ইসলামি আইনে মাসলাহার ভূমিকা | আয়েশার (রা)-এর ওপর মিথ্যা অপবাদ-১, আমরা ওহুদের যুদ্ধের সময়ও আবদুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের মুনাফেকির স্বরূপ দেখেছি। এ বিষয়ে সাক্ষ্য হিসেবে পবিত্র কোরানে কিছু আয়াতও আছে। তবে এই ঘটনার মাধ্যমে তার আসল চরিত্র সম্পূর্ণভাবে উন্মোচিত হয়ে যায় ।
ইসলামি আইনে মাসলাহার ভূমিকা | আয়েশার (রা)-এর ওপর মিথ্যা অপবাদ-১ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

এই ঘটনার পরে মুনাফেকদের অনেকেই আবদুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের সংসর্গ ত্যাগ করে সত্যিকারের মুসলিমে পরিণত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নবিজি (সা) উমরকে (রা) বলেন, “উমর, এখন তুমি কি মনে করো? যদি আমি সেদিন তোমাকে তাকে হত্যা করার নির্দেশ দিতাম তাহলে হয়তো আমি তার বহু অনুসারীদের দূরে সরিয়ে দিতাম। কিন্তু এখন যদি আমি সেই একই লোকদের (তার একসময়ের অনুসারীদের) বলি তাকে হত্যা করতে, তাহলে তারা নিজেরাই এই কাজটি করবে।” জবাবে উমর (রা) বলেন, “আল্লাহর কসম, আমি ভালো করেই জানি যে নবিজির (সা) মতামত আমার মতামতের চেয়ে অধিকতর উত্তম।”

ইসলামি আইনে মাসলাহার ভূমিকা
নবিজি (সা) ভেবেছিলেন, তিনি যদি আবদুল্লাহ ইবনে উবাইকে হত্যা করার নির্দেশ দেন, তাহলে সকলের ধারণা হবে যে, মুহাম্মদ নিজের লোককে হত্যা করেছে।’ তাছাড়া এতগুলো মানুষ মুনাফেকি ছেড়ে সঠিক পথে ফিরে আসার গুরুত্বও কম নয়। নবিজি (সা) ভালো ও মন্দ উভয় দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ।
এই ঘটনা ‘মাসলাহা’র অন্যতম প্রধান প্রমাণ। মাসলাহা অর্থ জনকল্যাণ (অর্থাৎ যা জনগণের জন্য মঙ্গলজনক)। মুসলিম শাসক, বিচারক ও ফিকহশাস্ত্রবিদরা উম্মাহর জন্য সবদিক বিবেচনায় নিয়ে কী ভালো তা দেখার চেষ্টা করেছেন এবং সে অনুসারে আইন প্রণয়ন করেছেন। মাসলাহা ইসলামি আইনের অন্যতম উৎস। তবে লক্ষ রাখতে হবে, সুস্পষ্ট ইসলামি টেক্সটকে বিরোধিতা করার জন্য যেন মাসলাহার ব্যবহার না করা নয়। মাসলাহা তখনই ব্যবহৃত হতে পারে যেখানে শরিয়ায় কিছু বলা নেই। কোনো কিছু কোরান বা সুন্নাহতে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকলে আল্লাহ ও তাঁর রসুলের (সা) আদেশ মান্য করাটাই হবে মাসলাহা ।
আরও পড়ুনঃ