মহাসড়কে ডাকাতি গ্রহণযোগ্য নয় | হুদায়বিয়ার সন্ধি-২ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

মহাসড়কে ডাকাতি গ্রহণযোগ্য নয় | হুদায়বিয়ার সন্ধি-২, মুগিরা ছোটবেলায় একজন ফুর্তিবাজ মানুষ ছিলেন। কিছু খারাপ মানুষের সংসর্গে পড়ে তিনি একটি দুর্বৃত্ত দলের সঙ্গে মিশে ডাকাত হয়ে যান। অবশেষে মহসাড়কে ডাকাতি, নিরীহ মানুষকে হত্যা করা এবং তাদের সমস্ত পণ্য চুরি করা ইত্যাদি তাঁর প্রাত্যহিক কাজের অংশ হয়ে দাঁড়ায়। মুগিরা ও তাঁর বন্ধুরা যাদের ওপর অত্যাচার করতেন, তারা এক সময় সাকিফদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। যুদ্ধে সাকিফদের পিছু হটতে হয় এবং প্রচুর পরিমাণ রক্তমূল্য দিতে হয়। তারপর মুগিরা ও তাঁর বন্ধুরা বিভিন্ন দিকে পালিয়ে যায়। তাদের পক্ষে আর সাকিফদের কাছে ফিরে যাওয়া সম্ভব ছিল না।

মহাসড়কে ডাকাতি গ্রহণযোগ্য নয় | হুদায়বিয়ার সন্ধি-২ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

মহাসড়কে ডাকাতি গ্রহণযোগ্য নয় | হুদায়বিয়ার সন্ধি-২ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

এক সময় মুগিরার কাছে ইসলামের বাণী পৌঁছে এবং তিনি ধর্মান্তরিত হয়ে মদিনায় আসেন। মদিনায় তিনি আগের পেশা ছেড়ে জীবনের একটি নতুন অধ্যায় শুরু করেন। নবি করিম (সা) তাঁকে বললেন, “আমরা তোমার ধর্মান্তরিত হওয়াকে গ্রহণ করব। কিন্তু অন্যের কাছ থেকে লুট করা যে অর্থ তোমার কাছে আছে তার কিছুই আমরা গ্রহণ করতে পারব না।

মুগিরার এই ঘটনা থেকে আমরা ইসলামে ন্যায়পরায়ণতার গুরুত্ব দেখতে পাই। মুগিরা পৌত্তলিকদের হত্যা করে তাদের সম্পত্তি ছিনিয়ে নিতেন, মুসলিমদের থেকে নয়। তবু সেই কাজ ছিল হারাম। কারণ ইসলামের দৃষ্টিতে অবিশ্বাসীদের জীবনও পবিত্র। কোনো বৈধ কারণ ছাড়া তাদের হত্যা করা যাবে না, এমনকি তাদের সম্পত্তির নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে।

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

ইসলামের বিরুদ্ধে প্রাচ্যবিদদের অন্যতম প্রধান সমালোচনা হলো, “প্রথম যুগের মুসলিমরা তো ছিল মহাসড়কের ডাকাতদের একটা দল।” তাদের এটা বলার কারণ হলো, নবিজি (সা) ও সাহাবিরা কুরাইশদের কাফেলার ওপর আক্রমণ চালাতেন। এই অভিযোগের মূলে সত্য আছে। কিন্তু যেমনটি আমরা আগে (৩৬তম পর্বে) আলোচনা করেছি, নবিজি (সা) ও সাহাবিরা শুধু কুরাইশদের ওপরেই হামলা করতেন। কারণ, কুরাইশরা হিজরতের পর তাঁদের (মুসলিমদের) সম্পত্তি দখল করে নিয়েছিল ।

মুগিরার এই ঘটনা থেকে আমরা দেখতে পাই, নবিজি (সা) ও সাহাবিরা মহাসড়কে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকা তো দূরের কথা, ডাকাতির সঙ্গে সম্পর্কিত একটি টাকাও গ্রহণ করেননি। তাই যখন মুগিরা ইসলাম গ্রহণ করেন, তখন তাঁকে আক্ষরিকভাবে প্রথম থেকে শুরু করতে হয়েছিল। এতদিনে হুদায়বিয়ার ঘটনার সময়ে তিনি একজন ভালো মুসলিমে পরিণত হয়েছেন। পরবর্তী সময়ে তিনি একজন বিখ্যাত সাহাবি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি অনেক হাদিস বর্ণনা করেছেন।

 

মহাসড়কে ডাকাতি গ্রহণযোগ্য নয় | হুদায়বিয়ার সন্ধি-২ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

এখন হুদায়বিয়ায় মুগিরা দেহরক্ষী নবিজির (সা) দেহরক্ষী হিসেবে ঠিক পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে পাহারা দিচ্ছেন। যখন তাঁর আপন চাচা নবিজির দাড়ির (সা) ওপর হাত রাখতে গেলেন, তখন তিনি হাতটি সরিয়ে নিতে বললেন। উরওয়া বলল, “কে এই কথা বলছে?”

মুগিরা: আমি মুগিরা ইবনে শুবা ।

উরওয়া: হে বিশ্বাসঘাতক, তুমি কি এখনও মানুষকে ঠকিয়ে যাচ্ছ? 

মুগিরা এই কথার কোনো সাড়া দিলেন না ।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment