হাসান ইবনে আলির (রা) জন্ম | আল-মুরাইসি ও বনু আল-মুস্তালিকের অভিযান, সিরাহ বর্ণনাকারীদের বেশিরভাগের মত অনুসারে, নবিজির (সা) প্রথম নাতি হাসান হিজরতের পঞ্চম বছরের শাবান মাসে জন্মগ্রহণ করেন। তবে কেউ কেউ বলেন, হিজরতের পঞ্চম বছরের শাবান মাসে জন্মগ্রহণ করেন হোসেন। এর অর্থ হলো, হাসান জন্মগ্রহণ করেছিলেন হিজরতের চতুর্থ বছরের রমজান মাসে, কারণ হাসান ও হোসেনের জন্মের মধ্যে ১০-১১ মাসের ব্যবধান ছিল। ফাতেমা (রা) হাসানকে জন্ম দেওয়ার পরে প্রসবোত্তর রক্তক্ষরণ শেষ হওয়ার পরপরই হোসেনকে গর্ভে ধারণ করেন।
হাসান ইবনে আলির (রা) জন্ম | আল-মুরাইসি ও বনু আল-মুস্তালিকের অভিযান | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

হাসান জন্মগ্রহণ করার পরে নবিজি (সা) আলিকে (রা) বললেন, “আমার পুত্রকে দেখাও। তুমি ওর নাম কী রেখেছ?” আলি (রা) বললেন, “হারব।”
হারব একটি বহুল ব্যবহৃত প্রাক-ইসলামিক নাম । হারব শব্দের অর্থ যুদ্ধ । নবিজি (সা) বললেন, “না, সে হারব (যুদ্ধ) নয়, বরং সে হচ্ছে হাসান (সৌন্দর্য)।” [সহিহ বুখারি থেকে আমরা জানি, নবিজি (সা) কারও নামের অর্থ মন্দ, অবমাননাকর কিংবা অহঙ্কারসূচক হলে তা বদলে ভালো অর্থের নাম রাখতেন।
একবার এক বৃদ্ধা তাঁর কাছে এলে তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনার নাম কী?”
বৃদ্ধা নিজের নাম বললেন, যার অর্থ দাঁড়ায় ‘কুৎসিত’। নবিজি তাঁকে (সা) বললেন, “না, বরং আপনি হাসানা (সুন্দরী)।”

যদিও তিনি একজন বয়স্ক নারী ছিলেন। বাররাহ নামে উম্মে সালামার একটি মেয়ে ছিল। বাররাহ শব্দটির অর্থ ‘অত্যন্ত ধার্মিক মহিলা’। তবে এই নামে ডাকলে নিজের ধার্মিকতা সম্পর্কে উচ্চমন্যতার জন্ম হতে, তা একপর্যায়ে অহংকারে রূপ নিতে পারে । তাই নবিজি (সা) তার নাম পরিবর্তন করে রাখলেন জয়নব, যার অর্থ উদারতা, দানশীলতা, ফুলের সুগন্ধি ।]
আবু দাউদে বর্ণিত আছে, নবিজি (সা) হাসানের জন্মের পর তার ডান কানে আজান দিয়েছিলেন। তিনি ফাতেমা ও আলিকে হাসানের আকিকা বিষয়ে যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, আকিকা-সম্পর্কিত বেশির ভাগ হাদিস তা থেকেই এসেছে। তিনি ফাতেমাকে বলেন, “ওর চুল কামিয়ে দাও। আর ওর চুলের ওজন করে সমপরিমাণ রৌপ্য দান করে দাও (অর্থাৎ অল্প পরিমাণ অর্থ সাদাকা হিসেবে দিয়ে দাও)।”
ফাতেমা বলেন, “আমরা কি তার জন্য আকিকা করব?” নবিজি (সা) বলেন, “না। আমি সেটি করব।” হাসানের জন্মে নবিজি (সা) অত্যন্ত খুশি এবং গর্বিত ছিলেন। আকিকা উপলক্ষে তিনিই দুটি ভেড়া কোরবানি দিয়ে সবাইকে দাওয়াত করেন ।
আরও পড়ুনঃ