সূরা বাকারা আয়াত ২১৪ | সূরা বাকারা [ গাভী কুরবানী] সূরা নং ২ । মাদানী সূরা । আল কুরআন

সূরা বাকারা আয়াত ২১৪ ,আল বাকারা (আরবি ভাষায়: سورة البقرة) মুসলমানদের পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের দ্বিতীয় সূরা, এর আয়াত সংখ্যা ২৮৬ টি এবং এর রূকুর সংখ্যা ৪০ টি। আল বাকারা সূরাটি মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে।

সূরা বাকারা আয়াত ২১৪

সূরা বাকারা আয়াত ২১৪
সূরা বাকারা আয়াত ২১৪

সূরা বাকারা

তোমাদের কি এই ধারণা যে, তোমরা জান্নাতে চলে যাবে, অথচ সে লোকদের অবস্থা অতিক্রম করনি যারা তোমাদের পূর্বে অতীত হয়েছে। তাদের উপর এসেছে বিপদ ও কষ্ট। আর এমনি ভাবে শিহরিত হতে হয়েছে যাতে নবী ও তাঁর প্রতি যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে পর্যন্ত একথা বলতে হয়েছে যে, কখন আসবে আল্লাহর সাহায্যে! তোমরা শোনে নাও, আল্লাহর সাহায্যে একান্তই নিকটবর্তী।

Or think you that you will enter Paradise without such (trials) as came to those who passed away before you? They were afflicted with severe poverty and ailments and were so shaken that even the Messenger and those who believed along with him said, ”When (will come) the Help of Allâh?” Yes! Certainly, the Help of Allâh is near!

أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُواْ الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَأْتِكُم مَّثَلُ الَّذِينَ خَلَوْاْ مِن قَبْلِكُم مَّسَّتْهُمُ الْبَأْسَاء وَالضَّرَّاء وَزُلْزِلُواْ حَتَّى يَقُولَ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُواْ مَعَهُ مَتَى نَصْرُ اللّهِ أَلا إِنَّ نَصْرَ اللّهِ قَرِيبٌ

Am hasibtum an tadkhuloo aljannata walamma ya/tikum mathalu allatheena khalaw min qablikum massat-humu alba/sao waalddarrao wazulziloo hatta yaqoola alrrasoolu waallatheena amanoo maAAahu mata nasru Allahi ala inna nasra Allahi qareebun

সূরা বাকারা আয়াত ২১৪
সূরা বাকারা আয়াত ২১৪

YUSUFALI: Or do ye think that ye shall enter the Garden (of bliss) without such (trials) as came to those who passed away before you? they encountered suffering and adversity, and were so shaken in spirit that even the Messenger and those of faith who were with him cried: “When (will come) the help of Allah?” Ah! Verily, the help of Allah is (always) near!

PICKTHAL: Or think ye that ye will enter paradise while yet there hath not come unto you the like of (that which came to) those who passed away before you? Affliction and adversity befell them, they were shaken as with earthquake, till the messenger (of Allah) and those who believed along with him said: When cometh Allah’s help? Now surely Allah’s help is nigh.

SHAKIR: Or do you think that you would enter the garden while yet the state of those who have passed away before you has not come upon you; distress and affliction befell them and they were shaken violently, so that the Messenger and those who believed with him said: When will the help of Allah come? Now surely the help of Allah is nigh!

KHALIFA: Do you expect to enter Paradise without being tested like those before you? They were tested with hardship and adversity, and were shaken up, until the messenger and those who believed with him said, “Where is GOD’s victory?” GOD’s victory is near.

