যথাসময়ে ফজর পড়তে না পারা | হুদায়বিয়ার সন্ধি ( চুক্তি )-৫, হুদায়বিয়া থেকে ফেরার পথে আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে। সাহাবিরা একদিন সারাদিনের সফর শেষে সন্ধ্যায় রাস্তার পাশে শিবির স্থাপন করেছেন। সবাই ক্লান্ত ও অবসন্ন। নবিজি (সা) সাহাবিদের বললেন, “তোমাদের মধ্যে কে আমাদের পাহারা দেবে এবং ফজরের নামাজের জন্য জাগিয়ে দেবে?” বেলাল (রা) স্বেচ্ছায় এ দায়িত্ব নিয়ে বললেন, তিনি কাজটি করবেন। কিন্তু সারাদিনের পরিশ্রমের কারণে বেলালও বেশ ক্লান্ত । তিনিও এক সময় বাকি মুসলিমদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন।
যথাসময়ে ফজর পড়তে না পারা | হুদায়বিয়ার সন্ধি ( চুক্তি )-৫ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

সাহাবিদের মধ্যে প্রথম ঘুম ভাঙে আবু বকর (রা) কিংবা উমরের (রা), যখন তাঁরা গায়ে সূর্যের রশ্মি অনুভব করেন। তার মানে, তখন সকাল ৭টা কিংবা ৮টা বেজে গেছে। উল্লেখ্য, সাহাবিরা সচরাচর সকালে ঘুমাতেন না; এটা শুধু ফজর পড়ার জন্য নয়, জীবিকা নির্বাহের তাগিদেও। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ১,৪০০ জনের কেউই সূর্যের তাপ গায়ে না লাগা পর্যন্ত ঘুম থেকে উঠতে পারলেন না।

কল্পনা করুন, তাঁরা সবাই কতটা ক্লান্ত ছিলেন! সাহাবিরা কখনই নবিজিকে (সা) নাড়া দিয়ে ঘুম থেকে জাগাতেন না। এটাকে তাঁরা শিষ্টাচার-বহির্ভূত বলে মনে করতেন। তাই আবু বকর (রা) বা উমর (রা) জোরে জোরে বলতে লাগলেন, “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার।” তাকবিরের শব্দে নবিজি (সা) ঘুম থেকে উঠলেন। বেলাল তখনও ঘুমাচ্ছেন। তিনি (বেলাল) জেগে থাকার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পারেননি। তিনি জেগে উঠে দেখতে পেলেন, সবাই তাঁর দিকে তাকিয়ে আছে। তিনি বললেন, “হে আল্লাহর রসুল, আমি চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু।”
নবিজি (সা) সাহাবিদের বললেন, “চলো, আমরা এই জায়গা থেকে সরে যাই, কারণ শয়তান এখানে আমাদের ফজর পড়তে বাধার দৃষ্টি করেছে।” তারপর তাঁরা একটু দূরে সরে গিয়ে ফজরের নামাজ আদায় করলেন । নিশ্চয়ই এখানে মহান আল্লাহ তায়ালার কোনো প্রজ্ঞা নিহিত আছে। আমাদের মধ্যে অনেক ধার্মিক ব্যক্তিও ঘুমের কারণে ফজর যথাসময়ে পড়তে পারেন না। এই ঘটনা থেকে আমাদের জন্য শিক্ষণীয় হলো, যদি কোনো বৈধ কারণে আমরা যথাসময়ে ফজর পড়তে না পারি, তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা আদায় করা উচিত ।
আরও পড়ুনঃ