ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস আজকের আলোচনার বিষয়। “ফেরেশতা, আসমানি কিতাব ও তাকদির এর প্রতি বিশ্বাস [ Believe in angels, heavenly books and destiny ]” ক্লাসটি “কুরআন মাজিদ ও তাজভিদ [Quran Majid and Tajvid]” বিষয়ের পাঠ, যা ৭ম শ্রেণীতে [Class- 7] পড়ানো হয়। “ফেরেশতা, আসমানি কিতাব ও তাকদির এর প্রতি বিশ্বাস [ Believe in angels, heavenly books and destiny ]” পাঠটি “কুরআন মাজিদ ও তাজভিদ [Quran Majid and Tajvid]” বিষয়টিতে বা “৩য় অধ্যায় [Chapter- 3] এ পড়ানো হয়।
Table of Contents
ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস
ফেরেশতা (আরবি: ملاءكة) ইসলামী বিশ্বাসমতে স্বর্গীয় দূত। আরবিতে ফেরেশতাদের একবচনে মালাক ও বহুবচনে মালাইক বলে। তাদের সম্পর্কে বলা হয়, তারা মানুষের ন্যায় আল্লাহর আরেক সৃষ্টি।
তাঁরা দিনরাত ক্লান্ত না হয়ে আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করেন এবং আল্লাহর অবাধ্য হবার কোনো ক্ষমতা তাদের নেই। ফেরেশতারা নূর তথা আলোর তৈরি। তারা পবিত্র স্থানে অবস্থান করেন। তারা যেকোনো স্থানে গমনাগমন ও আকৃতি পরিবর্তনের ক্ষমতা রাখেন। ইসলাম, খ্রিস্টান ও ইহুদী ধর্মে বলা হয়েছে ।
কুরআনে ফেরেশতাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে,
“তারা আল্লাহ তা’আলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করে।”

শব্দ ব্যবহার
কিছু মুসলিম আলেম মূল ইসলামী আরবী শব্দ “মালাক” (ملك)-এর ব্যবহারকে অধিক উৎসাহিত করে থাকেন, যুক্তি হিসেবে তারা বলেন, মালাক শব্দটি কুরআনে ব্যবহৃত হয়েছে, তাই শব্দটি বলার সময় প্রতি হরফে দশ নেকি করে ৬ হরফে মোট ৬০ নেকি সাওয়াব পাওয়া যাবে, যা ফেরেশতা বা অন্যান্য অ-কুরআনীয় প্রতিশব্দ উচ্চারণে পাওয়া যাবে না। কুরআনীয় শব্দ বলায় প্রতি হরফে দশ নেকির ক্ষেত্রে তারা ইসলামী নবী মুহাম্মদের উক্ত হাদীসটি পেশ করেন,
রাসূল (সা.) বলেছেন,
مَنْ قَرَأَ حَرْفًا مِنْ كِتَابِ اللَّهِ فَلَهُ بِهِ حَسَنَةٌ، وَالحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا، لَا أَقُولُ الم حَرْفٌ، وَلَكِنْ أَلِفٌ حَرْفٌ وَلَامٌ حَرْفٌ وَمِيمٌ حَرْفٌ
‘আল্লাহ তাআলার কিতাবের একটি হরফ যে ব্যক্তি পাঠ করবে তার জন্য এর সওয়াব আছে। আর সওয়াব হয় তার দশ গুণ হিসেবে। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মীম একটি হরফ, বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ এবং মীম একটি হরফ।’
— [সুনানে তিরমিযি, হাদিস: ২৯১০]
শ্রেণিবিন্যাস
ফেরেশতাদের সংখ্যা অগণিত। কোনো কোনো ইসলামী চিন্তাবিদ কাজের উপর ভিত্তি করে ফেরেশতাদের চৌদ্দটি শ্রেণীতে ভাগ করে থাকেন। যাদের মধ্যে চারজনকে উচ্চমর্যাদার ফেরেশতা বলা হয়ে থাকে।
- হামালাতুল আরশ: এরা হল আল্লাহর আরশের বাহক।
- জিব্রাইল: এই ফেরেশতার নাম তিনবার ইসলাম ধর্মের ধর্মগ্রন্থ কুরআন শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে। কুরআনে তাকে পবিত্র আত্মা বা রুহুল কুদুস বলা হয়েছে।আল্লাহর আদেশ-নিষেধ এবং সংবাদ আদান-প্রদান যেসব ফেরেশতার দায়িত্ব, জিব্রাইল তাদের প্রধান। বলা হয়, জিব্রাইল-ই আল্লাহর নবীদের বা বাণীবাহকদের কাছে ওহী পৌছিয়ে দিতেন।
- মিকাইল: কুরআনে এই ফেরেশতার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ইনি বৃষ্টি ও খাদ্য উৎপাদনের দায়িত্বপ্রাপ্ত।
- ইসরাফিল: এই ফেরেস্তা কিয়ামত বা মহাপ্রলয় ঘোষণা করবেন। তার নাম কুরআন শরীফে নেই কিন্তু হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে।
- আজরাইল: তাকে কুরআনে মালাক আল-মাউত নামে অভিহিত করা হয়েছে। ইনি মৃত্যুর ফেরেশতা ও প্রাণ হরণ করেন।
- সাতটি বেহেশতের ফেরেশতাগণ।
- হাফাজা বা তত্ত্বাবধায়ক ফেরেশতাগণ।
- মুনকার ও নাকীর: কবরে প্রশ্নকারী ফেরেশতাদ্বয়।
- দারদায়িল
- মালিক: জাহান্নাম বা নরক তত্ত্বাবধানকারী ফেরেশতা।
- রেদওয়ান: জান্নাত বা স্বর্গ তত্ত্বাবধানকারী ফেরেশতা।
- জাবানিয়া: জাহান্নামে দায়িত্ব পালনকারী ফেরেশতাগণ।
- নিয়ম শৃঙ্খলা পালনকারী ফেরেশতাগণ।
এছাড়াও বিশেষ দুজন ফেরেশতা কিরামুন ও কাতিবীন প্রতিজন মানুষের ভালো-মন্দ কাজের হিসাব রাখেন।
ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস নিয়ে বিস্তারিত ঃ
আরও দেখুনঃ