হাদিস পরিচিতি ও হাদিস শরীফ মানবন্টন আজকের আলোচনার বিষয়। হাদিস পরিচিতি [ Introduction to Hadith ] ও হাদিস শরীফ মানবন্টন [ Hadith Sharif Number Distribution ] ক্লাসটি হাদিস শরীফ [ Hadith Sharif ] বিষয়ের পাঠ। হাদিস পরিচিতি [ Introduction to Hadith ] ও হাদিস শরীফ মানবন্টন [ Hadith Sharif Number Distribution ] ক্লাসটি আলিয়া মাদ্রাসার দাখিল ৯ম শ্রেণী [ Alia Madrasa Dakhil Class 9 ] এর হাদিস শরীফ [ Hadith Sharif ] বিষয়ের, ১ম অধ্যায়ের [ Chapter 1 ]।
হাদিস পরিচিতি ও হাদিস শরীফ মানবন্টন
ইসলামে হাদিস বহুবচন: aḥādīth–أحاديث, আরবি উচ্চারণ: যা আক্ষরিক অর্থে “কথা” অথবা “বক্তৃতা”) বা আছার (আরবি: أثر, ʾAṯar, আক্ষরিক অর্থে “ঐতিহ্য”) বলতে ইসলামের নবি মুহাম্মাদ সা– এর কথা, কাজ ও নীরব অনুমোদন বুঝানো হয়, যা নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীদের শৃঙ্খলের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
অন্য ভাষায়, মুহাম্মাদ সা. যা বলেছিলেন; যা করেছিলেন এবং যে কাজ দেখার পর নীরবতা অবলম্বন করেছিলেন, তাই হাদিস। হাদিস হলো পবিত্র কুরআনের ব্যাখ্যা সরূপ। যেমন কুরআনে বলা হয়েছে: “তাড়াতাড়ি শিখে নেয়ার জন্য আপনি দ্রুত ওহী আবৃত্তি করবেন না; কারণ এর সংরক্ষণ এবং পাঠ আমাদের দায়িত্বে। অতঃপর আমি যখন তা পাঠ করি, তখন আপনি সেই পাঠ অনুসরণ করুন। এরপর তা ব্যাখ্যা করা আমাদের দায়িত্ব।”

হাদিসকে ইসলামি সভ্যতার ‘মেরুদন্ড’ বলা হয় এবং ইসলামে ধর্মীয় আইন ও নৈতিক দিকনির্দেশনার উৎস হিসাবে হাদিসের কর্তৃত্ব কুরআনের পরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে, হাদিসের শাস্ত্রীয় কর্তৃত্ব এসেছে মূলত কুরআন থেকে। কারণ কুরআনে মুসলিমদের মুহাম্মদ সা.–কে অনুকরণ করতে ও তার রায় মেনে চলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে (যেমন ২৪:৫৪, ৩৩:২১ নং আয়াতে )। এ জন্যই মুসলমানরা হাদিসকে ইসলামি আইনশাস্ত্রের চারটি উৎসের একটি মনে করে ( অপর তিনটি হল: কুরআন, ইজমা ও কিয়াস)।
কুরআনে ইসলামি আইন সম্পর্কিত আয়াতের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। হাদিসে ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার বিবরণ (যেমন: গোসল বা অজু ) থেকে শুরু করে সালাতের সঠিক ধরন ও দাসদের প্রতি দানশীলতার গুরুত্ব পর্যন্ত সব কিছুরই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এভাবে শরীয়তের (ইসলামি আইন) নিয়মের “বৃহৎ অংশ” কুরআনের সাথে সাথে হাদিস থেকে নেওয়া হয়েছে।
হাদিস মূলত আরবি শব্দ, যার অর্থ বক্তৃতা, প্রতিবেদন, হিসাব, বর্ণনা ইত্যাদি। পবিত্র কুরআনের বিপরীতে সমস্ত মুসলমান বিশ্বাস করেন না যে, হাদিস (বা অন্তত সব হাদিস নয়) ঐশ্বরিক উদ্ঘাটন। বরং কিছু মুসলিম বিশ্বাস করে, ইসলামি নির্দেশনা শুধুমাত্র কুরআনের উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত এবং এভাবে তারা হাদিসের কর্তৃত্ব প্রত্যাখ্যান করেন। অনেকে দাবি করেন যে, বেশিরভাগ হাদিসই বানোয়াট, যা ৮ম ও ৯ম শতাব্দীতে তৈরি করা হয়েছে এবং এগুলোর জন্য মুহাম্মাদ সা.-কে মিথ্যাভাবে দায়ী করা হয়েছে। তবে তাদের এই ধারণা ও বিশ্বাস বৃহত্তর ইসলামি সমাজে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে এবং হাদিসের প্রামাণ্যতা বিষয়ে যুগে যুগে শতাধিক গ্রন্থ রচনা করা হয়েছে।
কিছু হাদিসে সন্দেহজনক ও এমনকি পরস্পরবিরোধী বক্তব্যও অন্তর্ভুক্ত থাকার জন্যে হাদিসের প্রমাণীকরণ ইসলামে অধ্যয়নের একটি প্রধান ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। শাস্ত্রীয় আকারে একটি হাদীসের দুটি অংশ আছে: সনদ ( বা বর্ণনাকারীদের শৃঙ্খল, যারা হাদিস বর্ণনা করেছেন) মতন ( হাদিসের মূল পাঠ)। স্বতন্ত্র হাদিসকে মুসলিম ধর্মগুরু ও আইনবিদগণ “সহিহ” (প্রমাণিক), “হাসান” ( মধ্যম মানসম্পন্ন) এবং “জয়িফের” (দুর্বল) মতো শ্রেণীতে শ্রেণীবদ্ধ করেছেন। যাহোক, ভিন্ন দল ও ভিন্ন আলেম একটি হাদিসকে ভিন্নভাবে শ্রেণীবদ্ধ করতে পারেন।
সুন্নি ইসলামের পণ্ডিতদের মধ্যে হাদিস শব্দটি শুধুমাত্র মুহাম্মদের কথা, উপদেশ, অনুশীলন ইত্যাদিই নয়; এটি তাঁর সাহাবীদের কথা, উপদেশ ও অনুশীলন অন্তর্ভুক্ত করে।শিয়া ইসলামে হাদিস হলো, সুন্নাহের মূর্ত প্রতীক, যা মুহাম্মাদ সা. ও তার পরিবার আহল আল-বাইতের (বারো ইমাম ও মুহাম্মদের সা. কন্যা ফাতিমা) কথা, কাজ ও অনুশীলন।
হাদিস পরিচিতি ও হাদিস শরীফ মানবন্টন নিয়ে বিস্তারিত ঃ
আরও দেখুনঃ