতা। জাহেলি আরবদের কাছে আত্মীয়তার সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই উসমান (রা) আবু সুফিয়ানের কাছ থেকে উমরের চেয়েও অনেক বেশি সহানুভূতি আশা করতে পারে। উমরের (রা) এই মত নবিজি (সা) গ্রহণ করলেন এবং উসমান ইবনে আফফানকে (রা) দূত হিসেবে মনোনীত করলেন।
আরও পড়ুনঃ