আল কুরআনের অবতরণ, সংরক্ষণ ও সংকলন আজকের আলোচ্য বিষয়। আল কুরআনের অবতরণ, সংরক্ষণ ও সংকলন [The revelation, preservation and compilation of Al-Quran] ক্লাসটি মাদ্রাসার দাখিল [Dakhil] অষ্টম শ্রেণীর [Class 8] কুরআন মাজিদ ও তাজবিদ [Quran Majeed Tajweed] বিষয়ের পাঠ।
আল কুরআনের অবতরণ, সংরক্ষণ ও সংকলন
অবতরণ : পবিত্র কুরআনুল কারিম লাওহে মাহ্ফুজ হতে দুইবার অবতরণ হয়েছে।
প্রথম অবতরণ : লাওহে মাহ্ফুজ হতে বাইতুল ইজ্জতে যা বাইতুল্লাহ্ শরিফ বরাবর অবস্থিত ফেরেস্তাদের ইবাদতখানা যার অপর নাম বাইতুল মা’মুর। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন প্রথমত পূর্ণ কুরআনকে একসাথে লাইলাতুল কদরে বাইতুল ইজ্জতে অবতরণ করেছেন, কুরআনুল হাকিমে ইরশাদ হচ্ছে, নিশ্চয় আমি ইহাকে (কুরআন) লাইলাতুল কদরে অবতরণ করেছি (সূরা কদর ১)।

দ্বিতীয় অবতরণ : হজরত আয়েশা রা: হতে বর্ণিত প্রিয়নবী সায়্যিদুল মুরসালীন খাতামুন্নাবিয়্যিন মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্ সা: নবুওয়াত প্রাপ্তির পূর্বে নির্জনতা পছন্দ করতেন, এ কারণে তিনি বাইতুল্লার অদূরে অবস্থিত হেরাগুহায় নিসঙ্গ জীবন বেছে নিলেন, এমনকি তার বয়স যখন চল্লিশ বছর পূর্ণ হলো, তখন আল্লাহ্ তায়ালা মহা পবিত্র লাওহে মাহ্ফুজে সংরক্ষিত বাণীকে জিবরাইল আ: মারফতে দুনিয়ার জমিনে নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্ সা:-এর ওপর অবতরণ করেন।
রাসূল সা:-এর ওপর সর্বপ্রথম নাজিলকৃত কুরআনের অংশ হলো সূরা আলাকের প্রথম তিন আয়াত এরপর ধারাবাহিকভাবে দীর্ঘ তেইশ বছর যাবত প্রয়োজন অনুসারে অল্প অল্প করে পূর্ণ কুরআন অবতীর্ণ হয়। রাসূলুল্লাহ্ সা: কুরআন নাজিলের প্রথম দিন হতে শেষ পর্যন্ত পূর্ণ কুরআনকে স্বয়ং মুখস্থ এবং আপন সাহাবায়ে কেরামকে মুখস্থের প্রতি উৎসাহ করে ও তাকিদ দিয়ে কুরআনুল কারিমকে দুনিয়ার জমিনে সংরক্ষণের প্রাথমিক ব্যবস্থাপনা করেন। অতঃপর বিভিন্ন সাহাবিকে যথা উবাই ইব্নে কা’ব, মুয়াবিয়া, যাবেদ প্রমুখকে কুরআন লিখে সংরক্ষণ করার দায়িত্ব অর্পণ করেন।
কারণ মুখস্থ এক সময় ভুলে যাওয়ার ও সম্ভাবনা থাকে, সুতরাং তারা রাসূল সা: এর পূর্ণ নেগরাণীতে এবং দিক নির্দেশনায় অর্থাৎ কোন্ সূরা কোথায় হবে এমনকি কোন আয়াত কোথায় থাকবে সে বিষয়েও রাসূল সা: থেকে পরামর্শ নেন ও সে অনুপাতে কুরআন লিখে রাখেন। তবে রাসূল সা:-এর জীবদ্দশায় পূর্ণ কুরআনকে একত্রে কিতাব আকারে লিপিবদ্ধ করা হয়নি, কারণ রাসূল সা: যতক্ষণ জীবিত আছেন ততক্ষণ পর্যন্ত ওহি/কুরআন নাজিল হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
অতঃপর সেই নাজিল আয়াত বা সূরাটি কোন স্থানে হবে তাও কারো জানা ছিল না অর্থাৎ বিষয়টি এমন ছিল না যে, আগে অবতীর্ণ সূরা বা আয়াত আগে লিখা হবে আর পরে অবতীর্ণ আয়াত পরে লিখা হবে বরং বিষয়টি ছিল সম্পূর্ণ খোদা কর্তৃক সিদ্ধান্ত তিনি যে সূরাকে যেখানে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন রাসূল সা: সেই সূরাকে সেখানেই প্রতিস্থাপন করার জন্য বলেছেন আর অহি লিখক সাহাবিরা রাসূলের নির্দেশকে হুবহু বাস্তবায়ন করেছেন বিধায় রাসূল সা: জীবিত থাকা পর্যন্ত পূর্ণ কুরআনকে একত্রে কিতাবের রূপ দেয়া সম্ভব হয়নি। বরং বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন স্থানে লিখে তা সংরক্ষণ করা হতো।
মাবনী আরবি ব্যাকরণ নিয়ে বিস্তারিত ঃ
আরও দেখুনঃ