নামাজ আদায়ের গুরুত্ব ও ফজিলত | হাদিস নিয়ে আলোচনা

নামাজ আদায়ের গুরুত্ব ও ফজিলত – ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নামাজ। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর পক্ষ থেকে বার বার নামাজ আদায়ের তাগিদ পেয়েছেন। কোরআনে মহান আল্লাহ বিভিন্ন জায়গায় সরাসরি ৮২ বার সালাত শব্দ উল্লেখ করে নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজকে ঈমানের পর স্থান দিয়েছেন। নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে সাহাবীদের সামনে অসংখ্য হাদিস বর্ণনা করেছেন। নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়া মুমিন মুসলমানরে ঈমানের দাবি ও ফরজ ইবাদত। নামাজি ব্যক্তিই হলো সফল।

 

নামাজ আদায়ের গুরুত্ব ও ফজিলত

জামাআতে নামাজ আদায়ে রয়েছে বিশেষ সাওয়াব। একাকি নামাজ পড়ার ব্যক্তির চেয়ে ২৭ গুণ বেশি সাওয়াবের কথা এসেছে হাদিসের বিশুদ্ধ বর্ণনায়-
হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘একাকির নামাজ অপেক্ষা জামাআতে নামাজ সাতাশ গুণ উত্তম।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ, মুয়াত্তা মালেক)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, পুরুষদের পক্ষে জামায়াতে নামাজ আদায় করার ছাওয়াব তার ঘরে ও বাজারে নামাজ পড়ার চেয়ে পঁচিশ গুণ বেশি। এর (মসজিদে নামাজ আদায়ের) কারণ হলো-

– কোনো ব্যক্তি যখন ভালোভাবে অজু করে নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে গমন করে এবং নামাজ ছাড়া তার মনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য না থাকে; তখন মসজিদে প্রবেশ না করা পর্যন্ত প্রতিটি পদক্ষেপের (কদমের) বিনিময়ে তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং একটি গোনাহও মাফ হয়ে যায়।

– মসজিদে প্রবেশ করে যতক্ষণ পর্যন্ত সে নামাজের অপেক্ষায় বসে থাকে, ততক্ষণ সে নামাজের অনুরূপই ছাওয়াব পেতে থাকে।

– আর যে ব্যক্তি নামাজ আদায়ের পর কাউকে কষ্ট না দিয়ে ওজুসহ মসজিদে অবস্থান করে, ততক্ষণ ফেরেশতারা তার ক্ষমার জন্য এই বলে দোয়া করতে থাকে-
‘হে আল্লাহ! এ (ব্যক্তি) কে তুমি ক্ষমা করে দাও; হে আল্লাহ! এর তাওবা কবুল কর; হে আল্লাহ! এর প্রতি তুমি দয়া প্রদর্শন কর।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ, মুয়াত্তা মালেক)

 

নামাজ আদায়ের গুরুত্ব

 

ফেরেশতাদের দোয়া

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অজু অবস্থায় তার নামাজের স্থানে যতক্ষণ অবস্থান করে, ফেরেশতারা তার জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত (ক্ষমা ও রহমতের) দোয়া করতে থাকে। তারা দুআ করে-
‘হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! তাকে দয়া করুন।’ (বুখারি)

নামাজের জন্য অপেক্ষা কিংবা নামাজ পরবর্তী সময়ে অপেক্ষা; এ সবই মসজিদে গিয়ে জামাআতে নামাজের আগে কিংবা পরেই হয়ে থাকে।

 

মুনাফেকি থেকে মুক্তি

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মুনাফেকদের জন্য সবচেয়ে কঠিন হলো এশা ও ফজরের নামাজ। যদি তারা এর প্রতিদান সম্পর্কে জানতো, তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও (মসজিদে) নামাজে এসে অংশগ্রহণ করতো।’ (বুখারি)

এ দুই ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে জামাআতের সঙ্গে আদায় করা অনেক কঠিন। সুতরাং যারা এশা এবং ফজর নামাজ মসজিদে এসে জামাআতে আদায় করবে তারা মুনাফেকি থেকে মুক্তি পাবে।

 

সারারাত নামাজ পড়ার সাওয়াব

হজরত ওসমান ইবনে আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি-
‘যে ব্যক্তি এশার নামাজ জামাআতের সঙ্গে আদায় করল, সে অর্ধেক রাত কেয়াম (নামাজ আদায়) করল। আর যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাআতের সঙ্গে আদায় করল (অর্থাৎ এশা এবং ফজর নামাজ জামাআতের সঙ্গে আদায় করল) সে যেন সারারাত কেয়াম (নামাজ আদায়) করল।’ (মুসলিম)

জামাআতের সঙ্গে এশা ও ফজর নামাজ পড়ার মাধ্যমেই সব মুমিন মুসলমানের দ্বারাই সারারাত জেগে নামাজ পড়ার সাওয়াব অর্জন করা সম্ভব।

 

ফরজ নামাজ 1 নামাজ আদায়ের গুরুত্ব ও ফজিলত | হাদিস নিয়ে আলোচনা

 

গোনাহ মাফ ও মর্যাদা লাভ

হজরত আবু সাইদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সামনে সমবেত সাহাবাদের প্রশ্ন করেন- আমি কি তোমাদের এমন একটি কাজের কথা বলবো না? যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের গুনাহকে মাফ করবেন এবং তোমাদের নেকিকে বাড়িয়ে দেবেন!’

সমবেত সব সাহাবারা বললেন, ‘অবশ্যই; হে আল্লাহর রাসুল!’
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘প্রতিবন্ধকতা থাকলেও যথাযথভাবে অজু করে পায়ে হেঁটে মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য অপেক্ষা করতে থাকা।’ (ইবনে মাজাহ)

 

নামাজ আদায়ের গুরুত্ব ও ফজিলত নিয়ে বিস্তারিত :

 

আরও দেখুনঃ 

Leave a Comment