২১৩। মনুষ্য সম্প্রদায় ছিলো একই জাতি, অতঃপর আল্লাহ্‌ নবীদের সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেন। মানুষেরা যে বিষয়ে মতভেদ করতো তাদের মধ্যে সে বিষয়ে মীমাংসার জন্য তিনি তাদের সাথে সত্যসহ কিতাব প্রেরণ করেন। কিন্তু কিতাব প্রাপ্তদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শন আসার পরেও, স্বার্থপরতা ও অবাধ্যতার দরুন সে বিষয়ে মতভেদ করতো। তারা [অবিশ্বাসীরা] যে বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করতো আল্লাহ্‌ তাঁর নিজ অনুগ্রহে সে বিষয়ে বিশ্বাসীদের সত্য পথে পরিচালিত করেন। আল্লাহ্‌ যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন।

২১৪। তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা [পরীক্ষা ব্যতীত] জান্নাতে প্রবেশ করবে, যেরূপ পরীক্ষা পূর্ববর্তীগণ, যারা গত হয়েছে, তাদের করা হয়েছিলো? দুঃখ, কষ্ট এবং দুর্ভাগ্য তাদের স্পর্শ করেছিলো এবং তারা এতটাই ভীত ও কম্পিত হয়েছিলো যে, এমনকি রাসূল এবং তার সাথে যারা ঈমান এনেছিলো, তারা [সকলেই] কেঁদে বলেছিলো, ‘কখন আল্লাহ্‌র সাহায্য আসবে?’ আঃ! অবশ্যই আল্লাহ্‌র সাহায্য [সর্বদা] অতি নিকটে।

২১৫। তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, [দান হিসেবে] কি তারা ব্যয় করবে। বল, যা ভাল ২৩৫ তাই-ই ব্যয় কর, পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্থ এবং পর্যটকদের জন্য। এবং তোমরা যা ভাল কাজ কর আল্লাহ্‌ তা খুব ভালভাবে জানেন।

২৩৫। দান বা Charity সম্পর্কে এখানে তিনটি প্রশ্নের উদ্ভব হয়েছে। (১) কি দান করবে? (২) কাকে দান করবে? এবং (৩) কীভাবে দান করবে? এর উত্তরে বলা হয়েছে, যা কিছু ভাল, মানুষের জন্য মঙ্গলজনক, তাই-ই দানের বস্তু। অনেকের ধারণা শুধুমাত্র অর্থ-সম্পদই দানের বস্তু। অর্থ দান করা পৃথিবী সর্বাপেক্ষা সহজ কাজ। আল্লাহ্‌ প্রতিটি মানুষকে কোন না কোন নেয়ামতে ধন্য করেছেন।

সূরা বাকারা আয়াত ২১৪
সূরা বাকারা আয়াত ২১৪

কাউকে দিয়েছেন মেধা, কাউকে শিল্পীমন, কাউকে প্রভাব প্রতিপত্তি, কাউকে ক্ষমতা, কাউকে অর্থ-সম্পদ ইত্যাদি। যাকে যে নেয়ামত দিন না কেন সে সেই নেয়ামত আল্লাহ্‌র রাস্তায় খরচ করবে। এখানে বলা হয়েছে, “যা ভাল তাই-ই ব্যয় কর।” অর্থাৎ ফেলে দেওয়া অপ্রয়োজনীয় বা যা মানুষের জন্য কল্যাণকর নয় তা দানের যোগ্যতা রাখে না। এ ব্যাপারে দুঃখী ব্যক্তিকে সান্ত্বনার বাণীও দান হিসেবে গ্রহণযোগ্য। উদাহরণস্বরূপ বলা যায, মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে অর্থ সাহায্য দান নয় কারণ এই অর্থ সাহায্য তার জন্য কোনও কল্যাণ বয়ে আনবে না।

দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে কাকে দেওয়া হবে বা কার জন্য ব্যয় করবে? এ দানে পিতামাতাকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। সুতরাং এ দান যে যাকাত নয় তা বোঝা যায় এ কারণে যে, পিতা-মাতাকে যাকাত দেওয়া যায় না এবং যাকাতে সব সময়ে পরিমাণ ধার্য করা থাকে। এখানে তা নাই। সুতরাং পিতা-মাতার পর যাদের কথা বলা হয়েছে তারা হচ্ছে আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্থ এবং মুসাফির। এদের মধ্যে বিচার করতে হবে কার প্রয়োজন অধিক। যার অধিক তার দাবী অগ্রগণ্য। এ ব্যাপারে কেউ যদি পৃথিবীতে প্রশংসিত হওয়ার জন্য [যা স্বভাবধর্ম] যে অগ্রগণ্য দাবীদার তার দাবীকে তুচ্ছ জ্ঞান করে এবং এমন লোককে দান করে যাতে সে পৃথিবীতে সবার কাছে প্রশংসা পেতে পারে, তবে তার সে দান, দান বলে গণ্য হবে না।

এটা আল্লাহ্‌র চোখে জালিয়াতির সমান। যে কোনও দানকে আল্লাহ্‌ বিচার করবেন তার নিয়ত দ্বারা। দানের উদ্দেশ্য হবে দুটি (১) দান হতে হবে নিঃস্বার্থ এবং (২) গ্রহীতার প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থাৎ যার প্রয়োজন অধিক তার দাবী অগ্রগণ্য এই ভিত্তিতে দান করা। যদি কেউ দান করার ব্যাপারে এই দু’টি মূলনীতি অস্বীকার করে তবে অবশ্যই তার দানের পিছনে নিজস্ব কোনও স্বার্থ বিদ্যমান থাকে।

সূরা বাকারা আয়াত ২১৪
সূরা বাকারা আয়াত ২১৪

তৃতীয় প্রশ্ন কীভাবে দান করা হবে। এর উত্তরে বলা হয়েছে এমনভাবে দান করতে হবে যেন আমাদের অবস্থান আল্লাহ্‌র দৃষ্টির সম্মুখে, কারণ “আল্লাহ্‌ তা খুব ভালোভাবে জানেন।” আল্লাহ্‌ সর্বজ্ঞ, তিনি আমাদের নিয়ত সম্বন্ধে আমাদের চেয়েও বেশি ওয়াকিবহাল। সুতরাং তার হুকুম মেনে, তাকে খুশী করাই হচ্ছে দানের একমাত্র উদ্দেশ্য। যদি কেউ মনে করে বাহিরের প্রদর্শনী, বা ভান বা আল্লাহ্‌র প্রতি বিশ্বস্ত না হয়ে দান খয়রাত করে পূণ্য বা সওয়াব হাসিল করবে, তবে তারা মূর্খ। কারণ মানুষের কোনও শঠতা বা ভান বা বাহিরের প্রদর্শনী কিছুই বিশ্ব স্রষ্টার কাছে গোপন থাকে না।

আরও দেখুনঃ 

সূরা বাকারা পর্ব ৭ । সূচি । [ গাভী কুরবানী] সূরা নং ২ । পবিত্র কুরআন ।

সূরা বাকারা পর্ব ৬ । সূচি । [ গাভী কুরবানী] সূরা নং ২ । পবিত্র কুরআন ।

সূরা বাকারা পর্ব ৫ । সূচি । [ গাভী কুরবানী] সূরা নং ২ । পবিত্র কুরআন ।

সূরা বাকারা পর্ব ৪ । সূচি । [ গাভী কুরবানী] সূরা নং ২ । পবিত্র কুরআন ।

সূরা বাকারা পর্ব ৩ । সূচি । [ গাভী কুরবানী] সূরা নং ২ । পবিত্র কুরআন ।

সূরা বাকারা পর্ব ২ । সূচি । [ গাভী কুরবানী ] সূরা নং ২ । পবিত্র কুরআন ।

সূরা বাকারা পর্ব ১ । সূচি । [ গাভী কুরবানী ] সূরা নং ২ । পবিত্র কুরআন ।

নাপাকি এবং নাপাকি থেকে পবিত্রতা অর্জনের উপায়

 

Leave a Comment